পটিয়ায় সাহিত্য বিশারদ সড়কে কাব্যকুঞ্জ ভবনের উপর দিয়ে অবৈধভাবে রাস্তা নির্মাণের অভিযোগ

চট্টগ্রামের পটিয়া পৌরসভার ইন্দ্রপোল-সুচক্রদন্ডি আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ সড়ক সম্প্রসারণ প্রকল্পের বাইরে জায়গা থাকা সত্ত্বেও কাউন্সিলরের ব্যক্তিগত আক্রোশে সাহিত্য বিশারদ সুহৃদ সভাপতি কবি ও ছাড়াকার শহীদুল আলমের বাড়ি কাব্যকুঞ্জের উপর দিয়ে জোরপূর্বক অবৈধভাবে রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। ইচ্ছাকৃতভাবে স্থানীয় কাউন্সিলর এ কাজে জড়িত থাকায় বিষয়টি নিয়ে এলাকার সচেতন মহল ও সাংস্কৃতিক কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

জানা গেছে, পৌরসভার অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি সম্প্রসারণে ১৩ কোটি ৭৯ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। চলমান এই প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স তৌহিদ অ্যান্ড ব্রাদার্স-এমএনই(জেবি) কাজের ২৫% শেষ হয়েছে মাত্র। সড়কটি ১৫ ফুট প্রশস্ত থাকলেও এটিকে ১৮ ফুট প্রশস্ত করা অপ্রয়োজনীয় বলে মনে করছেন এলাকার অনেক মানুষ। কারণ সড়কটি একটি ওয়ার্ডের সঙ্গে আরেকটি ওয়ার্ডের আভ্যন্তরীণ সড়ক। দিনের অধিকাংশ সময় রিকশা আর ২/১টি টেক্সি ছাড়া অন্য কোন যানবাহন চলাচল করে না। পৌরসভার দাবি এটি সিট অনুযায়ী রয়েছে ২৫ ফুট রাস্তা।

সাহিত্য বিশারদ সুহৃদ সভাপতি ও আওয়ামী লীগ নেতা শহিদুল আলীম অভিযোগ করেছেন, অপর পাশে জায়গা থাকলেও তার বাড়ির বাউন্ডারি ওয়ালের ভিতরে জোরপূর্বক অবৈধভাবে বাউন্ডারি ওয়াল ভেঙে রাস্তা কাজ করার চেষ্টা করছে। স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর রুপক সেন ব্যক্তিগত স্বার্থে বাড়িটি দখলের জন্য ভিতরে রাস্তা নির্মাণ করাচ্ছে। অথচ নিজের ক্রয়কৃত জায়াগা থেকে ২ শতাংশ ছেড়ে দিয়ে বাড়ি ও বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ করেছেন। রাস্তার উত্তর পাশে তার বাড়ি অবস্থিত।

দক্ষিণ পাশে রাস্তা সম্প্রসারণ না করে তার বাড়ির ভিতর রাস্তা করার ঘটনায় এলাকবাসীর মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। বিষয়টি এলাকাবাসী জাতীয় সংসদের হুইপ ও পটিয়ার এমপি সামশুল হক চৌধুরী ও পটিয়া পৌর মেয়র আইয়ুব বাবুলকেও জানানো হয়েছে। বাস্তব চিত্র হলো কবি শহিদুল আলম ৪ শতাংশ রাস্তার জন্য ছেড়ে দিয়ে বাউন্ডারি নির্মাণ করেছেন। রাস্তার দক্ষিণ পাশে পৌরসভার সরকারি জায়গা বাদ দিয়ে শহিদুল আলমের বাড়ির দিকে জোরপূর্বক ঠেলে দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, পৌরসভা তার প্রতি ক্ষমতার অপব্যবহার ও বিদ্বেষ পোষণ করছে।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীনে সড়কটি ১৮ ফুট উন্নয়ন, আরসিসি ড্রেন নির্মাণ ও সড়ক বাতি স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে। কিন্তু পটিয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগ নেতা শহিদুল আলমের বাড়ির দক্ষিণ পাশে রাস্তার জায়গায় অপরিকল্পিতভাবে স্থাপনা নির্মাণ করার কারণে এই জটিলতা দেখা দিয়েছে। তিনি তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানান। গত সোমবার কয়েকজন দায়ত্বশীল কাউন্সিলরের উপস্থিতে পৌরসভার সার্ভেয়ার মোহাম্মদ মামুন রাস্তাটি পরিমাপ করেন।

