বুড়িমারী স্থলবন্দর অরক্ষিত ঠেকানো যাচ্ছে না চুরি

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলায় অবস্থিত বুড়িমারী স্থলবন্দরের কর্তৃপক্ষের নির্ধারিত এলাকায় মালামাল রাখার ক্ষেত্রে নিরাপত্তাহীনতা দেখা দিয়েছে। প্রায় বন্দর এলাকা ও ইয়ার্ড থেকে চুরি হচ্ছে আমদানি করা মালামাল। এতে আমদানিকারক ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে পড়ছেন। গত ১৫ দিনে কয়েকটি চুরির ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে ব্যবসায়ীরা। নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা এবং চুরি ঠেকানো না গেলে এ বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ীরা ব্যবসা গুটিয়ে নিতে পারে বলে শঙ্কা সংশ্লিষ্টদের।

একাধিক আমদানিকারকের দাবি, স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণাধীন ১১.১৫ একর এলাকার মধ্যে ৩টি পণ্য রাখার শেড রয়েছে। শেড ও বন্দর এলাকার মধ্যে ভারত, ভুটান থেকে আনা চাল, ভুট্টা, খৈল, গমের গাড়ি খালাস করা হয়। খালাস করার সময় ও পণ্য বাংলাদেশী গাড়িতে বোঝাই করার সময় প্রকাশ্যে মালামালের বস্তা নিয়ে যায় বহিরাগত লোকজন। বাধা দিতে গেলে উল্টো মারপিটের শিকার হয় ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিরা। বিচার চেয়েও প্রতীকার না পাওয়ায় হতাশ ব্যবসায়ীরা ।

সরেজমিনে বন্দর ঘুরে দেখা গেছে, বন্দর এলাকার চারদিকে প্রায় ১২ ফুট উঁচু দেয়াল। রাতে লাইট জ্বালিয়ে উজ্জ্বল করে রাখা হয়েছে। প্রবেশ ও বের হওয়ার চারটি গেটে পাহারারত বন্দর কর্তৃপক্ষের বেসরকারি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। বন্দরে প্রতিদিন প্রায় ৩-৪ শতাধিক পণ্যবাহী গাড়ি পণ্য খালাস ও বোঝাই করা হয়ে থাকে। দিনে-রাতে বহিরাগত বিভিন্ন লোকজনের অবাধ বিচরণ লক্ষ্য করা গেছে।

এছাড়াও বন্দরের মাঠে ঘুরে ঘুরে হকাররা ব্যবসা করছে। কোটি কোটি টাকার পণ্য রাখা বন্দরের এ এলাকাটি পুরো অরক্ষিত। ফলে রোধ করা যাচ্ছে না চুরির ঘটনা। প্রায়ই ঘটছে একাধিক চুরির ঘটনা। ব্যবসায়ীরা বন্দর কর্তৃপক্ষকে জানালেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না বলে একাধিক ব্যবসায়ী দাবি করেন। বন্দরের নিরাপত্তায় নিয়োজিত বেসরকারি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি ও পুরো বন্দর এলাকা সিসি ক্যামেরায় আনার কথা বলেন ব্যবসায়ীরা।

বুড়িমারী স্থলবন্দরের আলাল গ্রুপের প্রতিনিধি পাপ্পু হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভারত থেকে আমাদের গমের গাড়ি আসে। ভারতীয় গাড়ি থেকে গমের বস্তা খালাস করে বাংলাদেশি গাড়িতে তোলার সময় গাড়ির কর্ণার থেকে গমের ৫০ কেজি ওজনের বস্তা লোক নিয়ে চলে যাচ্ছিল। আটকাতে গেলে উল্টো ধাক্কা দিয়ে চলে যায়। এখানে নিরাপত্তায় নিয়োজিত সদস্যদের পাওয়া যায় না। চুরি রোধ না হওয়ার জন্য এখানকার প্রশাসন দায়ি। এভাবে তো ব্যবসা করা সম্ভব না।

বুড়িমারী স্থলবন্দরের নিরাপত্তায় নিয়োজিত বেসরকারি সদস্যদের প্রধান (সিকিউরিটি ইনচার্জ) মজিবুল ইসলাম বলেন, ‘নিরাপত্তায় নিয়োজিত আমাদের ২২ জন সদস্য আছে। সদস্য বৃদ্ধি করা দরকার। এলাকার স্থানীয় বখাটে কিছু ছেলে-লোক চুরি করে। রাতে দেয়াল টপকে মালামাল নিয়ে যায়। আমরা চোর ধরে চড়-থাপ্পড় দিলে যখন বাইরে যাই আমাদেরও উল্টো মারধর করে। এ সকল ঘটনা বন্দরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি। বুড়িমারী স্থলবন্দরের কর্তৃপক্ষের সহকারী পরিচালক (ট্রাফিক) রুহুল আমীন বলেন, বিচ্ছিন্ন কিছু চুরির ঘটনা ঘটেছে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছি। চোর ধরে পুলিশকেও দেয়া হয়েছে। আমাদের পক্ষে যা করা দরকার তা করছি।

