ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান মিরপুরে বাস-মিনিবাস বন্ধ

ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ার দায়ে গতকাল (বুধবার) ৬০টি বাস-মিনিবাসে অভিযান চালিয়ে ২ লাখ ৪৬ হাজার টাকা জরিমানা করেছে সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) ভ্রাম্যমাণ আদালত।

তবে বিআরটিএ’র ভ্রাম্যমাণ আদালতের এই অভিযান বন্ধের দাবিতে গতকাল মিরপুরসহ রাজধানীর বিভিন্ন রুটের বাস-মিনিবাস বন্ধ করে দেয় মালিক ও শ্রমিকরা। এতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় যাত্রীদের। গণপরিবহন না পেয়ে অনেকেই পায়ে হেঁটে গন্তব্যে যেতে হয়।

নিজেদের স্বার্থে হঠাৎ করে গণপরিবহন বন্ধ করে যাত্রীদের জিম্মি করে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা। তাই সেক্টরের এই নৈরাজ্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি যাত্রীদের।

বিআরটিএ’র সূত্র জানায়, গতকাল ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে ১১টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়েছে। এ সময় অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ার অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় ৬০টি ডিজেল চালিত বাস ও মিনিবাসকে ২ লাখ ৪৬ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। একই অপরাধ পুনাবৃত্তি করায় ৩টি পরিবহনকে ডাম্পিং স্টেশনে পাঠানো হয়েছে। গতকাল ২৫৬টি বাস ও মিনিবাসে এই অভিযান চালানো হয় বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান।

এ বিষয়ে বিআরটিএ চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার সংবাদকে বলেন, ‘ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে ঝামেলা হওয়ার কারণে মিরপুরে দুই-একটি কোম্পানির বাস বন্ধ ছিল। তবে তা মালিক সমিতির লোকরা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছে। রাজধানীর অন্যান্য রুটের বাস চলাচল করেছে। তেমন সমস্যা হয়নি। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান অব্যাহত থাকবে। এটা বন্ধ হবে না।’ বেশি ভাড়া নেয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান।

সিটিং সার্ভিস বন্ধ হওয়ায় আয় কমেছে চালকদের

নতুন ভাড়া কার্যকরের পর রাজধানী থেকে সব সিটিং ও গেইটলক সার্ভিস বন্ধের ঘোষণা দিয়েছিল সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ। এই ঘোষণার পর গত রোববার থেকে রাজধানীতে বন্ধ রয়েছে সিটিং সার্ভিসে বাস চলাচল।

সিটিং সার্ভিসের নামের আগের ভাড়া আদায় করছে বাস স্টাফরা। সেই আলোকে জমা নিচ্ছে বাস মালিকরা। কিন্তু সিটিং সার্ভিসের ভাড়া দিতে চাচ্ছে না যাত্রীরা। এনিয়ে প্রতিদিনের যাত্রী ও বাস স্টাফদের মধ্যে বিতর্ক ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটছে। অথচ বাস মালিকরা ঠিকেই আগের ভাড়ায় টাকা জমা নিচ্ছে। এতে বাস চালকদের আয় কমে গেছে। তাই অনেক চালক বাস চালাতে চাচ্ছে না বলে বাস মালিকরা জানান।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পরিবহন মালিক সংবাদকে বলেন, ‘ডিজেলের দাম ১৫ টাকা বৃদ্ধির কারণে গণপরিবহন নতুন ভাড়া কার্যকর করা হয়। কিন্তু সিটিং সার্ভিস ও ওয়েবিলের নামে আগে থেকে অনেক বাস মালিক দুই-তিনগুণ বেশি ভাড়া আদায় করতো। এখন সিটিং সার্ভিস বাদ দেয়ার কারণে যাত্রীরা বেশি ভাড়া দিতে চাচ্ছে। অথচ বাস মালিকরা ওয়েবিল হিসেব করে জমা টাকার নিচ্ছে। জমার টাকার নিয়েও মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে প্রতিদিনেই ঝগড়া হচ্ছে। এছাড়া অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ার অপরাধে ভ্রম্যমাণ আদালতে জরিমানা দিতে হচ্ছে বাস চালকদের। এ জরিমানা আবার মালিকরা দিতে চাচ্ছে না।’ সিটিং সার্ভিসে চালকদের কিছু টাকা আয় হতো। তা বন্ধ হওয়ায় এই সমস্যা তৈরি হয়েছে বলে জানান তিনি।

