দুই আসামির আমৃত্যু
কুষ্টিয়ায় স্কুলছাত্র দেব অপহরণ ও হত্যা মামলায় এক আসামির মৃত্যুদণ্ড এবং অপর দুই আসামির আমৃত্যু কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হচ্ছেন, মিরপুর উপজেলার চিথলিয়া গ্রামের তুফান মল্লিকের ছেলে সবুজ মল্লিক এবং আমৃত্যু দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত অপর দুই আসামি হচ্ছেন, একই এলাকার আমান আলীর পুত্র হাবিবুর রহমান ও মৃত আনছার আলীর পুত্র এরশাদ আলী। আদালত একই সঙ্গে ফাঁসির দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত সবুজ মল্লিককে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং আমৃত্যু কারাদণ্ডাদেশ প্রাপ্ত অপর দুই পলাতক আসামি হাবিবুর রহমানকে এক লাখ টাকা এবং এরশাদ আলীকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন।
রোববার দুপুর একটার দিকে কুষ্টিয়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক সৈয়দ হাবিবুল ইসলাম এক আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।
কুষ্টিয়া নারী ও শিশু আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট আবদুল হালিম রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ৯ জুন সকাল সাড়ে ৭টার দিকে চিথলিয়া এলাকার পবিত্র কুমার দত্তের ছেলে স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র দেব দত্ত বাড়ি থেকে বের হয়ে মিরপুর উপজেলার চিথলিয়া এলাকার তালিম মাস্টারের বাড়িবে প্রাইভেট পড়তে যায়। কিন্তু দীর্ঘ সময় পরও সে বাড়িতে ফিরে না আসায় আত্মীয়-স্বজনরা সবাই খোঁজাখুজি শুরু করে। পরে এক প্রতিবেশী জানান, অজ্ঞাত এক ব্যক্তি দেব দত্তকে মোটরসাইকেলে করে নিয়ে গেছে।
পরে অপহরণকারীরা মোবাইল ফোনে পরিবারের কাছে পঞ্চাশ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। এ ঘটনায় দুই দিন পর ১১ নভেম্বর দেবের পিতা পবিত্র কুমার দত্ত মিরপুর থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় পুলিশ আসামি সবুজ মল্লিকসহ ৫ জনকে আটক করে। পরে সবুজের দেয়া তথ্য মোতাবেক অপহরণের ১৬ দিন পর ২৫ জুন ২০১৮ তারিখে পবিত্র কুমারের বাড়ির পাশের পরিত্যক্ত টয়লেটের ট্যাংকির মধ্যে থেকে দেব দত্তের মহদেহ উদ্ধার করে। এই ঘটনায় আসামি সবুজ তার অপরাধ স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। ২০১৮ সালের ২৬ জুন চাঞ্চল্যকর এই মামলার দুই আসামি নাঈম ইসলাম (২৭) ও জোয়ার আলী (২৮) পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন।
পরে তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি সবুজ মল্লিক, হাবিবুর রহমান এবং এরশাদ আলীকে অভিযুক্ত করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। দীর্ঘ শুনানি শেষে রোববার দুপুরে আদালত আসামি সবুজ মল্লিকের উপস্থিতিতে এ রায় প্রদান করেন। মামলার অপর দুই আসামি বর্তমানে পলাতক রয়েছেন।
কুষ্টিয়া কোর্টের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি অ্যাডভোকেট আবদুল হালিম জানান, এটি একটি চাঞ্চল্যকর মামলা ছিল। এ মামলার দণ্ডপ্রাপ্ত অপর দুই আসামি এখনও পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারের ব্যাপারেও আদালত নিদের্শনা প্রদান করেছেন। মামলার বাদী পবিত্র কুমার দত্ত রায়ে সন্তোস প্রকাশ করে অবিলম্বে এই রায় কার্যকর করা এবং পলাতক অপর দুই আসামিকে গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
