ঢাকা মহানগরীতে তিনদিনের মধ্যে সিটিংয়ের নামে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধের নির্দেশ

ঢাকা মহানগরীতে সিটিং সার্ভিসের নামে দুই-তিন গুণ ভাড়া আদায় সম্পূর্ণ বেআইনি। আগামী রোববারের মধ্যে সিটিং ও গেইটলক সার্ভিসসহ যত প্রকার বেআইনি সার্ভিস আছে তা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি। আর বিআরটিএ’র চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, ‘সিটিং ও গেইটলক সার্ভিসের বিরুদ্ধে আগামী রোববার থেকে অভিযান শুরু হবে।’

চার বছর আগে ২০১৭ সালে ‘ঢাকায় সিটিং সার্ভিস থাকবে কি না’ এ বিষয়ে একটি কমিটি গঠন করেছিল সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। ওই কমিটি সিটিং সার্ভিস ও অন্যান্য বাস সার্ভিস বিষয়ে ২৬ দফা সুপারিশ করে একটি প্রতিবেদন সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছিল। কিন্তু আজ পর্যন্ত সেই সুপারিশ বাস্তবায়ন হয়নি। বরং সিটিং সার্ভিসের যাত্রীদের কাছ অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ার পদ্ধতি আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।

এখন আবার নতুন নিয়ম চালু করেছে পরিবহন মালিকরা। তা হলো ওয়েবিলের মাধ্যমে যাত্রী চেকিং করা। ওয়েবিলের কারণে যাত্রীদের কাছে থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করতে হয় বলে জানান বাস চালকরা।

রাজধানীর গুলিস্তান এলাকায় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ট্রান্স সিলভা পরিবহন চালক সংবাদকে বলেন, ‘যাত্রাবাড়ী থেকে মিরপুর পর্যন্ত ৪-৫টি চেকিং করে মালিক পক্ষ। চেকিং হিসেবে তাদের টাকা বুঝিয়ে দিতে হয়। এক একটি চেক ১৫-২৫ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে মালিকরা।’ আর এই চেকিংয়ের কারণেই আমাদের বেশি ভাড়া নিতে হয় বলে জানান তিনি।

সিটিং সার্ভিস না রাখার বিষয়ে এখন আবার নতুনভাবে ঘোষণা দিয়েছে পরিবহন মালিক সমিতি। আগামী রোববারের মধ্যে যদি তা বন্ধ না হয় তাহলে সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) মাধ্যমে ওই বাস কোম্পানির রুট পারমিট বাতিলের সুপারিশ করা হবে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ।

গতকাল রাজধানীর বাংলামটরে সমিতির নিজস্ব কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, ‘তিন দিন পর ঢাকা মহানগর এলাকায় সিটিং সার্ভিস এবং গেটলক সার্ভিস থাকবে না। সিটিং সার্ভিসে কোন নিয়মনীতি নেই। তারা নিজের মতো করে যাত্রী পরিবহন করে। এতে ভোগান্তি হয় যাত্রীদের। তাই সিটিং বা গেটলক সার্ভিস থাকবে না।’ এ সময়ের পর কেউ সিটিং ও গেটলক সার্ভিসের নামে বাড়তি ভাড়া নিলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

চার বছরেও কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়ন করেনি বিআরটিএ

২০১৭ সালে সিটিং সার্ভিস পুনরায় চালু করে এই বিষয়ে করণীয় ঠিক করতে বিআরটিএ, মালিক-শ্রমিক সংগঠন, নাগরিক প্রতিনিধি ও পুলিশের সমন্বয়ে আট সদস্যের এই কমিটি গঠন করে বিআরটিএ। ২০১৭ সালে নভেম্বরে কিছু শর্ত পূরণের মাধ্যমে রাজধানী ঢাকার গণপরিবহনে ‘সিটিং সার্ভিস’ ব্যবস্থা চালু রাখার পক্ষেই পরামর্শ দিয়েছে সিটিং সার্ভিস বিষয়ে গঠিত কমিটি। শর্তের মধ্যে ছিল রাজধানীতে চলাচলকারী সব পরিবহনকে কিছু কোম্পানির অধীনে পরিচালনা করতে হবে। কোম্পানির কিছু বাস সিটিং আর কিছু হবে লোকাল। দুই শ্রেণীর বাসের রং হতে হবে আলাদা। সিটিং সার্ভিসে দাঁড়িয়ে যাত্রী পরিবহন করা যাবে না, স্টপেজ থাকবে কম।

