নির্যাতনের মামলা করায় ফের সংবাদ সম্মেলন থেকে তুলে নিল ডিবি

একটি ম্যান পাওয়ার বিজনেস (আদম ব্যবসা) প্রতিষ্ঠানে জেনারেল ম্যানেজার হিসেবে চাকরি করতেন জেড এস ফেরদৌস। প্রতিষ্ঠানটির মালিক সম্প্রতি মানব পাচারে গ্রেপ্তার হওয়া ওমি এবং রায়হানুজ্জামান রাহিব। এ প্রতিষ্ঠানের কাছে বেতনের ২ কোটি টাকা পাওনা হন ফেরদৌস। বেতন নিয়ে ঝামেলা হওয়া রাহিবের বন্ধু ডিবির যুগ্ম কমিশনার হারুনুর রশিদকে দিয়ে ডিবিতে ডেকে নেয়া হয় ফেরদৌসকে। সেখানে ৪ ঘণ্টা আটকে করা হয় নির্যাতন। ডিবি থেকে ছাড়া পেয়ে ফেরদৌস আদালতে মামলা করে ডিবির বিরুদ্ধে। ঘটনার বিচার চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগও করেন। এসব ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে ডিবি। গতকাল সংবাদ সম্মেলন করতে আসা ভুক্তভোগী ফেরদৌসকে ডিবি এসে তুলে নিয়ে যায়। ঘটনায় থানায় জিডি করতে গেলে ফেরদৌসের স্ত্রীকে ফেরত পাঠান শাহবাগ থানা পুলিশ।

স্বামীকে তুলে নিয়ে যাওয়ার খবর পেয়ে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ছুটে আসেন ফেরদৌসের স্ত্রী তৃষা খাতুন এবং বোন ফারজানা আক্তার। তারা সেখানে ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। এখন স্বামীর কোন খোঁজ পাচ্ছেন না স্ত্রী তৃষা খাতুন।

এ বিষয়ে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার একেএম হাফিজ আক্তার টেলিফোনে সংবাদকে জানান, আমি বিষয়টি খোঁজ নিয়েছি। ফেরদৌসের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে মামলা রয়েছে। সেই মামলায় তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট হয়েছে। মামলার আসামি হওয়ায় ডিবি অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করেছে। তাকে আদালতে তোলা হবে। তিনি বলেন, ফেরদৌস একটি মামলা করেছিল বলে শুনেছি। সে বিষয়ে আদালত ফয়সালা করবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে তুষা খাতুন সংবাদকে জানান, তার স্বামী ফেরদৌস রাজধানীর তুরাগ এলাকায় বিভিন্ন দেশে জনবল পাঠানোর ব্যবসা করা ওভারসিজ ট্রেনিং সেন্টার নামে একটি প্রতিষ্ঠানে ২০১১ সাল থেকে কাজ করতেন। এ কোম্পানির মালিক সম্প্রতি মানব পাচারের অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া ওমি এবং তার বন্ধু রায়হান্জ্জুামান রাহিব। রাহিব বেশিরবাগ সময় দেশের বাইরে থাকে। বর্তমানে রাহিব সিঙ্গাপুরে অবস্থান করছেন। প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘদিন বেতন আটকে ২ কোটি টাকা পাওনা হন তার স্বামী ফেরদৌস। এসব নিয়ে রাহিব সাহেবের সঙ্গে তার স্বামী ফেরদৌসের ঝামেলা হয়। তিনি রাহিব সাহেবকে ফোন করে বেতনের টাকা চান। ঝামেলা তখন থেকেই শুরু হয়।

তুষা খাতুন বলেন, বেতন নিয়ে ঝামেলা হয় মীমাংসার জন্য তার স্বামী ফেরদৌসকে ডিবি কার্যালয়ে ডেকে নেয়া হয়। ডিবির যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশিদ রাহিব সাহেবের বন্ধু। মূলত রাহিব সাহেবের কথায় তার স্বামী ডিবিতে নেন যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশিদ। সেখানে প্রতিষ্ঠানের এমডি কামাল উদ্দিনও ছিলেন। এক পর্যায়ে কামাল উদ্দিন সেখানে বলে বসেন তার স্বামী ফেরদৌস নাকি কামাল সাহেবকে গুম করতে চান। এমন পরিস্থিতিতে ডিবি কার্যালয়ে আটকে তার স্বামী ফেরদৌসকে শারীরিক নির্যাতন করা হয়। পানি খেতে চাইলে পানিও দেয়নি। তার স্বামী ডায়বেটিসের রোগী ছিলেন। সেখানে মারাও যেতে পারতেন। নির্যাতনের রাতে তার স্বামীকে ছেড়ে দেয়া হয়। পরে এ ঘটনায় তিনি ডিবির বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ তুলে একটি মামলা করেছেন। গত ১৪ সেপ্টেম্বর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে একটি সংবাদ সম্মেলনও করেছেন।

