আগের কার্যদিবসের মতো গতকাল বড় উত্থান হয়েছে শেয়ারবাজারে। এদিন শেয়ারবাজারের সব সূচক বেড়েছে। সূচকের সঙ্গে বেড়ে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দর এবং টাকার পরিমাণে লেনদেনও। এদিন প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক শতাধিক পয়েন্ট এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সাড়ে ৩ শত পয়েন্ট বেড়েছে। সূচকে বড় উত্থান হলেও লেনদেনে শ্লথ গতি ছিল শেয়ারবাজারে।

গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১১৪.০৯ পয়েন্ট বা ১.৬৬ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৯৮২.১৮ পয়েন্টে। ডিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ২৪.০৮ পয়েন্ট বা ১.৬৫ শতাংশ এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৪৪.৭১ পয়েন্ট বা ১.৭০ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে এক হাজার ৪৭৮.৮৯ পয়েন্টে এবং দুই হাজার ৬৬০.৭৪ পয়েন্টে।

ডিএসইতে গতকাল এক হাজার ১৬৩ কোটি ৭৮ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে যা আগের কার্যদিবস থেকে ১৫৬ কোটি ৩ লাখ টাকা বেশি। আগের কার্যদিবস লেনদেন হয়েছিল এক হাজার ৭ কোটি ৭৫ লাখ টাকার।

ডিএসইতে গতকাল ৩৭৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার দর বেড়েছে ৩০১টির বা ৮০.২৭ শতাংশের, শেয়ার দর কমেছে ৪৩টির বা ১১.৪৭ শতাংশের এবং ৩১টির বা ৮.২৬ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত রয়েছে।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৩৬০.৫৫ পয়েন্ট বা ১.৭৯ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ হাজার ৪৫৮.০৬ পয়েন্টে। সিএসইতে গতকাল ২৮২টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২২৮টির দর বেড়েছে, কমেছে ২৯টির আর ২৫টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে ৩৪ কোটি ২৯ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে।

গতকাল ডিএসই’র ব্লক মার্কেটে ৩৬টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব কোম্পানির ১২৭ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিগুলোর ৯১ লাখ ৮০ হাজার ৯৮৬টি শেয়ার ৬৪ বার হাত বদলের মাধ্যমে ১২৬ কোটি ৯৬ লাখ ৯০ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে।

কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থাৎ ৮৯ কোটি ৮০ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৭ কোটি ৪১ লাখ ৭০ হাজার টাকার বেক্সিমকো ফার্মার এবং তৃতীয় সর্বোচ্চ ৩ কোটি ৬৮ লাখ ৭৯ হাজার টাকার লেনদেন হয়েছে কাট্টালি টেক্সটাইলের।

গতকাল ডিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৪৩টির বা ১১.৪৭ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর কমেছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে ডরিন পাওয়ারের শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের অনাগ্রহ ছিল সবচেয়ে বেশি।

আগের কার্যদিবস ডরিন পাওয়ারের শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ৭৪.৮০ টাকায়। গতকাল লেনদেন শেষে কোম্পানিটির শেয়ারের ক্লোজিং দর দাঁড়িয়েছে ৬৯.১০ টাকায়। অর্থাৎ কোম্পানিটির শেয়ার দর ৫.৭০ টাকা বা ৭.৬২ শতাংশ কমেছে। এর মাধ্যমে ডরিন পাওয়ার ডিএসইর টপটেন লুজার তালিকার শীর্ষে উঠে এসেছে।

এদিন ডিএসইতে টপটেন লুজার তালিকায় উঠে আসা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে হামিদ ফেব্রিক্সের ২.৯৪ শতাংশ, ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্সের ২.৮৯ শতাংশ, ইস্টার্ন কেবলসের ২.৭২ শতাংশ, ফরচুনের ২.৬৪ শতাংশ, আইসিবি এএমসিএল ব্যাংক লিমিটেড ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ২.৪৬ শতাংশ, মেঘনা কনডেন্স মিল্কের ২.৪৫ শতাংশ, পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ২.৩০ শতাংশ, পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্সের ২.১৩ শতাংশ এবং জিবিবি পাওয়ারের শেয়ার দর ১.৯৯ শতাংশ কমেছে।

গতকাল ডিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৩০১টির বা ৮০.২৭ শতাংশের শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ ছিল সবচেয়ে বেশি।

আগের কার্যদিবস সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ১৩.৩০ টাকায়। গতকাল লেনদেন শেষে কোম্পানিটির শেয়ারের ক্লোজিং দর দাঁড়িয়েছে ১৪.৬০ টাকায়। অর্থাৎ কোম্পানিটির শেয়ার দর ১.৩০ টাকা বা ৯.৭৭ শতাংশ বেড়েছে। এর মাধ্যমে সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্স ডিএসইর টপটেন গেইনার তালিকার শীর্ষে উঠে এসেছে।

এদিন ডিএসইতে টপটেন গেইনার তালিকায় উঠে আসা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে ইসলামিক ফাইন্যান্সের ৯.৭১ শতাংশ, অ্যাডভেন্ট ফার্মার ৯.৭০ শতাংশ, ডমিনেজ স্টিলের ৯.৬৭ শতাংশ, আলিফ ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের ৯.৫৯ শতাংশ, আমান ফিডের ৯.২৫ শতাংশ, ইউনিয়ন ক্যাপিটালের ৮.৯১ শতাংশ, এডিএন টেলিকমের ৮.৫৯ শতাংশ, ডেল্টা স্পিনার্সের ৮ শতাংশ এবং ফার কেমিক্যালের শেয়ার দর ৭.১৪ শতাংশ বেড়েছে।