ওই কমিটি ২৬ দফা সুপারিশসম্বলিত প্রতিবেদন সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছিল। ওই বছর এপ্রিলে সিটিং সার্ভিস বন্ধে অভিযান শুরুর পর পরিবহন মালিকরা বাস বন্ধ রেখে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করেছিল। ওই প্রেক্ষিতে ওই কমিটি গঠন করেছিল সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)।

এ বিষয়ে বিআরটিএ’র চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার সংবাদকে বলেন, ‘আগের কমিটি কি সুপারিশ দিয়েছিল তা এখন আমি বলতে পারবো না। এ বিষয়ে খোঁজ নিতে হবে। তবে সিটিং সার্ভিস ও গেইটলক সার্ভিসসহ অন্যান সার্ভিসের নামের যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নেয়া সম্পূর্ণ অন্যায়। এ বিষয়ে বিআরটিএ’র ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জেল-জরিমানা করা হবে।’ মালিক সমিতি আমাদের কাছ থেকে তিনদিনের সময় নিয়েছেন। আগামী রোববার থেকে এই অভিযান শুরু হবে বলে জানান তিনি।

সিটিংয়ের নামে ‘চিটিং’ বন্ধের দাবি যাত্রীদের

শিক্ষার্থীদের জন্য গণপরিবহনে অর্ধেক ভাড়া নিশ্চিত ও সিটিং সার্ভিসের নামে ‘চিটিং’ বন্ধসহ ৫ দফা দাবি জানিয়েছে যাত্রী অধিকার আন্দোলন। গতকাল রাজধানীর সায়েন্স ল্যাব মোড়ে এক মানববন্ধনে এ দাবি জানায় সংগঠনটি।

তাদের দাবিগুলো হলো- নগরী থেকে সিটিং সার্ভিস বিলুপ্ত ঘোষণা করতে হবে, ডিজেলের দাম বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে বাড়ানো পরিবহন ভাড়া পুনর্মূল্যায়ন করতে হবে। ফাঁকফোঁকড় না রেখে পরিবহনভিত্তিক সুনির্দিষ্ট ভাড়া নির্ধারণ করতে হবে, তেলের দাম বৃদ্ধির সুযোগে ভাড়া বাড়ানো গ্যাসের গাড়িগুলো চিহ্নিত করে রুট পারমিট বাতিল করতে হবে। নগর ও দূরপাল্লার পরিবহনে বাড়তি ভাড়া নিয়ন্ত্রণে নজরদারি করতে হবে। চুক্তিতে গাড়ি চালানো এবং ওয়েবিলে ভাড়া আদায় বন্ধ করতে হবে এবং সব নগর পরিবহনে শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ ভাড়া নিশ্চিত করতে হবে।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, করোনার অপূরণীয় ক্ষতির পর দেশ যখন ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছিল, ঠিক তখন সরকার মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে চাপিয়ে দিয়েছে বাড়তি তেলের দাম। তার সঙ্গে বিআরটিএ ও বিআইডব্লিউটিএ পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের জনগণের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়েছে। এখন সরকারি লাইসেন্স নিয়ে জনগণের পকেট কাটছে পরিবহনগুলো। প্রতিটি পরিবহন নানান অযুহাতে অনুমোদিত ভাড়ার কয়েকগুণ বেশি আদায় করছে।

সংগঠনের আহ্বায়ক কেফায়াত শাকিল বলেন, ‘সরকারের অনুমোদনে বাড়তি ভাড়া আদায়ের পাশাপাশি সিটিং সার্ভিস নাম দিয়ে ওয়েবিল সিস্টেমের মাধ্যমে বাসগুলো কয়েকগুণ বেশি ভাড়া আদায় করছে। অথচ জনগণের বেতনে চলেও পরিবহন মালিকদের পক্ষ নিয়ে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো নিশ্চুপ থাকছে।’

এ সময় বক্তারা অভিযোগ করেন, গণপরিবহনগুলো সরকার নির্ধারিত ভাড়ার বাইরে নানান অযুহাতে বাড়তি ভাড়া আদায় করছে। সিটিং সার্ভিস নাম দিয়ে এসব পরিবহন দাঁড়িয়েও অসংখ্য যাত্রী নিচ্ছে। ওয়েবিল দেখিয়ে কিলোমিটারের নির্ধারিত ভাড়ার ধার ধারছে না। অথচ শিক্ষার্থীরা হাফ ভাড়া দিতে চাইলে সিটিং সার্ভিসের অযুহাত দিচ্ছে।

বৃহস্পতিবার, ১১ নভেম্বর ২০২১ , ২৬ কার্তিক ১৪২৮ ৫ রবিউস সানি ১৪৪৩

ঢাকা মহানগরীতে তিনদিনের মধ্যে সিটিংয়ের নামে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধের নির্দেশ

