ক্ষমতাসীনদের দ্বন্দ্বের শঙ্কায় ৮৩৮ ইউপিতে ভোট আজ

দশম ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে দ্বিতীয় ধাপের ৮৩৮টি ইউপিতে নির্বাচন আজ। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট নেয়া হবে। কাছাকাছি সময়ে দুই ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে মাঠ। দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচন শেষ হলেই আগামী ২৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে তৃতীয় ধাপের নির্বাচন। নির্বাচন ঘিরে এরই মধ্যে সহিংসতা ও সংঘর্ষে ফরিদপুর, সিলেট, মাগুরা, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ ও মেহেরপুরে অন্তত ১৪ জন নিহত হয়েছেন।

এদিকে, নির্বাচন ঘিরে বিভিন্ন এলাকায় উত্তেজনা, সংঘর্ষ ও সহিংসতার ঘটনার প্রেক্ষাপটে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, ঘরে ঘরে পাড়া-মহল্লায় পাহারা দিয়ে নির্বাচনী সহিংসতা ঠেকানো সম্ভব নয়। স্থানীয় নির্বাচনে উত্তেজনা প্রতিদ্বন্দ্বিতার বহিঃপ্রকাশ বলে মন্তব্য করেন তিনি। গতকাল আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।

তিনি বলেন, ‘এ জাতীয় ঘটনা এভাবে পাহারা দিয়ে ঠেকানো যায় না, বাস্তবতা হলো এটা। ঘরে ঘরে মহল্লায় মহল্লায় পুলিশ দিয়ে পাহারা দিয়ে এ জাতীয় অপ্রীতিকর ঘটনা থামানো যায় না। এর একমাত্র উপায় হলো, নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সহনশীলতা। নির্বাচনসুলভ আচরণ করতে হবে। সিইসি বলেন, সহিংসতার দায় এককভাবে কাউকে দেয়া যাবে না। নির্বাচনী সহিংসতা থামাতে দরকার সহনশীলতা। এ জন্য রাজনৈতিক দল প্রার্থী-সমর্থক সবার সহযোগিতা দরকার।’

নির্বাচনে তেমন কোন বিরোধী পক্ষের সরব উপস্থিতি না থাকায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ খোদ আওয়ামী লীগ। সংঘাত ও হতাহতের বেশিরভাগ ঘটনা আওয়ামী লীগের নিজেদের মধ্যে। চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রতীকের এই নির্বাচনে এর মধ্যেই বিভিন্ন এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

দ্বিতীয় ধাপের এই নির্বাচনে ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত মনোনয়ন জমা, ২১ অক্টোবর বাছাই এবং ২৬ অক্টোবর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ছিল। এই ধাপে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান পদে ৮১ জন, সংরক্ষিত সদস্য পদে ৭৬ জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ২০৩ জন নির্বাচিত হয়েছেন।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানায়, চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন তিন হাজার ৩১০ জন। সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ৯ হাজার ১৬১ জন এবং সাধারণ সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ২৮ হাজার ৭৪৭ জন। ২০টি ইউনিয়ন পরিষদে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) এবং বাকিগুলোতে প্রচলিত ব্যালট পেপারে ভোট হবে। দ্বিতীয় দফায় যে ৮৪৮টি ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচনের জন্য তফসিল হয়েছিল, তার ৮৩৮টিতে বৃহস্পতিবার (আজ) ভোট হবে।

এ ব্যাপারে ইসির যুগ্মসচিব এস এম আসাদুজ্জামান বলেন, ১১ নভেম্বর ৮৪৮টি ইউপিতে নির্বাচনের কথা থাকলেও নির্বাচন হচ্ছে ৮৩৮টিতে। কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের সব কয়টিতে চেয়ারম্যান, সাধারণ সদস্য এবং সংরক্ষিত নারী সদস্যদের সব পদে একক প্রার্থী থাকায় সবাই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। ফলে লাকসামে ওই ইউপিতে কোন নির্বাচন হবে না।

তিনি বলেন, এছাড়াও নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার জিরতলী, রাঙ্গামাটি জেলার কাপ্তাই উপজেলার চিৎমরম, নেত্রকোনা সদর উপজেলার মদনপুর, টাঙ্গাইলে জেলার দেলদুয়ার উপজেলার আটিয়া এবং শরীয়তপুর সদর উপজলার চিতলিয়া ইউনিয়নের নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। ফলে বৃহস্পতিবার (আজ) দ্বিতীয় ধাপে ৮৩৮টি ইউপি নির্বাচন হচ্ছে। এসব ইউপিতে মোট ২০টি দল চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী দিয়েছে।

ইসি সূত্র জানায়, দ্বিতীয় ধাপের ৬২টি জেলায় ৮৪৮ ইউপির মধ্যে আজ নির্বাচন হচ্ছে ৮৩৮টিতে। এর মধ্যে ১৮ জেলার ২৮ উপজেলায় ৮১ জন চেয়ারম্যান একক প্রার্থী হওয়ায় তারা সবাই বিনা ভোটে জয়ী হয়েছেন। এর মধ্যে বরিশাল জেলার আগৈলঝড়া উপজেলায় পাঁচজন, ভোলার দৌলতখান ও মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরে একজন করে, নারায়ণগঞ্জ সদরে দুইজন, রুপগঞ্জে তিনজন, শেরপুর সদরে তিনজন, টাঙ্গাইল ধনবাড়িতে তিনজন, জামাপুর সদরে পাঁচজন, কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর তিন, কুমিল্লা লাকসামে পাঁচ, তিতাসে এক ও মেঘনায় একজন করে বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন।

এছাড়াও চাঁদপুর সদরে দুইজন, ফেনী ফুলগাজীতে তিনজন, লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে একজন, মাদারীপুর জেলার কালকিনিতে একজন, শরীয়তপুর সদরে ১ জন, খুলনা ১ জন, মাগুরা সদরে ৩ জন, যশোর চৌগাছা ২ জন, বাগেরহাট সদরে ৩ জন, মোল্লারহাটে ১ জন, জয়পুরহাটের হাক্কেলপুরে ১ জন, সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে ৩ জন, সদরে ৩ জন, চট্টগ্রামের সিতাকু-ে ৫ জন, মীরসরাই ১৩ জন এবং ফটিকছড়ি উপজেলায় ৩ জন চেয়ারম্যান বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন।

নির্বাচন প্রসঙ্গে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, এরই মধ্যে প্রচার-প্রচারণা শেষ করেছেন প্রার্থীরা। এখন ভোটের অপেক্ষা। বুধবার কেন্দ্রে কেন্দ্রে নির্বাচনী সামগ্রী পৌঁছে গেছে, ভোটের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।

