মেহেরপুরে ২ ভাই নিহত

দ্বিতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচন সামনে রেখে সহিংসতা ও আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেই চলেছে। মেহেরপুরে গাংনী উপজেলায় দুই পক্ষের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে এক মেম্বার প্রার্থীর দুই সহোদর নিহত ও ২০ জন আহত হয়েছে। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে দুই মেম্বার প্রার্থীর মধ্যে সশস্ত্র সংঘর্ষ ছাড়াও নোয়াখালীতে নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থীর নির্বাচনী কার্যালয় পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে এবং শেষ মুহূর্তের নির্বাচনী প্রচারণায় গাজীপুরে প্রার্থীরা আচরণ বিধি মানছে না। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে এ তথ্য জানা গেছে।

মেহেরপুর প্রতিনিধি জানান, মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ধলা গ্রামে মেম্বার প্রার্থী দুপক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে দুই জন নিহত এবং আহত হয়েছে আরও ২০ জন। গতকাল সকালে গাংনী উপজেলার ধলা গ্রামে এ সংঘর্ষ ঘটে।

নিহতরা হচ্ছে- ধলা গ্রামের জাহারুল ইসলাম (৫৭) ও সাহাদুল ইসলাম (৫৫)। নিহত দু’জনই ইউপি মেম্বার আজমাইন হোসেন টুটুলের ভাই। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গাংনী উপজেলার কাথুলী ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড সদস্য (মেম্বার) আজমাইন হোসেন টুটুলের সঙ্গে গাংনী উপজেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক ধলা গ্রামের বাসিন্দা আতিয়ার রহমান পক্ষের বিরোধ দীর্ঘদিনের। এবারের নির্বাচনে আতিয়ার রহমান ও আজমাইন হোসেন টুটুল একই ওয়ার্ডে মেম্বার পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ভোটের প্রচার-প্রচারণা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে বিরোধ চাঙ্গা দিয়ে উঠে। ভোট চাওয়াকে কেন্দ্র করে সোমবার সকালে উভয় পক্ষের লোকজন ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। দীর্ঘ সময় ধরে সংঘর্ষ চলার পর উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়। আহতদের গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক দু’জনকে মৃত ঘোষণা করেন।

দু’জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. বি ডি দাস বলেন, আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। মুমূর্ষু অবস্থায় চার জনকে কুষ্টিয়া মেডিকেলে রেফার্ড করা হয়েছে। বাকিদের এই হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে নির্বাচনী প্রচারণা করতে গেলে ইউপি সদস্য প্রার্থীসহ তার সমর্থকদের উপর হামলা ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। সোমবার দুপুরে উপজেলার ভুলতা ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের হাটাবো এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে বিকেলে হামলার শিকার ইউপি সদস্য প্রার্থী রেজাউর রহমান খান বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দেন।

রেজাউর রহমান খান অভিযোগ করে জানান, তিনি উপজেলার ভুলতা ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ড থেকে টিবওয়েল প্রতীকে ইউপি সদস্য পদে নির্বাচন করছেন। তিনি এ ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি সদস্য। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন মোরগ প্রতীকের প্রার্থী আলম হোসেন। সোমবার দুপুরে তিনি ও তার সমর্থকরা হাটাবো এলাকায় প্রচারণা করতে গেলে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আলম ও তার সমর্থক মুকসেদুল, খলিল, আনিছুর রহমান, নূর ইসলাম, ফরহাদ, নজরুল মিয়া, আনোয়ার হোসেন, আলী হোসেন, শাহ-আলম, ইব্রাহিম, রাসেল, কাদির, কবির হোসেন টুকুসহ অজ্ঞাত ৩০/৪০ জন দেশীয় অস্ত্র শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ও তার সমর্থক ইকবাল, সিফাত, সোহান, ফাহিম, বাপ্পির ওপর হামলা চালিয়ে তাদের আহত করেন। পরে তারা স্থানীয় হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহণ করেন।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আলম বলেন, হামলা বা মারামারির কোন ঘটনা ঘটেনি। তবে একটু কথাকাটাকাটি

হয়েছিল সেটি তাৎক্ষণিক সমাধান হয়ে যায়।

এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ থানার ওসি এএফএম সায়েদ বলেন, এ ধরনের অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মঙ্গলবার, ০৯ নভেম্বর ২০২১ , ২৪ কার্তিক ১৪২৮ ৩ রবিউস সানি ১৪৪৩

