স্কুলছাত্রীকে দিয়ে অনৈতিক কাজ : বাবা-মাসহ জেলে ৩

বরিশালে এক নাবালিকা কন্যাকে (১৪) জোরপূর্বক দেহব্যবসায় বাধ্য করানোর অভিযোগে কিশোরীর বাবা-মা সহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নাবালিকাকে রাখা হয়েছে মহানগর পুলিশের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে। এ ঘটনায় কিশোরীর বড় বোন বাদী হয়ে বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। ওই কিশোরী বরিশাল নগরের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের নিউ সাকুলারোড এলাকার গাজী বাড়ি মসজিদ এলাকায় বাবা মায়ের সঙ্গে বসবাস করতো। কিশোরী ওই এলাকারই একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

বরিশাল মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খানের কাছে দেয়া লিখিত অভিযোগে ঘটনার শিকার কিশোরী উল্লেখ করেছে, তার মা ও বাবা দুজনেই বাসায় বসে মাদক ও নারী ব্যবসা করেন। তাদের বিরুদ্ধে মহানগরের কোতোয়ালি মডেল থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। তারা দুজনেই একাধিকবার পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারও হয়েছে।

গত কয়েকমাস ধরে তারা কিশোরীকে দেহ ব্যবসায় বাধ্য করার জন্য নানাভাবে চাপ দিচ্ছিল। কিন্তু কিশোরী তাতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে প্রায়শই নির্যাতন করতো বাবা ও মা। চলতি বছরের জুন মাসে মা নগরীর মুনসুর কোয়ার্টার এলাকার মিম মধু ঘরের মালিক আনোয়ার হোসেন হাওলাদারের বাসায় নিয়ে আনোয়ারের সঙ্গে একটি কক্ষে আটকে রাখে ওই কিশোরীকে। পরে আনোয়ার তার শ্লীলতাহানি করে বলে অভিযোগ করে কিশোরী। কিশোরীটির দাবি, গত জুন থেকে অক্টোবর পর্যন্ত তাকে ১২৫ বার যৌন নির্যাতন করেছেন ব্যবসায়ী আনোয়ার। এতে সরাসরি সহযোগিতা করেছেন কিশোরীর বাবা ও মা।

পুলিশ সূত্র জানায়, গত শনিবার বিকেলে ঘর থেকে পালিয়ে ওই কিশোরী বরিশাল মহানগর পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে গিয়ে পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খানকে বিস্তারিতভাবে ঘটনা জানায়। পুলিশ কমিশনার বিষয়টি তৎক্ষণিক আইনী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য কোতোয়ালী মডেল থানাকে নির্দেশ দেন। কোতয়ালি মডেল থানার পুলিশ শনিবার রাতেই অভিযান চালিয়ে কিশোরীর মা, বাবাসহ ও মধু ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন হাওলাদারকে গ্রেপ্তার করেছে। গত রোববার তাদের বিরুদ্ধে ঘটনার শিকার কিশোরীর বড় বোন মামলা দায়ের করে। পুলিশ অভিযুক্তদের মহানগর বিচারিক হাকিম আদালতে সোপর্দ করলে আদালত অভিযুক্তদেরকে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে নগরীর কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নুরুল ইসলাম রোববার বিকেলে বলেন, ওই কিশোরীর অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করে ওই মামলায় কিশোরীর বাবা-মা সহ তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। পরে আদালতের মাধ্যমে তাদের জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। কিশোরীকে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখা হয়েছে।

মঙ্গলবার, ১৬ নভেম্বর ২০২১ , ৩১ কার্তিক ১৪২৮ ১০ রবিউস সানি ১৪৪৩

স্কুলছাত্রীকে দিয়ে অনৈতিক কাজ : বাবা-মাসহ জেলে ৩

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, বরিশাল

বরিশালে এক নাবালিকা কন্যাকে (১৪) জোরপূর্বক দেহব্যবসায় বাধ্য করানোর অভিযোগে কিশোরীর বাবা-মা সহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নাবালিকাকে রাখা হয়েছে মহানগর পুলিশের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে। এ ঘটনায় কিশোরীর বড় বোন বাদী হয়ে বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। ওই কিশোরী বরিশাল নগরের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের নিউ সাকুলারোড এলাকার গাজী বাড়ি মসজিদ এলাকায় বাবা মায়ের সঙ্গে বসবাস করতো। কিশোরী ওই এলাকারই একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

বরিশাল মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খানের কাছে দেয়া লিখিত অভিযোগে ঘটনার শিকার কিশোরী উল্লেখ করেছে, তার মা ও বাবা দুজনেই বাসায় বসে মাদক ও নারী ব্যবসা করেন। তাদের বিরুদ্ধে মহানগরের কোতোয়ালি মডেল থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। তারা দুজনেই একাধিকবার পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারও হয়েছে।

গত কয়েকমাস ধরে তারা কিশোরীকে দেহ ব্যবসায় বাধ্য করার জন্য নানাভাবে চাপ দিচ্ছিল। কিন্তু কিশোরী তাতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে প্রায়শই নির্যাতন করতো বাবা ও মা। চলতি বছরের জুন মাসে মা নগরীর মুনসুর কোয়ার্টার এলাকার মিম মধু ঘরের মালিক আনোয়ার হোসেন হাওলাদারের বাসায় নিয়ে আনোয়ারের সঙ্গে একটি কক্ষে আটকে রাখে ওই কিশোরীকে। পরে আনোয়ার তার শ্লীলতাহানি করে বলে অভিযোগ করে কিশোরী। কিশোরীটির দাবি, গত জুন থেকে অক্টোবর পর্যন্ত তাকে ১২৫ বার যৌন নির্যাতন করেছেন ব্যবসায়ী আনোয়ার। এতে সরাসরি সহযোগিতা করেছেন কিশোরীর বাবা ও মা।

পুলিশ সূত্র জানায়, গত শনিবার বিকেলে ঘর থেকে পালিয়ে ওই কিশোরী বরিশাল মহানগর পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে গিয়ে পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খানকে বিস্তারিতভাবে ঘটনা জানায়। পুলিশ কমিশনার বিষয়টি তৎক্ষণিক আইনী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য কোতোয়ালী মডেল থানাকে নির্দেশ দেন। কোতয়ালি মডেল থানার পুলিশ শনিবার রাতেই অভিযান চালিয়ে কিশোরীর মা, বাবাসহ ও মধু ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন হাওলাদারকে গ্রেপ্তার করেছে। গত রোববার তাদের বিরুদ্ধে ঘটনার শিকার কিশোরীর বড় বোন মামলা দায়ের করে। পুলিশ অভিযুক্তদের মহানগর বিচারিক হাকিম আদালতে সোপর্দ করলে আদালত অভিযুক্তদেরকে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে নগরীর কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নুরুল ইসলাম রোববার বিকেলে বলেন, ওই কিশোরীর অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করে ওই মামলায় কিশোরীর বাবা-মা সহ তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। পরে আদালতের মাধ্যমে তাদের জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। কিশোরীকে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখা হয়েছে।