‘দু-এক জায়গায়’ সংঘর্ষের কিছু ঘটনা থাকলেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে মাঠপর্যায়ে তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আচরণবিধি প্রতিপালনের বিষয়ে তদারকি বাড়াতে মাঠপর্যায়ে নির্বাহী হাকিমের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে বেশি রাখা হয়েছে।

তিনি বলেন, সবশেষ আইনশৃঙ্খলা বৈঠকে লোকবল সংকটের কথা বলেছিলেন অনেকে, তাই চাহিদা অনুযায়ী ম্যাজিস্ট্রেট বাড়ানো হয়েছে। কোথাও কোথাও পরিস্থিতি বিবেচনায় বিজিবি’র সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে বেশ পদক্ষেপ রয়েছে। আশা করি, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

দক্ষিণাঞ্চলের ৫ জেলায় ৪৮টি ইউনিয়নে ভোট, ৭০% কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ

প্রতিনিধি, বরিশাল

দক্ষিণাঞ্চলের ৪৮টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে ভোটগ্রহণ উপলক্ষে গতকাল বিকেলের মধ্যে ৪৪৯টি কেন্দ্রের ২ হাজার ৪৮৭টি বুথে ভোট গ্রহণের সব সরঞ্জাম পৌঁছেছে। অবাধ ও সুষ্ঠু ভোট গ্রহণের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন থেকে ইতোপূর্বেই পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েনের অনুরোধ জানান হয়েছে। তবে ৫টি জেলার ৪৪৯টি কেন্দ্রের মধ্যে আড়াইশরও বেশি কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ এবং ১০টি নদীবেষ্টিত কেন্দ্র রয়েছে বলে জানা গেছে। দক্ষিণাঞ্চলের ৬টি জেলার মধ্যে ঝালকাঠী বাদে যে ৫টি জেলার ৪৮টি ইউপিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, সেখানে প্রায় ৭০ ভাগ কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ।

কোন প্রকারের সন্ত্রাসী কর্মকা- এড়াতে ইতোমধ্যে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে সশস্ত্র পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রতিটি কেন্দ্রে সশস্ত্র ও নিরস্ত্র আনসার সদস্য থাকছে। কোন কোন এলাকায় বিশেষ করে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের এলাকায় র‌্যাবও টহলে থাকবে বলে জানা গেছে। তবে সরকারি দলের স্থানীয় পর্যায়ের নেতাকর্মীরা দ্বিধা ও বহুধা বিভক্ত থাকায় সব ধরনের প্রস্তুতির পরেও নির্বাচন কতটা অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে, তা নিয়ে এই অঞ্চলের ভোটারদের মধ্যে সংশয় রয়েছে।

আজকের এ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ১৭৩, সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ৪৮৮ এবং সাধারণ সদস্য পদে ১ হাজার ৫৭২ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে ভোটের আগেই শাসক দল সমর্থিত ৬ চেয়ারম্যান, ৭ সদস্য ছাড়াও ৬ জন সংরক্ষিত নারী আসনের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।

আবার অনেক এলাকাতে কিছুটা বেশি মাত্রায় নির্বাচনী উত্তাপ রয়েছে। ইতোমধ্যে পিরোজপুর ও পটুয়াখালীর বাউফলে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। ফলে গোটা ইউনিয়নে উত্তেজনার পারদ ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী।

এবারের নির্বাচনে প্রতিটি জেলার নিজস্ব পুলিশ ফোর্সের সঙ্গে স্পেশাল আর্মড ফোর্স ছাড়াও পটুয়াখালী ও পিরোজপুরের জন্য ৬৬৮ জন অতিরিক্ত পুলিশ কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে বরিশাল রেঞ্জ থেকে, যার মধ্যে শুধু পটুয়াখালীতেই প্রায় সাড়ে ৪শ অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে। বরিশাল জেলাতেও নিজস্ব পুলিশ ফোর্সের বাইরে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন ও র‌্যাবের সদস্যরা থাকছে।

মাদারীপুরের কালকিনিতে নির্বাচনী প্রার্থীর মধ্যে সংঘর্ষ, আহত ২০

প্রতিনিধি, মাদারীপুর

ইউপি নির্বাচনে ভোট গ্রহণের একদিন আগেও মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার চরদৌলতখান ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সমর্থকদের সঙ্গে বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়েছেন উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন। গতকাল সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চরদৌলতখান (সিডি খান) ইউনিয়নের মাথাভাঙ্গা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে বিদ্রোহী প্রার্থী মিলন মিয়ার চাচাত ভাই আলমগীর প্যাদা (৫৫), ভাতিজা অপু প্যাদা (৩৫) ও সমর্থক রিপন মোল্লাকে (৪৫) আশঙ্কাজনক অবস্থায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, কালকিনির ও ডাসার উপজেলার ১৩ ইউনিয়ন পরিষদের এই নির্বাচনে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সকালে ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী চাঁনমিয়া শিকদার ও বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী মিলন মিয়ার সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় অর্ধশত ককটেল ও হাতবোমা বিম্ফোরণ ঘটিয়ে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয়। এ সময় উভয় পক্ষের আহত হয় অন্তত ২০ জন। খবর পেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। ঘটনাস্থলে র‌্যাব ও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা আসিফ ইয়াজদানী বলেন, ‘হামলায় অন্তত ১০ জন ভর্তি রয়েছেন। এর মধ্যে তিন জনের অবস্থা খুবই গুরুতর। বোমা হামলায় তাদের শরীরে বিভিন্ন স্থানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওই তিনজনের উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে।’

আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী মিলন মিয়া বলেন, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী চাঁন মিয়ার নির্দেশে ভোর সাড়ে ৬টায় প্রথমে আমার বাড়িতে হামলা চালানো হয়। ওদের টার্গেট ছিল, আমাকে হত্যা করা। বাড়িতে হামলা পরে আমাদের লোকজন ধাওয়া দিয়ে নৌকার সমর্থকদের মাথাভাঙ্গা এলাকায় নিয়ে যায়। পরে সেখানে বসে আমার সমর্থকদের সঙ্গে নৌকার ক্যাডারবাহিনীর সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে আমাদেরই লোকজন আহত বেশি।’

অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী চাঁনমিয়া শিকদার বলেন, ‘নির্বাচনী এলাকায় মিলন নিজের প্রভাব বিস্তারের জন্য প্রথমে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটনায়। পরে আমার নেতাকর্মীরা মিলনের নেতাকর্মীদের প্রতিরোধ গড়ে তোলে। মিলন নিজের দোষ আড়াল করতে আমার নামে মিথ্যে দোষারোপ করে যাচ্ছে।’