পরিবহন শ্রমিকরা বলছেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর পর পরিবহন মালিক সমিতির নেতারা বিআরটিএর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে দূরপাল্লার পরিবহন ও নগরীর গণপরিবহনের ভাড়া বৃদ্ধি করেছে। তারা বাড়িয়েছে ২৭ শতাংশ অপরদিকে নতুন ভাড়ার ওপর সিটিং বাসগুলো ভাড়া নির্ধারণ করেছে ১৫ শতাংশ। এই নিয়ে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের সঙ্গে মতের অমিল হওয়ার কারণে ঝামেলার সৃষ্টি হয়েছে।

পরিবহন চালক-হেলপাররা বলছেন, প্রতিদিনই যাত্রীদের সঙ্গে ভাড়া নিয়ে তর্ক ও ঝগড়া হচ্ছে। নতুন ভাড়া অনুযায়ী যাত্রীরা দিতে চাচ্ছে না। এদিকে পরিবহনের মালিকরাও পরিবহনের জমা ভাড়ার সঙ্গে মিলিয়ে নিতে চাচ্ছেন। এখন গাড়ি নিয়ে বের হয়ে দিনে ৪টি ট্রিপ দিলে তেল খরচসহ সব মিলিয়ে আমাদের বেতনও ওঠে না। এতে আমরাও বিপাকে পড়েছি। তাই বাধ্য হয়ে আমরা গাড়ি বন্ধ রেখেছি।

বাস বন্ধ ভোগান্তিতে যাত্রীরা

রাজধানীর মিরপুরে দ্বিতীয় দিনের মতো গতকালও বাস চলাচল বন্ধ রাখে পরিবহন শ্রমিকরা। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। গণপরিবহন না থাকায় বিভিন্ন গন্তব্যে হেঁটে যেতে দেখা গেছে তাদের। দুই-একটি বাস চলাচল করলেও যাত্রীদের চাপ ছিল বেশি। তাই সড়কের পাশে গণপরিবহনের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে অনেক যাত্রীদের। গতকাল সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত একই অবস্থা ছিল মিরপুর এলাকায়। এর প্রভাবে পুরো রাজধানীর গণপরিবহন সংকট দেখা দেয়। বাস না পেয়ে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় বলে যাত্রীরা জানান।

অন্য রুটের দুই-এক বাস মিরপুর এলাকা দিয়ে অতিক্রম করার সময় পরিবহন শ্রমিকরা তা বন্ধ করে যাত্রীদের রাস্তায় নামিয়ে দেয়। এ নিয়ে যাত্রী ও শ্রমিকদের মধ্যে কর্ত-বিতর্ক সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশ এসে শ্রমিকদের সরিয়ে দেয় বলে স্থানীয়রা জানান।

নূর মোহাম্মদ নামের মিরপুরের এক যাত্রী বলেন, ‘আমি মিরপুর ১২ নম্বর যাব। সকাল ৮টায় পূরবী সিনেমা হলের সামনে শ্রমিকরা আমাদের বাস থেকে নামিয়ে দেয়। আরও অনেক যাত্রী ছিল যারা অফিসের কাজে বিভিন্ন স্থানে যেতো। বাস না থাকায় অনেকে হেঁটে রওনা দেন।’

ফয়সাল আহমেদ নামের এক যাত্রী জানান, ‘মতিঝিলে যাব। সকাল সাড়ে ৭টা থেকেই পূরবীর সামনে বাসের জন্য দাঁড়িয়ে ছিলাম। মিরপুর ১২ নম্বর থেকে ২-১টি বাস এলেও অনেক যাত্রী। বাসে উঠতে পারিনি। আবার শ্রমিকরা বাস থেকে যাত্রী নামিয়ে দিচ্ছেন। সিএনজিও নেই। রিকশায় করে মতিঝিল যাব কিনা চিন্তা করছি।’

মিরপুর ১২ নম্বরের সোহেল নামের এক জন জানান, ‘শ্রমিকরা বাস না চালিয়ে আন্দোলন করছেন। সকাল থেকে কিছু বাস চললেও তা অনেক কম। পূরবীর সামনে সকালে পরিবহন শ্রমিকরা জড়ো হয়ে বাস থেকে যাত্রী নামিয়ে দেয়। সে সময় পুলিশ শ্রমিদের সেখান থেকে সরিয়ে দেয়।’

