বিএনপি-জামায়াত প্রার্থী জয়ী, নেপথ্যে নানা কারণ

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে রংপুরের পীরগাছা উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের ৫টিতে পরাজিত হয়েছে দলীয় মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী। সেই সঙ্গে অবিশ্বাস্যভাবে জয়ী হয়েছে বিএনপি ও জামায়াতের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা ৪ চেয়ারম্যান প্রার্থী। একটি ইউনিয়নে জাতীয় পার্টির প্রার্থী জয়ী হয়েছে। আওয়ামী লীগের এই পরাজয় নিয়ে চলছে নানান হিসেবে-নিকেশ। তৃণমূল পর্যায়ের আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের অভিযোগ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের ওভার কনফিডেন্স ও ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট প্রার্থনার ব্যাপারে উৎসাহ না থাকা।

অর্থের বিনিময়ে বিএনপি জামায়াত প্রার্থীর পক্ষে পরোক্ষভাবে কাজ করা। একমাত্র সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রার্থীকে মনোনয়ন দেবার পরেও প্রত্যাহার করে নেয়ায় হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের বিক্ষোভ আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে ভোট না দেবার ঘোষণাসহ নানান মেরুকরণ কাজ করেছে।

অন্যদিকে শুরু থেকে বিএনপি ও জামায়াত সমঝোতার মাধ্যমে প্রার্থী নির্বাচন করে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রচারণা চালানো বিশেষ করে, যে ইউনিয়নে বিএনপি প্রার্থী দিয়েছে সেখানে জামায়াত প্রার্থী না দেয়া একইভাবে জামায়াতের প্রার্থীরা যেখানে ছিলো সেখানে বিএনপির প্রার্থী না দেয়াসহ নানান কারণে তাদের সাফল্য এসেছে বলে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা মনে করেন।

সরেজমিন পীরগাছা উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ভোট কেন্দ্রে ঘুরে দেখা গেছে ভোটারদের ব্যাপক উপস্থিতি যা ইতোপূর্বে ঘটেনি নির্বাচনী পরিবেশটাও ছিলো উৎসব মুখর।

বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত পীরগাছা উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের নির্বাচনে বিএনপির তিন প্রার্থী জয়ী হয়েছে এরা হলেন ছাওলা ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি নাজির হোসেন, পীরগাছা সদর ইউনিয়নে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোস্তাফিজার রহমান রেজা এবং কান্দি ইউনিয়নে বিএনপি প্রার্থী উপজেলা বিএনপি নেতা আবদুস সালাম আজাদ। অন্যদিকে তাম্বুলপুর ইউনিয়নে পীরগাছা উপজেলা জামায়াতের আমীর বজলুর রশীদ মুকুল বিজয়ী হয়েছেন। এছাড়া কৈকুড়ি ইউনিয়নে জাতীয় পার্টির প্রার্থী নুর আলম বিজয়ী হয়েছেন। ৩টি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন এর মধ্যে পারুল ইউনিয়নে তোফাজ্জল হোসেন, ইটাকুমারীতে আবুল বাশার ও আনন্দা নগরে আমিনুল ইসলাম চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তবে তারা তিনজনই অল্প ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন।

তাম্বুলপুর ইউনিয়নে জামায়াত প্রার্থী বজলুর রশীদ মুকুল চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবার জন্য স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাদের দায়ী করেছে তৃণমূল নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ রহমান আলী ও সালাম অভিযোগ করেন, এই ইউনিয়নে প্রথমে বিদ্যুত কুমারকে দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেয়া হয়। কয়েকদিন ধরে সে প্রচারণা চালানোর পর কোন কারণ ছাড়াই তাকে বাদ দিয়ে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহিন সরদারকে মনোনয়ন দেয়া হয়। এ ঘটনায় দলের নেতাকর্মীদের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। রংপুরে মানববন্ধন, প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ করেছে নেতাকর্মীরা।

বিশেষ করে, নির্বাচনের আগে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতা ভবেশ চন্দ্র স্থানীয় নেক মামুদ বাজারে সভা করে ঘোষণা দেন ৮টি ইউনিয়নে একজনমাত্র হিন্দু প্রার্থীকে দলীয় মনোনয়ন দেবার পর কয়েকদিন পর তাকে বাদ দিয়ে অন্য একজনকে মনোনয়ন দেয়ায় হিন্দু সম্প্রদায় নৌকার প্রার্থীকে ভোট দেবে না বলে ঘোষণা দেন। এই বিষয়টিও নির্বাচনে প্রভাব ফেলেছে বলে তৃণমূল নেতাকর্মীদের অভিযোগ।