সোমবার, ০৮ নভেম্বর ২০২১ , ২৩ কার্তিক ১৪২৮ ৩১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৩
দুই আসামির আমৃত্যু
জেলা বার্তা পরিবেশক, কুষ্টিয়া
কুষ্টিয়ায় স্কুলছাত্র দেব অপহরণ ও হত্যা মামলায় এক আসামির মৃত্যুদণ্ড এবং অপর দুই আসামির আমৃত্যু কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হচ্ছেন, মিরপুর উপজেলার চিথলিয়া গ্রামের তুফান মল্লিকের ছেলে সবুজ মল্লিক এবং আমৃত্যু দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত অপর দুই আসামি হচ্ছেন, একই এলাকার আমান আলীর পুত্র হাবিবুর রহমান ও মৃত আনছার আলীর পুত্র এরশাদ আলী। আদালত একই সঙ্গে ফাঁসির দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত সবুজ মল্লিককে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং আমৃত্যু কারাদণ্ডাদেশ প্রাপ্ত অপর দুই পলাতক আসামি হাবিবুর রহমানকে এক লাখ টাকা এবং এরশাদ আলীকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন।
রোববার দুপুর একটার দিকে কুষ্টিয়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক সৈয়দ হাবিবুল ইসলাম এক আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।
কুষ্টিয়া নারী ও শিশু আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট আবদুল হালিম রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ৯ জুন সকাল সাড়ে ৭টার দিকে চিথলিয়া এলাকার পবিত্র কুমার দত্তের ছেলে স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র দেব দত্ত বাড়ি থেকে বের হয়ে মিরপুর উপজেলার চিথলিয়া এলাকার তালিম মাস্টারের বাড়িবে প্রাইভেট পড়তে যায়। কিন্তু দীর্ঘ সময় পরও সে বাড়িতে ফিরে না আসায় আত্মীয়-স্বজনরা সবাই খোঁজাখুজি শুরু করে। পরে এক প্রতিবেশী জানান, অজ্ঞাত এক ব্যক্তি দেব দত্তকে মোটরসাইকেলে করে নিয়ে গেছে।
পরে অপহরণকারীরা মোবাইল ফোনে পরিবারের কাছে পঞ্চাশ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। এ ঘটনায় দুই দিন পর ১১ নভেম্বর দেবের পিতা পবিত্র কুমার দত্ত মিরপুর থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় পুলিশ আসামি সবুজ মল্লিকসহ ৫ জনকে আটক করে। পরে সবুজের দেয়া তথ্য মোতাবেক অপহরণের ১৬ দিন পর ২৫ জুন ২০১৮ তারিখে পবিত্র কুমারের বাড়ির পাশের পরিত্যক্ত টয়লেটের ট্যাংকির মধ্যে থেকে দেব দত্তের মহদেহ উদ্ধার করে। এই ঘটনায় আসামি সবুজ তার অপরাধ স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। ২০১৮ সালের ২৬ জুন চাঞ্চল্যকর এই মামলার দুই আসামি নাঈম ইসলাম (২৭) ও জোয়ার আলী (২৮) পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন।
পরে তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি সবুজ মল্লিক, হাবিবুর রহমান এবং এরশাদ আলীকে অভিযুক্ত করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। দীর্ঘ শুনানি শেষে রোববার দুপুরে আদালত আসামি সবুজ মল্লিকের উপস্থিতিতে এ রায় প্রদান করেন। মামলার অপর দুই আসামি বর্তমানে পলাতক রয়েছেন।
কুষ্টিয়া কোর্টের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি অ্যাডভোকেট আবদুল হালিম জানান, এটি একটি চাঞ্চল্যকর মামলা ছিল। এ মামলার দণ্ডপ্রাপ্ত অপর দুই আসামি এখনও পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারের ব্যাপারেও আদালত নিদের্শনা প্রদান করেছেন। মামলার বাদী পবিত্র কুমার দত্ত রায়ে সন্তোস প্রকাশ করে অবিলম্বে এই রায় কার্যকর করা এবং পলাতক অপর দুই আসামিকে গ্রেপ্তারের দাবি জানান।