জামিন পেলেন বগুড়ার সেই তুফান সরকার

বগুড়ায় কিশোরীকে ধর্ষণ এবং নির্যাতিতা ও তার মাকে ন্যাড়া করে দেয়ার ঘটনায় বহিষ্কৃত বহুল আলোচিত শ্রমিক লীগ নেতা তুফান সরকারকে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় জামিন মঞ্জুর করেছে হাইকোর্ট। তুফান সরকারের জামিন বিষয়ে জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে গতকাল মঙ্গলবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেয়।

এদিন আদালতে আসামি তুফান সরকারের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম সোহেল। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. সাজ্জাদ হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আন্না খানম কলি।

এর আগে, ১৮ অক্টোবর দুদকের দায়ের করা জ্ঞাত আয়বহির্ভুত মামলায় তাকে কেন জামিন দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে তিন সপ্তাহের রুল জারি করেছিলো হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টে বেঞ্চ জামিন প্রশ্নে রুল জারি করে। ওই রুলের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে এই রায় দেয় আদালত।

তারও আগে এক বেঞ্চে জামিনের রুল বিচারাধীন থাকার পরও অপর এক বেঞ্চে জামিন আবেদন করায় বগুড়ার বহিষ্কৃত শ্রমিক লীগ নেতা তুফান সরকার ছয় মাস দেশের কোনো আদালতে জামিন চাইতে পারবেন না বলে আদেশ দিয়েছিলো হাইকোর্ট। একইসঙ্গে জ্ঞাত আয়বহির্ভূতভাবে সম্পদ অর্জনের মামলায় তার জামিনের বিষয়ে জারি করা রুল খারিজ করে দিয়েছিলো আদালত।

গত ১ এপ্রিল হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ আদেশ দিয়েছিলো। ওইদিন আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেছিলেন আইনজীবী সাজ্জাদ হোসাইন। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী শাহ আলম সরকার।

তুফান সরকার ২০১৭ সালের জুলাই মাস থেকে কারাগারে রয়েছে। তার বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর বগুড়া সদর থানায় অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলার অভিযোগে বলা হয়, জ্ঞাত আয়বহির্ভূত এক কোটি ৫৯ লাখ ৫৮ হাজার ৮৮৫ টাকা অর্জন করেছেন তুফান সরকার, যা তার আয়কর রিটার্নে দেখিয়েছেন। কিন্তু দুদকের নোটিশে সম্পদের সঠিক হিসাব দেননি তিনি। বাস্তবে আসামি তুফান সরকারের আয়ের কোনো বৈধ উৎস ছিল না।

জানা যায়, ২০১৭ সালের ১৭ জুলাই কলেজে ভর্তি করিয়ে দেয়ার কথা বলে তুফান সরকার বাসায় ডেকে নিয়ে এক কিশোরীকে ধর্ষণ করে। পরে তুফানের স্ত্রী ও তার বড় বোন বগুড়া পৌরসভার সংরক্ষিত আসনের নারী কাউন্সিলর মারজিয়া হাসান রুমকি এবং তার মা রুমী বেগম ওই কিশোরী ও তার মায়ের ওপর নির্যাতন চালায়। নির্যাতনের এক পর্যায়ে দুইজনের মাথা ন্যাড়া করে দেয়। বিষয়টি সামাজিক মাধ্যম ও সংবাদমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা হলে তুফান সরকারকে গ্রেপ্তার ও পরে মামলা করা হয়। পরে তুফান সরকারের এক ভাই বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়।

বুধবার, ১৭ নভেম্বর ২০২১ , ২ অগ্রহায়ণ ১৪২৮ ১১ রবিউস সানি ১৪৪৩

জামিন পেলেন বগুড়ার সেই তুফান সরকার

আদালত বার্তা পরিবেশক

বগুড়ায় কিশোরীকে ধর্ষণ এবং নির্যাতিতা ও তার মাকে ন্যাড়া করে দেয়ার ঘটনায় বহিষ্কৃত বহুল আলোচিত শ্রমিক লীগ নেতা তুফান সরকারকে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় জামিন মঞ্জুর করেছে হাইকোর্ট। তুফান সরকারের জামিন বিষয়ে জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে গতকাল মঙ্গলবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেয়।

এদিন আদালতে আসামি তুফান সরকারের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম সোহেল। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. সাজ্জাদ হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আন্না খানম কলি।

এর আগে, ১৮ অক্টোবর দুদকের দায়ের করা জ্ঞাত আয়বহির্ভুত মামলায় তাকে কেন জামিন দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে তিন সপ্তাহের রুল জারি করেছিলো হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টে বেঞ্চ জামিন প্রশ্নে রুল জারি করে। ওই রুলের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে এই রায় দেয় আদালত।

তারও আগে এক বেঞ্চে জামিনের রুল বিচারাধীন থাকার পরও অপর এক বেঞ্চে জামিন আবেদন করায় বগুড়ার বহিষ্কৃত শ্রমিক লীগ নেতা তুফান সরকার ছয় মাস দেশের কোনো আদালতে জামিন চাইতে পারবেন না বলে আদেশ দিয়েছিলো হাইকোর্ট। একইসঙ্গে জ্ঞাত আয়বহির্ভূতভাবে সম্পদ অর্জনের মামলায় তার জামিনের বিষয়ে জারি করা রুল খারিজ করে দিয়েছিলো আদালত।

গত ১ এপ্রিল হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ আদেশ দিয়েছিলো। ওইদিন আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেছিলেন আইনজীবী সাজ্জাদ হোসাইন। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী শাহ আলম সরকার।

তুফান সরকার ২০১৭ সালের জুলাই মাস থেকে কারাগারে রয়েছে। তার বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর বগুড়া সদর থানায় অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলার অভিযোগে বলা হয়, জ্ঞাত আয়বহির্ভূত এক কোটি ৫৯ লাখ ৫৮ হাজার ৮৮৫ টাকা অর্জন করেছেন তুফান সরকার, যা তার আয়কর রিটার্নে দেখিয়েছেন। কিন্তু দুদকের নোটিশে সম্পদের সঠিক হিসাব দেননি তিনি। বাস্তবে আসামি তুফান সরকারের আয়ের কোনো বৈধ উৎস ছিল না।

জানা যায়, ২০১৭ সালের ১৭ জুলাই কলেজে ভর্তি করিয়ে দেয়ার কথা বলে তুফান সরকার বাসায় ডেকে নিয়ে এক কিশোরীকে ধর্ষণ করে। পরে তুফানের স্ত্রী ও তার বড় বোন বগুড়া পৌরসভার সংরক্ষিত আসনের নারী কাউন্সিলর মারজিয়া হাসান রুমকি এবং তার মা রুমী বেগম ওই কিশোরী ও তার মায়ের ওপর নির্যাতন চালায়। নির্যাতনের এক পর্যায়ে দুইজনের মাথা ন্যাড়া করে দেয়। বিষয়টি সামাজিক মাধ্যম ও সংবাদমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা হলে তুফান সরকারকে গ্রেপ্তার ও পরে মামলা করা হয়। পরে তুফান সরকারের এক ভাই বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়।