বাংলাদেশের চতুর্থ ঋতু ‘হেমন্ত’। কার্তিক ও অগ্রহায়ণ দুই মাস ঋতুটির ব্যাপ্তি। শরতের শুভ্র মেঘের ভেলা, কাশফুল ও স্নিগ্ধ নরম হাওয়ায় ভাসতে ভাসতে হিম কুয়াশার চাদর নিয়ে আসে হেমন্ত। শেষ রাতে ভর করে শীতলতা। ভোরের আলো ছড়ানোর পর শিশির বিন্দু ঝরার টুপটাপ শব্দ আর মৃদু হিম বাতাস জানান দেয় ঋতু পরিবর্তনের এ খবর। তাই নতুন আবহ তৈরি হয় এ সময়টাতে। আর বাংলার প্রকৃতি জুড়েই যখন পালা বদলের এমন ঘনঘটা। কালের চাকায় ভর করে আসা হেমন্তের এই শিশির স্নাত প্রহরে তাই এখন শীতের আমেজ উপভোগ করতে শুরু করেছে নবীনগর শহর ও গ্রামাঞ্চলের মানুষ।
এরইমধ্যে শুরু হয়ে গেছে শীতকে বরণ করে নেয়ার প্রস্তুতি। ঋতু পরিক্রমায় শীত আসতে এখন ও এক মাস বাকি থাকলে ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে এখনই পাওয়া যাচ্ছে এর আমেজ। এলাকায় লেপ-তোষক তৈরির দোকানগুলোতে গ্রহকদের হিড়িক পড়ে গেছে। শীত আসার আগেই দোকানগুলোতে এখন অতিরিক্ত কারিগর কাজ করছে, তৈরি করে চলেছেন লেপ-তোষক। লেপ-তোষক বানাতে ব্যস্ত কারিগররা এই কয়েকদিন আগেও দোকানে কাজ ছিল না বলে জানান। শাহপরান বেডিং স্টোরের মালিক মাঝিকাড়া গ্রামের রফিকুল ইসলাস বলেন, এত দিন নবজাতক শিশুর জন্য বালিশ, কুলবালিশ আর সোফা সেটের জন্য নারকেলের ছোবড়া বিক্রি করে কোনো রকমে দোকানের খরচ চালাতে হচ্ছিল। আজ ও দোকানে আসার পর ৫টি লেপ ও ২টি তোষকের অর্ডার মিলেছে বলে জানান। লেপ, তোষক ও লেপের কভারসহ অন্য জিনিসপত্রে দাম কেমন প্রশ্নে একই এলাকার অপর ব্যাবসায়ী বাবু মিয়া বলেন, দাম গত বছরের তুলনায় একটু বেশিই। ডাবল লেপ এক হাজার ১৫০০ থেকে ১,৮০০ টাকা এবং সিঙ্গেল লেপ ১০০০ টাকা থেকে ১২০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। সিঙ্গেল তোষক তৈরি করে দেয়া হচেছ ১১০০ থেকে ১২৫০ এবং ডাবল ১৭৫০ টাকা পযন্ত, কারিগরা প্রতিটি লেপ-তোষক সেলায়ের মজুরি পাচ্ছে ১২০ টাকা। পৌষ মাস আসলে ব্যস্ততা আরও বেড়ে যাবে। নতুন লেপ তৈরির পাশাপাশি পুরাতনগুলো ভেঙ্গে নতুনভাবে তৈরির অর্ডার বেশি পাওয়া যাচ্ছে। এজন্য শিমুল তুলার চেয়ে গার্মেন্টসের জুট থেকে আসা তুলা দিয়ে তৈরি লেপই বেশি বিক্রি হচ্ছে বলে জানান মনু মিয়া। একটি লেপ তৈরিতে সর্বোচ্চ দুই ঘণ্টা সময় লাগে জানিয়ে কারিগর হাবিবুর রহমান ও জালাল উদ্দিন এ প্রতিনিধিকে বলেন, একজন কারিগর দিনে গড়ে ৫-৬ লেপ তৈরি করতে পারেন। দিনে ৫ থেকে ৬ তোষক তৈরি করতেও প্রায় একই সময় লাগে। তুলা ধুনা, মাপ মত কাপড় কেটে সেলাই করা, তুলা ভরে তা দিয়ে লেপ-তোষক তৈরি করা সব কাজ হয় একই দোকানে। কোন কিছুর জন্য আলাদা আলাদা দোকানে দৌঁড়াতে হয় না ক্রেতাদের। পৌষ মাসে এর দাম কিছুটা বাড়বে বলে উল্লেখ করেন কারিগরা।
নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) : শীতের ওম লেপ বানানোয় মগ্ন কারিগররা -সংবাদ
আরও খবরশুক্রবার, ১২ নভেম্বর ২০২১ , ২৭ কার্তিক ১৪২৮ ৬ রবিউস সানি ১৪৪৩
প্রতিনিধি, নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া)
নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) : শীতের ওম লেপ বানানোয় মগ্ন কারিগররা -সংবাদ
বাংলাদেশের চতুর্থ ঋতু ‘হেমন্ত’। কার্তিক ও অগ্রহায়ণ দুই মাস ঋতুটির ব্যাপ্তি। শরতের শুভ্র মেঘের ভেলা, কাশফুল ও স্নিগ্ধ নরম হাওয়ায় ভাসতে ভাসতে হিম কুয়াশার চাদর নিয়ে আসে হেমন্ত। শেষ রাতে ভর করে শীতলতা। ভোরের আলো ছড়ানোর পর শিশির বিন্দু ঝরার টুপটাপ শব্দ আর মৃদু হিম বাতাস জানান দেয় ঋতু পরিবর্তনের এ খবর। তাই নতুন আবহ তৈরি হয় এ সময়টাতে। আর বাংলার প্রকৃতি জুড়েই যখন পালা বদলের এমন ঘনঘটা। কালের চাকায় ভর করে আসা হেমন্তের এই শিশির স্নাত প্রহরে তাই এখন শীতের আমেজ উপভোগ করতে শুরু করেছে নবীনগর শহর ও গ্রামাঞ্চলের মানুষ।
এরইমধ্যে শুরু হয়ে গেছে শীতকে বরণ করে নেয়ার প্রস্তুতি। ঋতু পরিক্রমায় শীত আসতে এখন ও এক মাস বাকি থাকলে ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে এখনই পাওয়া যাচ্ছে এর আমেজ। এলাকায় লেপ-তোষক তৈরির দোকানগুলোতে গ্রহকদের হিড়িক পড়ে গেছে। শীত আসার আগেই দোকানগুলোতে এখন অতিরিক্ত কারিগর কাজ করছে, তৈরি করে চলেছেন লেপ-তোষক। লেপ-তোষক বানাতে ব্যস্ত কারিগররা এই কয়েকদিন আগেও দোকানে কাজ ছিল না বলে জানান। শাহপরান বেডিং স্টোরের মালিক মাঝিকাড়া গ্রামের রফিকুল ইসলাস বলেন, এত দিন নবজাতক শিশুর জন্য বালিশ, কুলবালিশ আর সোফা সেটের জন্য নারকেলের ছোবড়া বিক্রি করে কোনো রকমে দোকানের খরচ চালাতে হচ্ছিল। আজ ও দোকানে আসার পর ৫টি লেপ ও ২টি তোষকের অর্ডার মিলেছে বলে জানান। লেপ, তোষক ও লেপের কভারসহ অন্য জিনিসপত্রে দাম কেমন প্রশ্নে একই এলাকার অপর ব্যাবসায়ী বাবু মিয়া বলেন, দাম গত বছরের তুলনায় একটু বেশিই। ডাবল লেপ এক হাজার ১৫০০ থেকে ১,৮০০ টাকা এবং সিঙ্গেল লেপ ১০০০ টাকা থেকে ১২০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। সিঙ্গেল তোষক তৈরি করে দেয়া হচেছ ১১০০ থেকে ১২৫০ এবং ডাবল ১৭৫০ টাকা পযন্ত, কারিগরা প্রতিটি লেপ-তোষক সেলায়ের মজুরি পাচ্ছে ১২০ টাকা। পৌষ মাস আসলে ব্যস্ততা আরও বেড়ে যাবে। নতুন লেপ তৈরির পাশাপাশি পুরাতনগুলো ভেঙ্গে নতুনভাবে তৈরির অর্ডার বেশি পাওয়া যাচ্ছে। এজন্য শিমুল তুলার চেয়ে গার্মেন্টসের জুট থেকে আসা তুলা দিয়ে তৈরি লেপই বেশি বিক্রি হচ্ছে বলে জানান মনু মিয়া। একটি লেপ তৈরিতে সর্বোচ্চ দুই ঘণ্টা সময় লাগে জানিয়ে কারিগর হাবিবুর রহমান ও জালাল উদ্দিন এ প্রতিনিধিকে বলেন, একজন কারিগর দিনে গড়ে ৫-৬ লেপ তৈরি করতে পারেন। দিনে ৫ থেকে ৬ তোষক তৈরি করতেও প্রায় একই সময় লাগে। তুলা ধুনা, মাপ মত কাপড় কেটে সেলাই করা, তুলা ভরে তা দিয়ে লেপ-তোষক তৈরি করা সব কাজ হয় একই দোকানে। কোন কিছুর জন্য আলাদা আলাদা দোকানে দৌঁড়াতে হয় না ক্রেতাদের। পৌষ মাসে এর দাম কিছুটা বাড়বে বলে উল্লেখ করেন কারিগরা।