বেড়া পৌরসভা নির্বাচন কেন্দ্র করে পাবনা-১ আসনের সংসদ সদস্য সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকুর পারিবারিক দ্বন্দ্বে অশান্ত হয়ে উঠেছে নির্বাচনী পরিবেশ। প্রকাশ্য সভা-সমাবেশে সংসদ সদস্য টুকু, তার ছেলে আসিফ শামস রঞ্জন ও ছোট ভাই বর্তমান মেয়র আবদুল বাতেন পরস্পরের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়ম, জামায়াতপ্রীতির অভিযোগ তুলে আক্রমণাত্মক বক্তব্য দিচ্ছেন। প্রতীক বরাদ্দের পর আনুষ্ঠানিক প্রচারণার শুরুতেই গতকাল বিকেলে আবদুল বাতেনের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলার জন্য সংসদ সদস্য টুকু ও তার ছেলে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী রঞ্জনকে দায়ী করেছেন বাতেন।
বেড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমান পৌর মেয়র আবদুল বাতেন অভিযোগ করে বলেন, শুক্রবার জুম্মার নামাজ শেষে পৌর এলাকার বৃশালিখা মহল্লায় আমার পৈতৃক বাড়িতে স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে যাই। দুপুরের খাবার শেষে আমার বড় ভাবীসহ বাড়ির নারী সদস্যরা আমাকে ঘিরে পুরনো স্মৃতিচারণ করতে শুরু করেন। আশপাশের বাড়ি থেকে প্রতিবেশী নারীরা চলে আসায় সেখানে জমায়েত হয়ে যায়। সবাই আগামী পৌর নির্বাচনের জন্য আমাকে দোয়া করেন। এ সময় নৌকার প্রার্থী রঞ্জন ও তার পিতা সংসদ সদস্য টুকুর সমর্থক হাইব্রিড আওয়ামী লীগ কর্মী ইমরানের নেতৃত্বে কয়েকজন লাঠিসোটা নিয়ে আমার ওপর হামলা করে। আমার কর্মীরা দ্রুত ছুটে এসে তাদের আক্রমণ থেকে আমাকে রক্ষা করে।
আবদুল বাতেন আরও বলেন, শামসুল হক টুকু আমার গড়ে তোলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে এমপি-মন্ত্রী হয়েছেন। তার সন্তানেরা কখনও রাজনীতি করেনি। দুর্নীতি-লুটপাট করে শত কোটি টাকার মালিক বনেগিয়েছে। টাকার গরমে এখন বেড়া পৌরসভা দখলে নেমেছে। সংসদ সদস্য টুকু প্রভাব খাটিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে ভুল বুঝিয়ে, মিথ্যাচার করে ছেলের জন্য মনোনয়ন এনেছেন। তৃণমূল নেতাকর্মীদের দাবির প্রেক্ষিতে আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছি। আমার প্রতি পৌরবাসীর সমর্থনে তারা আদর্শচ্যুত হয়ে জামায়াতের নেতাদের কাছে ভোট ভিক্ষা চেয়েছে। নিশ্চিত পরাজয় আঁচ করতে পেরে পেশীশক্তি প্রয়োগ করে আমাকে নির্বাচনী মাঠ থেকে সরিয়ে দেয়ার অপচেষ্টা করছে। আমি বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানিয়েছি। নির্বাচন কমিশনেও লিখিত অভিযোগ করব।
বেড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অরবিন্দ সরকার বলেন, বৃশালিখা গ্রামে সামান্য উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছিল। আমরা তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছি। নির্বাচনী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ তৎপর রয়েছে।
এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে নৌকার প্রার্থী আসিফ শামস রঞ্জনের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি। ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েও তার সাড়া মেলেনি।
জেলা নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, বেড়া পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে সংসদ সদস্য টুকুর পরিবারের তিন সদস্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সংসদ সদস্য টুকুর ছেলে আসিফ শামস রঞ্জন, নারিকেল গাছ প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান মেয়র আবদুল বাতেন ও মোবাইল ফোন প্রতীক নিয়ে বড় ভাইয়ের মেয়ে সাদিয়া আলম নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন। এছাড়াও রেল ইঞ্জিন প্রতীক নিয়ে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী হয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ফজলুর রহমান মাসুদ, জগ প্রতীক নিয়ে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা কেএম ওবায়দুল্লাহ। আগামী ২৮ নভেম্বর বেড়া পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
শনিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২১ , ২৮ কার্তিক ১৪২৮ ৭ রবিউস সানি ১৪৪৩