বৃহস্পতিবার, ১৮ নভেম্বর ২০২১ , ৩ অগ্রহায়ণ ১৪২৮ ১২ রবিউস সানি ১৪৪৩

ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান মিরপুরে বাস-মিনিবাস বন্ধ

ইবরাহীম মাহমুদ আকাশ

image

গতকাল রাজধানীতে ভাড়া বেশি নেয়ার প্রতিবাদে যাত্রীরা বাস থেকে নেমে কন্ট্রাকটরের কাছ থেকে বাড়তি টাকা আদায় করে নেয় -সংবাদ

ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ার দায়ে গতকাল (বুধবার) ৬০টি বাস-মিনিবাসে অভিযান চালিয়ে ২ লাখ ৪৬ হাজার টাকা জরিমানা করেছে সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) ভ্রাম্যমাণ আদালত।

তবে বিআরটিএ’র ভ্রাম্যমাণ আদালতের এই অভিযান বন্ধের দাবিতে গতকাল মিরপুরসহ রাজধানীর বিভিন্ন রুটের বাস-মিনিবাস বন্ধ করে দেয় মালিক ও শ্রমিকরা। এতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় যাত্রীদের। গণপরিবহন না পেয়ে অনেকেই পায়ে হেঁটে গন্তব্যে যেতে হয়।

নিজেদের স্বার্থে হঠাৎ করে গণপরিবহন বন্ধ করে যাত্রীদের জিম্মি করে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা। তাই সেক্টরের এই নৈরাজ্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি যাত্রীদের।

বিআরটিএ’র সূত্র জানায়, গতকাল ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে ১১টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়েছে। এ সময় অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ার অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় ৬০টি ডিজেল চালিত বাস ও মিনিবাসকে ২ লাখ ৪৬ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। একই অপরাধ পুনাবৃত্তি করায় ৩টি পরিবহনকে ডাম্পিং স্টেশনে পাঠানো হয়েছে। গতকাল ২৫৬টি বাস ও মিনিবাসে এই অভিযান চালানো হয় বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান।

এ বিষয়ে বিআরটিএ চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার সংবাদকে বলেন, ‘ভাড়া নিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে ঝামেলা হওয়ার কারণে মিরপুরে দুই-একটি কোম্পানির বাস বন্ধ ছিল। তবে তা মালিক সমিতির লোকরা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছে। রাজধানীর অন্যান্য রুটের বাস চলাচল করেছে। তেমন সমস্যা হয়নি। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান অব্যাহত থাকবে। এটা বন্ধ হবে না।’ বেশি ভাড়া নেয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান।

সিটিং সার্ভিস বন্ধ হওয়ায় আয় কমেছে চালকদের

নতুন ভাড়া কার্যকরের পর রাজধানী থেকে সব সিটিং ও গেইটলক সার্ভিস বন্ধের ঘোষণা দিয়েছিল সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ। এই ঘোষণার পর গত রোববার থেকে রাজধানীতে বন্ধ রয়েছে সিটিং সার্ভিসে বাস চলাচল।

সিটিং সার্ভিসের নামের আগের ভাড়া আদায় করছে বাস স্টাফরা। সেই আলোকে জমা নিচ্ছে বাস মালিকরা। কিন্তু সিটিং সার্ভিসের ভাড়া দিতে চাচ্ছে না যাত্রীরা। এনিয়ে প্রতিদিনের যাত্রী ও বাস স্টাফদের মধ্যে বিতর্ক ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটছে। অথচ বাস মালিকরা ঠিকেই আগের ভাড়ায় টাকা জমা নিচ্ছে। এতে বাস চালকদের আয় কমে গেছে। তাই অনেক চালক বাস চালাতে চাচ্ছে না বলে বাস মালিকরা জানান।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পরিবহন মালিক সংবাদকে বলেন, ‘ডিজেলের দাম ১৫ টাকা বৃদ্ধির কারণে গণপরিবহন নতুন ভাড়া কার্যকর করা হয়। কিন্তু সিটিং সার্ভিস ও ওয়েবিলের নামে আগে থেকে অনেক বাস মালিক দুই-তিনগুণ বেশি ভাড়া আদায় করতো। এখন সিটিং সার্ভিস বাদ দেয়ার কারণে যাত্রীরা বেশি ভাড়া দিতে চাচ্ছে। অথচ বাস মালিকরা ওয়েবিল হিসেব করে জমা টাকার নিচ্ছে। জমার টাকার নিয়েও মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে প্রতিদিনেই ঝগড়া হচ্ছে। এছাড়া অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ার অপরাধে ভ্রম্যমাণ আদালতে জরিমানা দিতে হচ্ছে বাস চালকদের। এ জরিমানা আবার মালিকরা দিতে চাচ্ছে না।’ সিটিং সার্ভিসে চালকদের কিছু টাকা আয় হতো। তা বন্ধ হওয়ায় এই সমস্যা তৈরি হয়েছে বলে জানান তিনি।

