আমাদের দেশের পথশিশুদের কুলি, হকার, রিকশাচালক, শ্রমিক, ফুলবিক্রেতা, আবর্জনা সংগ্রাহক, হোটেল শ্রমিক, বুননকর্মী, মাদক বাহক, বিড়ি শ্রমিক, ঝালাই কারখানার শ্রমিক ইত্যাদিসহ বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত করা হয়। পথ শিশুদের নিয়ে কাজ করছে লোকাল এডুকেশন অ্যান্ড ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট (লিডো) নামের একটি এনজিও। সংস্থাটির তথ্যমতে, পথশিশুদের কেউ কেউ মাদকাসক্ত হয়ে রাস্তায়ই মারা যায়। কেউ কেউ বিভিন্ন চক্রের মাধ্যমে পাচার হয়ে যায়। যারা পাচারের শিকার হয়, তাদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিক্রি হয়। মেয়েরা যৌন নির্যাতনের শিকার হয়। কোনো কোনো গ্যাং তাদের যৌনকর্মী হতে বাধ্য করে। এছাড়াও, অপরাধীচক্রগুলো এদের মাদকসহ নানা অবৈধ ব্যবসায় কাজে লাগায়। এরা আসলে অপরাধী নয়। এরা অপরাধের শিকার হয়। রাজনৈতিক দলগুলোও তাদের নানা কাজে ব্যবহার করে।
পথশিশুদের সাহায্য-সহযোগিতার উদ্দেশ্যে রাজধানী জুড়ে গড়ে উঠেছে নানা অসাধু সংগঠন যারা পথশিশুদের নামে মোটা অংকের অর্থ আত্মসাৎ করে থাকে। এসকল সংগঠনের উদ্দেশ্য পথ শিশুদের সাহায্য করা নয় বরং তাদের নাম দিয়ে নিজেদের আর্থিক স্বার্থ পূরণ করা।
বাংলাদেশ জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদের মত আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দলিলে স্বাক্ষরকারী দেশ। এই সনদের ১৯ ধারা মতে, শিশুদের যেকোনো ধরনের অনাচারের কবল থেকে রক্ষা করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। তাই দেশে যেসব ভাসমান শিশু বা পথশিশু তাদের অবস্থান নির্ণয় করে তাদের জন্য সমন্বিতভাবে একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। পথশিশুদের শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করার সঙ্গে সঙ্গে তাদের পুষ্টিকর খাদ্য ও বাসস্থানের নিশ্চয়তা দিতে হবে। এ সব শিশুদের সব ধরনের নির্যাতন ও বৈষম্যমূলক আচরণ থেকে আত্মরক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। ঢাকা শহরসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বসবাসরত পথশিশুদের বর্তমান বাস্তব অবস্থা সম্পর্কে বাস্তব ধারণা অর্জনের লক্ষ্যে জরুরি ভিত্তিতে একটি সমীক্ষা পরিচালনা করতে হবে।
যেসব সংগঠন বা মানুষ পথশিশুদের নাম দিয়ে নিজেদের অসৎ উদ্দেশ্য বা ব্যবসা পরিচালনা করার জন্য অর্থ সংগ্রহ করে তাদের আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান করা উচিত। সামাজিক ও পারিবারিক মূল্যবোধ বাড়াতে হবে। পারিবারিক বন্ধন দৃঢ় করতে হবে। পথশিশুদের প্রতি সমাজের সব মানুষের নৈতিক মূল্যবোধ বৃদ্ধি করতে হবে। রাষ্ট্রের প্রয়োজনেই সব শিশুকে সমান সুযোগ-সুবিধার আওতাভুক্ত করা উচিত। পথশিশুদের সামান্যতম সুযোগ-সুবিধা দিয়ে মূলধারার ফিরিয়ে এনে মানবসম্পদে পরিণত করা যায়। সরকার ও প্রশাসনের উচিত সকল পথ শিশুদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা এবং সঙ্গে যে সমস্ত সংগঠন পথ শিশুদের নিয়ে কাজ করে সেসব সংগঠনসমূহকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা।
সামিহা খাতুন
