একবছর পর আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। ৪৫তম কলকাতা বইমেলা শুরু হবে আগামী বছরের ৩১ জানুয়ারি। চলবে ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এবারের বইমেলায় উপস্থিত থাকার জন্য বিশেষভাবে আমন্ত্রণ জানানো হবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। এজন্য মেলা আয়োজক সংস্থার পক্ষ থেকে তার সঙ্গে শীঘ্রই যোগাযোগ করা হবে। মেলা আয়োজক সংস্থা বুক সেলার্স অ্যান্ড গিল্ডের পক্ষ থেকে গতকাল কলকাতা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলন সভাপতি সুধাংশু শেখর দে ও সাধারণ সম্পাদক ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায় এইসব তথ্য জানান।
শারদীয় উৎসবের পর, গত চার দশক আমাদের রাজ্যের সব থেকে বড় উৎসব, বই উৎসব, আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা। কোভিড অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আসার পরে মেলা আয়োজকদের অনুরোধে সম্মত হয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি এবারের বইমালার তারিখ ঘোষণা করে দিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে বৈঠকে আরও জানানো হয়, কলকতা আন্তর্জাতিক বইমেলার এবারের থিম কান্ট্রি হবে বাংলাদেশ। ভারতের এই প্রতিবেশী দেশকেই এবারও বইমেলায় প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। গত ৪৪তম বইমেলায়ও থিমকান্ট্রি ছিল বাংলাদেশ। এ বছর বইমেলায় উদযাপিত হবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর। এছাড়াও বইমেলায় স্মরণ করা হবে নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর ১২৫তম জন্মবর্ষ, সত্যজিত রায়ের জন্মশতবর্ষ ও ভারতের স্বাধীনতার ৭৫ বছর।
বৈঠকে পাবলিশার্স অ্যান্ড বুক সেলার্স গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক ত্রিদিবকুমার চট্টোপাধ্যায় বলেন, গত দু’বছরে আমারা হারিয়েছি সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, কবি শঙ্খ ঘোষ, সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়, আনিসুজ্জামান, দেবেশ রায়, নিমাই ভট্টাচার্য, শামসুজ্জামান খান, সাংবাদিক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়, মানবেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, স্বপন মজুমদার, বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত, শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায়, সুব্রত মুখার্জীর মতো বরেণ্য কবি সাহিত্যিক ও গুণীজনকে। পাশাপাশি হারিয়েছি আমাদের সহকর্মী গিল্ডের সদস্য শমিত সরকার, তপন মুখার্জী ও দেবাশীস লাহিড়িকে। বইমেলায় তাদের সবার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করা হবে।
করোনা পরিস্থিতির কারণে বইমেলা প্রাঙ্গণে সবাইকে প্রচলিত নিয়ম-নীতি মেনেই আসতে হবে। স্যানিটাইজেশন এবং ডবল ভ্যাক্সিনেশন সার্টিফিকেটের ওপর জোর দেয়া হবে।
বিশেষ করে, মাস্ক পরে মেলা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে হবে। ই-পাসেরও ব্যবস্থা থাকবে এবার। বইমেলায় প্যান্ডেলগুলো খোলামেলা করতে হবে। স্টলের সংখ্যা কমানো হবে না, তবে এবার স্টলের আকার ছোট করা হবে। বাংলাদেশ ছাড়াও প্রতিবছরের মতো বইমেলায় অংশগ্রহণ করবে বিভিন্ন দেশ এবং ভারতের অন্য রাজ্যের প্রকাশনা সংস্থাগুলো।
প্রতিবছর কলকাতা বইমেলায় বিদেশ থেকে বহু মানুষ আসেন। বর্তমান পরিস্থিতির জন্য অনেকে হয়তো এবার নাও আসতে পারেন। তাই সারাবিশ্বের বইপ্রেমীদের জন্য থাকছে অভিনব উদ্যোগ। বিশেষ প্রযুক্তির সাহায্যে কলকাতা বইমেলার ভার্চুয়াল উপস্থিতি থাকবে গিল্ডের ওয়েবসাইট ও সমস্ত সোশ্যাল মিডিয়ায়, যাতে পৃথিবীর যেকোন প্রান্ত থেকে যে কেউ বইমেলা দেখতে পারবেন। এ ব্যাপারে পরবর্তী সাংবাদিক সম্মেলনে বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা ২০২২-এ অংশগ্রহণ করতে হলে আগামী ৩০শে নভেম্বরের মধ্যে প্রকাশক, পুস্তকবিক্রেতা, লিটল ম্যাগাজিন এবং যাবতীয় আবেদনপত্র গিল্ড অফিসে জমা দিতে হবে। আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলার বিশেষ আকর্ষণ, অষ্টম কলকাতা লিটারেচার ফেস্টিভ্যাল এবারেও যথারীতি বইমেলা চলাকালীন অনুষ্ঠিত হবে।
রবিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২১ , ২৯ কার্তিক ১৪২৮ ৮ রবিউস সানি ১৪৪৩
