ক্যানসারকে হারিয়ে জীবনযুদ্ধেও জয়ী ম্যাথু ওয়েড

বড় কোন মঞ্চে জ্বলে উঠলে পাওয়া যায় প্রতিষ্ঠা। ভক্তরা জানতে চান সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির জীবনযুদ্ধের কাহিনী। বৃহস্পতিবার সেরকমই এক মঞ্চে ম্যাথু ওয়েড নিজেকে উজাড় করে দেন। তারপর থেকেই সার্চইঞ্জিনে শুধু ওয়েড আর ওয়েড। উঠে আসছে তার কৈশোরের লড়াইয়ের কাহিনী। নতুন করে অনেকেই জানতে পারছেন ম্যাথু ওয়েড মৃত্যুঞ্জয়ী।

টি-২০ বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে একসময়ে মনে হচ্ছিল, পাকিস্তান ফাইনালে যাচ্ছেই। অস্ট্রেলিয়া তখন জয়ের কক্ষপথ থেকে অনেকটাই দূরে। বাড়তে থাকা আস্কিং রেটের সামনে দাঁড়িয়ে অস্বাভাবিক রকমের শান্ত দেখাচ্ছিল ওয়েড ও স্টোয়নিসকে। ম্যাচ ছোট করার চেষ্টা করছিলেন দু’জন। অপেক্ষা করছিলেন মোক্ষম সময়ে বিস্ফোরণের জন্য। ১৯তম ওভারে শাহিন আফ্রিদির বলে ক্যাচ পড়ে ওয়েডের। জীবন ফিরে পেয়ে বাঁ-হাতি অজি ব্যাটসম্যান নকআউট করে দিলেন পাকিস্তানকে। জীবন তো আগেও পেয়েছিলেন ওয়েড। সেই কৈশোরে ছক্কা মেরে ক্যানসারকে গ্যালারিতে ফেলেছিলেন ওয়েড।

মাত্র ১৬ বছর বয়সে ওয়েডের শরীরে বাসা বেঁধেছিল মারণ ক্যানসার। অথচ তিনি তার বিন্দুবিসর্গ জানতেন না। ফুটবল খেলতেন। একদিন ফুটবল খেলতে গিয়ে কুঁচকিতে মারাত্মক চোট পান ওয়েড। যন্ত্রণাকাতর ওয়েড যান চিকিৎসকের কাছে। তখনই তিনি জানতে পারেন তার অন্ডকোষে টিউমার বেড়ে উঠছে অনেক আগে থেকেই। পরবর্তীতে ওয়েডকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘আমি সত্যিই ভাগ্যবান।’ ফুটবল খেলতে গিয়ে আঘাত না পেলে এই মারাত্মক রোগের কথা হয়তো জানতেই পারতেন না ওয়েড। কেমোথেরাপির নিদান দেন চিকিৎসক।

ওয়েড জানতেন কেমোথেরাপি নিলে মাথার চুল উঠে যেতে পারে। শরীরের অনেক সিস্টেমই বিদ্রোহ করে বসতে পারে। দুটো কেমোথেরাপি নেয়া ওয়েড এখন ক্যানসারকে হারিয়েছেন। জীবনের কঠিন সময়ের সেই অভিজ্ঞতা কি সেমিফাইনালে অকুতোভয় করে দিয়েছিল ওয়েডকে? তার স্নায়ু করে দিয়েছিল ইস্পাত কঠিন? হয়তো তাই। প্রবল চাপের মুখে বর্ণান্ধ ছেলেটি ঠা-া মাথায় খুন করল পাক বোলিং।

সদ্য কৈশোরে পা রাখা ছেলেটা যখন মারণরোগকে মাঠের বাইরে ফেলে দিতে পেরেছে, মরুদেশের মাঠে ছক্কা হাঁকিয়ে জয় ছিনিয়ে আনা তার কাছে কী এমন কঠিন কাজ!

শনিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২১ , ২৮ কার্তিক ১৪২৮ ৭ রবিউস সানি ১৪৪৩

ক্যানসারকে হারিয়ে জীবনযুদ্ধেও জয়ী ম্যাথু ওয়েড

সংবাদ স্পোর্টস ডেস্ক

image

বড় কোন মঞ্চে জ্বলে উঠলে পাওয়া যায় প্রতিষ্ঠা। ভক্তরা জানতে চান সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির জীবনযুদ্ধের কাহিনী। বৃহস্পতিবার সেরকমই এক মঞ্চে ম্যাথু ওয়েড নিজেকে উজাড় করে দেন। তারপর থেকেই সার্চইঞ্জিনে শুধু ওয়েড আর ওয়েড। উঠে আসছে তার কৈশোরের লড়াইয়ের কাহিনী। নতুন করে অনেকেই জানতে পারছেন ম্যাথু ওয়েড মৃত্যুঞ্জয়ী।

টি-২০ বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে একসময়ে মনে হচ্ছিল, পাকিস্তান ফাইনালে যাচ্ছেই। অস্ট্রেলিয়া তখন জয়ের কক্ষপথ থেকে অনেকটাই দূরে। বাড়তে থাকা আস্কিং রেটের সামনে দাঁড়িয়ে অস্বাভাবিক রকমের শান্ত দেখাচ্ছিল ওয়েড ও স্টোয়নিসকে। ম্যাচ ছোট করার চেষ্টা করছিলেন দু’জন। অপেক্ষা করছিলেন মোক্ষম সময়ে বিস্ফোরণের জন্য। ১৯তম ওভারে শাহিন আফ্রিদির বলে ক্যাচ পড়ে ওয়েডের। জীবন ফিরে পেয়ে বাঁ-হাতি অজি ব্যাটসম্যান নকআউট করে দিলেন পাকিস্তানকে। জীবন তো আগেও পেয়েছিলেন ওয়েড। সেই কৈশোরে ছক্কা মেরে ক্যানসারকে গ্যালারিতে ফেলেছিলেন ওয়েড।

মাত্র ১৬ বছর বয়সে ওয়েডের শরীরে বাসা বেঁধেছিল মারণ ক্যানসার। অথচ তিনি তার বিন্দুবিসর্গ জানতেন না। ফুটবল খেলতেন। একদিন ফুটবল খেলতে গিয়ে কুঁচকিতে মারাত্মক চোট পান ওয়েড। যন্ত্রণাকাতর ওয়েড যান চিকিৎসকের কাছে। তখনই তিনি জানতে পারেন তার অন্ডকোষে টিউমার বেড়ে উঠছে অনেক আগে থেকেই। পরবর্তীতে ওয়েডকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘আমি সত্যিই ভাগ্যবান।’ ফুটবল খেলতে গিয়ে আঘাত না পেলে এই মারাত্মক রোগের কথা হয়তো জানতেই পারতেন না ওয়েড। কেমোথেরাপির নিদান দেন চিকিৎসক।

ওয়েড জানতেন কেমোথেরাপি নিলে মাথার চুল উঠে যেতে পারে। শরীরের অনেক সিস্টেমই বিদ্রোহ করে বসতে পারে। দুটো কেমোথেরাপি নেয়া ওয়েড এখন ক্যানসারকে হারিয়েছেন। জীবনের কঠিন সময়ের সেই অভিজ্ঞতা কি সেমিফাইনালে অকুতোভয় করে দিয়েছিল ওয়েডকে? তার স্নায়ু করে দিয়েছিল ইস্পাত কঠিন? হয়তো তাই। প্রবল চাপের মুখে বর্ণান্ধ ছেলেটি ঠা-া মাথায় খুন করল পাক বোলিং।

সদ্য কৈশোরে পা রাখা ছেলেটা যখন মারণরোগকে মাঠের বাইরে ফেলে দিতে পেরেছে, মরুদেশের মাঠে ছক্কা হাঁকিয়ে জয় ছিনিয়ে আনা তার কাছে কী এমন কঠিন কাজ!