সংরক্ষণের অভাবে নষ্ট হচ্ছে হাজার হাজার টন ফল-শাক-সবজি

বাংলাদেশ সবজি ও ফল উৎপাদনে পৃথিবীতে রোল মডেল হলেও ফল ও সবজির সঠিক সংরক্ষণের অভাবে দেশে হাজার হাজার টন ফল ও শাক-সবজি নষ্ট হয়। কৃষক হয় অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। ক্ষুদ্র পরিসরে তৈরি হিমায়িত সংরক্ষণাগারে সংরক্ষণকাল ১ মাস পর্যন্ত বাড়িয়ে এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এই ভাবনা থেকে আধুনিক প্রযুক্তি সম্প্রসারণের মাধ্যমে রাজশাহী বিভাগের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থায়নে রোববার রাজশাহী জেলার পুঠিয়া উপজেলার শিবপুর বাজারে ৪ টন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন ফল ও শাক-সবজি সংরক্ষণের জন্য মিনি কোল্ড স্টোরেজ স্থাপন করা হয়েছে।

পরীক্ষামূলক সংরক্ষণের জন্য স্থাপিত এই ধরনের মিনি কোল্ড স্ট্রোরেজে আম, টমেটো, ড্রাগন ফল, গাজর প্রভৃতি ফল এবং বিভিন্ন শাক-সবজি রাখা যাবে। মূলত ৪% অক্সিজেন মেইনটেইন এবং ইথিলিনের কন্ট্রোল করে এই কোল্ড স্টোরগুলো কাজ করবে। এটি ছাড়াও চাঁপাইনবাগঞ্জের শিবগঞ্জ এবং নাটোরের আহমদপুরে যথাক্রমে ৮ এবং ৪ মে. টনের আরও দুটি মিনি কোল্ড স্টোরেজ স্থাপিত হচ্ছে। পরীক্ষার ফল সন্তোষজনক হলে এধরনের আরও সংরক্ষণাগার গড়ে তোলা হবে বলে জানানো হয়।

৩(তিন) বছরের মধ্যে দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন ১০ লাখ টন বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়। পেঁয়াজে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে হলে এই উচ্চফলনশীল গ্রীষ্মকালীন বারি-৫ জাতের পেঁয়াজের চাষ সারাদেশে দ্রুত বাড়াতে হবে। এরই ধারাবাহিকতায় পুঠিয়া উপজেলায় কৃষি প্রণোদনার আওতায় প্রায় ৪৫০ জন চাষীকে সার, বীজ, বালাইনাশক এবং পরিচর্যা খরচ ব্যাংক এ্যাকাউন্টের মাধ্যমে প্রদান করা হয়েছে। এর ফলে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ জনপ্রিয় হবে। গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের বারি-৫ জাতের উৎপাদন সবচেয়ে ভাল, হেক্টর প্রতি ফলন প্রায় ১৯ মেট্রিক টন। পেঁয়াজ চাষে ৬০০-৭০০ গ্রাম বীজ প্রতি বিঘার জন্য প্রয়োজন হয়। খরিপ মৌসুমে উৎপাদনের জন্য ৪০-৪৫ দিনের চারা তৈরি করে মাঠে রোপণ করাই উত্তম। জাতভেদে হেক্টর প্রতি ১৩-২০ টন ফলন পাওয়া যায়।

রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার শিবপুরহাটে গত বুধবার বিকেল ফল সংরক্ষণে মিনি কোল্ড স্টোরেজের কার্যক্রম এবং গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের বীজতলা পরিদর্শন করেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কৃষিবিদ মো. আসাদুল্লাহ, রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতি.পরিচালক কৃষিবিদ মো. সিরাজুল ইসলাম, জেলার উপ-পরিচালক কৃষিবিদ কেজেএম আব্দুল আউয়াল, প্রকল্প পরিচালক কৃষিবিদ ড. এস এম. হাসানুজ্জামানসহ কৃষি মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন দপ্তরের প্রতিনিধিবৃন্দ।

এ সময় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সি, কৃষি তথ্য সার্ভিস, ধান গবেষণা, এসআরডিআই, ফল গবেষণা, গম ও ভুট্টা গবেষণা, লাক্ষ্মা গবেষণা, বিনা, বিএডিসি, বিএমডিএ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং অন্যান্য ব্যক্তিবর্গসহ শতাধিক কৃষক কৃষাণী জন উপস্থিত ছিলেন।

আরও খবর
আমনের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি
মোংলায় জেলি পুশ ১শ’ মণ চিংড়িসহ ৭ ব্যবসায়ী ধৃত
ডিলার স্বল্পতা ও বরাদ্দ সংকটে টিসিবি’র সুবিধাবঞ্চিত মানুষ
কেশবপুরে জলাবদ্ধতা নিরসনে ১৪ দফা দাবি বাস্তবায়নে মানববন্ধন
রাজশাহীতে নকল পণ্য দুই ব্যবসায়ী গ্রেপ্তার
শীত বরণে লেপ-তোশক তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা
নবাবগঞ্জে বৈদ্যুতিক খুঁটির চাপায় দুই শ্রমিকের মৃত্যু
চরাঞ্চলে রোগ-বন্যা সহনশীল মহিষ পালন দিন দিন বাড়ছে
গাজীপুরে একশ টাকায় পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ পেল ৭১ জন
মাঠেই কৃষিঋণের তথ্য পাবেন কৃষক
খাল দখলে নিষ্কাশন বন্ধ : দুর্ভোগ
সোনারগাঁয়ে জমি বিবাদে ঘরে আগুন : আহত ৪
বোয়ালখালীতে করোনার গণটিকা