পরিবহন শ্রমিকরা বলছেন, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর পর পরিবহন মালিক সমিতির নেতারা বিআরটিএর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে দূরপাল্লার পরিবহন ও নগরীর গণপরিবহনের ভাড়া বৃদ্ধি করেছে। তারা বাড়িয়েছে ২৭ শতাংশ অপরদিকে নতুন ভাড়ার ওপর সিটিং বাসগুলো ভাড়া নির্ধারণ করেছে ১৫ শতাংশ। এই নিয়ে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের সঙ্গে মতের অমিল হওয়ার কারণে ঝামেলার সৃষ্টি হয়েছে।

পরিবহন চালক-হেলপাররা বলছেন, প্রতিদিনই যাত্রীদের সঙ্গে ভাড়া নিয়ে তর্ক ও ঝগড়া হচ্ছে। নতুন ভাড়া অনুযায়ী যাত্রীরা দিতে চাচ্ছে না। এদিকে পরিবহনের মালিকরাও পরিবহনের জমা ভাড়ার সঙ্গে মিলিয়ে নিতে চাচ্ছেন। এখন গাড়ি নিয়ে বের হয়ে দিনে ৪টি ট্রিপ দিলে তেল খরচসহ সব মিলিয়ে আমাদের বেতনও ওঠে না। এতে আমরাও বিপাকে পড়েছি। তাই বাধ্য হয়ে আমরা গাড়ি বন্ধ রেখেছি।

বাস বন্ধ ভোগান্তিতে যাত্রীরা

রাজধানীর মিরপুরে দ্বিতীয় দিনের মতো গতকালও বাস চলাচল বন্ধ রাখে পরিবহন শ্রমিকরা। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। গণপরিবহন না থাকায় বিভিন্ন গন্তব্যে হেঁটে যেতে দেখা গেছে তাদের। দুই-একটি বাস চলাচল করলেও যাত্রীদের চাপ ছিল বেশি। তাই সড়কের পাশে গণপরিবহনের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে অনেক যাত্রীদের। গতকাল সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত একই অবস্থা ছিল মিরপুর এলাকায়। এর প্রভাবে পুরো রাজধানীর গণপরিবহন সংকট দেখা দেয়। বাস না পেয়ে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় বলে যাত্রীরা জানান।

অন্য রুটের দুই-এক বাস মিরপুর এলাকা দিয়ে অতিক্রম করার সময় পরিবহন শ্রমিকরা তা বন্ধ করে যাত্রীদের রাস্তায় নামিয়ে দেয়। এ নিয়ে যাত্রী ও শ্রমিকদের মধ্যে কর্ত-বিতর্ক সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশ এসে শ্রমিকদের সরিয়ে দেয় বলে স্থানীয়রা জানান।

নূর মোহাম্মদ নামের মিরপুরের এক যাত্রী বলেন, ‘আমি মিরপুর ১২ নম্বর যাব। সকাল ৮টায় পূরবী সিনেমা হলের সামনে শ্রমিকরা আমাদের বাস থেকে নামিয়ে দেয়। আরও অনেক যাত্রী ছিল যারা অফিসের কাজে বিভিন্ন স্থানে যেতো। বাস না থাকায় অনেকে হেঁটে রওনা দেন।’

ফয়সাল আহমেদ নামের এক যাত্রী জানান, ‘মতিঝিলে যাব। সকাল সাড়ে ৭টা থেকেই পূরবীর সামনে বাসের জন্য দাঁড়িয়ে ছিলাম। মিরপুর ১২ নম্বর থেকে ২-১টি বাস এলেও অনেক যাত্রী। বাসে উঠতে পারিনি। আবার শ্রমিকরা বাস থেকে যাত্রী নামিয়ে দিচ্ছেন। সিএনজিও নেই। রিকশায় করে মতিঝিল যাব কিনা চিন্তা করছি।’

মিরপুর ১২ নম্বরের সোহেল নামের এক জন জানান, ‘শ্রমিকরা বাস না চালিয়ে আন্দোলন করছেন। সকাল থেকে কিছু বাস চললেও তা অনেক কম। পূরবীর সামনে সকালে পরিবহন শ্রমিকরা জড়ো হয়ে বাস থেকে যাত্রী নামিয়ে দেয়। সে সময় পুলিশ শ্রমিদের সেখান থেকে সরিয়ে দেয়।’