আজ প্রথম সেমিফাইনাল

ইংল্যান্ডের তৃতীয় ও নিউজিল্যান্ডের প্রথম ফাইনালে ওঠার সুযোগ

বিশ্বকাপের আসরে ইংল্যান্ড-নিউজিল্যান্ড লড়াই মানেই কিউইদের স্বপ্ন ভঙ্গের গল্প। যে গল্পটার শুরু ২০১৬ সালের টিÑ২০ বিশ্বকাপে। সেবার সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের কাছে পরাজয়ে স্বপ্নভঙ্গ হয় নিউজিল্যান্ডের। ২০১৯ সালের ওডিআই বিশ্বকাপের ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের পরাজয়টা আরোও করুণ। টাই হওয়া ম্যাচের সুপার ওভারে শুধুমাত্র বাউন্ডারীর হিসেবের গোলমালে ইংল্যান্ডের কাছে পরাজয়ে শিরোপা হাতছাড়া হয় ব্ল্যাক ক্যাপসদের। ২০১৬ সালের টিÑ২০ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের পর আবারো সেমিতে ইংল্যান্ডের মোকাবেলা করবে নিউজিল্যান্ড। সপ্তম টি-২০ বিশ্বকাপের প্রথম সেমিফাইনালে আজ আবুধাবীর শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে রাত ৮টায় মুখোমুখি হবে দুই দল। ইংল্যান্ডের জন্য এটা তৃতীয়বারের মত ফাইনালে ওঠার সুযোগ, অন্যদিকে নিউজিল্যান্ডের জন্য প্রথম।

পরিসংখ্যানে দুই দলের মুখোমুখিতে জয়ের পাল্লা প্রায় সমানে সমান। ২০১৬ সালের টিÑ২০ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের পর ক্রিকেটের ছোটো ফরম্যাটে ছয়বারের সাক্ষাতে দুই দলেরই জয় তিনটি করে। আবার টি-২০ ফরম্যাটে এ পর্যন্ত ২১ বারের লড়াইয়ে ইংল্যান্ডের ১২টি জয়ের বিপরীতে কিউইরা জিতেছে ৭ বার। ক্রিকেটের বৈশ্বিক আসরে পাঁচবারের সাক্ষাতে ইংল্যান্ডের তিনটি জয়ের বিপরীতে নিউজিল্যান্ডের জয় দুটো।

চলতি আসরের সুপার টুয়েলভে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে পরাজয়ের বিপরীতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, অস্ট্রেলিয়া, শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশের বিপক্ষে দাপুটে জয়ে সেমিফাইনালে ওঠে ইংলিশরা। সুপার টুয়েলভে ইংল্যান্ডের মতই চারটি জয়ের বিপরীতে কিউইদের পরাজয় এক ম্যাচে, পাকিস্তানের কাছে। সবকিছুর পরও চলতি আসরে ইংল্যান্ড রয়েছে দূর্দান্ত ফর্মে। সুপার টুয়েলভে দাপট দেখানো একাদশের বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার ইনজুরির কবলে পড়লে স্কোয়াডে ম্যাচ জেতানো ক্রিকেটারের অভাব নেই। আবারও চলতি আসরে নিউজিল্যান্ড দলও ধারাবাহিকতার স্বাক্ষর রেখেছে। সুপার টুয়েলভের শেষ ম্যাচে দক্ষিন আফ্রিকার কাছে ইংল্যান্ড দল পরাজিত হয়েছে। যার অর্থ হলো ইংলিশরা অজেয় কোনো শক্তি নয়। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ম্যাচে পায়ের মাংশপেশীতে টান পড়েছে জেসন রয়ের। এটা ইংল্যান্ডের জন্য বড় রকমের ধাক্কা। চলতি টুর্নামেন্টে জস বাটলারের সাথে জেসন রয়ের উদ্বোধনী জুটি প্রতিপক্ষ বোলিং ডিপার্টমেন্টের জন্য আতঙ্কের কারণ হয়ে উঠেছিলো। জেসন রয় একাদশ থেকে ছিটকে পড়ার কারণে জস বাটলারের সাথে জনি বেয়ারস্টোকে ইনিংস উদ্বোধনে দেখা যেতে পারে। মিডল অর্ডারের শক্তি বাড়াতে একাদশে ঠাঁই পেতে পারেন স্যাম বিলিংস। ইংল্যান্ডের জন্য আশার কথা হলো দলের প্রায় প্রতিটা ব্যাটারই সুপার টুয়েলভে ক্রিজে নেমে ধারাবাহিকতার স্বাক্ষর রেখেছেন।

