বাংলাদেশে কোন লোক টিকা ছাড়া থাকবে না, প্রত্যেককে টিকা দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘কোটি কোটি টিকা আনা হয়েছে। প্রত্যেককে টিকা দেয়া নিশ্চিত করা হবে।’ লন্ডনে প্রবাসী বাংলাদেশিদের এক সমাবেশে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি প্রবাসীদের বলেন, বিকেন্দ্রীকরণ করে দেশের প্রতিটি এলাকার সমান উন্নয়ন করতে চায় তার সরকার। ‘আমরা ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণ করে দেশের প্রতিটি এলাকার সমান উন্নয়ন করতে চাই। সেভাবেই আমরা কাজ করছি, দেশ পরিচালনা করছি। বাংলাদেশ উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে, কেউ আমাদের দাবিয়ে রাখতে পারবে না। ’
রোববার লন্ডন সময় বিকেল সাড়ে ৪টা এবং বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ১০টায় লন্ডনের কুইন এলিজাবেথ কনভেনশন সেন্টারে প্রবাসী বাংলাদেশিদের এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের উদ্যোগে ‘বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ, বাংলাদেশের স্বাধীনতার সূবর্ণজন্তয়ী উদযাপন এবং শেখ হাসিনার নেতৃত্ব’ শীর্ষক এ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা সুলতান মাহমুদ শরীফ।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজেদুর রহমান ফারুকের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন- সিনিয়র সহ-সভাপতি জালাল উদ্দিন, সহ-সভাপতি আবুল হাশেম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার জামান চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল আহাদ চৌধুরী, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহের নিগার চৌধুরী প্রমুখ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- পররাষ্ট্রমন্ত্রী আওয়ামী লীগে যুগ্ম সম্পাদক তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান, শামীমা শাহরিয়ার, পারভীন হক সিকদার, বিশিষ্ট শিল্পপতি সালমান এফ রহমান প্রমুখ। অনুষ্ঠানে কোরআন থেকে পাঠ করেন মুফতি নজরুল ইসলাম, গীতা পাঠ করেন ডা. বিশ্বজিৎ, বাইবেল পাঠ করেন মিল্টন কস্টা, ত্রিপিটক পাঠ করেন অ্যাডভোকেট দীপক বড়ুয়া।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ নিজের পায়ে দাঁড়াতে শিখেছে। জাতির পিতার স্বপ্ন দেশকে সমৃদ্ধ করে আত্মমর্যাদাশীল করে তোলা আমাদের লক্ষ্য। জনগণের ভাগ্য গড়তে এসেছি।’
শেখ হাসিনা আবার দেশে গিয়ে বিনিয়োগ করার জন্য প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশে একশটি শিল্পাঞ্চল তৈরি করা হয়েছে। বিনিয়োগে যেকোন ধরনের সমস্যার সমাধানে সহায়তা করা হবে।’
প্রবাসীদের সমাবেশে বিএনপি-জামায়াতের কঠোর সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি মানুষের ভাগ্য গড়তে জানে না, শুধু মানুষের সম্পদ লুটপাট করতে জানে। যুদ্ধাপরাধী জামায়াত যারা একাত্তরে দেশের মানুষ হত্যা করেছে, তাদের হাতে পতাকা তুলে দিয়েছে বিএনপি।’
জিয়া ও খালেদার উত্থানপর্বের ইতিহাস তুলে ধরতে গিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, অবৈধভাবে ক্ষমতায় এসে সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান যা করেছিলেন, তার স্ত্রী খালেদা জিয়াও পরে ‘একই পথে’ হেঁটেছেন। আজকে ৭ নভেম্বর। ৭৫ সালে এই ৭ নভেম্বর বাংলাদেশে ক্যু হয়েছে। ৭৫ সালের পর বাংলাদেশে ১৯ বার ক্যু হয়েছে। একেকটা ক্যু যখন হয়েছে, সেনাবাহিনীর হাজার হাজার সৈনিক, অফিসারদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে।
এই হত্যাকা- ঘটিয়েছিল ৭৫-এ যখন মোশতাক ক্ষমতা দখল করেছিল জিয়াউর রহমানের সহযোগিতায়, তিন মাসও যেতে পারে নাই, মোশতাককে বের করে দিয়ে জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা দেয়। আর সেই ঘোষণা দেয়ার পর থেকেই দেশে ১৮ বার ক্যু হয়।