এতে সিট অনুযায়ী রাস্তা ২৫ ফুট হলেও বর্তমানে মিলেছে ১৫ ফুট। রাস্তার বাকি জায়গা অপর পাশের লোকজন কৌশলে দখল করে রেখেছে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পৌরসভার মেয়র আইয়ুব বাবুল, ওয়ার্ড কাউন্সিলর গোফরান রানা, কাউন্সিলর জসিম উদ্দিন, কাউন্সিলর সরওয়ার কামাল রাজিব। ব্যক্তিগত বিরোধের বিষয়ে জানার জন্য স্থানীয় কাউন্সিলর রুপক সেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে মোবাইলে পাওয়া যায়নি। এ সময় তারা স্থাপনা দ্রুত সরিয়ে নিতে ১৫ দিন সময় দিয়েছেন। পৌরসভার সার্ভেয়ার মোহাম্মদ মামুন বলেন, কাব্যকুঞ্জ ভবনের সন্দুর্য নষ্ট করতে অপচেষ্টা করতেছে। কবি সাহেব তো ভালো মানুষ, উনি নিজেই মূল্যবান জায়গা ছেড়ে দিয়ে বাউন্ডারি নির্মাণ করেছেন, জায়গাটি পরিমাপ করার জন্য উনি পৌরসভায় আবেদন করে সরকারি জায়গা বের করার অনুরোধ জানিয়েছে, তবে রাজনৈতিক বিরোধের কারণে উনাকে হয়রানি করা হচ্ছে বলে জানান।

পটিয়া মেয়র আইয়ুব বাবুল সাহিত্য বিশারদ সুহৃদ সভাপতি কবি শহিদুল আলমের বাড়ির বাউন্ডারি নিয়ে ঝমেলা তৈরি হয়েছে বলে জানান, তবে যাতে অন্যায়ভাবে কারও ক্ষতি না হয় বিষয়টি মাথায় রেখে কাজ করা হবে বলে জানান।

শনিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২১ , ২৮ কার্তিক ১৪২৮ ৭ রবিউস সানি ১৪৪৩

পটিয়ায় সাহিত্য বিশারদ সড়কে কাব্যকুঞ্জ ভবনের উপর দিয়ে অবৈধভাবে রাস্তা নির্মাণের অভিযোগ

প্রতিনিধি, পটিয়া (চট্টগ্রাম)

চট্টগ্রামের পটিয়া পৌরসভার ইন্দ্রপোল-সুচক্রদন্ডি আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ সড়ক সম্প্রসারণ প্রকল্পের বাইরে জায়গা থাকা সত্ত্বেও কাউন্সিলরের ব্যক্তিগত আক্রোশে সাহিত্য বিশারদ সুহৃদ সভাপতি কবি ও ছাড়াকার শহীদুল আলমের বাড়ি কাব্যকুঞ্জের উপর দিয়ে জোরপূর্বক অবৈধভাবে রাস্তা ও ড্রেন নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। ইচ্ছাকৃতভাবে স্থানীয় কাউন্সিলর এ কাজে জড়িত থাকায় বিষয়টি নিয়ে এলাকার সচেতন মহল ও সাংস্কৃতিক কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

জানা গেছে, পৌরসভার অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি সম্প্রসারণে ১৩ কোটি ৭৯ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। চলমান এই প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স তৌহিদ অ্যান্ড ব্রাদার্স-এমএনই(জেবি) কাজের ২৫% শেষ হয়েছে মাত্র। সড়কটি ১৫ ফুট প্রশস্ত থাকলেও এটিকে ১৮ ফুট প্রশস্ত করা অপ্রয়োজনীয় বলে মনে করছেন এলাকার অনেক মানুষ। কারণ সড়কটি একটি ওয়ার্ডের সঙ্গে আরেকটি ওয়ার্ডের আভ্যন্তরীণ সড়ক। দিনের অধিকাংশ সময় রিকশা আর ২/১টি টেক্সি ছাড়া অন্য কোন যানবাহন চলাচল করে না। পৌরসভার দাবি এটি সিট অনুযায়ী রয়েছে ২৫ ফুট রাস্তা।

