আমন ধান-চাল সংগ্রহ সফল করতে চায় সরকার, ১৫ নির্দেশনা জারি

চলতি আমন মৌসুমে সরকারিভাবে ধান ও চাল সংগ্রহ সফল করতে ১৫টি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এই নির্দেশনা দিয়ে গত ৮ নভেম্বর খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে পরিপত্র জারি করা হয়েছে।

চলতি আমন মৌসুমে সরকার খোলাবাজার থেকে ২৭ টাকা কেজি দরে তিন লাখ মেট্রিক টন ধান ও ৪০ টাকা কেজি দরে পাঁচ লাখ টন সিদ্ধ চাল কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত ৩১ অক্টোবর খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়। গত ৭ নভেম্বর থেকে আমন ধান ও চাল কেনা শুরু হয়েছে। চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।

ইতোমধ্যে ধান ও চালের উপজেলাওয়ারি বিভাজন মাঠপর্যায়ে পাঠানো হয়েছে জানিয়ে সংগ্রহ সফল করার জন্য ১৫টি নির্দেশনা দেয়া হয় পরিপত্রে। ‘অভ্যন্তরীণ খাদ্যশস্য সংগ্রহ নীতিমালা, ২০১৭’ অনুসারে বিনির্দেশসম্মত সদ্যউৎপাদিত আমন ধান ও চাল সংগ্রহ নিশ্চিত করতে হবে। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের গত ২৪ অক্টোবরের স্মারক মোতাবেক চুক্তিযোগ্য মিলারদের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদন করতে হবে।

আগামী ১৮ নভেম্বরের মধ্যে চাল সংগ্রহের জন্য মিলারদের সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন করতে হবে। চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার অব্যবহিত পর দ্রুত সময়ের মধ্যে মিলারদের অনুকূলে বরাদ্দপত্র ইস্যু করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুলিপি দিয়ে অবহিত করতে হবে। হাস্কিং মিলারদের ক্ষেত্রে চুক্তিকৃত চাল সর্টিং করে সংগ্রহ করতে হবে।

ধান সংগ্রহের বিষয়টি মাইকিং, লিফলেট বিতরণ, ক্যাবল টিভি স্ক্রল প্রদর্শন প্রভৃতি উপায়ে বহুল প্রচারণার জন্য সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

ধান সংগ্রহের ক্ষেত্রে অবিলম্বে জেলা বা উপজেলা সংগ্রহ ও মনিটরিং কমিটির সভা সম্পন্ন করতে হবে। কৃষকের অ্যাপের বাইরে উপজেলায় লটারি করে ধান সংগ্রহ দ্রুত শুরু ও শেষ করতে হবে। কৃষকের অ্যাপভুক্ত উপজেলায় রেজিস্ট্রেশন দ্রুত সম্পন্ন করে সিস্টেমে লটারি করে কৃষক নির্বাচনপূর্বক দ্রুত ধান সংগ্রহ করতে হবে।

খাদ্যগুদামে কৃষকবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। কৃষক যেন কোনক্রমেই হয়রানির শিকার না হন সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

যেহেতু চলমান সংগ্রহ মৌসুমে পাক্ষিক ছাঁটাই ক্ষমতা অপেক্ষা বরাদ্দ কম তাই জাতীয় পর্যায়ে চাল সংগ্রহ ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ৬৫ শতাংশ, ৩১ জানুয়ারির মধ্যে ৮৫ শতাংশ এবং ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ১০০ ভাগ সম্পন্ন করার জন্য (তারিখ, পরিমাণ, সময়ভিত্তিক সিডিউল প্রস্তুতপূর্বক) জেলা, উপজেলা ও গুদামভিত্তিক রোডম্যাপ তৈরি ও সে অনুসারে সংগ্রহ সম্পন্ন করতে হবে।

সংগৃহীত প্রতিটি চালের বস্তায় সর্বশেষ নির্দেশনা অনুযায়ী স্টেনসিল প্রদান নিশ্চিত করতে হবে। যুগপৎভাবে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ধান ও চাল সংগ্রহ কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে।

গুদামে স্থান সংকট দেখা দিলে ‘চলাচল সূচি প্রণয়ন নীতিমালা, ২০০৮’ অনুসারে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক, আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক, মহাপরিচালক (খাদ্য) নিজ নিজ অধীক্ষেত্রে বিধিমোতাবেক স্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে চলাচল সূচি জারি করবেন।

খালি বস্তার স্বল্পতা দেখা দিলে নিজ নিজ অধীক্ষেত্রের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত বস্তার স্বল্পতা নিরসনে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

সংগ্রহ কার্যক্রমে সর্বোচ্চ জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ও আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকদের মনিটরিং জোরদার করতে হবে।

সংগ্রহ ত্বরান্বিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, সংরক্ষণ ও চলাচল কর্মকর্তা, ব্যবস্থাপক, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ও আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক সর্বদা সর্বোচ্চ তৎপর ও সতর্ক থাকবেন।

প্রতিদিন বিকেলে সকল আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক দপ্তর থেকে ধান ও চাল সংগ্রহের তথ্য ও দৈনিক বাজারদর ই-মেইলে খাদ্য অধিদপ্তরের সংগ্রহ বিভাগে প্রেরণ নিশ্চিত করতে হবে।

শনিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২১ , ২৮ কার্তিক ১৪২৮ ৭ রবিউস সানি ১৪৪৩