দীপক মুখার্জী, কলকাতা
একবছর পর আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। ৪৫তম কলকাতা বইমেলা শুরু হবে আগামী বছরের ৩১ জানুয়ারি। চলবে ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এবারের বইমেলায় উপস্থিত থাকার জন্য বিশেষভাবে আমন্ত্রণ জানানো হবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। এজন্য মেলা আয়োজক সংস্থার পক্ষ থেকে তার সঙ্গে শীঘ্রই যোগাযোগ করা হবে। মেলা আয়োজক সংস্থা বুক সেলার্স অ্যান্ড গিল্ডের পক্ষ থেকে গতকাল কলকাতা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলন সভাপতি সুধাংশু শেখর দে ও সাধারণ সম্পাদক ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায় এইসব তথ্য জানান।
শারদীয় উৎসবের পর, গত চার দশক আমাদের রাজ্যের সব থেকে বড় উৎসব, বই উৎসব, আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা। কোভিড অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আসার পরে মেলা আয়োজকদের অনুরোধে সম্মত হয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি এবারের বইমালার তারিখ ঘোষণা করে দিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে বৈঠকে আরও জানানো হয়, কলকতা আন্তর্জাতিক বইমেলার এবারের থিম কান্ট্রি হবে বাংলাদেশ। ভারতের এই প্রতিবেশী দেশকেই এবারও বইমেলায় প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। গত ৪৪তম বইমেলায়ও থিমকান্ট্রি ছিল বাংলাদেশ। এ বছর বইমেলায় উদযাপিত হবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর। এছাড়াও বইমেলায় স্মরণ করা হবে নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর ১২৫তম জন্মবর্ষ, সত্যজিত রায়ের জন্মশতবর্ষ ও ভারতের স্বাধীনতার ৭৫ বছর।
বৈঠকে পাবলিশার্স অ্যান্ড বুক সেলার্স গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক ত্রিদিবকুমার চট্টোপাধ্যায় বলেন, গত দু’বছরে আমারা হারিয়েছি সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, কবি শঙ্খ ঘোষ, সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়, আনিসুজ্জামান, দেবেশ রায়, নিমাই ভট্টাচার্য, শামসুজ্জামান খান, সাংবাদিক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়, মানবেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, স্বপন মজুমদার, বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত, শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায়, সুব্রত মুখার্জীর মতো বরেণ্য কবি সাহিত্যিক ও গুণীজনকে। পাশাপাশি হারিয়েছি আমাদের সহকর্মী গিল্ডের সদস্য শমিত সরকার, তপন মুখার্জী ও দেবাশীস লাহিড়িকে। বইমেলায় তাদের সবার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করা হবে।
করোনা পরিস্থিতির কারণে বইমেলা প্রাঙ্গণে সবাইকে প্রচলিত নিয়ম-নীতি মেনেই আসতে হবে। স্যানিটাইজেশন এবং ডবল ভ্যাক্সিনেশন সার্টিফিকেটের ওপর জোর দেয়া হবে।
বিশেষ করে, মাস্ক পরে মেলা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে হবে। ই-পাসেরও ব্যবস্থা থাকবে এবার। বইমেলায় প্যান্ডেলগুলো খোলামেলা করতে হবে। স্টলের সংখ্যা কমানো হবে না, তবে এবার স্টলের আকার ছোট করা হবে। বাংলাদেশ ছাড়াও প্রতিবছরের মতো বইমেলায় অংশগ্রহণ করবে বিভিন্ন দেশ এবং ভারতের অন্য রাজ্যের প্রকাশনা সংস্থাগুলো।
প্রতিবছর কলকাতা বইমেলায় বিদেশ থেকে বহু মানুষ আসেন। বর্তমান পরিস্থিতির জন্য অনেকে হয়তো এবার নাও আসতে পারেন। তাই সারাবিশ্বের বইপ্রেমীদের জন্য থাকছে অভিনব উদ্যোগ। বিশেষ প্রযুক্তির সাহায্যে কলকাতা বইমেলার ভার্চুয়াল উপস্থিতি থাকবে গিল্ডের ওয়েবসাইট ও সমস্ত সোশ্যাল মিডিয়ায়, যাতে পৃথিবীর যেকোন প্রান্ত থেকে যে কেউ বইমেলা দেখতে পারবেন। এ ব্যাপারে পরবর্তী সাংবাদিক সম্মেলনে বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা ২০২২-এ অংশগ্রহণ করতে হলে আগামী ৩০শে নভেম্বরের মধ্যে প্রকাশক, পুস্তকবিক্রেতা, লিটল ম্যাগাজিন এবং যাবতীয় আবেদনপত্র গিল্ড অফিসে জমা দিতে হবে। আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলার বিশেষ আকর্ষণ, অষ্টম কলকাতা লিটারেচার ফেস্টিভ্যাল এবারেও যথারীতি বইমেলা চলাকালীন অনুষ্ঠিত হবে।