ইন্সপেক্টর শামসুদ্দিনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু

৯ পরিবারের সাক্ষ্যগ্রহণ

রাজধানীর খিলগাঁও গোড়ান এলাকায় ৯ পরিবারকে হেনস্থা করার ঘটনা নিয়ে সিআইডির বিভাগীয় তদন্ত শুরু করেছেন। গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত ফ্ল্যাটের মালিকরা সিআইডির মালিবাগস্থ প্রধান কার্যালয়ে গিয়ে তাদের ওপর নির্যাতন, গালাগাল, দারোয়ানকে মারধরসহ সব ঘটনা জানিয়েছেন।

ফ্ল্যাট বাড়ির মালিকরা মৌখিক ছাড়াও লিখিত বক্তব্য দিয়েছেন। সিআইডির প্রধানের নির্দেশের একজন সিনিয়র এএসপি তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন।

ফ্ল্যাটের কয়েকজন মালিক সংবাদকে জানান, গতকাল ফ্ল্যাটের মালিকদের মধ্যে সাতজন সিআইডি অফিসে গিয়ে তাদের মতামত তুলে ধরেন। সিআইডির তদন্ত কর্মকর্তা সিনিয়র এএসপি সাইদুর রহমান তাদের বক্তব্য শুনেছেন। এরপর লিখিত বক্তব্য দিয়েছেন।

জানা গেছে, ভুক্তভোগীরা সিআইডির তদন্ত টিমের কাছে ইন্সপেক্টর শামসুদ্দিনের গত তিন বছর ধরে যত হয়রানি, গালাগাল করেছে সব কিছুই সিআইডির তদন্ত কর্মকর্তাকে জানিয়েছেন। এমনকি সিসি টিভির ফুটেজ সম্পর্কে সিআইডিকে অবহিত করেছেন। বাজে ভাষায় গালাগালের বিষয়টি তদন্তকারী কর্মকর্তাকে জানিয়েছেন। এছাড়াও খিলগাঁও থানার ওসি তদন্ত তিন বছর ধরে তাদের জিডিও নিতে রাজি হয়নি বলে সিআইডিকে জানিয়েছেন।

সিআইডির তদন্ত টিমের কর্মকর্তারা গোড়ানের হেনস্তার শিকার ব্যক্তিদের জানান, ইন্সপেক্টর শামসুদ্দিনকে সিআইডি থেকে শিল্প পুলিশে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। এখন তার অনিয়ম নিয়ে তদন্ত শুরু করেছেন। এরপর তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। অভিযুক্ত শামসুদ্দিনের অপকর্মের দায়ভার সিআইডি নিবে না। তাই তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু করা হয়েছে।

এছাড়াও গতকাল পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের মিডিয়া শাখা থেকে বলা হয়েছে, সিআইডির ইন্সপেক্টরের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।

এ দিকে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ইন্সপেক্টর শামসুদ্দিন সম্পর্কে সাংবাদিকদের তথ্য দেয়ার অভিযোগ তুলে গোড়ানের ক্ষুদ্র এক দোকানিকে গালাগাল করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তাকে সিআইডি থেকে সরিয়ে দেয়ার খবর শুনে স্থানীয়রা খুশি। এতদিন তার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ ছিল। ফ্ল্যাট বাড়ির সব চেয়ে প্রবীণ মালিক ও তাদের সন্তান ও সন্তানের স্ত্রীও সিআইডি অফিসে গিয়ে তাদের মতামত প্রকাশ করতে পেরেছেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। তবে এখনও আতঙ্কে আছেন।

এ দিকে গতকাল রাতে সিআইডির একজন কর্মকর্তা সংবাদকে জানান, তদন্ত শুরু হয়েছে। দরকার হলে সরজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলবেন তদন্ত টিম।

উল্লেখ্য, সিআইডির ইন্সপেক্টর শামসুদ্দিন গোড়ানে ৯ পরিবারকে হেনস্তা করছেন। এ নিয়ে সংবাদে একাধিক রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। রিপোর্ট প্রকাশ করায় সংবাদের দুইজন (ক্রাইম) রিপোটারকে অন্য লোক দিয়ে মুঠোফোনে নানাভাবে হুমকি দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে পুলিশ সদর দপ্তর ও সিআইডির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তারা বিষয়টি নিয়ে তদন্তে নেমেছেন।

