ঢাকায় দেড় লাখের বেশি শিক্ষার্থী টিকা নিয়েছে

দূতাবাস কর্মীদের সন্তানদেরও টিকা দেয়ার সিদ্ধান্ত

ঢাকা মহানগরীতে ১২-১৭ বছর বয়সী দেড় লাখের বেশি শিক্ষার্থী করোনাভাইরাসের টিকা পেয়েছে। খুব শীঘ্রই আনুষ্ঠানিকভাবে জেলা পর্যায়ে ১২-১৭ বছরের শিক্ষার্থীদের টিকাদান শুরু হচ্ছে। অনানুষ্ঠানিকভাবে দু’তিনটি জেলায় শিক্ষার্থীরা এখনও টিকা পাচ্ছে।

এছাড়া ঢাকায় অবস্থিত বিদেশি দূতাবাসের কর্মরত নাগরিকদের সন্তানদেরও টিকাদানের বিষয়ে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে দূতাবাসে কর্মরত কর্মকর্তারা তাদের সন্তানদের (ফরেন স্টুডেন্টস) টিকার জন্য ১৭০ জনের তালিকা মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) পাঠিয়েছেন।

শিক্ষার্থীদের টিকাদান কর্মসূচি সমন্বয় করছেন মাউশির পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) প্রফেসর শাহেদুল খবির চৌধুরী। তিনি গতকাল দুপুরে সংবাদকে জানান, ঢাকায় অবস্থিত বিদেশি দূতাবাসে কর্মরত কর্মকর্তারা তাদের সন্তানদের জন্য অর্থাৎ ফরেন স্টুডেন্টসরা টিকা চাচ্ছেন। এ বিষয়ে দু’একদিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে। তাদের টিকাদানের বিষয়ে ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে মাউশির একটি সভা হয়েছে।

এ পর্যন্ত দেড় লাখের বেশি শিক্ষার্থী টিকা নিয়েছে জানিয়ে অধ্যাপক শাহেদুল খবির চৌধুরী বলেন, ঢাকায় আটটি কেন্দ্রের প্রতিটিতে প্রতিদিন পাঁচ হাজার শিক্ষার্থীকে মোট ৪০ হাজার টিকা দেয়ার পরিকল্পনা ছিল, কিন্তু ধারণক্ষমতা না থাকায় সেটি সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে শুরুতে প্রতিটি কেন্দ্রে দুই থেকে আড়াই হাজার করে টিকা দেয়া হচ্ছে। সবমিলিয়ে আটটি কেন্দ্রে দৈনিক প্রায় ১৮ হাজার শিক্ষার্থী টিকা পাচ্ছে।

তিনি জানান, বর্তমানে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রতিদিন চার হাজার, স্কলাস্টিকা স্কুলে তিন হাজার শিক্ষার্থীকে টিকা দেয়া হচ্ছে। বাকি ছয় স্কুলে দুই হাজার করে টিকা দেয়া হচ্ছে।

মিরপুর কমার্স কলেজে টিকাদান আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে জানিয়ে শাহেদুল খবির চৌধুরী বলেন, ‘আহমেদ বাওয়ানি স্কুলে নতুন টিকাদান কেন্দ্র করা হয়েছে।’

আগামী সপ্তাহ থেকে সক্ষমতা অনুযায়ী কেন্দ্রগুলোতে টিকার সংখ্যা বাড়ানো হবে জানিয়ে মাউশি পরিচালক বলেন, টিকা কেন্দ্রের ভেতরে ধারণক্ষমতা থাকলেও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অভিভাবক আসায় কেন্দ্রের গেটের সামনে ভিড় তৈরি হয়। সেটি বিবেচনা করে সংখ্যা বাড়ানো হবে। পরিমাণ বাড়ালে যেন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয় সেটিও গুরুত্ব দেয়া হবে। এই টিকাদান কার্যক্রম চলবে ডিসেম্বর পর্যন্ত।

জেলা পর্যায়ে আগামীকাল থেকে আনুষ্ঠানিক টিকাদান কর্মসূচি শুরু হতে পারে জানিয়ে অধ্যাপক শাহেদুল খবির চৌধুরী বলেন, ‘এতে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দেয়া হবে।’

মাউশির পরিচালক জানান, কোন শিক্ষার্থী নির্ধারিত দিনে টিকা না পেলে স্কুলে তথ্য জানাতে হবে। কতজন টিকা পায়নি সেটি স্কুল কর্তৃপক্ষ ঢাকা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে দিলে তিনি সেটি মাউশিতের পাঠাবেন। টিকা বঞ্চিতদের নতুন করে তালিকা করে সেই কেন্দ্রে পাঠাতে হবে। এতে দ্রুত সময়ের মধ্যে পুনরায় শিক্ষার্থীদের কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য এসএমএস দেয়া হবে।

শিক্ষার্থীদের ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকা দেয়া হচ্ছে। গত ১ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে ঢাকায় শিক্ষার্থীদের টিকাদান শুরু হয়। ওইদিন শুধুমাত্র মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে স্কুল শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়া হয়। পরদিন আইডিয়ালসহ ঢাকার হার্ডকো ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, সাউথপয়েন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজ, চিটাগং গ্রামার স্কুল, ঢাকা কমার্স কলেজ, কাকলি হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ, সাউথ ব্রিজ স্কুল ও স্কলাসটিকা স্কুল কেন্দ্রে টিকাদান শুরু হয়।

