১২ দিন ধরে জমি রেজিস্ট্রির কার্যক্রম বন্ধ, মানুষের দুর্ভোগ চরমে

রংপুরে ১২ দিন ধরে সাব-রেজিস্টার নেই ফলে জমিসহ সব কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। শত শত মানুষ জমি ক্রয় রেজিস্ট্রি করতে এসে চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছে। সরকার অন্তত ৭ কোটি টাকা রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হয়েছে।

রংপুর জেলা রেজিস্টার আবদুস সালাম সাব-রেজিস্টার না থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। রেজিস্টারি অফিস সূত্রে জানা গেছে, রংপুর সাব-রেজিস্টারি অফিসে রংপুর মহানগর, সিটি করপোরেশনের ৩৩টি ওয়ার্ডসহ সদর উপজেলার সব জমি রেজিস্ট্রিসহ যাবতীয় কার্যক্রম এখানেই করা হয়। মিজানুর রহমান নামে একজন সাব-রেজিস্টার এখানে দায়িত্বরত ছিলেন। তিনি ১২ দিন আগে অবসরে গেছেন। তার পরিবর্তে অন্য কাউকেই এখনও সাব-রেজিস্টার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়নি। এ সংক্রান্ত কোন আদেশনামা জারি করা হয়নি। একজন কর্মকর্তা জানান, আইন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট দপ্তর এসব তদারকি করে থাকেন। তারা অনেক আগে থেকে জানেন রংপুর সাব-রেজিস্টার অবসরে যাবেন। তার স্থলে একজন সাব-রেজিস্টার নিয়োগ দেয়ার বিষয়টি আমলেই নেননি।

সরজমিন রংপুর সাব-রেজিস্টারি অফিসে গিয়ে দেখা গেছে, সদর উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকা মমিনপুর থেকে জমি রেজিস্ট্রি করতে এসেছেন বৃদ্ধ মমিনুল ও তার স্ত্রী আলেমা বেগম। তারা পর পর ৪ দিন এসে সাব-রেজিস্টার না থাকায় ফিরে গেছেন। তারা জানালেন, তারা দু’জনই চিকিৎসার জন্য ভারতে যাবেন। সে জন্য একখ- জমি বিক্রি করার জন্য কিছু টাকা বায়না নিয়েছেন। এখন জমি রেজিস্টারি না করা হলে তারা তো টাকা দেবে না। কবে সাব-রেজিস্টার আসবে কেউ বলতে পারছে না। একই কথা জানালেন, পাগলাপীর এলাকার সালাম মিয়া। তিনি জানান, জমি কেনার জন্য বায়নার টাকা দিয়েছেন। সময় ছিল এক মাস আর মাত্র ৩ দিন বাকী রয়েছে। এর মধ্যে জমি রেজিস্টারি করে না দিলে বিক্রেতা যদি জমি বিক্রি না করেন তাহলে আইনত আমার করার কিছুই থাকবে না। এমনকি বায়না হিসেবে দেয়া টাকাও মার যাবে। কিন্তু সাব-রেজিস্টার না থাকায় জমি রেজিস্টারি করা যাচ্ছে না।

এ দিকে রংপুর সাব-রেজিস্টারি অফিসের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, এই ১২ দিনে অন্তত ৫ থেকে ৭ কোটি টাকা রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত সরকার। মানুষের ভোগান্তিরও শেষ নেই।

সার্বিক বিষয়ে জানতে রংপুর জেলা রেজিস্টার আবদুুস সালাম জানান, এখানে সাব-রেজিস্টার হিসেবে মিজানুর রহমান নামে একজন সাব-রেজিস্টার ছিলেন তিনি অবসরে গেছেন। তার পরিবর্তে এখনও কাউকে নিয়োগ দেয়া হয়নি। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার, ১১ নভেম্বর ২০২১ , ২৬ কার্তিক ১৪২৮ ৫ রবিউস সানি ১৪৪৩