তৃষা খাতুন বলেন, তার স্বামীকে নির্যাতনের পর রাহিম সাহেব মীমাংসার জন্য ডেকেছিলেন। অফিসে যাওয়ার পর সিঙ্গাপুর থেকে লাউডে ফোন করে বলেছিলেন ফেরদৌসকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দিতে তিনি প্রয়োজনে ৫০ লাখ টাকা খরচ করবেন। গতকাল সাড়ে ১১টায় তার স্বামী একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছিলেন। সে খবরে আগের দিন (বৃহস্পতিতবার) ডিবি তার স্বামীকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিলেন। সেখানে কি বলেছেন জানি না। তবে ডিবি থেকে আসার পর তার স্বামী তাকে বলেছেন, আমাকে মেরে ফেলার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে, আমি হয়তো বাঁচব না। আমি প্রয়োজনে নিজে গায়ে কেরোসিন দিয়ে মারা যাব। তবুও আমার পাওনা টাকা ছাড়াবো না। ওরা আমাকে (ডিবি) মীমাংসার কথা বলছে। মূলত তারা মীমাংসা না করে আমাকে ফাঁসাবে।

তৃষা খাতুন বলেন, টাকা দিলে কি সব কিছু হয়। দেশে কি কোন বিচার নেই। আমার স্বামীর কি অপরাধ যে যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশিদ আমার স্বামীকে লোক দিয়ে তুলে নিয়ে নির্যাতন করেছেন। তাকে পানিও খেতে দেয়নি। আবার তাকে তুলে নিয়ে গেল। আমি শাহবাগ থানায় গিয়েছি জিডি করতে। পুলিশ বলেছে, এ ব্যাপারে তারা অবগত আছে। ডিবি তাদের ইনফর্ম করে বলেছে, সেগুন বাগিচায় তাদের একটি অভিযান আছে। তারা (পুলিশ) বলেছে, যদি মনে করেন আপনার স্বামীকে কেউ তুলে নিয়েছে তাহলে অপহরণ মামলা করতে হবে। আমি ওসি সাহেবকে থানায় পাইনি। এখন স্বামীর ফোনও বন্ধ।

তুষা খাতুন বলেন, আমার স্বামী যদি টাকা না পেতো তাহলে তো অভিযোগ করতো না। আর যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশিদের নাম নিতে গেলে যেকেউ ২ গ্লাস পানি খায়। কেন আমার স্বামী তার বিরুদ্ধে লাগতে যাবে যদি কোন ঘটনা না ঘটে। আমি আমার স্বামীর উপর নির্যাতনের প্রতিকার চাই। আমার স্বামীকে নিয়ে তারা বলেছিল, তোর বাড়ি নাকি গোপালগঞ্জ দেখি তুই কত বড় মাস্তান। এসব বলেই আমার স্বামীকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছিল। আমার স্বামীর জীবনটা শেষ করে দিয়েছিল ডিবি।

গত ১৪ সেপ্টেম্বর ডিবির বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগের বিষয়ে ফোন করা হলে সে সময় এক কর্মকর্তা সংবাদকে জানিয়েছেন, ফেরদৌস এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপ্রচার করেছিল। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়। অভিযোগের তদন্তের অংশ হিসেবে তখন তাকে ডিবিতে ডেকে আনা হয়েছিল। তাকে কোন নির্যাতন করা হয়নি। ডিবি থেকে বের হয়ে তিনি ডিবির বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছিলেন।

যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তার ফোন নম্বরে পাওয়া যায়নি। তাকে ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। ফলে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। অন্য কোন কর্মকর্তাও এ বিষয় নিয়ে কথা বলতে রাজি হয়নি।

আরও খবর
‘রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম করে জাতির মূলনীতি অসাম্প্রদায়িকতায় পেরেক ঠুকেছে’
পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ১২ মার্কিন সিনেটরের চিঠি
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত আরও ১০৩ জন হাসপাতালে
কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন আজ
‘আমি এই বাংলার পাড়া-গাঁয়ে বাঁধিয়াছি ঘর’
কিছু রাজনৈতিক ও সরকারি কর্মকর্তা কা-জ্ঞানহীন বক্তব্য দিচ্ছেন : ওবায়দুল কাদের
রাজবাড়ীতে আ’লীগ নেতাকে গুলি করে হত্যা
প্রচারণার শুরুতেই স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থীর ওপর হামলা টুকু পুত্রের সমর্থকদের
বিএনপি-জামায়াত প্রার্থী জয়ী, নেপথ্যে নানা কারণ
রেইনট্রি ধর্ষণ মামলার রায়ে নারী জাতিকে অপমান করা হয়েছে -মির্জা ফখরুল
হেমন্তের নতুন ধানের গন্ধ মাঠজুড়ে

শনিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২১ , ২৮ কার্তিক ১৪২৮ ৭ রবিউস সানি ১৪৪৩

আদম ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চাকরিজীবী ফেরদৌসকে

নির্যাতনের মামলা করায় ফের সংবাদ সম্মেলন থেকে তুলে নিল ডিবি

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

একটি ম্যান পাওয়ার বিজনেস (আদম ব্যবসা) প্রতিষ্ঠানে জেনারেল ম্যানেজার হিসেবে চাকরি করতেন জেড এস ফেরদৌস। প্রতিষ্ঠানটির মালিক সম্প্রতি মানব পাচারে গ্রেপ্তার হওয়া ওমি এবং রায়হানুজ্জামান রাহিব। এ প্রতিষ্ঠানের কাছে বেতনের ২ কোটি টাকা পাওনা হন ফেরদৌস। বেতন নিয়ে ঝামেলা হওয়া রাহিবের বন্ধু ডিবির যুগ্ম কমিশনার হারুনুর রশিদকে দিয়ে ডিবিতে ডেকে নেয়া হয় ফেরদৌসকে। সেখানে ৪ ঘণ্টা আটকে করা হয় নির্যাতন। ডিবি থেকে ছাড়া পেয়ে ফেরদৌস আদালতে মামলা করে ডিবির বিরুদ্ধে। ঘটনার বিচার চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগও করেন। এসব ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে ডিবি। গতকাল সংবাদ সম্মেলন করতে আসা ভুক্তভোগী ফেরদৌসকে ডিবি এসে তুলে নিয়ে যায়। ঘটনায় থানায় জিডি করতে গেলে ফেরদৌসের স্ত্রীকে ফেরত পাঠান শাহবাগ থানা পুলিশ।

স্বামীকে তুলে নিয়ে যাওয়ার খবর পেয়ে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ছুটে আসেন ফেরদৌসের স্ত্রী তৃষা খাতুন এবং বোন ফারজানা আক্তার। তারা সেখানে ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। এখন স্বামীর কোন খোঁজ পাচ্ছেন না স্ত্রী তৃষা খাতুন।

এ বিষয়ে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার একেএম হাফিজ আক্তার টেলিফোনে সংবাদকে জানান, আমি বিষয়টি খোঁজ নিয়েছি। ফেরদৌসের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে মামলা রয়েছে। সেই মামলায় তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট হয়েছে। মামলার আসামি হওয়ায় ডিবি অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করেছে। তাকে আদালতে তোলা হবে। তিনি বলেন, ফেরদৌস একটি মামলা করেছিল বলে শুনেছি। সে বিষয়ে আদালত ফয়সালা করবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে তুষা খাতুন সংবাদকে জানান, তার স্বামী ফেরদৌস রাজধানীর তুরাগ এলাকায় বিভিন্ন দেশে জনবল পাঠানোর ব্যবসা করা ওভারসিজ ট্রেনিং সেন্টার নামে একটি প্রতিষ্ঠানে ২০১১ সাল থেকে কাজ করতেন। এ কোম্পানির মালিক সম্প্রতি মানব পাচারের অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া ওমি এবং তার বন্ধু রায়হান্জ্জুামান রাহিব। রাহিব বেশিরবাগ সময় দেশের বাইরে থাকে। বর্তমানে রাহিব সিঙ্গাপুরে অবস্থান করছেন। প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘদিন বেতন আটকে ২ কোটি টাকা পাওনা হন তার স্বামী ফেরদৌস। এসব নিয়ে রাহিব সাহেবের সঙ্গে তার স্বামী ফেরদৌসের ঝামেলা হয়। তিনি রাহিব সাহেবকে ফোন করে বেতনের টাকা চান। ঝামেলা তখন থেকেই শুরু হয়।

