মামলা চললেও শিক্ষকদের একটি পক্ষ সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কৃষি শিক্ষা বিষয়ের সিনিয়র শিক্ষকদের জুনিয়র করার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
শিক্ষকদের ওই গ্রুপটি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের ভুল বুঝিয়ে জ্যেষ্ঠতা প্রদান আটকে রাখার অপচেষ্টা করছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিধি অনুবিভাগ কর্তৃক সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত সহকারী শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সিনিয়র শিক্ষক পদে পদোন্নতি প্রদান করতে জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণ সংক্রান্ত মতামত প্রকাশের পরপরই আদালতে মামলা হয়। পরবর্তীতে মামলাটি খারিজ হলে উচ্চ আদালতে আপিল মামলা করা হয়। আপিল মামলা চলমান থাকায় জ্যেষ্ঠতা সংক্রান্ত চিঠি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত কোন স্কুলে পাঠাননি।
বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন-পিইসি এ বছরের ৩০ জুন রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে ১০ম গ্রেডের সহকারী শিক্ষক হতে সিনিয়র শিক্ষক পদে ৯ম গ্রেডে পদোন্নতি প্রদান করে। এতে সারাদেশে পাঁচ হাজার ৪৫২ জনের পদোন্নতি দেয়া হয়। সিনিয়র শিক্ষক পদোন্নতির প্রজ্ঞাপনে আটটি নির্দেশনার মধ্যে ৫ নম্বর ক্রমিকে স্পষ্ট উল্লেখ আছে প্রজ্ঞাপনের ক্রমিক নম্বর জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না। তারপরও সিনিয়র শিক্ষকদের একটি অংশ প্রজ্ঞাপনের ক্রমিক নম্বরকে জ্যেষ্ঠতার ক্রমিক দাবি করে বেআইনি আবদার করছেন। অথচ গত ১৫ জুলাই সিনিয়র শিক্ষক পদোন্নতির প্রজ্ঞাপনটি রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়েছে। ওই গেজেটেও ৫ নম্বর ক্রমিকে জ্যেষ্ঠতার বিষয়টি স্পষ্ট উল্লেখ আছে। সেখানেও বলা হয়েছে- এ প্রজ্ঞাপনের ক্রমিক নম্বর জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না। কেবল তাই না, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক পিডিএস-এ সব তথ্য সংরক্ষিত থাকে; সেখানেও যোগদানের তারিখ থেকে জ্যেষ্ঠতার বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে।
রাষ্ট্রপতির আদেশ ও আদালতকে অবমাননা করে জ্যেষ্ঠতা দাবি ও বাস্তবায়ন করা চরম ধৃষ্টতা, যা আইনের পরিপন্থী বলে উল্লেখ করেছেন পদোন্নতি পাওয়া শিক্ষকরা। একই মন্তব্য করেছেন কয়েকজন শিক্ষাবিদও।
তাছাড়া, ১৯৯১ সালের নিয়োগবিধি অনুযায়ী মাধ্যমিকে জুনিয়র শিক্ষক বলে কোন পদ নেই। সকলেই সহকারী শিক্ষক ও বেতন গ্রেড ১০ম। ২০০৪ সালের ২২ মে সহকারী শিক্ষকদের (কৃষি) বেতন গ্রেড দশমে উন্নীতকরণ করা হয় এবং সেখানেও প্রারম্ভিক বেতন স্কেল ১০ম উল্লেখ করা রয়েছে।
এ অবস্থায় কিছু সিনিয়র শিক্ষক জ্যেষ্ঠতার ক্রমিক নিয়ে বিভিন্ন স্কুলে চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছেন। তারা স্ব স্ব প্রধান শিক্ষকদের অহেতুক চাপ প্রয়োগ করছেন তাদের নাম ক্রমিকের নম্বরে ওপরে উঠানোর জন্য। তাদের বেআইনি চাপে পড়ে ইতোমধ্যে কোন কোন প্রধান শিক্ষক জ্যেষ্ঠতার ক্রমিক নম্বরের হেরফের করেছেন। আদালতে আপিল মামলা চলা অবস্থায় এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের কোন ধরনের পত্র ছাড়াই এটি করে ওইসব প্রধান শিক্ষক একপেশে আচরণ করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। তারা আদালত অবমাননার মতো কাজ করেছেন। এসব প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি উঠেছে। আবার মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের কোন কোন কর্মকর্তাকে প্রকৃত তথ্য গোপন করে অন্যায় আবদার পূরণে শিক্ষকদের একটি অংশ সহায়তা চাচ্ছেন বলে সূত্র জানিয়েছে।