এছাড়াও দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় নুরজ্জামান সরকার ও সোহরাব হোসেন মিঠু নামে দুই আওয়ামী লীগ নেতা মনোনয়ন না পাওয়ায় বিদ্রোহী প্রার্থীকে নির্বাচনে অংশ নেয়াটাও দলের জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে দুই বিদ্রোহী প্রার্থীর অংশ নেয়া ও হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রার্থীকে দলীয় মনোনয়ন দিয়ে পরে তাকে বাদ দেয়ায় জামায়াত প্রার্থী বজলুর রশীদ মুকুল বিজয়ী হয়েছে বলে মনে করেন তারা। যদিও প্রথম থেকেই বিএনপি ও জামায়াত প্রার্থীরা বলে আসছিলেন তারা সমঝোতা করে নির্বাচন করছেন একে অপরের বিরুদ্ধে প্রার্থী দেননি কিংবা দলীয় প্রতীক ছাড়াই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন ফলে তারা ভালো করবেন বলে জানান।

এ ব্যাপারে বিএনপি জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক ও পীরগাছা উপজেলার নেতা রাঙ্গা নির্বাচনে তাদের ২০ দলীয় জোটের ৪টি ইউনিয়নে জয়ী হবার বিষয়টিকে এ সরকারের বিরুদ্ধে জনগণের অনাস্থা প্রকাশ করা বলে মনে করেন। তিনি দাবি করেন, আওয়ামী লীগের যে তিনজন প্রার্থী জয়ী হয়েছে তাদের জয়ী দেখান হয়েছে। এখানেও তারাই বিজয়ী হতেন, তাদের বিজয় ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

এ ব্যাপারে পীরগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি তসলিম উদ্দিন সাধারণ সম্পাদক মিলনের সঙ্গে বেশকয়েকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তারা কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।

তবে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মমতাজ উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ প্রতিনিধিকে বলেন, নির্বাচনে দলের বেশকিছু নেতা প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেছেন। তাদের তালিকা তৈরি করে কেন্দ্রে পাঠানো হবে, দল তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে বলে জানান তিনি। তিনি দাবি করেন, তাদের দলের প্রার্থীরা অল্প ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছে। এছাড়াও বিএনপি ও জামায়াত ভোটের আগের রাতে লাখ লাখ টাকা ভোটারদের বাড়ি বাড়ি বিলি করে বেড়িয়েছে, এ ধরনের অভিযোগও আমরা পেয়েছি বলে জানান তিনি।

অপরদিকে বৃহস্পতিবার পীরগজ্ঞ উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের নির্বাচনে ৮টি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ প্রার্থী জয়ী হয়েছে, দু’টি ইউনিয়নে বিদ্রোহী প্রার্থী জয়ী হয়েছে। সেখানে বিএনপি বা জামায়াত স্বতন্ত্রভাবে অংশ নেয়নি কিংবা প্রার্থী দেয়নি। মূলত পীরগজ্ঞে নির্বাচন হয়েছে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে দলীয় বিদ্রোহী প্রার্থীর। নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, যে দশজন প্রার্থী জয়ী হয়েছে তারা হলেন চৈত্রকোল ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আরিফুজ্জামান, ভে-াবাড়িতে সাদেকুল ইসলাম, কুমেদপুরে আমিনুল ইসলাম, টুকুরিয়ায় আতাউর রহমান ম-ল, সানেরহাটে মেজবাহুর রহমান, পাচগাছিতে বাবুল মিয়া, চতরায় এনামুল হক শাহিন, কাবিলপুরে রবিউল ইসলাম রবি। বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে জয়ী হয়েছেন বড়দরগায় সাদিয়া আখতার এবং মদনখালিতে নুর মোহাম্মদ মজ্ঞু।

আরও খবর
‘রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম করে জাতির মূলনীতি অসাম্প্রদায়িকতায় পেরেক ঠুকেছে’
পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ১২ মার্কিন সিনেটরের চিঠি
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত আরও ১০৩ জন হাসপাতালে
কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন আজ
‘আমি এই বাংলার পাড়া-গাঁয়ে বাঁধিয়াছি ঘর’
কিছু রাজনৈতিক ও সরকারি কর্মকর্তা কা-জ্ঞানহীন বক্তব্য দিচ্ছেন : ওবায়দুল কাদের
রাজবাড়ীতে আ’লীগ নেতাকে গুলি করে হত্যা
নির্যাতনের মামলা করায় ফের সংবাদ সম্মেলন থেকে তুলে নিল ডিবি
প্রচারণার শুরুতেই স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থীর ওপর হামলা টুকু পুত্রের সমর্থকদের
রেইনট্রি ধর্ষণ মামলার রায়ে নারী জাতিকে অপমান করা হয়েছে -মির্জা ফখরুল
হেমন্তের নতুন ধানের গন্ধ মাঠজুড়ে

শনিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২১ , ২৮ কার্তিক ১৪২৮ ৭ রবিউস সানি ১৪৪৩

পীরগাছা ইউপি নির্বাচনে

বিএনপি-জামায়াত প্রার্থী জয়ী, নেপথ্যে নানা কারণ

লিয়াকত আলী বাদল, রংপুর

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে রংপুরের পীরগাছা উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের ৫টিতে পরাজিত হয়েছে দলীয় মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী। সেই সঙ্গে অবিশ্বাস্যভাবে জয়ী হয়েছে বিএনপি ও জামায়াতের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা ৪ চেয়ারম্যান প্রার্থী। একটি ইউনিয়নে জাতীয় পার্টির প্রার্থী জয়ী হয়েছে। আওয়ামী লীগের এই পরাজয় নিয়ে চলছে নানান হিসেবে-নিকেশ। তৃণমূল পর্যায়ের আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের অভিযোগ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের ওভার কনফিডেন্স ও ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট প্রার্থনার ব্যাপারে উৎসাহ না থাকা।

অর্থের বিনিময়ে বিএনপি জামায়াত প্রার্থীর পক্ষে পরোক্ষভাবে কাজ করা। একমাত্র সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রার্থীকে মনোনয়ন দেবার পরেও প্রত্যাহার করে নেয়ায় হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের বিক্ষোভ আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে ভোট না দেবার ঘোষণাসহ নানান মেরুকরণ কাজ করেছে।

অন্যদিকে শুরু থেকে বিএনপি ও জামায়াত সমঝোতার মাধ্যমে প্রার্থী নির্বাচন করে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রচারণা চালানো বিশেষ করে, যে ইউনিয়নে বিএনপি প্রার্থী দিয়েছে সেখানে জামায়াত প্রার্থী না দেয়া একইভাবে জামায়াতের প্রার্থীরা যেখানে ছিলো সেখানে বিএনপির প্রার্থী না দেয়াসহ নানান কারণে তাদের সাফল্য এসেছে বলে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা মনে করেন।

সরেজমিন পীরগাছা উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ভোট কেন্দ্রে ঘুরে দেখা গেছে ভোটারদের ব্যাপক উপস্থিতি যা ইতোপূর্বে ঘটেনি নির্বাচনী পরিবেশটাও ছিলো উৎসব মুখর।

বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত পীরগাছা উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের নির্বাচনে বিএনপির তিন প্রার্থী জয়ী হয়েছে এরা হলেন ছাওলা ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি নাজির হোসেন, পীরগাছা সদর ইউনিয়নে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোস্তাফিজার রহমান রেজা এবং কান্দি ইউনিয়নে বিএনপি প্রার্থী উপজেলা বিএনপি নেতা আবদুস সালাম আজাদ। অন্যদিকে তাম্বুলপুর ইউনিয়নে পীরগাছা উপজেলা জামায়াতের আমীর বজলুর রশীদ মুকুল বিজয়ী হয়েছেন। এছাড়া কৈকুড়ি ইউনিয়নে জাতীয় পার্টির প্রার্থী নুর আলম বিজয়ী হয়েছেন। ৩টি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন এর মধ্যে পারুল ইউনিয়নে তোফাজ্জল হোসেন, ইটাকুমারীতে আবুল বাশার ও আনন্দা নগরে আমিনুল ইসলাম চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তবে তারা তিনজনই অল্প ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন।

তাম্বুলপুর ইউনিয়নে জামায়াত প্রার্থী বজলুর রশীদ মুকুল চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবার জন্য স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাদের দায়ী করেছে তৃণমূল নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ রহমান আলী ও সালাম অভিযোগ করেন, এই ইউনিয়নে প্রথমে বিদ্যুত কুমারকে দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেয়া হয়। কয়েকদিন ধরে সে প্রচারণা চালানোর পর কোন কারণ ছাড়াই তাকে বাদ দিয়ে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহিন সরদারকে মনোনয়ন দেয়া হয়। এ ঘটনায় দলের নেতাকর্মীদের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। রংপুরে মানববন্ধন, প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ করেছে নেতাকর্মীরা।