রংপুরে সাব-রেজিস্টার নেই

১২ দিন ধরে জমি রেজিস্ট্রির কার্যক্রম বন্ধ, মানুষের দুর্ভোগ চরমে

লিয়াকত আলী বাদল রংপুর

রংপুরে ১২ দিন ধরে সাব-রেজিস্টার নেই ফলে জমিসহ সব কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। শত শত মানুষ জমি ক্রয় রেজিস্ট্রি করতে এসে চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছে। সরকার অন্তত ৭ কোটি টাকা রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হয়েছে।

রংপুর জেলা রেজিস্টার আবদুস সালাম সাব-রেজিস্টার না থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। রেজিস্টারি অফিস সূত্রে জানা গেছে, রংপুর সাব-রেজিস্টারি অফিসে রংপুর মহানগর, সিটি করপোরেশনের ৩৩টি ওয়ার্ডসহ সদর উপজেলার সব জমি রেজিস্ট্রিসহ যাবতীয় কার্যক্রম এখানেই করা হয়। মিজানুর রহমান নামে একজন সাব-রেজিস্টার এখানে দায়িত্বরত ছিলেন। তিনি ১২ দিন আগে অবসরে গেছেন। তার পরিবর্তে অন্য কাউকেই এখনও সাব-রেজিস্টার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়নি। এ সংক্রান্ত কোন আদেশনামা জারি করা হয়নি। একজন কর্মকর্তা জানান, আইন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট দপ্তর এসব তদারকি করে থাকেন। তারা অনেক আগে থেকে জানেন রংপুর সাব-রেজিস্টার অবসরে যাবেন। তার স্থলে একজন সাব-রেজিস্টার নিয়োগ দেয়ার বিষয়টি আমলেই নেননি।

সরজমিন রংপুর সাব-রেজিস্টারি অফিসে গিয়ে দেখা গেছে, সদর উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকা মমিনপুর থেকে জমি রেজিস্ট্রি করতে এসেছেন বৃদ্ধ মমিনুল ও তার স্ত্রী আলেমা বেগম। তারা পর পর ৪ দিন এসে সাব-রেজিস্টার না থাকায় ফিরে গেছেন। তারা জানালেন, তারা দু’জনই চিকিৎসার জন্য ভারতে যাবেন। সে জন্য একখ- জমি বিক্রি করার জন্য কিছু টাকা বায়না নিয়েছেন। এখন জমি রেজিস্টারি না করা হলে তারা তো টাকা দেবে না। কবে সাব-রেজিস্টার আসবে কেউ বলতে পারছে না। একই কথা জানালেন, পাগলাপীর এলাকার সালাম মিয়া। তিনি জানান, জমি কেনার জন্য বায়নার টাকা দিয়েছেন। সময় ছিল এক মাস আর মাত্র ৩ দিন বাকী রয়েছে। এর মধ্যে জমি রেজিস্টারি করে না দিলে বিক্রেতা যদি জমি বিক্রি না করেন তাহলে আইনত আমার করার কিছুই থাকবে না। এমনকি বায়না হিসেবে দেয়া টাকাও মার যাবে। কিন্তু সাব-রেজিস্টার না থাকায় জমি রেজিস্টারি করা যাচ্ছে না।

এ দিকে রংপুর সাব-রেজিস্টারি অফিসের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, এই ১২ দিনে অন্তত ৫ থেকে ৭ কোটি টাকা রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত সরকার। মানুষের ভোগান্তিরও শেষ নেই।

সার্বিক বিষয়ে জানতে রংপুর জেলা রেজিস্টার আবদুুস সালাম জানান, এখানে সাব-রেজিস্টার হিসেবে মিজানুর রহমান নামে একজন সাব-রেজিস্টার ছিলেন তিনি অবসরে গেছেন। তার পরিবর্তে এখনও কাউকে নিয়োগ দেয়া হয়নি। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।