যশোরের জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান বলেন, ‘কোন স্কুল থেকে তাকে বিষয়টি জানানো হয়নি। তিনি সাংবাদিকদের কাছ থেকে শুনেছেন। সিনিয়রিটি প্রদানের বিষয়টি স্থানীয় কোন বিষয় না। সংশ্লিষ্ট কর্র্তৃপক্ষ এটি করে থাকেন। সেখান থেকে কোন নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত এটি নিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে পরিবেশ অশান্ত করা কোনভাবেই সমীচীন না। এ বিষয়ে খোঁজখবর নেয়া হবে।’
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক(মাধ্যমিক) আজিজ উদ্দিনের কাছে জানতে একাধিকবার কল করলে তিনি তা কেটে দেন। এসএমএস করে বিষয়টি জানালেও কোন সাড়া দেননি।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক(মাধ্যমিক) বেলাল হোসাইন বলেন, আগের গ্রেডেশন অনুযায়ী সিনিয়রিটি থাকবে। মন্ত্রণালয় আমাদের কাছে এ সংক্রান্ত তালিকা চাওয়ার পর আমরা তা দিয়েছি। সেখান থেকে কোন সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত এটি নিয়ে কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির সুযোগ নেই। তারপরও কেউ যদি বিশৃঙ্খলা করে আর আমাদের কাছে অভিযোগ আসে তাহলে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সোমবার, ১৫ নভেম্বর ২০২১ , ৩০ কার্তিক ১৪২৮ ৯ রবিউস সানি ১৪৪৩
রুকুনউদ্দৌলাহ, যশোর
মামলা চললেও শিক্ষকদের একটি পক্ষ সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কৃষি শিক্ষা বিষয়ের সিনিয়র শিক্ষকদের জুনিয়র করার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
শিক্ষকদের ওই গ্রুপটি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের ভুল বুঝিয়ে জ্যেষ্ঠতা প্রদান আটকে রাখার অপচেষ্টা করছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিধি অনুবিভাগ কর্তৃক সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত সহকারী শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সিনিয়র শিক্ষক পদে পদোন্নতি প্রদান করতে জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণ সংক্রান্ত মতামত প্রকাশের পরপরই আদালতে মামলা হয়। পরবর্তীতে মামলাটি খারিজ হলে উচ্চ আদালতে আপিল মামলা করা হয়। আপিল মামলা চলমান থাকায় জ্যেষ্ঠতা সংক্রান্ত চিঠি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত কোন স্কুলে পাঠাননি।
বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন-পিইসি এ বছরের ৩০ জুন রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে ১০ম গ্রেডের সহকারী শিক্ষক হতে সিনিয়র শিক্ষক পদে ৯ম গ্রেডে পদোন্নতি প্রদান করে। এতে সারাদেশে পাঁচ হাজার ৪৫২ জনের পদোন্নতি দেয়া হয়। সিনিয়র শিক্ষক পদোন্নতির প্রজ্ঞাপনে আটটি নির্দেশনার মধ্যে ৫ নম্বর ক্রমিকে স্পষ্ট উল্লেখ আছে প্রজ্ঞাপনের ক্রমিক নম্বর জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না। তারপরও সিনিয়র শিক্ষকদের একটি অংশ প্রজ্ঞাপনের ক্রমিক নম্বরকে জ্যেষ্ঠতার ক্রমিক দাবি করে