এ সম্পর্কে কালকিনি থানার (ওসি) ইসতিয়াক আশফাক বলেন, ‘দুপক্ষের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র আরও আগে থেকেই বিরোধ চলছিল। নির্বাচনে দুজন আবার চেয়ারম্যান প্রার্থী। ভোটের আগে দুজনই এলাকায় আধিপত্য দেখানোর জন্য তাদের সমর্থকরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় কিছু ককটেল বিস্ফোরণও ঘটানো হয়। বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে দুজনের অবস্থা বেশি খারাপ। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ৮ জনকে আটক করেছে। এ ঘটনায় এখনও মামলা দায়ের হয়নি, তবে মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন।’

মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরে আ’লীগের ৮ বিদ্রোহী প্রার্থীকে বহিষ্কার

প্রতিনিধি, মানিকগঞ্জ

মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী হওয়ায় আটজনকে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার দুপুরে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম মহীউদ্দীন এবং সাধারণ সম্পাদক আবদুস সালামের স্বাক্ষরিক এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যনির্বাহী কমিটির নির্দেশ মোতাবেক জেলার সিঙ্গাইর উপজেলাধীন আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দলের মনোনয়নপ্রাপ্ত নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেয়ায় দলীয় গঠনতন্ত্রের ৪৭/১১ ধারা মোতাবেক ওই আটজনকে বহিষ্কার করা হয়। এছাড়া দলীয় পদে থেকে যারা নৌকার বিরুদ্ধে অন্য প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন, তাদের সর্তক করা হয়েছে। বহিষ্কার করা আটজন হলেন, বলধারা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) বিদ্রোহী প্রার্থী ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মো. ওবায়দুর রহমান, চান্দহর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য আফজাল হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও জামির্ত্তা ইউনিয়নের বিদ্রোহী প্রার্থী আবুল হোসেন, জয়মন্টপ ইউনিয়নের বিদ্রোহী প্রার্থী ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বোরহান উদ্দিন ফকির, একই ইউনিয়নের আরেক বিদ্রোহী প্রার্থী ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অলি আহমদ মোল্লা, জামশা ইউনিয়নের বিদ্রোহী প্রার্থী ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মিজানুর রহমান ওরফে মিঠু, সিংগাইর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য তারিকুল ইসলাম এবং শায়েস্তা ইউনিয়নের বিদ্রোহী প্রার্থী ও ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আবদুল হালিম।

কাপাসিয়ায় ইউপি নির্বাচনে ভোট বেচা-কেনার অভিযোগ

প্রতিনিধি, কাপাসিয়া (গাজীপুর)

দ্বিতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নিয়ে কাপাসিয়ায় উৎসব মুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী, কর্মী, সমর্থক ও ভোটারদের মাঝে চলছে ব্যাপক হিসাব-নিকাশ। অবাধ ও সুষ্ঠু পরিবেশে ভোটাররা ভোট দিতে পারবেন কি না, এ নিয়ে চলছে পক্ষে-বিপক্ষে নানা অভিমত। শেষ মুহূর্তে এসে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা বিজয়ী হতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। কোন কোন প্রার্থী পাঁচশত টাকা থেকে এক হাজার টাকা দিয়ে ভোট কিনে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

জানা যায়, উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৪৪ জন, ৩৩টি সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ১১০ জন এবং ৯৯টি সাধারণ সদস্য পদে ৪০১ জন প্রার্থী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিদ্বন্দ্বীদের মাঝে উত্তেজনা দেখা দিলে ইতোমধ্যে কয়েক স্থানে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। আচরণবিধি লঙ্ঘন, মারধর ও হুমকি-ধমকির অভিযোগ এনে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসার ও থানায় কয়েকজন প্রার্থী লিখিত অভিযোগ করেছেন।

প্রতিনিধি, যশোর

যশোরের ঝিকরগাছা ও চৌগাছার ইউনিয়ন পরিষদের বিএনপি-জামায়াত দলীয়ভাবে নির্বাচন না করায় অধিকাংশ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মাঠে রয়েছে বিদ্রোহী প্রার্থী। তাই ভোটের সমীকরণে নৌকার প্রার্থীদের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ দলের বিদ্রোহীরা। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সহিংসতা হয়েছে। নির্বাচনকে ঘিরে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

ঝিকরগাছা ও চৌগাছা উপজেলার ২২টি ইউনিয়নের মধ্যে ২০টিতে চেয়ারম্যান পদে ভোটগ্রহণ হবে। বাকি দুটি চৌগাছার ফুলসারা ও চৌগাছা সদর ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করে নৌকা প্রতীক দিলেও কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে ২০টি ইউনিয়নের ১৩টিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মাঠে রয়েছেন।

ইতোমধ্যে বিদ্রোহী প্রার্থীদের দল থেকে বহিষ্কার করেও লাগাম টানতে পারেনি আওয়ামী লীগ। কারণ, দলের উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের শীর্ষ নেতাদের অনেকেই বিদ্রোহীদের মদদ দিচ্ছেন। আর একই দলের একাধিক প্রার্থী মাঠে থাকায় উৎসবের নির্বাচন রূপ নিতে পারে সংঘর্ষের দিকে। নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণার শুরু থেকেই আধিপত্য বিস্তার ও আধিপত্য বজায় রাখার জন্য দলীয় প্রার্থীর নেতাকর্মীদের সঙ্গে বিদ্রোহী প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের হামলা-পাল্টা হামলা, নির্বাচনী কার্যালয়সহ প্রচার মাইক ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোন প্রকার সহিংসতা ঘটানোর চেষ্টা করলে জেলা পুলিশ হুঁশিয়ারি বার্তাও পৌঁছে দিয়েছে বিভিন্ন প্রার্থীর কর্মী ও সমর্থকদের কাছে। সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণের জন্য প্রতিটি কেন্দ্রেই বাড়ানো হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