১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হওয়ার পর সেনাপ্রধানের দায়িত্বে আসেন জিয়াউর রহমান। এরপর মুক্তিযুদ্ধে অন্যতম সেক্টর কমান্ডার খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীতে একটি অভ্যুত্থানে গৃহবন্দী হন জিয়া।
৭ নভেম্বর জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সঙ্গে যুক্ত মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার কর্নেল তাহেরের নেতৃত্বে পাল্টা অভ্যুত্থানে আটকাবস্থা থেকে মুক্ত হন জিয়া। এর মধ্য দিয়ে তিনি ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসেন, পরে দেশের প্রথম সামরিক আইন প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব নেন। পরের বছর তিনি রাষ্ট্রপতির পদও নেন।
জিয়া ক্ষমতা দখলের পর সামরিক বাহিনীতে অনেকগুলো বিদ্রোহ-অভ্যুত্থানের চেষ্টা হয়, যাতে জড়িতদের সামরিক আদালতে বিচার করে মৃত্যুদ-সহ নানা সাজা দেয়া হয়। ১৯৭৬ সালে এই রকম এক বিচারের পর কর্নেল তাহেরের মৃত্যুদ- কার্যকর করা হয়। ওই বিচারকে ‘অবৈধ’ বলে পরে রায় দেয় উচ্চ আদালত।
শেখ হাসিনা বলেন, প্রত্যেক বার ক্যুর সময় জিয়াউর রহমানের হাতে হাজার হাজার সামরিক বাহিনীর সৈনিক, অফিসার, বিমানবাহিনীর অফিসার এবং অনেক মানুষ মারা যায়, তাদের হত্যা করা হয়।
কোর্ট মার্শাল দেয়া হয়, সামারি ট্রায়াল দেয়া হয়। এইভাবে মানুষকে হত্যা করে। আজকে ৭ নভেম্বর প্রকৃতপক্ষে এটা সৈনিক হত্যা দিবস। সামরিক বাহিনীর সদস্যদের হত্যা দিবস।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওই সময়ে যাদের হত্যা করা হয়েছিল তাদের পরিবারের অনেকে এখনও তাদের আপনজনকে খুঁজে পায়নি। লাশ না পাওয়ায় কাফন-দাফনও হয়নি। অনেকেই জানেন না, কীভাবে তাদের প্রিয়জনের মৃত্যু হয়েছে।
জাতির পিতাকে হত্যার পর তার খুনিদের পথ রুদ্ধ করতে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারির কথাও মনে করিয়ে দেন শেখ হাসিনা। পরে জিয়ার স্ত্রী খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এলে দেশের পরিস্থিতি কেমন ছিল সে কথাও বলেন।
বিদ্যুৎ দাবি করায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের কানসাটে ১৯ জন মানুষকে হত্যা করেছিল খালেদা জিয়া। সারের দাবিতে আন্দোলন করেছিল বলে ১৮ জন কৃষককে হত্যা করেছিল।
হত্যা করাটাই তাদের কাজ। জিয়াউর রহমান যেমন শত শত মুক্তিযোদ্ধা, সামরিক অফিসারকে হত্যা করেছে, জওয়ানদের হত্যা করেছে, সৈনিকদের হত্যা করেছে, তার স্ত্রীও একই পথ অবলম্বন করেছে।
দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার এবং গ্রেনেড মামলায় তার ছেলে তারেক রহমানের দা-িত হওয়ার কথা তুলে ধরে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, খালেদা জিয়ার ছেলেদের দুর্নীতি আমেরিকার এফবিআই খুঁজে বের করেছে এবং সিঙ্গাপুরে ধরা পড়েছে। বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া কিছু টাকা সরকার ফেরত আনতেও সক্ষম হয়েছে।
যাবজ্জীবন সাজা মাথায় নিয়ে বিদেশে পালিয়ে থাকা তারেক রহমানের প্রসঙ্গ ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা নিজেরাই এখন দেখতে পারেন, তাদের জীবনযাত্রা, এই প্রবাসে থেকেও কীভাবে তারা চলে। তাদের সোর্স অব ইনকাম কী? অর্থ কোথা থেকে উপার্জন করে? তারেক জিয়াকে জিঞ্জেস করেন- কোথা থেকে অর্থ পায়? কীভাবে চলে? জনগণের সম্পদ লুট করে তারা বিলাসিতা করে।
জাতির পিতাকে হত্যার পর তার নাম ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছিল মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, সত্যকে কখনও ধামাচাপা দেয়া যায় না।
মঙ্গলবার, ০৯ নভেম্বর ২০২১ , ২৪ কার্তিক ১৪২৮ ৩ রবিউস সানি ১৪৪৩
