খোর্দ্দ বাউসা গ্রামে ভাড়া বাসায় ফিরছে অতিথি পাখিরা

রাজশাহীর বাঘায় সেই ভাড়া করা বাসাতে পাখি ফিরতে শুরু করেছে। খোর্দ্দ বাউসা গ্রামের আমবাগানে এ বছরও অতিথি পাখিরা ফিরছে। ছোট্ট গ্রাম খোর্দ্দ বাউসা আঙিনার পাশ দিয়ে যেতে গেলে দেখা যায় গাছগুলোর ডালে ডালে পাখিদের বাসা। কোন কোনটি থেকে হলুদ ঠোঁট বের করে পক্ষীছানা খাবার চাইছে। গাছের ওপরে বাসাগুলো ছাড়িয়ে ওই মেঘের কাছাকাছি বিমানের মতো চক্কর দিচ্ছে কিছু শামুকখোল, পানকৌড়ি ও নিশি বক; কেউ ছুটছে খাবার সংগ্রহ করতে, কেউ বা গাছের ছোট ছোট ডাল ছিঁড়ে আনছে বাসা বানানোর জন্য। আবার কেউবা তৈরি করা বাসায় ও গাছের ডালে বসে খুনসুটি করছে। প্রতিবছরই এই পাখিরা ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে এসে গ্রামের বড় বড় আম গাছে বাসা বাসা বাঁধে। তাদের সন্তানসন্তুতি হয়। ওই বড় গাছগুলোই তাদের ঠিকানা হয়ে ওঠে। তবে গ্রাম কখনওই পাখিশূন্য হয় না। কিছু পাখি উড়ে যেতে ভুলে যায়, কিংবা হয়তো বাঁধা পড়ে যায় খোর্দ্দ বাউসা গ্রামের টানে।

শীতের শুরুতে এসে যায় চেনা জলাশয়ে বা নতুন জঙ্গলে। প্রতিবছরই তারা দূরদূরান্ত থেকে আমাদের দেশে বিভিন্ন এলাকায় অতিথি হয়ে আসে। এ বছরেও আসতে শুরু করেছে। আশেপাশে কোনও বড় দিঘির ভরসাতেও যে সেই পরিযায়ীরা এসেছে, তাও নয়। আর পাঁচটি প্রত্যন্ত গ্রামের মতোই ধান জমির পাশে মাটির ঘরবাড়ি নিয়ে সবুজে মোড়াছোট্ট গ্রাম খোর্দ্দ বাউসা গ্রামটি। চোখেপড়ার মতো বড় বড় আম, জাম, কাঁঠালের গাছ আছে এখানে। উঁচু উঁচু ঝাঁকড়া গাছের ছায়ায় গ্রামের সাদামাঠা ঘরগেরস্তি। আর এসব গাছের মাথাতেই বাসা বেঁধেছে পরিযায়ী পাখি শামুকখোল।

কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে রাজশাহীর জেলা প্রশাসককে পাখির স্থায়ী আবাস গড়ে তোলার জন্য প্রস্তাবনা অনুযায়ী, প্রতিবছর ৩ লাখ ১৩ হাজার টাকা আম বাগান মালিকদের ক্ষতিপূরণ দিয়ে পাখির জন্য বাসা ভাড়া করা হয়েছে। সেই ভাড়া বাসাতে পাখি আসতে শুরু করেছে। স্থানীয় আম চাষী মনজুর রহমান জানান, ৩৮টি আমগাছের মূল্য নির্ধারণ করে ভাড়া নেয়া হয়েছে। বর্তমানে পাখি আবারও ফিরতে শুরু করেছে। বাঘা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, জেলা প্রশাসকের নির্দেশে আমি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গাছের হিসাব অনুযায়ী বাগান মালিকদের হাতে ক্ষতির টাকা দেয়া হয়েছে। এই বাগানে পাখি আসতে শুরু করেছে। কয়েকবছর ধরে এই বাগানে দল বেঁধে শামুকখোল পাখিরা বাসা বেঁধে বাচ্চা ফোটায়। বাচ্চা উড়তে শিখলে তারা চলে যায় এই মেস বাসা থেকে।