জেলা নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ঝিকরগাছা-চৌগাছার ২২টি ইউনিয়নে মোট ভোটার ৩ লাখ ৮৯ হাজার ৯৬৩ জন। এর মধ্যে ঝিকরগাছাতে ২ লাখ ১৯ হাজার ২৭৬ জন ভোটার ১২৩টি কেন্দ্রে ৬০৬টি বুথে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। আর চৌগাছায় ১ লাখ ৭০ হাজার ৬৮৭ জন ভোটার ১০২টি কেন্দ্রে ৪৮০টি বুথে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। দুই উপজেলার ১৭শ পুলিশের সঙ্গে জন ৮ জন জুডিশিয়াল ও ১৬ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। তিন প্লাটুন বিজিবির সঙ্গে দেড় হাজার আনসার সদস্য মোতায়েন থাকবে। এছাড়া পুলিশের ৫টি মোবাইল টিম ও ৬টি স্ট্রাইকিং ফোর্সের ৬টি টিম নির্বাচনের মাঠে সার্বক্ষণিক কাজ করবে।

প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামের তিন উপজেলা ফটিকছড়ি, সীতাকু- ও মিরসারইয়ের ৩৭ ইউনিয়নে দ্বিতীয় দফা নির্বাচন উপলক্ষে গতকাল সম্পন্ন হয়েছে সব কার্যক্রম। সকাল থেকে সব কেন্দ্রে পৌঁছানো হয়েছে নির্বাচনী সরঞ্জাম। মিরসরাই উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নের মধ্যে ১৩টি (জোরারগঞ্জ, করেরহাট, হিঙ্গুলী, দুর্গাপুর, কাটাছড়া, ওয়াহেদপুর, সাহেরখালী, ওসমানপুর, ধুম, হাইতকান্দি, মায়ানী, মিঠানালা, মঘাদিয়া) ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। বাকি ৩টি (ইছাখালী, মিরসরাই সদর ও খৈয়াছড়া) ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন হওয়া ৩টি ইউনিয়নের মোট প্রার্থীর সংখ্যা ৯ জন।

এছাড়া পুরো উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নে সংরক্ষিত ওয়ার্ড সদস্য পদে ১১৮ জন এবং সাধারণ ওয়ার্ড সদস্যপদে ৪৮৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা। এই উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ১৩ হাজার ৭৩৬ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৬০ হাজার ৪২৬ জন এবং মাহিলা ভোটার ১ লাখ ৫৩ হাজার ৩১০ জন।

অন্যদিকে, সীতাকু- উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে ৫টি ( সৈয়দপুর, মুরাদপুর, সোনাইছড়ি, ভাটিয়ারি, কুমিরা) ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। ফলে বাকি ৪টি (বাড়বকু-, বাঁশবাড়িয়া, বারৈয়াঢালা, ছলিমপুর) ইউনিয়নে মোট চেয়ারম্যান প্রার্থীর সংখ্যা ৯ জন।

এছাড়া পুরো উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে সংরক্ষিত ওয়ার্ড সদস্য পদে ৬৪ জনের মধ্যে ৭ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এবং সাধারণ ওয়ার্ড সদস্যপদে ২৯৪ জনের মধ্যে ৪ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এই উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৬৪ হাজার ৯৮৯ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৪১ হাজার ৩৮১ জন এবং মহিলা ভোটার ১ লাখ ২৩ হাজার ৬০৮ জন।

ফটিকছড়ি উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের মধ্যে ২ ইউনিয়ন ভক্তপুর ও লেলাং ইউপিতে উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশের কারণে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। আবদুল্লাহপুর ইউনিয়নে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।

এছাড়া এই উপজেলায় বাকি ১১টি ইউনিয়নে মোট চেয়ারম্যান প্রার্থী ২৬ জন। এই উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৪৬ হাজার ৩৬৫ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৮২ হাজার ২৭৪ জন এবং মহিলা ভোটার ১ লাখ ৬৪ হাজার ৯১ জন।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ইতোমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে মোতায়েন থাকবে পুলিশ সদস্য। তিনি সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

প্রতিনিধি, কক্সবাজার

কক্সবাজার সদর, রামু ও উখিয়া উপজেলার ২১টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন উপলক্ষে ইতোমধ্যে অবাধ, শান্তিপূর্ণ, সুষ্ঠু পরিবেশে ভোট উৎসব অনুষ্ঠানের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে প্রশাসন। কক্সবাজার জেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রমতে, কক্সবাজারের ৩ উপজেলার ২১টি ইউনিয়নে ২০৩টি কেন্দ্রে ৪ লাখ ৪ হাজার ৯৫২ জন ভোটার রয়েছে। এতে রামুতে ১১ ইউনিয়নের ১০০টি কেন্দ্র, উখিয়ার ৫০ টি কেন্দ্র এবং সদর উপজেলার ৫৩টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ হবে।

কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুশকুল, চৌফলদন্ডী, ভারুয়াখালী, পিএমখালী ও ঝিলংজা ইউপির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ ৫ ইউনিয়নের মোট কেন্দ্র ৫৭টি। এরমধ্যে ২৭টি ঝুঁকিপূর্ণ। রামু উপজেলার ফতেখারকুল, গর্জনিয়া, কচ্ছপিয়া, জোয়ারিরনালা, রশিদ নগর, ইদগড়, চাকমারকুল, দক্ষিণ মিঠাছড়ি, খুনিয়াপালং, রাজারকুল ও কাউয়ারখোপে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই ১১টি ইউনিয়নের মোট ভোট কেন্দ্র ১০০ এর মধ্যে ৫৮ টি ঝুঁকিপূর্ণ। একই দিন উখিয়া উপজেলার হলদিয়া পালং, রতœা পালং রাজা পালং, জালিয়া পালং ও পালংখালী ইউনিয়নের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ওই উপজেলার ৫০টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ৩০টি ভোটকেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ।

কক্সবাজার জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এস এম শাহাদাত হোছাইন বলেন, জেলার তিনটি উপজেলার ২০৩টি কেন্দ্রের মধ্যে ৮৮টি সাধারণ ও ১০৫টি কেন্দ্র গুরুত্বপূর্ণ। কক্সবাজার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ আশেক ইলাহী শাহাজাহান নূরী বলেন, আইন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুসারে ১০ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২১টি ইউপিতে নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করবেন। তিনটি উপজেলায় ৪৬ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। এর মধ্যে সদরের ৫টি ইউপিতে ১২ জন, রামুর ১১ টিতে ২২ জন এবং উখিয়ার ৫টিতে ১২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন।

কক্সবাজারের জেলা পুলিশ সুপার (ভারপ্রাপ্ত) রফিকুল ইসলাম বলেন, শতভাগ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণ করা হবে। কেন্দ্রে কেউ যদি কোন সমস্যা করার চেষ্টা করে তাহলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ব্যালেট পেপার ছিনতাই বা ভোট ডাকাতির চেষ্টা করলেই গুলি করা হবে।