মঙ্গলবার, ০৯ নভেম্বর ২০২১ , ২৪ কার্তিক ১৪২৮ ৩ রবিউস সানি ১৪৪৩

ইন্সপেক্টর শামসুদ্দিনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু

৯ পরিবারের সাক্ষ্যগ্রহণ

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

রাজধানীর খিলগাঁও গোড়ান এলাকায় ৯ পরিবারকে হেনস্থা করার ঘটনা নিয়ে সিআইডির বিভাগীয় তদন্ত শুরু করেছেন। গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত ফ্ল্যাটের মালিকরা সিআইডির মালিবাগস্থ প্রধান কার্যালয়ে গিয়ে তাদের ওপর নির্যাতন, গালাগাল, দারোয়ানকে মারধরসহ সব ঘটনা জানিয়েছেন।

ফ্ল্যাট বাড়ির মালিকরা মৌখিক ছাড়াও লিখিত বক্তব্য দিয়েছেন। সিআইডির প্রধানের নির্দেশের একজন সিনিয়র এএসপি তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন।

ফ্ল্যাটের কয়েকজন মালিক সংবাদকে জানান, গতকাল ফ্ল্যাটের মালিকদের মধ্যে সাতজন সিআইডি অফিসে গিয়ে তাদের মতামত তুলে ধরেন। সিআইডির তদন্ত কর্মকর্তা সিনিয়র এএসপি সাইদুর রহমান তাদের বক্তব্য শুনেছেন। এরপর লিখিত বক্তব্য দিয়েছেন।

জানা গেছে, ভুক্তভোগীরা সিআইডির তদন্ত টিমের কাছে ইন্সপেক্টর শামসুদ্দিনের গত তিন বছর ধরে যত হয়রানি, গালাগাল করেছে সব কিছুই সিআইডির তদন্ত কর্মকর্তাকে জানিয়েছেন। এমনকি সিসি টিভির ফুটেজ সম্পর্কে সিআইডিকে অবহিত করেছেন। বাজে ভাষায় গালাগালের বিষয়টি তদন্তকারী কর্মকর্তাকে জানিয়েছেন। এছাড়াও খিলগাঁও থানার ওসি তদন্ত তিন বছর ধরে তাদের জিডিও নিতে রাজি হয়নি বলে সিআইডিকে জানিয়েছেন।

সিআইডির তদন্ত টিমের কর্মকর্তারা গোড়ানের হেনস্তার শিকার ব্যক্তিদের জানান, ইন্সপেক্টর শামসুদ্দিনকে সিআইডি থেকে শিল্প পুলিশে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। এখন তার অনিয়ম নিয়ে তদন্ত শুরু করেছেন। এরপর তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। অভিযুক্ত শামসুদ্দিনের অপকর্মের দায়ভার সিআইডি নিবে না। তাই তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু করা হয়েছে।

এছাড়াও গতকাল পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের মিডিয়া শাখা থেকে বলা হয়েছে, সিআইডির ইন্সপেক্টরের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।

এ দিকে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ইন্সপেক্টর শামসুদ্দিন সম্পর্কে সাংবাদিকদের তথ্য দেয়ার অভিযোগ তুলে গোড়ানের ক্ষুদ্র এক দোকানিকে গালাগাল করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তাকে সিআইডি থেকে সরিয়ে দেয়ার খবর শুনে স্থানীয়রা খুশি। এতদিন তার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ ছিল। ফ্ল্যাট বাড়ির সব চেয়ে প্রবীণ মালিক ও তাদের সন্তান ও সন্তানের স্ত্রীও সিআইডি অফিসে গিয়ে তাদের মতামত প্রকাশ করতে পেরেছেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। তবে এখনও আতঙ্কে আছেন।

এ দিকে গতকাল রাতে সিআইডির একজন কর্মকর্তা সংবাদকে জানান, তদন্ত শুরু হয়েছে। দরকার হলে সরজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলবেন তদন্ত টিম।

উল্লেখ্য, সিআইডির ইন্সপেক্টর শামসুদ্দিন গোড়ানে ৯ পরিবারকে হেনস্তা করছেন। এ নিয়ে সংবাদে একাধিক রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। রিপোর্ট প্রকাশ করায় সংবাদের দুইজন (ক্রাইম) রিপোটারকে অন্য লোক দিয়ে মুঠোফোনে নানাভাবে হুমকি দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে পুলিশ সদর দপ্তর ও সিআইডির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তারা বিষয়টি নিয়ে তদন্তে নেমেছেন।