বুধবার, ১০ নভেম্বর ২০২১ , ২৫ কার্তিক ১৪২৮ ৪ রবিউস সানি ১৪৪৩

খোর্দ্দ বাউসা গ্রামে ভাড়া বাসায় ফিরছে অতিথি পাখিরা

জেলা বার্তা পরিবেশক, রাজশাহী

image

রাজশাহীর বাঘায় সেই ভাড়া করা বাসাতে পাখি ফিরতে শুরু করেছে। খোর্দ্দ বাউসা গ্রামের আমবাগানে এ বছরও অতিথি পাখিরা ফিরছে। ছোট্ট গ্রাম খোর্দ্দ বাউসা আঙিনার পাশ দিয়ে যেতে গেলে দেখা যায় গাছগুলোর ডালে ডালে পাখিদের বাসা। কোন কোনটি থেকে হলুদ ঠোঁট বের করে পক্ষীছানা খাবার চাইছে। গাছের ওপরে বাসাগুলো ছাড়িয়ে ওই মেঘের কাছাকাছি বিমানের মতো চক্কর দিচ্ছে কিছু শামুকখোল, পানকৌড়ি ও নিশি বক; কেউ ছুটছে খাবার সংগ্রহ করতে, কেউ বা গাছের ছোট ছোট ডাল ছিঁড়ে আনছে বাসা বানানোর জন্য। আবার কেউবা তৈরি করা বাসায় ও গাছের ডালে বসে খুনসুটি করছে। প্রতিবছরই এই পাখিরা ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে এসে গ্রামের বড় বড় আম গাছে বাসা বাসা বাঁধে। তাদের সন্তানসন্তুতি হয়। ওই বড় গাছগুলোই তাদের ঠিকানা হয়ে ওঠে। তবে গ্রাম কখনওই পাখিশূন্য হয় না। কিছু পাখি উড়ে যেতে ভুলে যায়, কিংবা হয়তো বাঁধা পড়ে যায় খোর্দ্দ বাউসা গ্রামের টানে।

শীতের শুরুতে এসে যায় চেনা জলাশয়ে বা নতুন জঙ্গলে। প্রতিবছরই তারা দূরদূরান্ত থেকে আমাদের দেশে বিভিন্ন এলাকায় অতিথি হয়ে আসে। এ বছরেও আসতে শুরু করেছে। আশেপাশে কোনও বড় দিঘির ভরসাতেও যে সেই পরিযায়ীরা এসেছে, তাও নয়। আর পাঁচটি প্রত্যন্ত গ্রামের মতোই ধান জমির পাশে মাটির ঘরবাড়ি নিয়ে সবুজে মোড়াছোট্ট গ্রাম খোর্দ্দ বাউসা গ্রামটি। চোখেপড়ার মতো বড় বড় আম, জাম, কাঁঠালের গাছ আছে এখানে। উঁচু উঁচু ঝাঁকড়া গাছের ছায়ায় গ্রামের সাদামাঠা ঘরগেরস্তি। আর এসব গাছের মাথাতেই বাসা বেঁধেছে পরিযায়ী পাখি শামুকখোল।

কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে রাজশাহীর জেলা প্রশাসককে পাখির স্থায়ী আবাস গড়ে তোলার জন্য প্রস্তাবনা অনুযায়ী, প্রতিবছর ৩ লাখ ১৩ হাজার টাকা আম বাগান মালিকদের ক্ষতিপূরণ দিয়ে পাখির জন্য বাসা ভাড়া করা হয়েছে। সেই ভাড়া বাসাতে পাখি আসতে শুরু করেছে। স্থানীয় আম চাষী মনজুর রহমান জানান, ৩৮টি আমগাছের মূল্য নির্ধারণ করে ভাড়া নেয়া হয়েছে। বর্তমানে পাখি আবারও ফিরতে শুরু করেছে। বাঘা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, জেলা প্রশাসকের নির্দেশে আমি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গাছের হিসাব অনুযায়ী বাগান মালিকদের হাতে ক্ষতির টাকা দেয়া হয়েছে। এই বাগানে পাখি আসতে শুরু করেছে। কয়েকবছর ধরে এই বাগানে দল বেঁধে শামুকখোল পাখিরা বাসা বেঁধে বাচ্চা ফোটায়। বাচ্চা উড়তে শিখলে তারা চলে যায় এই মেস বাসা থেকে।