শুক্রবার, ১২ নভেম্বর ২০২১ , ২৭ কার্তিক ১৪২৮ ৬ রবিউস সানি ১৪৪৩

সংরক্ষণের অভাবে নষ্ট হচ্ছে হাজার হাজার টন ফল-শাক-সবজি

জেলা বার্তা পরিবেশক, রাজশাহী

বাংলাদেশ সবজি ও ফল উৎপাদনে পৃথিবীতে রোল মডেল হলেও ফল ও সবজির সঠিক সংরক্ষণের অভাবে দেশে হাজার হাজার টন ফল ও শাক-সবজি নষ্ট হয়। কৃষক হয় অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। ক্ষুদ্র পরিসরে তৈরি হিমায়িত সংরক্ষণাগারে সংরক্ষণকাল ১ মাস পর্যন্ত বাড়িয়ে এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এই ভাবনা থেকে আধুনিক প্রযুক্তি সম্প্রসারণের মাধ্যমে রাজশাহী বিভাগের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থায়নে রোববার রাজশাহী জেলার পুঠিয়া উপজেলার শিবপুর বাজারে ৪ টন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন ফল ও শাক-সবজি সংরক্ষণের জন্য মিনি কোল্ড স্টোরেজ স্থাপন করা হয়েছে।

পরীক্ষামূলক সংরক্ষণের জন্য স্থাপিত এই ধরনের মিনি কোল্ড স্ট্রোরেজে আম, টমেটো, ড্রাগন ফল, গাজর প্রভৃতি ফল এবং বিভিন্ন শাক-সবজি রাখা যাবে। মূলত ৪% অক্সিজেন মেইনটেইন এবং ইথিলিনের কন্ট্রোল করে এই কোল্ড স্টোরগুলো কাজ করবে। এটি ছাড়াও চাঁপাইনবাগঞ্জের শিবগঞ্জ এবং নাটোরের আহমদপুরে যথাক্রমে ৮ এবং ৪ মে. টনের আরও দুটি মিনি কোল্ড স্টোরেজ স্থাপিত হচ্ছে। পরীক্ষার ফল সন্তোষজনক হলে এধরনের আরও সংরক্ষণাগার গড়ে তোলা হবে বলে জানানো হয়।

৩(তিন) বছরের মধ্যে দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন ১০ লাখ টন বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়। পেঁয়াজে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে হলে এই উচ্চফলনশীল গ্রীষ্মকালীন বারি-৫ জাতের পেঁয়াজের চাষ সারাদেশে দ্রুত বাড়াতে হবে। এরই ধারাবাহিকতায় পুঠিয়া উপজেলায় কৃষি প্রণোদনার আওতায় প্রায় ৪৫০ জন চাষীকে সার, বীজ, বালাইনাশক এবং পরিচর্যা খরচ ব্যাংক এ্যাকাউন্টের মাধ্যমে প্রদান করা হয়েছে। এর ফলে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ জনপ্রিয় হবে। গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের বারি-৫ জাতের উৎপাদন সবচেয়ে ভাল, হেক্টর প্রতি ফলন প্রায় ১৯ মেট্রিক টন। পেঁয়াজ চাষে ৬০০-৭০০ গ্রাম বীজ প্রতি বিঘার জন্য প্রয়োজন হয়। খরিপ মৌসুমে উৎপাদনের জন্য ৪০-৪৫ দিনের চারা তৈরি করে মাঠে রোপণ করাই উত্তম। জাতভেদে হেক্টর প্রতি ১৩-২০ টন ফলন পাওয়া যায়।

রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার শিবপুরহাটে গত বুধবার বিকেল ফল সংরক্ষণে মিনি কোল্ড স্টোরেজের কার্যক্রম এবং গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের বীজতলা পরিদর্শন করেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কৃষিবিদ মো. আসাদুল্লাহ, রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতি.পরিচালক কৃষিবিদ মো. সিরাজুল ইসলাম, জেলার উপ-পরিচালক কৃষিবিদ কেজেএম আব্দুল আউয়াল, প্রকল্প পরিচালক কৃষিবিদ ড. এস এম. হাসানুজ্জামানসহ কৃষি মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন দপ্তরের প্রতিনিধিবৃন্দ।

এ সময় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সি, কৃষি তথ্য সার্ভিস, ধান গবেষণা, এসআরডিআই, ফল গবেষণা, গম ও ভুট্টা গবেষণা, লাক্ষ্মা গবেষণা, বিনা, বিএডিসি, বিএমডিএ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং অন্যান্য ব্যক্তিবর্গসহ শতাধিক কৃষক কৃষাণী জন উপস্থিত ছিলেন।