ইবরাহীম মাহমুদ আকাশ

image

রাজধানীতে বাসভাড়ায় নৈরাজ্যরোধে গতকাল ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয় -সংবাদ

ঢাকা মহানগরীতে সিটিং সার্ভিসের নামে দুই-তিন গুণ ভাড়া আদায় সম্পূর্ণ বেআইনি। আগামী রোববারের মধ্যে সিটিং ও গেইটলক সার্ভিসসহ যত প্রকার বেআইনি সার্ভিস আছে তা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি। আর বিআরটিএ’র চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, ‘সিটিং ও গেইটলক সার্ভিসের বিরুদ্ধে আগামী রোববার থেকে অভিযান শুরু হবে।’

চার বছর আগে ২০১৭ সালে ‘ঢাকায় সিটিং সার্ভিস থাকবে কি না’ এ বিষয়ে একটি কমিটি গঠন করেছিল সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। ওই কমিটি সিটিং সার্ভিস ও অন্যান্য বাস সার্ভিস বিষয়ে ২৬ দফা সুপারিশ করে একটি প্রতিবেদন সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছিল। কিন্তু আজ পর্যন্ত সেই সুপারিশ বাস্তবায়ন হয়নি। বরং সিটিং সার্ভিসের যাত্রীদের কাছ অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ার পদ্ধতি আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।

এখন আবার নতুন নিয়ম চালু করেছে পরিবহন মালিকরা। তা হলো ওয়েবিলের মাধ্যমে যাত্রী চেকিং করা। ওয়েবিলের কারণে যাত্রীদের কাছে থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করতে হয় বলে জানান বাস চালকরা।

রাজধানীর গুলিস্তান এলাকায় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ট্রান্স সিলভা পরিবহন চালক সংবাদকে বলেন, ‘যাত্রাবাড়ী থেকে মিরপুর পর্যন্ত ৪-৫টি চেকিং করে মালিক পক্ষ। চেকিং হিসেবে তাদের টাকা বুঝিয়ে দিতে হয়। এক একটি চেক ১৫-২৫ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে মালিকরা।’ আর এই চেকিংয়ের কারণেই আমাদের বেশি ভাড়া নিতে হয় বলে জানান তিনি।

সিটিং সার্ভিস না রাখার বিষয়ে এখন আবার নতুনভাবে ঘোষণা দিয়েছে পরিবহন মালিক সমিতি। আগামী রোববারের মধ্যে যদি তা বন্ধ না হয় তাহলে সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) মাধ্যমে ওই বাস কোম্পানির রুট পারমিট বাতিলের সুপারিশ করা হবে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ।

গতকাল রাজধানীর বাংলামটরে সমিতির নিজস্ব কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, ‘তিন দিন পর ঢাকা মহানগর এলাকায় সিটিং সার্ভিস এবং গেটলক সার্ভিস থাকবে না। সিটিং সার্ভিসে কোন নিয়মনীতি নেই। তারা নিজের মতো করে যাত্রী পরিবহন করে। এতে ভোগান্তি হয় যাত্রীদের। তাই সিটিং বা গেটলক সার্ভিস থাকবে না।’ এ সময়ের পর কেউ সিটিং ও গেটলক সার্ভিসের নামে বাড়তি ভাড়া নিলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

চার বছরেও কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়ন করেনি বিআরটিএ

২০১৭ সালে সিটিং সার্ভিস পুনরায় চালু করে এই বিষয়ে করণীয় ঠিক করতে বিআরটিএ, মালিক-শ্রমিক সংগঠন, নাগরিক প্রতিনিধি ও পুলিশের সমন্বয়ে আট সদস্যের এই কমিটি গঠন করে বিআরটিএ। ২০১৭ সালে নভেম্বরে কিছু শর্ত পূরণের মাধ্যমে রাজধানী ঢাকার গণপরিবহনে ‘সিটিং সার্ভিস’ ব্যবস্থা চালু রাখার পক্ষেই পরামর্শ দিয়েছে সিটিং সার্ভিস বিষয়ে গঠিত কমিটি। শর্তের মধ্যে ছিল রাজধানীতে চলাচলকারী সব পরিবহনকে কিছু কোম্পানির অধীনে পরিচালনা করতে হবে। কোম্পানির কিছু বাস সিটিং আর কিছু হবে লোকাল। দুই শ্রেণীর বাসের রং হতে হবে আলাদা। সিটিং সার্ভিসে দাঁড়িয়ে যাত্রী পরিবহন করা যাবে না, স্টপেজ থাকবে কম।

