কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হকের জীবনাবসান

প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক আর নেই। বার্ধক্যজনিত রোগে গতকাল রাতে রাজশাহীর নিজ বাসভবনে তিনি মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। তিনি স্ত্রী, তিন কন্যা ও এক পুত্র রেখে গেছেন। কথা সাহিত্যে অবদানের জন্য হাসান আজিজুল হক ১৯৭০ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার, ১৯৯৯ সালে একুশে পদক লাভ করেন। এছাড়াও তিনি ১৯৬৭ সালে আদমজী সাহিত্য পুরস্কার, ২০১২ সালে আসাম বিশ্ববিদ্যালয় এবং ২০১৮ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডি-লিট ডিগ্রি পান।

হাসান আজিজুল হক তার সাহিত্যকর্মের জন্য পশ্চিমবঙ্গসহ বাংলা ভাষাভাষী অঞ্চলে অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিলেন।

ষাটের দশকে আবির্ভূত এই কথাসাহিত্যিক তার সুঠাম গদ্য এবং মর্মস্পর্শী বর্ণনাভঙ্গির সাহিত্য পাঠকদের কাছে জনপ্রিয়তা লাভ করেন। জীবনসংগ্রামে লিপ্ত মানুষের কথকতা তার গল্প-উপন্যাসের প্রধানতম অনুষঙ্গ। হাসান আজিজুল হক ১৯৩৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার যবগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মোহাম্মদ দোয়া বখশ্? এবং মাতা জোহরা খাতুন। জীবনের অধিকাংশ সময় তিনি রাজশাহীতে কাটিয়েছেন। তিনি ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দে যবগ্রাম মহারানী কাশীশ্বরী উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিকুলেশন এবং ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে খুলনার শহরের অদূরে দৌলতপুরের ব্রজলাল কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। প্রথম যৌবনেই ছাত্র রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েছিলেন তিনি। রাজনীতি করার কারণেই পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে চরম নির্যাতন ভোগ করেন। ১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দে রাজশাহী সরকারি কলেজে থেকে দর্শনে সম্মানসহ স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৬০ সালে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি পিএইচডি অধ্যয়নের জন্য অস্ট্রেলিয়া গিয়েছিলেন, কিন্তু বিদেশের পরিবেশ ভালো না-লাগায় অধ্যয়ন শেষ না-করেই দেশে প্রত্যাবর্তন করেন।

১৯৬০ থেকে ১৯৭৩ পর্যন্ত তিনি রাজশাহী সিটি কলেজ, সিরাজগঞ্জ কলেজ, খুলনা সরকারি মহিলা কলেজ এবং সরকারি ব্রজলাল কলেজ অধ্যাপনা করেছেন। ১৯৭৩ সালে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগে অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০০৪ সাল পর্যন্ত একনাগাড়ে ৩১ বছর অধ্যাপনা করেন। ২০০৯-এ তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু চেয়ার পদ লাভ পালন করেন। ২০১৪ এর আগস্টে তিনি ‘বাংলাদেশ প্রগতি লেখক সংঘ’ এর সভাপতি নির্বাচিত হন। তার নিজস্ব বাসভবন ‘উজান’ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ব দিকে ‘বিহাস’-এ।

image
আরও খবর
দুর্নীতি প্রতিহত করতে পারলে অন্যের অধিকার সুরক্ষিত হবে
আজ থেকে বস্তিতে টিকাদান শুরু
জাতীয় নির্বাচনের দিকে দৃষ্টি রাখছে ইইউ রাষ্ট্রদূত
১৩ মিনিটেই শেষ বিএনপির লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি
মডেল তিন্নি হত্যা : বাবা-মায়ের সাক্ষ্য নেয়া হবে রায় ফের পেছালো
দুদক কর্মকর্তার ‘ঘুষ’ দাবি, তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের
গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ১০ বছরেও তামিল করেনি, ওসিকে আদালতে তলব
পাওনা টাকা ফেরত চাওয়ায় হত্যা করা হয় বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তাকে
সীমান্ত হত্যা বাংলাদেশ-ভারত উভয় দেশের জন্য দুুুঃখজনক         দোরাইস্বামী
পরীমনির বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ আদালতের
এফআর টাওয়ারের নকশা জালিয়াতি, ১৬ জনের বিচার শুরু
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী বাংলাদেশ-ভারত যৌথ সাইক্লিং শুরু