তুষা খাতুন বলেন, বেতন নিয়ে ঝামেলা হয় মীমাংসার জন্য তার স্বামী ফেরদৌসকে ডিবি কার্যালয়ে ডেকে নেয়া হয়। ডিবির যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশিদ রাহিব সাহেবের বন্ধু। মূলত রাহিব সাহেবের কথায় তার স্বামী ডিবিতে নেন যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশিদ। সেখানে প্রতিষ্ঠানের এমডি কামাল উদ্দিনও ছিলেন। এক পর্যায়ে কামাল উদ্দিন সেখানে বলে বসেন তার স্বামী ফেরদৌস নাকি কামাল সাহেবকে গুম করতে চান। এমন পরিস্থিতিতে ডিবি কার্যালয়ে আটকে তার স্বামী ফেরদৌসকে শারীরিক নির্যাতন করা হয়। পানি খেতে চাইলে পানিও দেয়নি। তার স্বামী ডায়বেটিসের রোগী ছিলেন। সেখানে মারাও যেতে পারতেন। নির্যাতনের রাতে তার স্বামীকে ছেড়ে দেয়া হয়। পরে এ ঘটনায় তিনি ডিবির বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ তুলে একটি মামলা করেছেন। গত ১৪ সেপ্টেম্বর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে একটি সংবাদ সম্মেলনও করেছেন।

তৃষা খাতুন বলেন, তার স্বামীকে নির্যাতনের পর রাহিম সাহেব মীমাংসার জন্য ডেকেছিলেন। অফিসে যাওয়ার পর সিঙ্গাপুর থেকে লাউডে ফোন করে বলেছিলেন ফেরদৌসকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দিতে তিনি প্রয়োজনে ৫০ লাখ টাকা খরচ করবেন। গতকাল সাড়ে ১১টায় তার স্বামী একটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছিলেন। সে খবরে আগের দিন (বৃহস্পতিতবার) ডিবি তার স্বামীকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিলেন। সেখানে কি বলেছেন জানি না। তবে ডিবি থেকে আসার পর তার স্বামী তাকে বলেছেন, আমাকে মেরে ফেলার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে, আমি হয়তো বাঁচব না। আমি প্রয়োজনে নিজে গায়ে কেরোসিন দিয়ে মারা যাব। তবুও আমার পাওনা টাকা ছাড়াবো না। ওরা আমাকে (ডিবি) মীমাংসার কথা বলছে। মূলত তারা মীমাংসা না করে আমাকে ফাঁসাবে।

তৃষা খাতুন বলেন, টাকা দিলে কি সব কিছু হয়। দেশে কি কোন বিচার নেই। আমার স্বামীর কি অপরাধ যে যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশিদ আমার স্বামীকে লোক দিয়ে তুলে নিয়ে নির্যাতন করেছেন। তাকে পানিও খেতে দেয়নি। আবার তাকে তুলে নিয়ে গেল। আমি শাহবাগ থানায় গিয়েছি জিডি করতে। পুলিশ বলেছে, এ ব্যাপারে তারা অবগত আছে। ডিবি তাদের ইনফর্ম করে বলেছে, সেগুন বাগিচায় তাদের একটি অভিযান আছে। তারা (পুলিশ) বলেছে, যদি মনে করেন আপনার স্বামীকে কেউ তুলে নিয়েছে তাহলে অপহরণ মামলা করতে হবে। আমি ওসি সাহেবকে থানায় পাইনি। এখন স্বামীর ফোনও বন্ধ।

তুষা খাতুন বলেন, আমার স্বামী যদি টাকা না পেতো তাহলে তো অভিযোগ করতো না। আর যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশিদের নাম নিতে গেলে যেকেউ ২ গ্লাস পানি খায়। কেন আমার স্বামী তার বিরুদ্ধে লাগতে যাবে যদি কোন ঘটনা না ঘটে। আমি আমার স্বামীর উপর নির্যাতনের প্রতিকার চাই। আমার স্বামীকে নিয়ে তারা বলেছিল, তোর বাড়ি নাকি গোপালগঞ্জ দেখি তুই কত বড় মাস্তান। এসব বলেই আমার স্বামীকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছিল। আমার স্বামীর জীবনটা শেষ করে দিয়েছিল ডিবি।

গত ১৪ সেপ্টেম্বর ডিবির বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগের বিষয়ে ফোন করা হলে সে সময় এক কর্মকর্তা সংবাদকে জানিয়েছেন, ফেরদৌস এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপ্রচার করেছিল। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়। অভিযোগের তদন্তের অংশ হিসেবে তখন তাকে ডিবিতে ডেকে আনা হয়েছিল। তাকে কোন নির্যাতন করা হয়নি। ডিবি থেকে বের হয়ে তিনি ডিবির বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছিলেন।

যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তার ফোন নম্বরে পাওয়া যায়নি। তাকে ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। ফলে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। অন্য কোন কর্মকর্তাও এ বিষয় নিয়ে কথা বলতে রাজি হয়নি।