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, পাবনা
বেড়া পৌরসভা নির্বাচন কেন্দ্র করে পাবনা-১ আসনের সংসদ সদস্য সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকুর পারিবারিক দ্বন্দ্বে অশান্ত হয়ে উঠেছে নির্বাচনী পরিবেশ। প্রকাশ্য সভা-সমাবেশে সংসদ সদস্য টুকু, তার ছেলে আসিফ শামস রঞ্জন ও ছোট ভাই বর্তমান মেয়র আবদুল বাতেন পরস্পরের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়ম, জামায়াতপ্রীতির অভিযোগ তুলে আক্রমণাত্মক বক্তব্য দিচ্ছেন। প্রতীক বরাদ্দের পর আনুষ্ঠানিক প্রচারণার শুরুতেই গতকাল বিকেলে আবদুল বাতেনের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলার জন্য সংসদ সদস্য টুকু ও তার ছেলে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী রঞ্জনকে দায়ী করেছেন বাতেন।
বেড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমান পৌর মেয়র আবদুল বাতেন অভিযোগ করে বলেন, শুক্রবার জুম্মার নামাজ শেষে পৌর এলাকার বৃশালিখা মহল্লায় আমার পৈতৃক বাড়িতে স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে যাই। দুপুরের খাবার শেষে আমার বড় ভাবীসহ বাড়ির নারী সদস্যরা আমাকে ঘিরে পুরনো স্মৃতিচারণ করতে শুরু করেন। আশপাশের বাড়ি থেকে প্রতিবেশী নারীরা চলে আসায় সেখানে জমায়েত হয়ে যায়। সবাই আগামী পৌর নির্বাচনের জন্য আমাকে দোয়া করেন। এ সময় নৌকার প্রার্থী রঞ্জন ও তার পিতা সংসদ সদস্য টুকুর সমর্থক হাইব্রিড আওয়ামী লীগ কর্মী ইমরানের নেতৃত্বে কয়েকজন লাঠিসোটা নিয়ে আমার ওপর হামলা করে। আমার কর্মীরা দ্রুত ছুটে এসে তাদের আক্রমণ থেকে আমাকে রক্ষা করে।
আবদুল বাতেন আরও বলেন, শামসুল হক টুকু আমার গড়ে তোলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে এমপি-মন্ত্রী হয়েছেন। তার সন্তানেরা কখনও রাজনীতি করেনি। দুর্নীতি-লুটপাট করে শত কোটি টাকার মালিক বনেগিয়েছে। টাকার গরমে এখন বেড়া পৌরসভা দখলে নেমেছে। সংসদ সদস্য টুকু প্রভাব খাটিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে ভুল বুঝিয়ে, মিথ্যাচার করে ছেলের জন্য মনোনয়ন এনেছেন। তৃণমূল নেতাকর্মীদের দাবির প্রেক্ষিতে আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছি। আমার প্রতি পৌরবাসীর সমর্থনে তারা আদর্শচ্যুত হয়ে জামায়াতের নেতাদের কাছে ভোট ভিক্ষা চেয়েছে। নিশ্চিত পরাজয় আঁচ করতে পেরে পেশীশক্তি প্রয়োগ করে আমাকে নির্বাচনী মাঠ থেকে সরিয়ে দেয়ার অপচেষ্টা করছে। আমি বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানিয়েছি। নির্বাচন কমিশনেও লিখিত অভিযোগ করব।
বেড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অরবিন্দ সরকার বলেন, বৃশালিখা গ্রামে সামান্য উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছিল। আমরা তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছি। নির্বাচনী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ তৎপর রয়েছে।
এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে নৌকার প্রার্থী আসিফ শামস রঞ্জনের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি। ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েও তার সাড়া মেলেনি।
জেলা নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, বেড়া পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে সংসদ সদস্য টুকুর পরিবারের তিন সদস্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সংসদ সদস্য টুকুর ছেলে আসিফ শামস রঞ্জন, নারিকেল গাছ প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান মেয়র আবদুল বাতেন ও মোবাইল ফোন প্রতীক নিয়ে বড় ভাইয়ের মেয়ে সাদিয়া আলম নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন। এছাড়াও রেল ইঞ্জিন প্রতীক নিয়ে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী হয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ফজলুর রহমান মাসুদ, জগ প্রতীক নিয়ে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা কেএম ওবায়দুল্লাহ। আগামী ২৮ নভেম্বর বেড়া পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।