মঙ্গলবার, ১৬ নভেম্বর ২০২১ , ৩১ কার্তিক ১৪২৮ ১০ রবিউস সানি ১৪৪৩

কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হকের জীবনাবসান

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

image

প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক আর নেই। বার্ধক্যজনিত রোগে গতকাল রাতে রাজশাহীর নিজ বাসভবনে তিনি মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। তিনি স্ত্রী, তিন কন্যা ও এক পুত্র রেখে গেছেন। কথা সাহিত্যে অবদানের জন্য হাসান আজিজুল হক ১৯৭০ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার, ১৯৯৯ সালে একুশে পদক লাভ করেন। এছাড়াও তিনি ১৯৬৭ সালে আদমজী সাহিত্য পুরস্কার, ২০১২ সালে আসাম বিশ্ববিদ্যালয় এবং ২০১৮ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডি-লিট ডিগ্রি পান।

হাসান আজিজুল হক তার সাহিত্যকর্মের জন্য পশ্চিমবঙ্গসহ বাংলা ভাষাভাষী অঞ্চলে অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিলেন।

ষাটের দশকে আবির্ভূত এই কথাসাহিত্যিক তার সুঠাম গদ্য এবং মর্মস্পর্শী বর্ণনাভঙ্গির সাহিত্য পাঠকদের কাছে জনপ্রিয়তা লাভ করেন। জীবনসংগ্রামে লিপ্ত মানুষের কথকতা তার গল্প-উপন্যাসের প্রধানতম অনুষঙ্গ। হাসান আজিজুল হক ১৯৩৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার যবগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মোহাম্মদ দোয়া বখশ্? এবং মাতা জোহরা খাতুন। জীবনের অধিকাংশ সময় তিনি রাজশাহীতে কাটিয়েছেন। তিনি ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দে যবগ্রাম মহারানী কাশীশ্বরী উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিকুলেশন এবং ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে খুলনার শহরের অদূরে দৌলতপুরের ব্রজলাল কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। প্রথম যৌবনেই ছাত্র রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েছিলেন তিনি। রাজনীতি করার কারণেই পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে চরম নির্যাতন ভোগ করেন। ১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দে রাজশাহী সরকারি কলেজে থেকে দর্শনে সম্মানসহ স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৬০ সালে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি পিএইচডি অধ্যয়নের জন্য অস্ট্রেলিয়া গিয়েছিলেন, কিন্তু বিদেশের পরিবেশ ভালো না-লাগায় অধ্যয়ন শেষ না-করেই দেশে প্রত্যাবর্তন করেন।

১৯৬০ থেকে ১৯৭৩ পর্যন্ত তিনি রাজশাহী সিটি কলেজ, সিরাজগঞ্জ কলেজ, খুলনা সরকারি মহিলা কলেজ এবং সরকারি ব্রজলাল কলেজ অধ্যাপনা করেছেন। ১৯৭৩ সালে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগে অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০০৪ সাল পর্যন্ত একনাগাড়ে ৩১ বছর অধ্যাপনা করেন। ২০০৯-এ তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু চেয়ার পদ লাভ পালন করেন। ২০১৪ এর আগস্টে তিনি ‘বাংলাদেশ প্রগতি লেখক সংঘ’ এর সভাপতি নির্বাচিত হন। তার নিজস্ব বাসভবন ‘উজান’ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ব দিকে ‘বিহাস’-এ।