রেইনট্রি ধর্ষণ মামলার লিখিত রায়ে নেই বিতর্কিত সেই পর্যবেক্ষণ

ধর্ষণের মামলা ৭২ ঘণ্টা পর না নেয়ার পর্যবেক্ষণের জন্য বিচারিক ক্ষমতা হারালেও লিখিত রায়ে সে নির্দেশনার কথা লেখেননি ঢাকার ৭ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যালের সেই প্রত্যহার হওয়া বিচারক মোছা. কামরুন্নাহার।

রেইনট্রি ধর্ষণের আলোচিত মামলায় গত ১১ নভেম্বর এজলাসে দেয়া রায়ের পর সমালোচনার মুখে পড়েন এই বিচারক, এরপর বিচারিক ক্ষমতা হারান। পাঁচ দিন পর মঙ্গলবার রাতে ওই মামলার লিখিত রায় প্রকাশিত হয়। তাতে ৭২ ঘণ্টা সংক্রান্ত কোন নির্দেশনা নেই বলে জানান ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর ফারহানা আফরোজা আহমেদ অরেঞ্জ।

ঢাকার ৭ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক হিসেবে ধর্ষণের মামলাটির রায় দিয়েছিলেন কামরুন্নহার। রায়ে তিনি অভিযোগ ‘প্রমাণিত হয়নি’ সিদ্ধান্ত দিয়ে সব আসামিকে খালাস দেন। তিনি বলেন, অভিযোগকারী তরুণী ‘স্বেচ্ছায়’ রেইনট্রি হোটেলে গিয়ে আসামির সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন, সেখানে ‘ধর্ষণ ঘটেনি’। তদন্ত কর্মকর্তা ‘প্রভাবিত হয়ে’ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছেন।

ঘটনার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে পরীক্ষা না হলে পুলিশকে ধর্ষণের মামলা না নেয়ার ‘নির্দেশ’ দিয়ে পর্যবেক্ষণে তিনি বলেন, ‘৭২ ঘণ্টা পর মেডিকেল টেস্ট করা হলে ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায় না। তাতে মামলা প্রমাণ করা দুরূহ হয়ে পড়ে।’ রায় হচ্ছে কোন একটি মামলায় দণ্ড বা সাজার ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত। আর রায়ের পর্যবেক্ষণ হচ্ছে, ওই মামলা প্রসঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিচারকের অভিমত, ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ। কামরুন্নাহারের ওই পর্যবেক্ষণ উচ্চ আদালতের নির্দেশনাই শুধু নয়, সংবিধানের লঙ্ঘন বলে মত দেন অধিকারকর্মী ও আইনজীবীরা। রায়ের পর রাজধানীতে পদযাত্রা করেন বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার অর্ধশতাধিক নারী। এই পরিস্থিতিতে ওই বিচারকের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে প্রধান বিচারপতিকে চিঠি লিখবেন বলে জানান আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তবে তার আগেই গত রোববার বিচারক কামরুন্নাহারের বিচারিক ক্ষমতা কেড়ে নেন প্রধান বিচারপতি। পরে তাকে আইন ও বিচার বিভাগে পাঠানো হয়। কামরুন্নাহারের রায়ের পর্যবেক্ষণের বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, ৭২ ঘণ্টা পরে মামলা নেয়া হবে না, তা আইনসিদ্ধ নয়।

বৃহস্পতিবার, ১৮ নভেম্বর ২০২১ , ৩ অগ্রহায়ণ ১৪২৮ ১২ রবিউস সানি ১৪৪৩

রেইনট্রি ধর্ষণ মামলার লিখিত রায়ে নেই বিতর্কিত সেই পর্যবেক্ষণ

আদালত বার্তা পরিবেশক

ধর্ষণের মামলা ৭২ ঘণ্টা পর না নেয়ার পর্যবেক্ষণের জন্য বিচারিক ক্ষমতা হারালেও লিখিত রায়ে সে নির্দেশনার কথা লেখেননি ঢাকার ৭ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যালের সেই প্রত্যহার হওয়া বিচারক মোছা. কামরুন্নাহার।

রেইনট্রি ধর্ষণের আলোচিত মামলায় গত ১১ নভেম্বর এজলাসে দেয়া রায়ের পর সমালোচনার মুখে পড়েন এই বিচারক, এরপর বিচারিক ক্ষমতা হারান। পাঁচ দিন পর মঙ্গলবার রাতে ওই মামলার লিখিত রায় প্রকাশিত হয়। তাতে ৭২ ঘণ্টা সংক্রান্ত কোন নির্দেশনা নেই বলে জানান ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর ফারহানা আফরোজা আহমেদ অরেঞ্জ।

ঢাকার ৭ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক হিসেবে ধর্ষণের মামলাটির রায় দিয়েছিলেন কামরুন্নহার। রায়ে তিনি অভিযোগ ‘প্রমাণিত হয়নি’ সিদ্ধান্ত দিয়ে সব আসামিকে খালাস দেন। তিনি বলেন, অভিযোগকারী তরুণী ‘স্বেচ্ছায়’ রেইনট্রি হোটেলে গিয়ে আসামির সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেছিলেন, সেখানে ‘ধর্ষণ ঘটেনি’। তদন্ত কর্মকর্তা ‘প্রভাবিত হয়ে’ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছেন।

ঘটনার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে পরীক্ষা না হলে পুলিশকে ধর্ষণের মামলা না নেয়ার ‘নির্দেশ’ দিয়ে পর্যবেক্ষণে তিনি বলেন, ‘৭২ ঘণ্টা পর মেডিকেল টেস্ট করা হলে ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায় না। তাতে মামলা প্রমাণ করা দুরূহ হয়ে পড়ে।’ রায় হচ্ছে কোন একটি মামলায় দণ্ড বা সাজার ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত। আর রায়ের পর্যবেক্ষণ হচ্ছে, ওই মামলা প্রসঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিচারকের অভিমত, ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ। কামরুন্নাহারের ওই পর্যবেক্ষণ উচ্চ আদালতের নির্দেশনাই শুধু নয়, সংবিধানের লঙ্ঘন বলে মত দেন অধিকারকর্মী ও আইনজীবীরা। রায়ের পর রাজধানীতে পদযাত্রা করেন বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার অর্ধশতাধিক নারী। এই পরিস্থিতিতে ওই বিচারকের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে প্রধান বিচারপতিকে চিঠি লিখবেন বলে জানান আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তবে তার আগেই গত রোববার বিচারক কামরুন্নাহারের বিচারিক ক্ষমতা কেড়ে নেন প্রধান বিচারপতি। পরে তাকে আইন ও বিচার বিভাগে পাঠানো হয়। কামরুন্নাহারের রায়ের পর্যবেক্ষণের বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, ৭২ ঘণ্টা পরে মামলা নেয়া হবে না, তা আইনসিদ্ধ নয়।