মঙ্গলবার, ১৬ নভেম্বর ২০২১ , ৩১ কার্তিক ১৪২৮ ১০ রবিউস সানি ১৪৪৩

বুড়িমারী স্থলবন্দর অরক্ষিত ঠেকানো যাচ্ছে না চুরি

প্রতিনিধি,লালমনিরহাট

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলায় অবস্থিত বুড়িমারী স্থলবন্দরের কর্তৃপক্ষের নির্ধারিত এলাকায় মালামাল রাখার ক্ষেত্রে নিরাপত্তাহীনতা দেখা দিয়েছে। প্রায় বন্দর এলাকা ও ইয়ার্ড থেকে চুরি হচ্ছে আমদানি করা মালামাল। এতে আমদানিকারক ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে পড়ছেন। গত ১৫ দিনে কয়েকটি চুরির ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে ব্যবসায়ীরা। নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা এবং চুরি ঠেকানো না গেলে এ বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ীরা ব্যবসা গুটিয়ে নিতে পারে বলে শঙ্কা সংশ্লিষ্টদের।

একাধিক আমদানিকারকের দাবি, স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণাধীন ১১.১৫ একর এলাকার মধ্যে ৩টি পণ্য রাখার শেড রয়েছে। শেড ও বন্দর এলাকার মধ্যে ভারত, ভুটান থেকে আনা চাল, ভুট্টা, খৈল, গমের গাড়ি খালাস করা হয়। খালাস করার সময় ও পণ্য বাংলাদেশী গাড়িতে বোঝাই করার সময় প্রকাশ্যে মালামালের বস্তা নিয়ে যায় বহিরাগত লোকজন। বাধা দিতে গেলে উল্টো মারপিটের শিকার হয় ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিরা। বিচার চেয়েও প্রতীকার না পাওয়ায় হতাশ ব্যবসায়ীরা ।

সরেজমিনে বন্দর ঘুরে দেখা গেছে, বন্দর এলাকার চারদিকে প্রায় ১২ ফুট উঁচু দেয়াল। রাতে লাইট জ্বালিয়ে উজ্জ্বল করে রাখা হয়েছে। প্রবেশ ও বের হওয়ার চারটি গেটে পাহারারত বন্দর কর্তৃপক্ষের বেসরকারি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। বন্দরে প্রতিদিন প্রায় ৩-৪ শতাধিক পণ্যবাহী গাড়ি পণ্য খালাস ও বোঝাই করা হয়ে থাকে। দিনে-রাতে বহিরাগত বিভিন্ন লোকজনের অবাধ বিচরণ লক্ষ্য করা গেছে।

এছাড়াও বন্দরের মাঠে ঘুরে ঘুরে হকাররা ব্যবসা করছে। কোটি কোটি টাকার পণ্য রাখা বন্দরের এ এলাকাটি পুরো অরক্ষিত। ফলে রোধ করা যাচ্ছে না চুরির ঘটনা। প্রায়ই ঘটছে একাধিক চুরির ঘটনা। ব্যবসায়ীরা বন্দর কর্তৃপক্ষকে জানালেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না বলে একাধিক ব্যবসায়ী দাবি করেন। বন্দরের নিরাপত্তায় নিয়োজিত বেসরকারি নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি ও পুরো বন্দর এলাকা সিসি ক্যামেরায় আনার কথা বলেন ব্যবসায়ীরা।

বুড়িমারী স্থলবন্দরের আলাল গ্রুপের প্রতিনিধি পাপ্পু হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভারত থেকে আমাদের গমের গাড়ি আসে। ভারতীয় গাড়ি থেকে গমের বস্তা খালাস করে বাংলাদেশি গাড়িতে তোলার সময় গাড়ির কর্ণার থেকে গমের ৫০ কেজি ওজনের বস্তা লোক নিয়ে চলে যাচ্ছিল। আটকাতে গেলে উল্টো ধাক্কা দিয়ে চলে যায়। এখানে নিরাপত্তায় নিয়োজিত সদস্যদের পাওয়া যায় না। চুরি রোধ না হওয়ার জন্য এখানকার প্রশাসন দায়ি। এভাবে তো ব্যবসা করা সম্ভব না।

বুড়িমারী স্থলবন্দরের নিরাপত্তায় নিয়োজিত বেসরকারি সদস্যদের প্রধান (সিকিউরিটি ইনচার্জ) মজিবুল ইসলাম বলেন, ‘নিরাপত্তায় নিয়োজিত আমাদের ২২ জন সদস্য আছে। সদস্য বৃদ্ধি করা দরকার। এলাকার স্থানীয় বখাটে কিছু ছেলে-লোক চুরি করে। রাতে দেয়াল টপকে মালামাল নিয়ে যায়। আমরা চোর ধরে চড়-থাপ্পড় দিলে যখন বাইরে যাই আমাদেরও উল্টো মারধর করে। এ সকল ঘটনা বন্দরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি। বুড়িমারী স্থলবন্দরের কর্তৃপক্ষের সহকারী পরিচালক (ট্রাফিক) রুহুল আমীন বলেন, বিচ্ছিন্ন কিছু চুরির ঘটনা ঘটেছে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছি। চোর ধরে পুলিশকেও দেয়া হয়েছে। আমাদের পক্ষে যা করা দরকার তা করছি।