ব্যাটিং লাইন আপে জেসন রয়ের অনুপস্থিতির মতই ইংলিশরা বোলিং ডিপার্টমেন্টে পাচ্ছেনা টাইমাল মিলসকে। উরুর ইনজুরিতে পড়েছেন তিনি। ডেথ ওভারে দূর্দান্ত বোলিং করছিলেন মিলস। তার অনুপস্থিতির সুযোগ নেয়ার চেষ্টা করবে কিউই ব্যাটিং ডিপার্টমেন্ট। সেক্ষেত্রে দুই স্পিনার মইন আলী ও আদিল রশীদের কাছ থেকে ভালো কিছু আশা করবে ইংল্যান্ডের টিম ম্যানেজমেন্ট।

কিউই ব্যাটাররাও আছেন ফর্মে। ওপেনার মার্টিন গাপটিল ও ড্যারিল মিচেল ক্রিজে টিকে গেলে নিউজিল্যান্ড হয়তো দুর্ভাগ্যের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হবে। অধিনায়ক কেইন উইলয়ামসনও চাইবেন দলের সেমিফাইনাল জয়ে অবদান রাখতে।

চলতি আসরের তিনটি ভেন্যুর মধ্যে আবুধাবীর এই ভেনুতেই রান উঠছে সবচেয়ে বেশী। নিউজিল্যান্ডের ব্যর্থতার বৃত্ত ভেঙে বেরিয়ে আসার এই লড়াইটাকে ইংলিশরা সহজে ছেড়ে দেবেনা। যার অর্থ হলো আজ ব্যাটে-বলে দারুণ একটা ম্যাচ উপভোগ করতে যাচ্ছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা।

বুধবার, ১০ নভেম্বর ২০২১ , ২৫ কার্তিক ১৪২৮ ৪ রবিউস সানি ১৪৪৩

আজ প্রথম সেমিফাইনাল

ইংল্যান্ডের তৃতীয় ও নিউজিল্যান্ডের প্রথম ফাইনালে ওঠার সুযোগ

সংবাদ স্পোর্টস ডেস্ক

image

বিশ্বকাপের আসরে ইংল্যান্ড-নিউজিল্যান্ড লড়াই মানেই কিউইদের স্বপ্ন ভঙ্গের গল্প। যে গল্পটার শুরু ২০১৬ সালের টিÑ২০ বিশ্বকাপে। সেবার সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের কাছে পরাজয়ে স্বপ্নভঙ্গ হয় নিউজিল্যান্ডের। ২০১৯ সালের ওডিআই বিশ্বকাপের ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের পরাজয়টা আরোও করুণ। টাই হওয়া ম্যাচের সুপার ওভারে শুধুমাত্র বাউন্ডারীর হিসেবের গোলমালে ইংল্যান্ডের কাছে পরাজয়ে শিরোপা হাতছাড়া হয় ব্ল্যাক ক্যাপসদের। ২০১৬ সালের টিÑ২০ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের পর আবারো সেমিতে ইংল্যান্ডের মোকাবেলা করবে নিউজিল্যান্ড। সপ্তম টি-২০ বিশ্বকাপের প্রথম সেমিফাইনালে আজ আবুধাবীর শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে রাত ৮টায় মুখোমুখি হবে দুই দল। ইংল্যান্ডের জন্য এটা তৃতীয়বারের মত ফাইনালে ওঠার সুযোগ, অন্যদিকে নিউজিল্যান্ডের জন্য প্রথম।

পরিসংখ্যানে দুই দলের মুখোমুখিতে জয়ের পাল্লা প্রায় সমানে সমান। ২০১৬ সালের টিÑ২০ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের পর ক্রিকেটের ছোটো ফরম্যাটে ছয়বারের সাক্ষাতে দুই দলেরই জয় তিনটি করে। আবার টি-২০ ফরম্যাটে এ পর্যন্ত ২১ বারের লড়াইয়ে ইংল্যান্ডের ১২টি জয়ের বিপরীতে কিউইরা জিতেছে ৭ বার। ক্রিকেটের বৈশ্বিক আসরে পাঁচবারের সাক্ষাতে ইংল্যান্ডের তিনটি জয়ের বিপরীতে নিউজিল্যান্ডের জয় দুটো।