বুধবার, ১৭ নভেম্বর ২০২১ , ২ অগ্রহায়ণ ১৪২৮ ১১ রবিউস সানি ১৪৪৩
আমাদের দেশের পথশিশুদের কুলি, হকার, রিকশাচালক, শ্রমিক, ফুলবিক্রেতা, আবর্জনা সংগ্রাহক, হোটেল শ্রমিক, বুননকর্মী, মাদক বাহক, বিড়ি শ্রমিক, ঝালাই কারখানার শ্রমিক ইত্যাদিসহ বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত করা হয়। পথ শিশুদের নিয়ে কাজ করছে লোকাল এডুকেশন অ্যান্ড ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট (লিডো) নামের একটি এনজিও। সংস্থাটির তথ্যমতে, পথশিশুদের কেউ কেউ মাদকাসক্ত হয়ে রাস্তায়ই মারা যায়। কেউ কেউ বিভিন্ন চক্রের মাধ্যমে পাচার হয়ে যায়। যারা পাচারের শিকার হয়, তাদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিক্রি হয়। মেয়েরা যৌন নির্যাতনের শিকার হয়। কোনো কোনো গ্যাং তাদের যৌনকর্মী হতে বাধ্য করে। এছাড়াও, অপরাধীচক্রগুলো এদের মাদকসহ নানা অবৈধ ব্যবসায় কাজে লাগায়। এরা আসলে অপরাধী নয়। এরা অপরাধের শিকার হয়। রাজনৈতিক দলগুলোও তাদের নানা কাজে ব্যবহার করে।
পথশিশুদের সাহায্য-সহযোগিতার উদ্দেশ্যে রাজধানী জুড়ে গড়ে উঠেছে নানা অসাধু সংগঠন যারা পথশিশুদের নামে মোটা অংকের অর্থ আত্মসাৎ করে থাকে। এসকল সংগঠনের উদ্দেশ্য পথ শিশুদের সাহায্য করা নয় বরং তাদের নাম দিয়ে নিজেদের আর্থিক স্বার্থ পূরণ করা।
বাংলাদেশ জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদের মত আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দলিলে স্বাক্ষরকারী দেশ। এই সনদের ১৯ ধারা মতে, শিশুদের যেকোনো ধরনের অনাচারের কবল থেকে রক্ষা করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। তাই দেশে যেসব ভাসমান শিশু বা পথশিশু তাদের অবস্থান নির্ণয় করে তাদের জন্য সমন্বিতভাবে একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। পথশিশুদের শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করার সঙ্গে সঙ্গে তাদের পুষ্টিকর খাদ্য ও বাসস্থানের নিশ্চয়তা দিতে হবে। এ সব শিশুদের সব ধরনের নির্যাতন ও বৈষম্যমূলক আচরণ থেকে আত্মরক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। ঢাকা শহরসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বসবাসরত পথশিশুদের বর্তমান বাস্তব অবস্থা সম্পর্কে বাস্তব ধারণা অর্জনের লক্ষ্যে জরুরি ভিত্তিতে একটি সমীক্ষা পরিচালনা করতে হবে।
যেসব সংগঠন বা মানুষ পথশিশুদের নাম দিয়ে নিজেদের অসৎ উদ্দেশ্য বা ব্যবসা পরিচালনা করার জন্য অর্থ সংগ্রহ করে তাদের আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান করা উচিত। সামাজিক ও পারিবারিক মূল্যবোধ বাড়াতে হবে। পারিবারিক বন্ধন দৃঢ় করতে হবে। পথশিশুদের প্রতি সমাজের সব মানুষের নৈতিক মূল্যবোধ বৃদ্ধি করতে হবে। রাষ্ট্রের প্রয়োজনেই সব শিশুকে সমান সুযোগ-সুবিধার আওতাভুক্ত করা উচিত। পথশিশুদের সামান্যতম সুযোগ-সুবিধা দিয়ে মূলধারার ফিরিয়ে এনে মানবসম্পদে পরিণত করা যায়। সরকার ও প্রশাসনের উচিত সকল পথ শিশুদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা এবং সঙ্গে যে সমস্ত সংগঠন পথ শিশুদের নিয়ে কাজ করে সেসব সংগঠনসমূহকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা।
সামিহা খাতুন