বিশেষ করে, নির্বাচনের আগে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতা ভবেশ চন্দ্র স্থানীয় নেক মামুদ বাজারে সভা করে ঘোষণা দেন ৮টি ইউনিয়নে একজনমাত্র হিন্দু প্রার্থীকে দলীয় মনোনয়ন দেবার পর কয়েকদিন পর তাকে বাদ দিয়ে অন্য একজনকে মনোনয়ন দেয়ায় হিন্দু সম্প্রদায় নৌকার প্রার্থীকে ভোট দেবে না বলে ঘোষণা দেন। এই বিষয়টিও নির্বাচনে প্রভাব ফেলেছে বলে তৃণমূল নেতাকর্মীদের অভিযোগ।

এছাড়াও দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় নুরজ্জামান সরকার ও সোহরাব হোসেন মিঠু নামে দুই আওয়ামী লীগ নেতা মনোনয়ন না পাওয়ায় বিদ্রোহী প্রার্থীকে নির্বাচনে অংশ নেয়াটাও দলের জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে দুই বিদ্রোহী প্রার্থীর অংশ নেয়া ও হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রার্থীকে দলীয় মনোনয়ন দিয়ে পরে তাকে বাদ দেয়ায় জামায়াত প্রার্থী বজলুর রশীদ মুকুল বিজয়ী হয়েছে বলে মনে করেন তারা। যদিও প্রথম থেকেই বিএনপি ও জামায়াত প্রার্থীরা বলে আসছিলেন তারা সমঝোতা করে নির্বাচন করছেন একে অপরের বিরুদ্ধে প্রার্থী দেননি কিংবা দলীয় প্রতীক ছাড়াই স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন ফলে তারা ভালো করবেন বলে জানান।

এ ব্যাপারে বিএনপি জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক ও পীরগাছা উপজেলার নেতা রাঙ্গা নির্বাচনে তাদের ২০ দলীয় জোটের ৪টি ইউনিয়নে জয়ী হবার বিষয়টিকে এ সরকারের বিরুদ্ধে জনগণের অনাস্থা প্রকাশ করা বলে মনে করেন। তিনি দাবি করেন, আওয়ামী লীগের যে তিনজন প্রার্থী জয়ী হয়েছে তাদের জয়ী দেখান হয়েছে। এখানেও তারাই বিজয়ী হতেন, তাদের বিজয় ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

এ ব্যাপারে পীরগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি তসলিম উদ্দিন সাধারণ সম্পাদক মিলনের সঙ্গে বেশকয়েকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তারা কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।

তবে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মমতাজ উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ প্রতিনিধিকে বলেন, নির্বাচনে দলের বেশকিছু নেতা প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেছেন। তাদের তালিকা তৈরি করে কেন্দ্রে পাঠানো হবে, দল তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে বলে জানান তিনি। তিনি দাবি করেন, তাদের দলের প্রার্থীরা অল্প ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছে। এছাড়াও বিএনপি ও জামায়াত ভোটের আগের রাতে লাখ লাখ টাকা ভোটারদের বাড়ি বাড়ি বিলি করে বেড়িয়েছে, এ ধরনের অভিযোগও আমরা পেয়েছি বলে জানান তিনি।

অপরদিকে বৃহস্পতিবার পীরগজ্ঞ উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের নির্বাচনে ৮টি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ প্রার্থী জয়ী হয়েছে, দু’টি ইউনিয়নে বিদ্রোহী প্রার্থী জয়ী হয়েছে। সেখানে বিএনপি বা জামায়াত স্বতন্ত্রভাবে অংশ নেয়নি কিংবা প্রার্থী দেয়নি। মূলত পীরগজ্ঞে নির্বাচন হয়েছে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে দলীয় বিদ্রোহী প্রার্থীর। নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, যে দশজন প্রার্থী জয়ী হয়েছে তারা হলেন চৈত্রকোল ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আরিফুজ্জামান, ভে-াবাড়িতে সাদেকুল ইসলাম, কুমেদপুরে আমিনুল ইসলাম, টুকুরিয়ায় আতাউর রহমান ম-ল, সানেরহাটে মেজবাহুর রহমান, পাচগাছিতে বাবুল মিয়া, চতরায় এনামুল হক শাহিন, কাবিলপুরে রবিউল ইসলাম রবি। বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে জয়ী হয়েছেন বড়দরগায় সাদিয়া আখতার এবং মদনখালিতে নুর মোহাম্মদ মজ্ঞু।