কলকাতার বই মেলা ঘোষণা এবার থিম কান্ট্রি বাংলাদেশ

৪৫তম কলকাতা আন্তর্জাতিক বই মেলা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। গতকাল বইমেলার দিনক্ষণ ঘোষণা করেছে পশ্চিবঙ্গ রাজ্য সরকার। ভয়াবহ করোনা সংক্রমণের কারণে গতবছর কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলা আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। আর্থিকভাবে ক্ষতির শিকার হতে হয়েছিল প্রকাশকদের। বইপ্রেমীদেরও মন খারাপ ছিল। আগমী বছরের প্রথমদিকে আবার বইমেলার শুরু হওয়ার ঘোষণায় তাদের মধ্যে ফের খুশির হাওয়া বইতে শুরু করেছে।

এবারও ২০২২ সালের কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলার থিম হবে ‘কান্ট্রি বাংলাদেশ।’ ৩১ জানুয়ারি থেকে কলকাতা আন্তর্জাতিক এই বইমেলা শুরু হবে। একই সঙ্গে আগমী ৭ জানুয়ারি থেকে আবারও কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবও অনুষ্ঠিত হবে। যা চলবে আগমী ১৪ জানুয়ারি পর্যন্ত। ফলে আগামী জানুয়ারি মাসে জোড়া ‘উপহার’ রাজ্যবাসীর জন্য। কেননা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব ও বইমেলা- দুই বঙ্গের বাঙালির সংস্কৃতির সঙ্গে অতপ্রতোভাবে জড়িত। কিন্তু, করোনা সংক্রমণের জেরে গতবার কলকাতা আন্তর্জাতিক এই দুই উৎসবের আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। ফলে মন খারাপ ছিল সবার।

যাদের পরিচালনা ও আয়োজনে প্রতিবছর কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলা অনুষ্ঠিত হয় সেই আয়োজক সংস্থা পাবলিশার্স অ্যান্ড বুক সেলার্স গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক শুধাংসু শেখর দে ‘সংবাদ’কে বলেছেন, এ ব্যাপারে রাজ্য সরকারের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে ৪৫তম কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলার তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। গত বছর ৪৫তম কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলার আয়োজনের জন্য আমরা অনেক চেষ্টা করে ছিলাম কিন্তু কোভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারীর কারণে তা সম্ভব হয়নি। গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক শুধাংসু শেখর দে জানা ছিলাম, ‘চূড়ান্ত অনিশ্চয়তা সত্ত্বেও গত বছর বইমেলাটি অনুষ্ঠিত হওয়ার জন্য চেষ্টা করার কারণ ওই বছর মেলা আয়োজনের অন্য একটি তাৎপর্য ছিল। গতবারের মেলাটি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তার নামে উৎসর্গ হবে বলে পাশাপাশি ‘থিম কান্ট্রি’ হিসেবেও বাংলাদেশকে নির্বাচিত করা হয়েছিল। গত বছর ৪৪তম বই মেলার সমাপ্তি অনুষ্ঠানেই এই সংক্রান্ত ঘোষণা দেয়া হয়েছিল। পাশাপাশি, বিশ্বের ১৭টি দেশ এবং ভারতের অধিকাংশ রাজ্যের পুস্তক প্রকাশনা সংস্থার ওই মেলায় অংশগ্রহণ করার কথাও জানানো হয়েছিল, এমনটি বলেছেন শুধাংসু শেখর দে।

বইমেলার আয়োজক কমিটির সভাপতি ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায় জানান, আমরা আবার কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলা দুই বাংলার বইপ্রেমী ও প্রকাশনা সংস্থাগুলোকে উপহার দিতে যাচ্ছি। তিনি বলেন, বছরের শুরুতেই আবার কলকাতায় বইমেলা প্রাঙ্গণ মুখরিত হয়ে উঠবে।’

সাধারণ সম্পাদক শুধাংসু শেখর দে জানান, ২০২২-র শেষ সপ্তাহে ৪৫তম কলকাতা আন্তর্জাতিক বই মেলা অনুষ্ঠিত হওয়ার সরকারি অনুমোদন পাওয়ার পর গিল্ডের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রকাশকদের কাছে যোগাযোগ করা হয়েছে। অন্যান্য কাজগুলো আমদের দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে। আগমী ১২ নভেম্বর কলকাতা প্রেসক্লাবে এ ব্যাপারে একটি সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। ওই সাংবাদিক সম্মেলনে কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলার চূড়ান্ত কর্মপরিকল্পনা আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ৪৫তম আন্তর্জাতিক বইমেলায় যেসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল তার সব কিছুই এবারও বহাল থাকবে। ৪৫তম বইমেলা বঙ্গবন্ধুর নামে উৎসর্গ হবে এবং থিম দেশ গতবছরের মতো বাংলাদেশই থাকবে। বইমেলার সভাপতি ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায় বলেন, আগের বছরের সমস্ত সিদ্ধান্তকে সামনে রেখেই ৪৫তম বইমেলার জন্য আমাদের প্রস্তুতি অব্যাহত রয়েছে। কেননা কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলার সঙ্গে পুস্তকপ্রেমী ও দুই বাংলার মানুষের আবেগ প্রবলভাবে জড়িয়ে রয়েছে।