সাহিত্য বিশারদ সুহৃদ সভাপতি ও আওয়ামী লীগ নেতা শহিদুল আলীম অভিযোগ করেছেন, অপর পাশে জায়গা থাকলেও তার বাড়ির বাউন্ডারি ওয়ালের ভিতরে জোরপূর্বক অবৈধভাবে বাউন্ডারি ওয়াল ভেঙে রাস্তা কাজ করার চেষ্টা করছে। স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর রুপক সেন ব্যক্তিগত স্বার্থে বাড়িটি দখলের জন্য ভিতরে রাস্তা নির্মাণ করাচ্ছে। অথচ নিজের ক্রয়কৃত জায়াগা থেকে ২ শতাংশ ছেড়ে দিয়ে বাড়ি ও বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ করেছেন। রাস্তার উত্তর পাশে তার বাড়ি অবস্থিত।

দক্ষিণ পাশে রাস্তা সম্প্রসারণ না করে তার বাড়ির ভিতর রাস্তা করার ঘটনায় এলাকবাসীর মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। বিষয়টি এলাকাবাসী জাতীয় সংসদের হুইপ ও পটিয়ার এমপি সামশুল হক চৌধুরী ও পটিয়া পৌর মেয়র আইয়ুব বাবুলকেও জানানো হয়েছে। বাস্তব চিত্র হলো কবি শহিদুল আলম ৪ শতাংশ রাস্তার জন্য ছেড়ে দিয়ে বাউন্ডারি নির্মাণ করেছেন। রাস্তার দক্ষিণ পাশে পৌরসভার সরকারি জায়গা বাদ দিয়ে শহিদুল আলমের বাড়ির দিকে জোরপূর্বক ঠেলে দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, পৌরসভা তার প্রতি ক্ষমতার অপব্যবহার ও বিদ্বেষ পোষণ করছে।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীনে সড়কটি ১৮ ফুট উন্নয়ন, আরসিসি ড্রেন নির্মাণ ও সড়ক বাতি স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে। কিন্তু পটিয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগ নেতা শহিদুল আলমের বাড়ির দক্ষিণ পাশে রাস্তার জায়গায় অপরিকল্পিতভাবে স্থাপনা নির্মাণ করার কারণে এই জটিলতা দেখা দিয়েছে। তিনি তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানান। গত সোমবার কয়েকজন দায়ত্বশীল কাউন্সিলরের উপস্থিতে পৌরসভার সার্ভেয়ার মোহাম্মদ মামুন রাস্তাটি পরিমাপ করেন।

এতে সিট অনুযায়ী রাস্তা ২৫ ফুট হলেও বর্তমানে মিলেছে ১৫ ফুট। রাস্তার বাকি জায়গা অপর পাশের লোকজন কৌশলে দখল করে রেখেছে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পৌরসভার মেয়র আইয়ুব বাবুল, ওয়ার্ড কাউন্সিলর গোফরান রানা, কাউন্সিলর জসিম উদ্দিন, কাউন্সিলর সরওয়ার কামাল রাজিব। ব্যক্তিগত বিরোধের বিষয়ে জানার জন্য স্থানীয় কাউন্সিলর রুপক সেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে মোবাইলে পাওয়া যায়নি। এ সময় তারা স্থাপনা দ্রুত সরিয়ে নিতে ১৫ দিন সময় দিয়েছেন। পৌরসভার সার্ভেয়ার মোহাম্মদ মামুন বলেন, কাব্যকুঞ্জ ভবনের সন্দুর্য নষ্ট করতে অপচেষ্টা করতেছে। কবি সাহেব তো ভালো মানুষ, উনি নিজেই মূল্যবান জায়গা ছেড়ে দিয়ে বাউন্ডারি নির্মাণ করেছেন, জায়গাটি পরিমাপ করার জন্য উনি পৌরসভায় আবেদন করে সরকারি জায়গা বের করার অনুরোধ জানিয়েছে, তবে রাজনৈতিক বিরোধের কারণে উনাকে হয়রানি করা হচ্ছে বলে জানান।

পটিয়া মেয়র আইয়ুব বাবুল সাহিত্য বিশারদ সুহৃদ সভাপতি কবি শহিদুল আলমের বাড়ির বাউন্ডারি নিয়ে ঝমেলা তৈরি হয়েছে বলে জানান, তবে যাতে অন্যায়ভাবে কারও ক্ষতি না হয় বিষয়টি মাথায় রেখে কাজ করা হবে বলে জানান।