চলতি আসরের সুপার টুয়েলভে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে পরাজয়ের বিপরীতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, অস্ট্রেলিয়া, শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশের বিপক্ষে দাপুটে জয়ে সেমিফাইনালে ওঠে ইংলিশরা। সুপার টুয়েলভে ইংল্যান্ডের মতই চারটি জয়ের বিপরীতে কিউইদের পরাজয় এক ম্যাচে, পাকিস্তানের কাছে। সবকিছুর পরও চলতি আসরে ইংল্যান্ড রয়েছে দূর্দান্ত ফর্মে। সুপার টুয়েলভে দাপট দেখানো একাদশের বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার ইনজুরির কবলে পড়লে স্কোয়াডে ম্যাচ জেতানো ক্রিকেটারের অভাব নেই। আবারও চলতি আসরে নিউজিল্যান্ড দলও ধারাবাহিকতার স্বাক্ষর রেখেছে। সুপার টুয়েলভের শেষ ম্যাচে দক্ষিন আফ্রিকার কাছে ইংল্যান্ড দল পরাজিত হয়েছে। যার অর্থ হলো ইংলিশরা অজেয় কোনো শক্তি নয়। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ম্যাচে পায়ের মাংশপেশীতে টান পড়েছে জেসন রয়ের। এটা ইংল্যান্ডের জন্য বড় রকমের ধাক্কা। চলতি টুর্নামেন্টে জস বাটলারের সাথে জেসন রয়ের উদ্বোধনী জুটি প্রতিপক্ষ বোলিং ডিপার্টমেন্টের জন্য আতঙ্কের কারণ হয়ে উঠেছিলো। জেসন রয় একাদশ থেকে ছিটকে পড়ার কারণে জস বাটলারের সাথে জনি বেয়ারস্টোকে ইনিংস উদ্বোধনে দেখা যেতে পারে। মিডল অর্ডারের শক্তি বাড়াতে একাদশে ঠাঁই পেতে পারেন স্যাম বিলিংস। ইংল্যান্ডের জন্য আশার কথা হলো দলের প্রায় প্রতিটা ব্যাটারই সুপার টুয়েলভে ক্রিজে নেমে ধারাবাহিকতার স্বাক্ষর রেখেছেন।

ব্যাটিং লাইন আপে জেসন রয়ের অনুপস্থিতির মতই ইংলিশরা বোলিং ডিপার্টমেন্টে পাচ্ছেনা টাইমাল মিলসকে। উরুর ইনজুরিতে পড়েছেন তিনি। ডেথ ওভারে দূর্দান্ত বোলিং করছিলেন মিলস। তার অনুপস্থিতির সুযোগ নেয়ার চেষ্টা করবে কিউই ব্যাটিং ডিপার্টমেন্ট। সেক্ষেত্রে দুই স্পিনার মইন আলী ও আদিল রশীদের কাছ থেকে ভালো কিছু আশা করবে ইংল্যান্ডের টিম ম্যানেজমেন্ট।

কিউই ব্যাটাররাও আছেন ফর্মে। ওপেনার মার্টিন গাপটিল ও ড্যারিল মিচেল ক্রিজে টিকে গেলে নিউজিল্যান্ড হয়তো দুর্ভাগ্যের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হবে। অধিনায়ক কেইন উইলয়ামসনও চাইবেন দলের সেমিফাইনাল জয়ে অবদান রাখতে।

চলতি আসরের তিনটি ভেন্যুর মধ্যে আবুধাবীর এই ভেনুতেই রান উঠছে সবচেয়ে বেশী। নিউজিল্যান্ডের ব্যর্থতার বৃত্ত ভেঙে বেরিয়ে আসার এই লড়াইটাকে ইংলিশরা সহজে ছেড়ে দেবেনা। যার অর্থ হলো আজ ব্যাটে-বলে দারুণ একটা ম্যাচ উপভোগ করতে যাচ্ছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা।