চাঁদপুরের সাবেক চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে হাইকোর্টে তলব

এক কিশোর আসামিকে নির্যাতনের পরও পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়ায় চাঁদপুরের সাবেক চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, বর্তমানে বাগেরহাটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নূরে আলমকে তলব করেছে হাইকোর্ট। আগামী ২২ নভেম্বর সকালে তাকে হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। গতকাল বিচারপতি আবদুল হাকিম ও বিচারপতি ফাতেমা নজীবের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।

আদালতে কিশোর আসামির পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রিমি নাহরিন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সরোয়ার হোসেন বাপ্পী। কিশোর আসামির আইনজীবী ব্যারিস্টার রিমি নাহরিন বলেন, গত ১৪ মার্চ হাইকোর্টের আরেকটি বেঞ্চ ১৬ বছর বয়সী কিশোর এক আসামিকে পুলিশের নির্যাতনের কথা জেনেও পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করায় বিচারক মো. নূরে আলমের কাছে ব্যাখ্যা চান। আদালতের আদেশে বিচারক ব্যাখ্যা দাখিল করেন। মঙ্গলবার ওই কিশোর আসামির জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধির শুনানিকালে বিচারকের ব্যাখ্যা হাইকোর্টের নজরে আসে। তার ব্যাখ্যা আদালতের কাছে সন্তোষজনক মনে হয়নি। এ কারণে তলব করেছেন।

এর আগে ১৪ মার্চ চাঁদপুর আদালতের বিচারক নূরে আলমকে শোকজ করে হাইকোর্ট। চার সপ্তাহের মধ্যে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দাখিল করতে বলা হয়। একইসঙ্গে মামলার কিশোর আসামিকে জামিন দেয় আদালত। বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।

মামলার বিবরণে জানা যায়, দামি মোবাইল ফোনকে কেন্দ্র করে চাঁদপুরের শিক্ষার্থী সোহেল রানাকে তার বন্ধু ও স্বজনরা ২০১৯ সালের ১৯ আগস্ট হত্যা করে। পরে অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে রানার ভাই মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রত্যেকেই স্বীকার করে, মোবাইলের জন্য তারাই সোহেলকে খুন করেছে।

এ মামলায় প্রধান আসামি হাইকোর্টে জামিন নিতে আসে। জামিন শুনানির সময় সেখানেই দেখা যায় আসামির বয়স ১৬ বছর। কিন্তু অভিযোগপত্রে দেয়া হয়েছে ১৯ বছর, যা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে আদালত। সেইসঙ্গে আদালত পুলিশি নির্যাতনের পরও জবানবন্দি রেকর্ড করায় ওই বিচারককে শোকজ করে।

আদালত বলেন, কোন বিচারকের দায়িত্ব জবানবন্দি নেয়ার সময় নির্যাতনের চিহ্ন দেখা গেলে পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া। পুলিশের বিরুদ্ধে তদন্ত না করে জবানবন্দি রেকর্ড করার ঘটনায় ম্যাজিস্ট্রেটকে শোকজ করা হলো। একইসঙ্গে আসামিকে জামিন দিয়ে তার বয়স নির্ধারণের নির্দেশ দেয় আদালত।

বুধবার, ১০ নভেম্বর ২০২১ , ২৫ কার্তিক ১৪২৮ ৪ রবিউস সানি ১৪৪৩

চাঁদপুরের সাবেক চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে হাইকোর্টে তলব

আদালত বার্তা পরিবেশক

এক কিশোর আসামিকে নির্যাতনের পরও পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়ায় চাঁদপুরের সাবেক চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, বর্তমানে বাগেরহাটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নূরে আলমকে তলব করেছে হাইকোর্ট। আগামী ২২ নভেম্বর সকালে তাকে হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। গতকাল বিচারপতি আবদুল হাকিম ও বিচারপতি ফাতেমা নজীবের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।

আদালতে কিশোর আসামির পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রিমি নাহরিন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সরোয়ার হোসেন বাপ্পী। কিশোর আসামির আইনজীবী ব্যারিস্টার রিমি নাহরিন বলেন, গত ১৪ মার্চ হাইকোর্টের আরেকটি বেঞ্চ ১৬ বছর বয়সী কিশোর এক আসামিকে পুলিশের নির্যাতনের কথা জেনেও পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করায় বিচারক মো. নূরে আলমের কাছে ব্যাখ্যা চান। আদালতের আদেশে বিচারক ব্যাখ্যা দাখিল করেন। মঙ্গলবার ওই কিশোর আসামির জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধির শুনানিকালে বিচারকের ব্যাখ্যা হাইকোর্টের নজরে আসে। তার ব্যাখ্যা আদালতের কাছে সন্তোষজনক মনে হয়নি। এ কারণে তলব করেছেন।

এর আগে ১৪ মার্চ চাঁদপুর আদালতের বিচারক নূরে আলমকে শোকজ করে হাইকোর্ট। চার সপ্তাহের মধ্যে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দাখিল করতে বলা হয়। একইসঙ্গে মামলার কিশোর আসামিকে জামিন দেয় আদালত। বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।

মামলার বিবরণে জানা যায়, দামি মোবাইল ফোনকে কেন্দ্র করে চাঁদপুরের শিক্ষার্থী সোহেল রানাকে তার বন্ধু ও স্বজনরা ২০১৯ সালের ১৯ আগস্ট হত্যা করে। পরে অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে রানার ভাই মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রত্যেকেই স্বীকার করে, মোবাইলের জন্য তারাই সোহেলকে খুন করেছে।

এ মামলায় প্রধান আসামি হাইকোর্টে জামিন নিতে আসে। জামিন শুনানির সময় সেখানেই দেখা যায় আসামির বয়স ১৬ বছর। কিন্তু অভিযোগপত্রে দেয়া হয়েছে ১৯ বছর, যা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে আদালত। সেইসঙ্গে আদালত পুলিশি নির্যাতনের পরও জবানবন্দি রেকর্ড করায় ওই বিচারককে শোকজ করে।

আদালত বলেন, কোন বিচারকের দায়িত্ব জবানবন্দি নেয়ার সময় নির্যাতনের চিহ্ন দেখা গেলে পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া। পুলিশের বিরুদ্ধে তদন্ত না করে জবানবন্দি রেকর্ড করার ঘটনায় ম্যাজিস্ট্রেটকে শোকজ করা হলো। একইসঙ্গে আসামিকে জামিন দিয়ে তার বয়স নির্ধারণের নির্দেশ দেয় আদালত।