লন্ডন (যুক্তরাজ্য) থেকে, সালাম জুবায়ের
বাংলাদেশে কোন লোক টিকা ছাড়া থাকবে না, প্রত্যেককে টিকা দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘কোটি কোটি টিকা আনা হয়েছে। প্রত্যেককে টিকা দেয়া নিশ্চিত করা হবে।’ লন্ডনে প্রবাসী বাংলাদেশিদের এক সমাবেশে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি প্রবাসীদের বলেন, বিকেন্দ্রীকরণ করে দেশের প্রতিটি এলাকার সমান উন্নয়ন করতে চায় তার সরকার। ‘আমরা ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণ করে দেশের প্রতিটি এলাকার সমান উন্নয়ন করতে চাই। সেভাবেই আমরা কাজ করছি, দেশ পরিচালনা করছি। বাংলাদেশ উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে, কেউ আমাদের দাবিয়ে রাখতে পারবে না। ’
রোববার লন্ডন সময় বিকেল সাড়ে ৪টা এবং বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ১০টায় লন্ডনের কুইন এলিজাবেথ কনভেনশন সেন্টারে প্রবাসী বাংলাদেশিদের এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের উদ্যোগে ‘বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ, বাংলাদেশের স্বাধীনতার সূবর্ণজন্তয়ী উদযাপন এবং শেখ হাসিনার নেতৃত্ব’ শীর্ষক এ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা সুলতান মাহমুদ শরীফ।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজেদুর রহমান ফারুকের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন- সিনিয়র সহ-সভাপতি জালাল উদ্দিন, সহ-সভাপতি আবুল হাশেম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার জামান চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল আহাদ চৌধুরী, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহের নিগার চৌধুরী প্রমুখ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- পররাষ্ট্রমন্ত্রী আওয়ামী লীগে যুগ্ম সম্পাদক তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান, শামীমা শাহরিয়ার, পারভীন হক সিকদার, বিশিষ্ট শিল্পপতি সালমান এফ রহমান প্রমুখ। অনুষ্ঠানে কোরআন থেকে পাঠ করেন মুফতি নজরুল ইসলাম, গীতা পাঠ করেন ডা. বিশ্বজিৎ, বাইবেল পাঠ করেন মিল্টন কস্টা, ত্রিপিটক পাঠ করেন অ্যাডভোকেট দীপক বড়ুয়া।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ নিজের পায়ে দাঁড়াতে শিখেছে। জাতির পিতার স্বপ্ন দেশকে সমৃদ্ধ করে আত্মমর্যাদাশীল করে তোলা আমাদের লক্ষ্য। জনগণের ভাগ্য গড়তে এসেছি।’
শেখ হাসিনা আবার দেশে গিয়ে বিনিয়োগ করার জন্য প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশে একশটি শিল্পাঞ্চল তৈরি করা হয়েছে। বিনিয়োগে যেকোন ধরনের সমস্যার সমাধানে সহায়তা করা হবে।’
প্রবাসীদের সমাবেশে বিএনপি-জামায়াতের কঠোর সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি মানুষের ভাগ্য গড়তে জানে না, শুধু মানুষের সম্পদ লুটপাট করতে জানে। যুদ্ধাপরাধী জামায়াত যারা একাত্তরে দেশের মানুষ হত্যা করেছে, তাদের হাতে পতাকা তুলে দিয়েছে বিএনপি।’
জিয়া ও খালেদার উত্থানপর্বের ইতিহাস তুলে ধরতে গিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, অবৈধভাবে ক্ষমতায় এসে সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান যা করেছিলেন, তার স্ত্রী খালেদা জিয়াও পরে ‘একই পথে’ হেঁটেছেন। আজকে ৭ নভেম্বর। ৭৫ সালে এই ৭ নভেম্বর বাংলাদেশে ক্যু হয়েছে। ৭৫ সালের পর বাংলাদেশে ১৯ বার ক্যু হয়েছে। একেকটা ক্যু যখন হয়েছে, সেনাবাহিনীর হাজার হাজার সৈনিক, অফিসারদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে।
এই হত্যাকা- ঘটিয়েছিল ৭৫-এ যখন মোশতাক ক্ষমতা দখল করেছিল জিয়াউর রহমানের সহযোগিতায়, তিন মাসও যেতে পারে নাই, মোশতাককে বের করে দিয়ে জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা দেয়। আর সেই ঘোষণা দেয়ার পর থেকেই দেশে ১৮ বার ক্যু হয়।