বেআইনি আবদার করছেন। অথচ গত ১৫ জুলাই সিনিয়র শিক্ষক পদোন্নতির প্রজ্ঞাপনটি রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়েছে। ওই গেজেটেও ৫ নম্বর ক্রমিকে জ্যেষ্ঠতার বিষয়টি স্পষ্ট উল্লেখ আছে। সেখানেও বলা হয়েছে- এ প্রজ্ঞাপনের ক্রমিক নম্বর জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না। কেবল তাই না, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক পিডিএস-এ সব তথ্য সংরক্ষিত থাকে; সেখানেও যোগদানের তারিখ থেকে জ্যেষ্ঠতার বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে।
রাষ্ট্রপতির আদেশ ও আদালতকে অবমাননা করে জ্যেষ্ঠতা দাবি ও বাস্তবায়ন করা চরম ধৃষ্টতা, যা আইনের পরিপন্থী বলে উল্লেখ করেছেন পদোন্নতি পাওয়া শিক্ষকরা। একই মন্তব্য করেছেন কয়েকজন শিক্ষাবিদও।
তাছাড়া, ১৯৯১ সালের নিয়োগবিধি অনুযায়ী মাধ্যমিকে জুনিয়র শিক্ষক বলে কোন পদ নেই। সকলেই সহকারী শিক্ষক ও বেতন গ্রেড ১০ম। ২০০৪ সালের ২২ মে সহকারী শিক্ষকদের (কৃষি) বেতন গ্রেড দশমে উন্নীতকরণ করা হয় এবং সেখানেও প্রারম্ভিক বেতন স্কেল ১০ম উল্লেখ করা রয়েছে।
এ অবস্থায় কিছু সিনিয়র শিক্ষক জ্যেষ্ঠতার ক্রমিক নিয়ে বিভিন্ন স্কুলে চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছেন। তারা স্ব স্ব প্রধান শিক্ষকদের অহেতুক চাপ প্রয়োগ করছেন তাদের নাম ক্রমিকের নম্বরে ওপরে উঠানোর জন্য। তাদের বেআইনি চাপে পড়ে ইতোমধ্যে কোন কোন প্রধান শিক্ষক জ্যেষ্ঠতার ক্রমিক নম্বরের হেরফের করেছেন। আদালতে আপিল মামলা চলা অবস্থায় এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের কোন ধরনের পত্র ছাড়াই এটি করে ওইসব প্রধান শিক্ষক একপেশে আচরণ করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। তারা আদালত অবমাননার মতো কাজ করেছেন। এসব প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি উঠেছে। আবার মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের কোন কোন কর্মকর্তাকে প্রকৃত তথ্য গোপন করে অন্যায় আবদার পূরণে শিক্ষকদের একটি অংশ সহায়তা চাচ্ছেন বলে সূত্র জানিয়েছে।
যশোরের জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান বলেন, ‘কোন স্কুল থেকে তাকে বিষয়টি জানানো হয়নি। তিনি সাংবাদিকদের কাছ থেকে শুনেছেন। সিনিয়রিটি প্রদানের বিষয়টি স্থানীয় কোন বিষয় না। সংশ্লিষ্ট কর্র্তৃপক্ষ এটি করে থাকেন। সেখান থেকে কোন নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত এটি নিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে পরিবেশ অশান্ত করা কোনভাবেই সমীচীন না। এ বিষয়ে খোঁজখবর নেয়া হবে।’
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক(মাধ্যমিক) আজিজ উদ্দিনের কাছে জানতে একাধিকবার কল করলে তিনি তা কেটে দেন। এসএমএস করে বিষয়টি জানালেও কোন সাড়া দেননি।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক(মাধ্যমিক) বেলাল হোসাইন বলেন, আগের গ্রেডেশন অনুযায়ী সিনিয়রিটি থাকবে। মন্ত্রণালয় আমাদের কাছে এ সংক্রান্ত তালিকা চাওয়ার পর আমরা তা দিয়েছি। সেখান থেকে কোন সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত এটি নিয়ে কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির সুযোগ নেই। তারপরও কেউ যদি বিশৃঙ্খলা করে আর আমাদের কাছে অভিযোগ আসে তাহলে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।