আমন ধান-চাল সংগ্রহ সফল করতে চায় সরকার, ১৫ নির্দেশনা জারি

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

চলতি আমন মৌসুমে সরকারিভাবে ধান ও চাল সংগ্রহ সফল করতে ১৫টি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এই নির্দেশনা দিয়ে গত ৮ নভেম্বর খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে পরিপত্র জারি করা হয়েছে।

চলতি আমন মৌসুমে সরকার খোলাবাজার থেকে ২৭ টাকা কেজি দরে তিন লাখ মেট্রিক টন ধান ও ৪০ টাকা কেজি দরে পাঁচ লাখ টন সিদ্ধ চাল কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত ৩১ অক্টোবর খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়। গত ৭ নভেম্বর থেকে আমন ধান ও চাল কেনা শুরু হয়েছে। চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।

ইতোমধ্যে ধান ও চালের উপজেলাওয়ারি বিভাজন মাঠপর্যায়ে পাঠানো হয়েছে জানিয়ে সংগ্রহ সফল করার জন্য ১৫টি নির্দেশনা দেয়া হয় পরিপত্রে। ‘অভ্যন্তরীণ খাদ্যশস্য সংগ্রহ নীতিমালা, ২০১৭’ অনুসারে বিনির্দেশসম্মত সদ্যউৎপাদিত আমন ধান ও চাল সংগ্রহ নিশ্চিত করতে হবে। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের গত ২৪ অক্টোবরের স্মারক মোতাবেক চুক্তিযোগ্য মিলারদের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদন করতে হবে।

আগামী ১৮ নভেম্বরের মধ্যে চাল সংগ্রহের জন্য মিলারদের সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন করতে হবে। চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার অব্যবহিত পর দ্রুত সময়ের মধ্যে মিলারদের অনুকূলে বরাদ্দপত্র ইস্যু করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুলিপি দিয়ে অবহিত করতে হবে। হাস্কিং মিলারদের ক্ষেত্রে চুক্তিকৃত চাল সর্টিং করে সংগ্রহ করতে হবে।

ধান সংগ্রহের বিষয়টি মাইকিং, লিফলেট বিতরণ, ক্যাবল টিভি স্ক্রল প্রদর্শন প্রভৃতি উপায়ে বহুল প্রচারণার জন্য সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

ধান সংগ্রহের ক্ষেত্রে অবিলম্বে জেলা বা উপজেলা সংগ্রহ ও মনিটরিং কমিটির সভা সম্পন্ন করতে হবে। কৃষকের অ্যাপের বাইরে উপজেলায় লটারি করে ধান সংগ্রহ দ্রুত শুরু ও শেষ করতে হবে। কৃষকের অ্যাপভুক্ত উপজেলায় রেজিস্ট্রেশন দ্রুত সম্পন্ন করে সিস্টেমে লটারি করে কৃষক নির্বাচনপূর্বক দ্রুত ধান সংগ্রহ করতে হবে।

খাদ্যগুদামে কৃষকবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। কৃষক যেন কোনক্রমেই হয়রানির শিকার না হন সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

যেহেতু চলমান সংগ্রহ মৌসুমে পাক্ষিক ছাঁটাই ক্ষমতা অপেক্ষা বরাদ্দ কম তাই জাতীয় পর্যায়ে চাল সংগ্রহ ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ৬৫ শতাংশ, ৩১ জানুয়ারির মধ্যে ৮৫ শতাংশ এবং ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ১০০ ভাগ সম্পন্ন করার জন্য (তারিখ, পরিমাণ, সময়ভিত্তিক সিডিউল প্রস্তুতপূর্বক) জেলা, উপজেলা ও গুদামভিত্তিক রোডম্যাপ তৈরি ও সে অনুসারে সংগ্রহ সম্পন্ন করতে হবে।

সংগৃহীত প্রতিটি চালের বস্তায় সর্বশেষ নির্দেশনা অনুযায়ী স্টেনসিল প্রদান নিশ্চিত করতে হবে। যুগপৎভাবে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ধান ও চাল সংগ্রহ কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে।

গুদামে স্থান সংকট দেখা দিলে ‘চলাচল সূচি প্রণয়ন নীতিমালা, ২০০৮’ অনুসারে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক, আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক, মহাপরিচালক (খাদ্য) নিজ নিজ অধীক্ষেত্রে বিধিমোতাবেক স্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে চলাচল সূচি জারি করবেন।

খালি বস্তার স্বল্পতা দেখা দিলে নিজ নিজ অধীক্ষেত্রের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত বস্তার স্বল্পতা নিরসনে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

সংগ্রহ কার্যক্রমে সর্বোচ্চ জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ও আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকদের মনিটরিং জোরদার করতে হবে।

সংগ্রহ ত্বরান্বিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, সংরক্ষণ ও চলাচল কর্মকর্তা, ব্যবস্থাপক, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ও আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক সর্বদা সর্বোচ্চ তৎপর ও সতর্ক থাকবেন।

প্রতিদিন বিকেলে সকল আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক দপ্তর থেকে ধান ও চাল সংগ্রহের তথ্য ও দৈনিক বাজারদর ই-মেইলে খাদ্য অধিদপ্তরের সংগ্রহ বিভাগে প্রেরণ নিশ্চিত করতে হবে।