ইউপি নির্বাচনে সহিংসতা

মেহেরপুরে ২ ভাই নিহত

সংবাদ ডেস্ক

দ্বিতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচন সামনে রেখে সহিংসতা ও আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেই চলেছে। মেহেরপুরে গাংনী উপজেলায় দুই পক্ষের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে এক মেম্বার প্রার্থীর দুই সহোদর নিহত ও ২০ জন আহত হয়েছে। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে দুই মেম্বার প্রার্থীর মধ্যে সশস্ত্র সংঘর্ষ ছাড়াও নোয়াখালীতে নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থীর নির্বাচনী কার্যালয় পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে এবং শেষ মুহূর্তের নির্বাচনী প্রচারণায় গাজীপুরে প্রার্থীরা আচরণ বিধি মানছে না। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে এ তথ্য জানা গেছে।

মেহেরপুর প্রতিনিধি জানান, মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ধলা গ্রামে মেম্বার প্রার্থী দুপক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে দুই জন নিহত এবং আহত হয়েছে আরও ২০ জন। গতকাল সকালে গাংনী উপজেলার ধলা গ্রামে এ সংঘর্ষ ঘটে।

নিহতরা হচ্ছে- ধলা গ্রামের জাহারুল ইসলাম (৫৭) ও সাহাদুল ইসলাম (৫৫)। নিহত দু’জনই ইউপি মেম্বার আজমাইন হোসেন টুটুলের ভাই। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গাংনী উপজেলার কাথুলী ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড সদস্য (মেম্বার) আজমাইন হোসেন টুটুলের সঙ্গে গাংনী উপজেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক ধলা গ্রামের বাসিন্দা আতিয়ার রহমান পক্ষের বিরোধ দীর্ঘদিনের। এবারের নির্বাচনে আতিয়ার রহমান ও আজমাইন হোসেন টুটুল একই ওয়ার্ডে মেম্বার পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ভোটের প্রচার-প্রচারণা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে বিরোধ চাঙ্গা দিয়ে উঠে। ভোট চাওয়াকে কেন্দ্র করে সোমবার সকালে উভয় পক্ষের লোকজন ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। দীর্ঘ সময় ধরে সংঘর্ষ চলার পর উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়। আহতদের গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক দু’জনকে মৃত ঘোষণা করেন।

দু’জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. বি ডি দাস বলেন, আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। মুমূর্ষু অবস্থায় চার জনকে কুষ্টিয়া মেডিকেলে রেফার্ড করা হয়েছে। বাকিদের এই হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে নির্বাচনী প্রচারণা করতে গেলে ইউপি সদস্য প্রার্থীসহ তার সমর্থকদের উপর হামলা ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে। সোমবার দুপুরে উপজেলার ভুলতা ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের হাটাবো এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে বিকেলে হামলার শিকার ইউপি সদস্য প্রার্থী রেজাউর রহমান খান বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দেন।

রেজাউর রহমান খান অভিযোগ করে জানান, তিনি উপজেলার ভুলতা ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ড থেকে টিবওয়েল প্রতীকে ইউপি সদস্য পদে নির্বাচন করছেন। তিনি এ ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি সদস্য। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন মোরগ প্রতীকের প্রার্থী আলম হোসেন। সোমবার দুপুরে তিনি ও তার সমর্থকরা হাটাবো এলাকায় প্রচারণা করতে গেলে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আলম ও তার সমর্থক মুকসেদুল, খলিল, আনিছুর রহমান, নূর ইসলাম, ফরহাদ, নজরুল মিয়া, আনোয়ার হোসেন, আলী হোসেন, শাহ-আলম, ইব্রাহিম, রাসেল, কাদির, কবির হোসেন টুকুসহ অজ্ঞাত ৩০/৪০ জন দেশীয় অস্ত্র শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ও তার সমর্থক ইকবাল, সিফাত, সোহান, ফাহিম, বাপ্পির ওপর হামলা চালিয়ে তাদের আহত করেন। পরে তারা স্থানীয় হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহণ করেন।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আলম বলেন, হামলা বা মারামারির কোন ঘটনা ঘটেনি। তবে একটু কথাকাটাকাটি

হয়েছিল সেটি তাৎক্ষণিক সমাধান হয়ে যায়।

এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ থানার ওসি এএফএম সায়েদ বলেন, এ ধরনের অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।