১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হওয়ার পর সেনাপ্রধানের দায়িত্বে আসেন জিয়াউর রহমান। এরপর মুক্তিযুদ্ধে অন্যতম সেক্টর কমান্ডার খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীতে একটি অভ্যুত্থানে গৃহবন্দী হন জিয়া।
৭ নভেম্বর জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সঙ্গে যুক্ত মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার কর্নেল তাহেরের নেতৃত্বে পাল্টা অভ্যুত্থানে আটকাবস্থা থেকে মুক্ত হন জিয়া। এর মধ্য দিয়ে তিনি ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসেন, পরে দেশের প্রথম সামরিক আইন প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব নেন। পরের বছর তিনি রাষ্ট্রপতির পদও নেন।
জিয়া ক্ষমতা দখলের পর সামরিক বাহিনীতে অনেকগুলো বিদ্রোহ-অভ্যুত্থানের চেষ্টা হয়, যাতে জড়িতদের সামরিক আদালতে বিচার করে মৃত্যুদ-সহ নানা সাজা দেয়া হয়। ১৯৭৬ সালে এই রকম এক বিচারের পর কর্নেল তাহেরের মৃত্যুদ- কার্যকর করা হয়। ওই বিচারকে ‘অবৈধ’ বলে পরে রায় দেয় উচ্চ আদালত।
শেখ হাসিনা বলেন, প্রত্যেক বার ক্যুর সময় জিয়াউর রহমানের হাতে হাজার হাজার সামরিক বাহিনীর সৈনিক, অফিসার, বিমানবাহিনীর অফিসার এবং অনেক মানুষ মারা যায়, তাদের হত্যা করা হয়।
কোর্ট মার্শাল দেয়া হয়, সামারি ট্রায়াল দেয়া হয়। এইভাবে মানুষকে হত্যা করে। আজকে ৭ নভেম্বর প্রকৃতপক্ষে এটা সৈনিক হত্যা দিবস। সামরিক বাহিনীর সদস্যদের হত্যা দিবস।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওই সময়ে যাদের হত্যা করা হয়েছিল তাদের পরিবারের অনেকে এখনও তাদের আপনজনকে খুঁজে পায়নি। লাশ না পাওয়ায় কাফন-দাফনও হয়নি। অনেকেই জানেন না, কীভাবে তাদের প্রিয়জনের মৃত্যু হয়েছে।
জাতির পিতাকে হত্যার পর তার খুনিদের পথ রুদ্ধ করতে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারির কথাও মনে করিয়ে দেন শেখ হাসিনা। পরে জিয়ার স্ত্রী খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এলে দেশের পরিস্থিতি কেমন ছিল সে কথাও বলেন।
বিদ্যুৎ দাবি করায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের কানসাটে ১৯ জন মানুষকে হত্যা করেছিল খালেদা জিয়া। সারের দাবিতে আন্দোলন করেছিল বলে ১৮ জন কৃষককে হত্যা করেছিল।
হত্যা করাটাই তাদের কাজ। জিয়াউর রহমান যেমন শত শত মুক্তিযোদ্ধা, সামরিক অফিসারকে হত্যা করেছে, জওয়ানদের হত্যা করেছে, সৈনিকদের হত্যা করেছে, তার স্ত্রীও একই পথ অবলম্বন করেছে।
দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার এবং গ্রেনেড মামলায় তার ছেলে তারেক রহমানের দা-িত হওয়ার কথা তুলে ধরে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, খালেদা জিয়ার ছেলেদের দুর্নীতি আমেরিকার এফবিআই খুঁজে বের করেছে এবং সিঙ্গাপুরে ধরা পড়েছে। বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া কিছু টাকা সরকার ফেরত আনতেও সক্ষম হয়েছে।
যাবজ্জীবন সাজা মাথায় নিয়ে বিদেশে পালিয়ে থাকা তারেক রহমানের প্রসঙ্গ ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা নিজেরাই এখন দেখতে পারেন, তাদের জীবনযাত্রা, এই প্রবাসে থেকেও কীভাবে তারা চলে। তাদের সোর্স অব ইনকাম কী? অর্থ কোথা থেকে উপার্জন করে? তারেক জিয়াকে জিঞ্জেস করেন- কোথা থেকে অর্থ পায়? কীভাবে চলে? জনগণের সম্পদ লুট করে তারা বিলাসিতা করে।
জাতির পিতাকে হত্যার পর তার নাম ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা হয়েছিল মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, সত্যকে কখনও ধামাচাপা দেয়া যায় না।