বৃহস্পতিবার, ১১ নভেম্বর ২০২১ , ২৬ কার্তিক ১৪২৮ ৫ রবিউস সানি ১৪৪৩

ক্ষমতাসীনদের দ্বন্দ্বের শঙ্কায় ৮৩৮ ইউপিতে ভোট আজ

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

দশম ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে দ্বিতীয় ধাপের ৮৩৮টি ইউপিতে নির্বাচন আজ। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট নেয়া হবে। কাছাকাছি সময়ে দুই ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে মাঠ। দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচন শেষ হলেই আগামী ২৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে তৃতীয় ধাপের নির্বাচন। নির্বাচন ঘিরে এরই মধ্যে সহিংসতা ও সংঘর্ষে ফরিদপুর, সিলেট, মাগুরা, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ ও মেহেরপুরে অন্তত ১৪ জন নিহত হয়েছেন।

এদিকে, নির্বাচন ঘিরে বিভিন্ন এলাকায় উত্তেজনা, সংঘর্ষ ও সহিংসতার ঘটনার প্রেক্ষাপটে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, ঘরে ঘরে পাড়া-মহল্লায় পাহারা দিয়ে নির্বাচনী সহিংসতা ঠেকানো সম্ভব নয়। স্থানীয় নির্বাচনে উত্তেজনা প্রতিদ্বন্দ্বিতার বহিঃপ্রকাশ বলে মন্তব্য করেন তিনি। গতকাল আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।

তিনি বলেন, ‘এ জাতীয় ঘটনা এভাবে পাহারা দিয়ে ঠেকানো যায় না, বাস্তবতা হলো এটা। ঘরে ঘরে মহল্লায় মহল্লায় পুলিশ দিয়ে পাহারা দিয়ে এ জাতীয় অপ্রীতিকর ঘটনা থামানো যায় না। এর একমাত্র উপায় হলো, নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সহনশীলতা। নির্বাচনসুলভ আচরণ করতে হবে। সিইসি বলেন, সহিংসতার দায় এককভাবে কাউকে দেয়া যাবে না। নির্বাচনী সহিংসতা থামাতে দরকার সহনশীলতা। এ জন্য রাজনৈতিক দল প্রার্থী-সমর্থক সবার সহযোগিতা দরকার।’

নির্বাচনে তেমন কোন বিরোধী পক্ষের সরব উপস্থিতি না থাকায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ খোদ আওয়ামী লীগ। সংঘাত ও হতাহতের বেশিরভাগ ঘটনা আওয়ামী লীগের নিজেদের মধ্যে। চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রতীকের এই নির্বাচনে এর মধ্যেই বিভিন্ন এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

দ্বিতীয় ধাপের এই নির্বাচনে ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত মনোনয়ন জমা, ২১ অক্টোবর বাছাই এবং ২৬ অক্টোবর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ছিল। এই ধাপে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান পদে ৮১ জন, সংরক্ষিত সদস্য পদে ৭৬ জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ২০৩ জন নির্বাচিত হয়েছেন।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানায়, চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন তিন হাজার ৩১০ জন। সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ৯ হাজার ১৬১ জন এবং সাধারণ সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ২৮ হাজার ৭৪৭ জন। ২০টি ইউনিয়ন পরিষদে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) এবং বাকিগুলোতে প্রচলিত ব্যালট পেপারে ভোট হবে। দ্বিতীয় দফায় যে ৮৪৮টি ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচনের জন্য তফসিল হয়েছিল, তার ৮৩৮টিতে বৃহস্পতিবার (আজ) ভোট হবে।

এ ব্যাপারে ইসির যুগ্মসচিব এস এম আসাদুজ্জামান বলেন, ১১ নভেম্বর ৮৪৮টি ইউপিতে নির্বাচনের কথা থাকলেও নির্বাচন হচ্ছে ৮৩৮টিতে। কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের সব কয়টিতে চেয়ারম্যান, সাধারণ সদস্য এবং সংরক্ষিত নারী সদস্যদের সব পদে একক প্রার্থী থাকায় সবাই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। ফলে লাকসামে ওই ইউপিতে কোন নির্বাচন হবে না।

তিনি বলেন, এছাড়াও নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার জিরতলী, রাঙ্গামাটি জেলার কাপ্তাই উপজেলার চিৎমরম, নেত্রকোনা সদর উপজেলার মদনপুর, টাঙ্গাইলে জেলার দেলদুয়ার উপজেলার আটিয়া এবং শরীয়তপুর সদর উপজলার চিতলিয়া ইউনিয়নের নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। ফলে বৃহস্পতিবার (আজ) দ্বিতীয় ধাপে ৮৩৮টি ইউপি নির্বাচন হচ্ছে। এসব ইউপিতে মোট ২০টি দল চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী দিয়েছে।

ইসি সূত্র জানায়, দ্বিতীয় ধাপের ৬২টি জেলায় ৮৪৮ ইউপির মধ্যে আজ নির্বাচন হচ্ছে ৮৩৮টিতে। এর মধ্যে ১৮ জেলার ২৮ উপজেলায় ৮১ জন চেয়ারম্যান একক প্রার্থী হওয়ায় তারা সবাই বিনা ভোটে জয়ী হয়েছেন। এর মধ্যে বরিশাল জেলার আগৈলঝড়া উপজেলায় পাঁচজন, ভোলার দৌলতখান ও মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরে একজন করে, নারায়ণগঞ্জ সদরে দুইজন, রুপগঞ্জে তিনজন, শেরপুর সদরে তিনজন, টাঙ্গাইল ধনবাড়িতে তিনজন, জামাপুর সদরে পাঁচজন, কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর তিন, কুমিল্লা লাকসামে পাঁচ, তিতাসে এক ও মেঘনায় একজন করে বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন।

এছাড়াও চাঁদপুর সদরে দুইজন, ফেনী ফুলগাজীতে তিনজন, লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে একজন, মাদারীপুর জেলার কালকিনিতে একজন, শরীয়তপুর সদরে ১ জন, খুলনা ১ জন, মাগুরা সদরে ৩ জন, যশোর চৌগাছা ২ জন, বাগেরহাট সদরে ৩ জন, মোল্লারহাটে ১ জন, জয়পুরহাটের হাক্কেলপুরে ১ জন, সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে ৩ জন, সদরে ৩ জন, চট্টগ্রামের সিতাকু-ে ৫ জন, মীরসরাই ১৩ জন এবং ফটিকছড়ি উপজেলায় ৩ জন চেয়ারম্যান বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন।

নির্বাচন প্রসঙ্গে ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, এরই মধ্যে প্রচার-প্রচারণা শেষ করেছেন প্রার্থীরা। এখন ভোটের অপেক্ষা। বুধবার কেন্দ্রে কেন্দ্রে নির্বাচনী সামগ্রী পৌঁছে গেছে, ভোটের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।