শুক্রবার, ১২ নভেম্বর ২০২১ , ২৭ কার্তিক ১৪২৮ ৬ রবিউস সানি ১৪৪৩

ঢাকায় দেড় লাখের বেশি শিক্ষার্থী টিকা নিয়েছে

দূতাবাস কর্মীদের সন্তানদেরও টিকা দেয়ার সিদ্ধান্ত

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

image

ঢাকা মহানগরীতে ১২-১৭ বছর বয়সী দেড় লাখের বেশি শিক্ষার্থী করোনাভাইরাসের টিকা পেয়েছে। খুব শীঘ্রই আনুষ্ঠানিকভাবে জেলা পর্যায়ে ১২-১৭ বছরের শিক্ষার্থীদের টিকাদান শুরু হচ্ছে। অনানুষ্ঠানিকভাবে দু’তিনটি জেলায় শিক্ষার্থীরা এখনও টিকা পাচ্ছে।

এছাড়া ঢাকায় অবস্থিত বিদেশি দূতাবাসের কর্মরত নাগরিকদের সন্তানদেরও টিকাদানের বিষয়ে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে দূতাবাসে কর্মরত কর্মকর্তারা তাদের সন্তানদের (ফরেন স্টুডেন্টস) টিকার জন্য ১৭০ জনের তালিকা মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) পাঠিয়েছেন।

শিক্ষার্থীদের টিকাদান কর্মসূচি সমন্বয় করছেন মাউশির পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) প্রফেসর শাহেদুল খবির চৌধুরী। তিনি গতকাল দুপুরে সংবাদকে জানান, ঢাকায় অবস্থিত বিদেশি দূতাবাসে কর্মরত কর্মকর্তারা তাদের সন্তানদের জন্য অর্থাৎ ফরেন স্টুডেন্টসরা টিকা চাচ্ছেন। এ বিষয়ে দু’একদিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে। তাদের টিকাদানের বিষয়ে ইতোমধ্যে স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে মাউশির একটি সভা হয়েছে।

এ পর্যন্ত দেড় লাখের বেশি শিক্ষার্থী টিকা নিয়েছে জানিয়ে অধ্যাপক শাহেদুল খবির চৌধুরী বলেন, ঢাকায় আটটি কেন্দ্রের প্রতিটিতে প্রতিদিন পাঁচ হাজার শিক্ষার্থীকে মোট ৪০ হাজার টিকা দেয়ার পরিকল্পনা ছিল, কিন্তু ধারণক্ষমতা না থাকায় সেটি সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে শুরুতে প্রতিটি কেন্দ্রে দুই থেকে আড়াই হাজার করে টিকা দেয়া হচ্ছে। সবমিলিয়ে আটটি কেন্দ্রে দৈনিক প্রায় ১৮ হাজার শিক্ষার্থী টিকা পাচ্ছে।

তিনি জানান, বর্তমানে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রতিদিন চার হাজার, স্কলাস্টিকা স্কুলে তিন হাজার শিক্ষার্থীকে টিকা দেয়া হচ্ছে। বাকি ছয় স্কুলে দুই হাজার করে টিকা দেয়া হচ্ছে।

মিরপুর কমার্স কলেজে টিকাদান আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে জানিয়ে শাহেদুল খবির চৌধুরী বলেন, ‘আহমেদ বাওয়ানি স্কুলে নতুন টিকাদান কেন্দ্র করা হয়েছে।’

আগামী সপ্তাহ থেকে সক্ষমতা অনুযায়ী কেন্দ্রগুলোতে টিকার সংখ্যা বাড়ানো হবে জানিয়ে মাউশি পরিচালক বলেন, টিকা কেন্দ্রের ভেতরে ধারণক্ষমতা থাকলেও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অভিভাবক আসায় কেন্দ্রের গেটের সামনে ভিড় তৈরি হয়। সেটি বিবেচনা করে সংখ্যা বাড়ানো হবে। পরিমাণ বাড়ালে যেন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয় সেটিও গুরুত্ব দেয়া হবে। এই টিকাদান কার্যক্রম চলবে ডিসেম্বর পর্যন্ত।

জেলা পর্যায়ে আগামীকাল থেকে আনুষ্ঠানিক টিকাদান কর্মসূচি শুরু হতে পারে জানিয়ে অধ্যাপক শাহেদুল খবির চৌধুরী বলেন, ‘এতে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দেয়া হবে।’

মাউশির পরিচালক জানান, কোন শিক্ষার্থী নির্ধারিত দিনে টিকা না পেলে স্কুলে তথ্য জানাতে হবে। কতজন টিকা পায়নি সেটি স্কুল কর্তৃপক্ষ ঢাকা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে দিলে তিনি সেটি মাউশিতের পাঠাবেন। টিকা বঞ্চিতদের নতুন করে তালিকা করে সেই কেন্দ্রে পাঠাতে হবে। এতে দ্রুত সময়ের মধ্যে পুনরায় শিক্ষার্থীদের কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য এসএমএস দেয়া হবে।

শিক্ষার্থীদের ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকা দেয়া হচ্ছে। গত ১ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে ঢাকায় শিক্ষার্থীদের টিকাদান শুরু হয়। ওইদিন শুধুমাত্র মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে স্কুল শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়া হয়। পরদিন আইডিয়ালসহ ঢাকার হার্ডকো ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, সাউথপয়েন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজ, চিটাগং গ্রামার স্কুল, ঢাকা কমার্স কলেজ, কাকলি হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজ, সাউথ ব্রিজ স্কুল ও স্কলাসটিকা স্কুল কেন্দ্রে টিকাদান শুরু হয়।