ওই কমিটি ২৬ দফা সুপারিশসম্বলিত প্রতিবেদন সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছিল। ওই বছর এপ্রিলে সিটিং সার্ভিস বন্ধে অভিযান শুরুর পর পরিবহন মালিকরা বাস বন্ধ রেখে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করেছিল। ওই প্রেক্ষিতে ওই কমিটি গঠন করেছিল সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)।

এ বিষয়ে বিআরটিএ’র চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার সংবাদকে বলেন, ‘আগের কমিটি কি সুপারিশ দিয়েছিল তা এখন আমি বলতে পারবো না। এ বিষয়ে খোঁজ নিতে হবে। তবে সিটিং সার্ভিস ও গেইটলক সার্ভিসসহ অন্যান সার্ভিসের নামের যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নেয়া সম্পূর্ণ অন্যায়। এ বিষয়ে বিআরটিএ’র ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জেল-জরিমানা করা হবে।’ মালিক সমিতি আমাদের কাছ থেকে তিনদিনের সময় নিয়েছেন। আগামী রোববার থেকে এই অভিযান শুরু হবে বলে জানান তিনি।

সিটিংয়ের নামে ‘চিটিং’ বন্ধের দাবি যাত্রীদের

শিক্ষার্থীদের জন্য গণপরিবহনে অর্ধেক ভাড়া নিশ্চিত ও সিটিং সার্ভিসের নামে ‘চিটিং’ বন্ধসহ ৫ দফা দাবি জানিয়েছে যাত্রী অধিকার আন্দোলন। গতকাল রাজধানীর সায়েন্স ল্যাব মোড়ে এক মানববন্ধনে এ দাবি জানায় সংগঠনটি।

তাদের দাবিগুলো হলো- নগরী থেকে সিটিং সার্ভিস বিলুপ্ত ঘোষণা করতে হবে, ডিজেলের দাম বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে বাড়ানো পরিবহন ভাড়া পুনর্মূল্যায়ন করতে হবে। ফাঁকফোঁকড় না রেখে পরিবহনভিত্তিক সুনির্দিষ্ট ভাড়া নির্ধারণ করতে হবে, তেলের দাম বৃদ্ধির সুযোগে ভাড়া বাড়ানো গ্যাসের গাড়িগুলো চিহ্নিত করে রুট পারমিট বাতিল করতে হবে। নগর ও দূরপাল্লার পরিবহনে বাড়তি ভাড়া নিয়ন্ত্রণে নজরদারি করতে হবে। চুক্তিতে গাড়ি চালানো এবং ওয়েবিলে ভাড়া আদায় বন্ধ করতে হবে এবং সব নগর পরিবহনে শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ ভাড়া নিশ্চিত করতে হবে।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, করোনার অপূরণীয় ক্ষতির পর দেশ যখন ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছিল, ঠিক তখন সরকার মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে চাপিয়ে দিয়েছে বাড়তি তেলের দাম। তার সঙ্গে বিআরটিএ ও বিআইডব্লিউটিএ পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের জনগণের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়েছে। এখন সরকারি লাইসেন্স নিয়ে জনগণের পকেট কাটছে পরিবহনগুলো। প্রতিটি পরিবহন নানান অযুহাতে অনুমোদিত ভাড়ার কয়েকগুণ বেশি আদায় করছে।

সংগঠনের আহ্বায়ক কেফায়াত শাকিল বলেন, ‘সরকারের অনুমোদনে বাড়তি ভাড়া আদায়ের পাশাপাশি সিটিং সার্ভিস নাম দিয়ে ওয়েবিল সিস্টেমের মাধ্যমে বাসগুলো কয়েকগুণ বেশি ভাড়া আদায় করছে। অথচ জনগণের বেতনে চলেও পরিবহন মালিকদের পক্ষ নিয়ে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো নিশ্চুপ থাকছে।’

এ সময় বক্তারা অভিযোগ করেন, গণপরিবহনগুলো সরকার নির্ধারিত ভাড়ার বাইরে নানান অযুহাতে বাড়তি ভাড়া আদায় করছে। সিটিং সার্ভিস নাম দিয়ে এসব পরিবহন দাঁড়িয়েও অসংখ্য যাত্রী নিচ্ছে। ওয়েবিল দেখিয়ে কিলোমিটারের নির্ধারিত ভাড়ার ধার ধারছে না। অথচ শিক্ষার্থীরা হাফ ভাড়া দিতে চাইলে সিটিং সার্ভিসের অযুহাত দিচ্ছে।