‘দু-এক জায়গায়’ সংঘর্ষের কিছু ঘটনা থাকলেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে মাঠপর্যায়ে তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আচরণবিধি প্রতিপালনের বিষয়ে তদারকি বাড়াতে মাঠপর্যায়ে নির্বাহী হাকিমের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে বেশি রাখা হয়েছে।

তিনি বলেন, সবশেষ আইনশৃঙ্খলা বৈঠকে লোকবল সংকটের কথা বলেছিলেন অনেকে, তাই চাহিদা অনুযায়ী ম্যাজিস্ট্রেট বাড়ানো হয়েছে। কোথাও কোথাও পরিস্থিতি বিবেচনায় বিজিবি’র সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে বেশ পদক্ষেপ রয়েছে। আশা করি, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

দক্ষিণাঞ্চলের ৫ জেলায় ৪৮টি ইউনিয়নে ভোট, ৭০% কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ

প্রতিনিধি, বরিশাল

দক্ষিণাঞ্চলের ৪৮টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে ভোটগ্রহণ উপলক্ষে গতকাল বিকেলের মধ্যে ৪৪৯টি কেন্দ্রের ২ হাজার ৪৮৭টি বুথে ভোট গ্রহণের সব সরঞ্জাম পৌঁছেছে। অবাধ ও সুষ্ঠু ভোট গ্রহণের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন থেকে ইতোপূর্বেই পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েনের অনুরোধ জানান হয়েছে। তবে ৫টি জেলার ৪৪৯টি কেন্দ্রের মধ্যে আড়াইশরও বেশি কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ এবং ১০টি নদীবেষ্টিত কেন্দ্র রয়েছে বলে জানা গেছে। দক্ষিণাঞ্চলের ৬টি জেলার মধ্যে ঝালকাঠী বাদে যে ৫টি জেলার ৪৮টি ইউপিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, সেখানে প্রায় ৭০ ভাগ কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ।

কোন প্রকারের সন্ত্রাসী কর্মকা- এড়াতে ইতোমধ্যে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে সশস্ত্র পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রতিটি কেন্দ্রে সশস্ত্র ও নিরস্ত্র আনসার সদস্য থাকছে। কোন কোন এলাকায় বিশেষ করে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের এলাকায় র‌্যাবও টহলে থাকবে বলে জানা গেছে। তবে সরকারি দলের স্থানীয় পর্যায়ের নেতাকর্মীরা দ্বিধা ও বহুধা বিভক্ত থাকায় সব ধরনের প্রস্তুতির পরেও নির্বাচন কতটা অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে, তা নিয়ে এই অঞ্চলের ভোটারদের মধ্যে সংশয় রয়েছে।

আজকের এ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ১৭৩, সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ৪৮৮ এবং সাধারণ সদস্য পদে ১ হাজার ৫৭২ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে ভোটের আগেই শাসক দল সমর্থিত ৬ চেয়ারম্যান, ৭ সদস্য ছাড়াও ৬ জন সংরক্ষিত নারী আসনের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।

আবার অনেক এলাকাতে কিছুটা বেশি মাত্রায় নির্বাচনী উত্তাপ রয়েছে। ইতোমধ্যে পিরোজপুর ও পটুয়াখালীর বাউফলে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। ফলে গোটা ইউনিয়নে উত্তেজনার পারদ ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী।

এবারের নির্বাচনে প্রতিটি জেলার নিজস্ব পুলিশ ফোর্সের সঙ্গে স্পেশাল আর্মড ফোর্স ছাড়াও পটুয়াখালী ও পিরোজপুরের জন্য ৬৬৮ জন অতিরিক্ত পুলিশ কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে বরিশাল রেঞ্জ থেকে, যার মধ্যে শুধু পটুয়াখালীতেই প্রায় সাড়ে ৪শ অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে। বরিশাল জেলাতেও নিজস্ব পুলিশ ফোর্সের বাইরে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন ও র‌্যাবের সদস্যরা থাকছে।

মাদারীপুরের কালকিনিতে নির্বাচনী প্রার্থীর মধ্যে সংঘর্ষ, আহত ২০

প্রতিনিধি, মাদারীপুর

ইউপি নির্বাচনে ভোট গ্রহণের একদিন আগেও মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার চরদৌলতখান ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সমর্থকদের সঙ্গে বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়েছেন উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন। গতকাল সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চরদৌলতখান (সিডি খান) ইউনিয়নের মাথাভাঙ্গা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে বিদ্রোহী প্রার্থী মিলন মিয়ার চাচাত ভাই আলমগীর প্যাদা (৫৫), ভাতিজা অপু প্যাদা (৩৫) ও সমর্থক রিপন মোল্লাকে (৪৫) আশঙ্কাজনক অবস্থায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, কালকিনির ও ডাসার উপজেলার ১৩ ইউনিয়ন পরিষদের এই নির্বাচনে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সকালে ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী চাঁনমিয়া শিকদার ও বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী মিলন মিয়ার সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় অর্ধশত ককটেল ও হাতবোমা বিম্ফোরণ ঘটিয়ে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয়। এ সময় উভয় পক্ষের আহত হয় অন্তত ২০ জন। খবর পেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। ঘটনাস্থলে র‌্যাব ও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা আসিফ ইয়াজদানী বলেন, ‘হামলায় অন্তত ১০ জন ভর্তি রয়েছেন। এর মধ্যে তিন জনের অবস্থা খুবই গুরুতর। বোমা হামলায় তাদের শরীরে বিভিন্ন স্থানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওই তিনজনের উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে।’

আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী মিলন মিয়া বলেন, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী চাঁন মিয়ার নির্দেশে ভোর সাড়ে ৬টায় প্রথমে আমার বাড়িতে হামলা চালানো হয়। ওদের টার্গেট ছিল, আমাকে হত্যা করা। বাড়িতে হামলা পরে আমাদের লোকজন ধাওয়া দিয়ে নৌকার সমর্থকদের মাথাভাঙ্গা এলাকায় নিয়ে যায়। পরে সেখানে বসে আমার সমর্থকদের সঙ্গে নৌকার ক্যাডারবাহিনীর সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে আমাদেরই লোকজন আহত বেশি।’

অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী চাঁনমিয়া শিকদার বলেন, ‘নির্বাচনী এলাকায় মিলন নিজের প্রভাব বিস্তারের জন্য প্রথমে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটনায়। পরে আমার নেতাকর্মীরা মিলনের নেতাকর্মীদের প্রতিরোধ গড়ে তোলে। মিলন নিজের দোষ আড়াল করতে আমার নামে মিথ্যে দোষারোপ করে যাচ্ছে।’

এ সম্পর্কে কালকিনি থানার (ওসি) ইসতিয়াক আশফাক বলেন, ‘দুপক্ষের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র আরও আগে থেকেই বিরোধ চলছিল। নির্বাচনে দুজন আবার চেয়ারম্যান প্রার্থী। ভোটের আগে দুজনই এলাকায় আধিপত্য দেখানোর জন্য তাদের সমর্থকরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় কিছু ককটেল বিস্ফোরণও ঘটানো হয়। বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে দুজনের অবস্থা বেশি খারাপ। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ৮ জনকে আটক করেছে। এ ঘটনায় এখনও মামলা দায়ের হয়নি, তবে মামলা দায়ের প্রক্রিয়াধীন।’

মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরে আ’লীগের ৮ বিদ্রোহী প্রার্থীকে বহিষ্কার

প্রতিনিধি, মানিকগঞ্জ

মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী হওয়ায় আটজনকে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার দুপুরে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম মহীউদ্দীন এবং সাধারণ সম্পাদক আবদুস সালামের স্বাক্ষরিক এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যনির্বাহী কমিটির নির্দেশ মোতাবেক জেলার সিঙ্গাইর উপজেলাধীন আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দলের মনোনয়নপ্রাপ্ত নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেয়ায় দলীয় গঠনতন্ত্রের ৪৭/১১ ধারা মোতাবেক ওই আটজনকে বহিষ্কার করা হয়। এছাড়া দলীয় পদে থেকে যারা নৌকার বিরুদ্ধে অন্য প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন, তাদের সর্তক করা হয়েছে। বহিষ্কার করা আটজন হলেন, বলধারা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) বিদ্রোহী প্রার্থী ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মো. ওবায়দুর রহমান, চান্দহর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য আফজাল হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও জামির্ত্তা ইউনিয়নের বিদ্রোহী প্রার্থী আবুল হোসেন, জয়মন্টপ ইউনিয়নের বিদ্রোহী প্রার্থী ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বোরহান উদ্দিন ফকির, একই ইউনিয়নের আরেক বিদ্রোহী প্রার্থী ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অলি আহমদ মোল্লা, জামশা ইউনিয়নের বিদ্রোহী প্রার্থী ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মিজানুর রহমান ওরফে মিঠু, সিংগাইর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য তারিকুল ইসলাম এবং শায়েস্তা ইউনিয়নের বিদ্রোহী প্রার্থী ও ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আবদুল হালিম।

কাপাসিয়ায় ইউপি নির্বাচনে ভোট বেচা-কেনার অভিযোগ

প্রতিনিধি, কাপাসিয়া (গাজীপুর)

দ্বিতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নিয়ে কাপাসিয়ায় উৎসব মুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী, কর্মী, সমর্থক ও ভোটারদের মাঝে চলছে ব্যাপক হিসাব-নিকাশ। অবাধ ও সুষ্ঠু পরিবেশে ভোটাররা ভোট দিতে পারবেন কি না, এ নিয়ে চলছে পক্ষে-বিপক্ষে নানা অভিমত। শেষ মুহূর্তে এসে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা বিজয়ী হতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। কোন কোন প্রার্থী পাঁচশত টাকা থেকে এক হাজার টাকা দিয়ে ভোট কিনে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

জানা যায়, উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৪৪ জন, ৩৩টি সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ১১০ জন এবং ৯৯টি সাধারণ সদস্য পদে ৪০১ জন প্রার্থী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিদ্বন্দ্বীদের মাঝে উত্তেজনা দেখা দিলে ইতোমধ্যে কয়েক স্থানে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। আচরণবিধি লঙ্ঘন, মারধর ও হুমকি-ধমকির অভিযোগ এনে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসার ও থানায় কয়েকজন প্রার্থী লিখিত অভিযোগ করেছেন।

প্রতিনিধি, যশোর

যশোরের ঝিকরগাছা ও চৌগাছার ইউনিয়ন পরিষদের বিএনপি-জামায়াত দলীয়ভাবে নির্বাচন না করায় অধিকাংশ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মাঠে রয়েছে বিদ্রোহী প্রার্থী। তাই ভোটের সমীকরণে নৌকার প্রার্থীদের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ দলের বিদ্রোহীরা। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সহিংসতা হয়েছে। নির্বাচনকে ঘিরে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

ঝিকরগাছা ও চৌগাছা উপজেলার ২২টি ইউনিয়নের মধ্যে ২০টিতে চেয়ারম্যান পদে ভোটগ্রহণ হবে। বাকি দুটি চৌগাছার ফুলসারা ও চৌগাছা সদর ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করে নৌকা প্রতীক দিলেও কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে ২০টি ইউনিয়নের ১৩টিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মাঠে রয়েছেন।

ইতোমধ্যে বিদ্রোহী প্রার্থীদের দল থেকে বহিষ্কার করেও লাগাম টানতে পারেনি আওয়ামী লীগ। কারণ, দলের উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের শীর্ষ নেতাদের অনেকেই বিদ্রোহীদের মদদ দিচ্ছেন। আর একই দলের একাধিক প্রার্থী মাঠে থাকায় উৎসবের নির্বাচন রূপ নিতে পারে সংঘর্ষের দিকে। নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণার শুরু থেকেই আধিপত্য বিস্তার ও আধিপত্য বজায় রাখার জন্য দলীয় প্রার্থীর নেতাকর্মীদের সঙ্গে বিদ্রোহী প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের হামলা-পাল্টা হামলা, নির্বাচনী কার্যালয়সহ প্রচার মাইক ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোন প্রকার সহিংসতা ঘটানোর চেষ্টা করলে জেলা পুলিশ হুঁশিয়ারি বার্তাও পৌঁছে দিয়েছে বিভিন্ন প্রার্থীর কর্মী ও সমর্থকদের কাছে। সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণের জন্য প্রতিটি কেন্দ্রেই বাড়ানো হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