বুধবার, ১০ নভেম্বর ২০২১ , ২৫ কার্তিক ১৪২৮ ৪ রবিউস সানি ১৪৪৩

কলকাতার বই মেলা ঘোষণা এবার থিম কান্ট্রি বাংলাদেশ

দীপক মুখার্জী, কলকাতা

৪৫তম কলকাতা আন্তর্জাতিক বই মেলা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। গতকাল বইমেলার দিনক্ষণ ঘোষণা করেছে পশ্চিবঙ্গ রাজ্য সরকার। ভয়াবহ করোনা সংক্রমণের কারণে গতবছর কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলা আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। আর্থিকভাবে ক্ষতির শিকার হতে হয়েছিল প্রকাশকদের। বইপ্রেমীদেরও মন খারাপ ছিল। আগমী বছরের প্রথমদিকে আবার বইমেলার শুরু হওয়ার ঘোষণায় তাদের মধ্যে ফের খুশির হাওয়া বইতে শুরু করেছে।

এবারও ২০২২ সালের কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলার থিম হবে ‘কান্ট্রি বাংলাদেশ।’ ৩১ জানুয়ারি থেকে কলকাতা আন্তর্জাতিক এই বইমেলা শুরু হবে। একই সঙ্গে আগমী ৭ জানুয়ারি থেকে আবারও কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবও অনুষ্ঠিত হবে। যা চলবে আগমী ১৪ জানুয়ারি পর্যন্ত। ফলে আগামী জানুয়ারি মাসে জোড়া ‘উপহার’ রাজ্যবাসীর জন্য। কেননা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব ও বইমেলা- দুই বঙ্গের বাঙালির সংস্কৃতির সঙ্গে অতপ্রতোভাবে জড়িত। কিন্তু, করোনা সংক্রমণের জেরে গতবার কলকাতা আন্তর্জাতিক এই দুই উৎসবের আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। ফলে মন খারাপ ছিল সবার।

যাদের পরিচালনা ও আয়োজনে প্রতিবছর কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলা অনুষ্ঠিত হয় সেই আয়োজক সংস্থা পাবলিশার্স অ্যান্ড বুক সেলার্স গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক শুধাংসু শেখর দে ‘সংবাদ’কে বলেছেন, এ ব্যাপারে রাজ্য সরকারের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে ৪৫তম কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলার তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। গত বছর ৪৫তম কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলার আয়োজনের জন্য আমরা অনেক চেষ্টা করে ছিলাম কিন্তু কোভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারীর কারণে তা সম্ভব হয়নি। গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক শুধাংসু শেখর দে জানা ছিলাম, ‘চূড়ান্ত অনিশ্চয়তা সত্ত্বেও গত বছর বইমেলাটি অনুষ্ঠিত হওয়ার জন্য চেষ্টা করার কারণ ওই বছর মেলা আয়োজনের অন্য একটি তাৎপর্য ছিল। গতবারের মেলাটি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তার নামে উৎসর্গ হবে বলে পাশাপাশি ‘থিম কান্ট্রি’ হিসেবেও বাংলাদেশকে নির্বাচিত করা হয়েছিল। গত বছর ৪৪তম বই মেলার সমাপ্তি অনুষ্ঠানেই এই সংক্রান্ত ঘোষণা দেয়া হয়েছিল। পাশাপাশি, বিশ্বের ১৭টি দেশ এবং ভারতের অধিকাংশ রাজ্যের পুস্তক প্রকাশনা সংস্থার ওই মেলায় অংশগ্রহণ করার কথাও জানানো হয়েছিল, এমনটি বলেছেন শুধাংসু শেখর দে।

বইমেলার আয়োজক কমিটির সভাপতি ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায় জানান, আমরা আবার কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলা দুই বাংলার বইপ্রেমী ও প্রকাশনা সংস্থাগুলোকে উপহার দিতে যাচ্ছি। তিনি বলেন, বছরের শুরুতেই আবার কলকাতায় বইমেলা প্রাঙ্গণ মুখরিত হয়ে উঠবে।’

সাধারণ সম্পাদক শুধাংসু শেখর দে জানান, ২০২২-র শেষ সপ্তাহে ৪৫তম কলকাতা আন্তর্জাতিক বই মেলা অনুষ্ঠিত হওয়ার সরকারি অনুমোদন পাওয়ার পর গিল্ডের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রকাশকদের কাছে যোগাযোগ করা হয়েছে। অন্যান্য কাজগুলো আমদের দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে। আগমী ১২ নভেম্বর কলকাতা প্রেসক্লাবে এ ব্যাপারে একটি সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। ওই সাংবাদিক সম্মেলনে কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলার চূড়ান্ত কর্মপরিকল্পনা আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ৪৫তম আন্তর্জাতিক বইমেলায় যেসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল তার সব কিছুই এবারও বহাল থাকবে। ৪৫তম বইমেলা বঙ্গবন্ধুর নামে উৎসর্গ হবে এবং থিম দেশ গতবছরের মতো বাংলাদেশই থাকবে। বইমেলার সভাপতি ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায় বলেন, আগের বছরের সমস্ত সিদ্ধান্তকে সামনে রেখেই ৪৫তম বইমেলার জন্য আমাদের প্রস্তুতি অব্যাহত রয়েছে। কেননা কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলার সঙ্গে পুস্তকপ্রেমী ও দুই বাংলার মানুষের আবেগ প্রবলভাবে জড়িয়ে রয়েছে।