জেলা নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ঝিকরগাছা-চৌগাছার ২২টি ইউনিয়নে মোট ভোটার ৩ লাখ ৮৯ হাজার ৯৬৩ জন। এর মধ্যে ঝিকরগাছাতে ২ লাখ ১৯ হাজার ২৭৬ জন ভোটার ১২৩টি কেন্দ্রে ৬০৬টি বুথে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। আর চৌগাছায় ১ লাখ ৭০ হাজার ৬৮৭ জন ভোটার ১০২টি কেন্দ্রে ৪৮০টি বুথে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। দুই উপজেলার ১৭শ পুলিশের সঙ্গে জন ৮ জন জুডিশিয়াল ও ১৬ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। তিন প্লাটুন বিজিবির সঙ্গে দেড় হাজার আনসার সদস্য মোতায়েন থাকবে। এছাড়া পুলিশের ৫টি মোবাইল টিম ও ৬টি স্ট্রাইকিং ফোর্সের ৬টি টিম নির্বাচনের মাঠে সার্বক্ষণিক কাজ করবে।

প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামের তিন উপজেলা ফটিকছড়ি, সীতাকু- ও মিরসারইয়ের ৩৭ ইউনিয়নে দ্বিতীয় দফা নির্বাচন উপলক্ষে গতকাল সম্পন্ন হয়েছে সব কার্যক্রম। সকাল থেকে সব কেন্দ্রে পৌঁছানো হয়েছে নির্বাচনী সরঞ্জাম। মিরসরাই উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নের মধ্যে ১৩টি (জোরারগঞ্জ, করেরহাট, হিঙ্গুলী, দুর্গাপুর, কাটাছড়া, ওয়াহেদপুর, সাহেরখালী, ওসমানপুর, ধুম, হাইতকান্দি, মায়ানী, মিঠানালা, মঘাদিয়া) ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। বাকি ৩টি (ইছাখালী, মিরসরাই সদর ও খৈয়াছড়া) ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন হওয়া ৩টি ইউনিয়নের মোট প্রার্থীর সংখ্যা ৯ জন।

এছাড়া পুরো উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নে সংরক্ষিত ওয়ার্ড সদস্য পদে ১১৮ জন এবং সাধারণ ওয়ার্ড সদস্যপদে ৪৮৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা। এই উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ১৩ হাজার ৭৩৬ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৬০ হাজার ৪২৬ জন এবং মাহিলা ভোটার ১ লাখ ৫৩ হাজার ৩১০ জন।

অন্যদিকে, সীতাকু- উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে ৫টি ( সৈয়দপুর, মুরাদপুর, সোনাইছড়ি, ভাটিয়ারি, কুমিরা) ইউনিয়নে চেয়ারম্যান প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। ফলে বাকি ৪টি (বাড়বকু-, বাঁশবাড়িয়া, বারৈয়াঢালা, ছলিমপুর) ইউনিয়নে মোট চেয়ারম্যান প্রার্থীর সংখ্যা ৯ জন।

এছাড়া পুরো উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে সংরক্ষিত ওয়ার্ড সদস্য পদে ৬৪ জনের মধ্যে ৭ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এবং সাধারণ ওয়ার্ড সদস্যপদে ২৯৪ জনের মধ্যে ৪ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এই উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৬৪ হাজার ৯৮৯ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৪১ হাজার ৩৮১ জন এবং মহিলা ভোটার ১ লাখ ২৩ হাজার ৬০৮ জন।

ফটিকছড়ি উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের মধ্যে ২ ইউনিয়ন ভক্তপুর ও লেলাং ইউপিতে উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশের কারণে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। আবদুল্লাহপুর ইউনিয়নে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।

এছাড়া এই উপজেলায় বাকি ১১টি ইউনিয়নে মোট চেয়ারম্যান প্রার্থী ২৬ জন। এই উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৪৬ হাজার ৩৬৫ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৮২ হাজার ২৭৪ জন এবং মহিলা ভোটার ১ লাখ ৬৪ হাজার ৯১ জন।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ইতোমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে মোতায়েন থাকবে পুলিশ সদস্য। তিনি সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

প্রতিনিধি, কক্সবাজার

কক্সবাজার সদর, রামু ও উখিয়া উপজেলার ২১টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন উপলক্ষে ইতোমধ্যে অবাধ, শান্তিপূর্ণ, সুষ্ঠু পরিবেশে ভোট উৎসব অনুষ্ঠানের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে প্রশাসন। কক্সবাজার জেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রমতে, কক্সবাজারের ৩ উপজেলার ২১টি ইউনিয়নে ২০৩টি কেন্দ্রে ৪ লাখ ৪ হাজার ৯৫২ জন ভোটার রয়েছে। এতে রামুতে ১১ ইউনিয়নের ১০০টি কেন্দ্র, উখিয়ার ৫০ টি কেন্দ্র এবং সদর উপজেলার ৫৩টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ হবে।

কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুশকুল, চৌফলদন্ডী, ভারুয়াখালী, পিএমখালী ও ঝিলংজা ইউপির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ ৫ ইউনিয়নের মোট কেন্দ্র ৫৭টি। এরমধ্যে ২৭টি ঝুঁকিপূর্ণ। রামু উপজেলার ফতেখারকুল, গর্জনিয়া, কচ্ছপিয়া, জোয়ারিরনালা, রশিদ নগর, ইদগড়, চাকমারকুল, দক্ষিণ মিঠাছড়ি, খুনিয়াপালং, রাজারকুল ও কাউয়ারখোপে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই ১১টি ইউনিয়নের মোট ভোট কেন্দ্র ১০০ এর মধ্যে ৫৮ টি ঝুঁকিপূর্ণ। একই দিন উখিয়া উপজেলার হলদিয়া পালং, রতœা পালং রাজা পালং, জালিয়া পালং ও পালংখালী ইউনিয়নের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ওই উপজেলার ৫০টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ৩০টি ভোটকেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ।

কক্সবাজার জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এস এম শাহাদাত হোছাইন বলেন, জেলার তিনটি উপজেলার ২০৩টি কেন্দ্রের মধ্যে ৮৮টি সাধারণ ও ১০৫টি কেন্দ্র গুরুত্বপূর্ণ। কক্সবাজার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ আশেক ইলাহী শাহাজাহান নূরী বলেন, আইন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুসারে ১০ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২১টি ইউপিতে নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করবেন। তিনটি উপজেলায় ৪৬ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। এর মধ্যে সদরের ৫টি ইউপিতে ১২ জন, রামুর ১১ টিতে ২২ জন এবং উখিয়ার ৫টিতে ১২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন।

কক্সবাজারের জেলা পুলিশ সুপার (ভারপ্রাপ্ত) রফিকুল ইসলাম বলেন, শতভাগ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণ করা হবে। কেন্দ্রে কেউ যদি কোন সমস্যা করার চেষ্টা করে তাহলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ব্যালেট পেপার ছিনতাই বা ভোট ডাকাতির চেষ্টা করলেই গুলি করা হবে।