ধনী দেশগুলোকে অবশ্যই কার্বন নির্গমন বন্ধ করতে হবে

নগর দরিদ্রদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিতে ৯ দফা দাবি

ঢাকাসহ দেশের সব নগর দরিদ্রদের মৌলিক নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করাসহ ৯ দফা সুপারিশ জানিয়েছে বেসরকারি উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এবং কোয়ালিশন ফর দ্য আরবান পুওর (কাপ)।

গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে সংগঠন ৩টির যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এক সংলাপ থেকে এসব সুপারিশ জানানো হয়।

তাদের অন্যান্য সুপারিশগুলো হচ্ছে- জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে স্থানচ্যুত হয়ে নগরে আসা দরিদ্র মানুষদের তালিকা, তাদের সামগ্রিক ক্ষয়ক্ষতির হিসাব নিরূপণ ও জাতীয় ক্ষয়ক্ষতির প্রতিবেদনে এই তথ্য ও পরিসংখ্যান উপযুক্তভাবে নথিবদ্ধ করা, নগর দরিদ্রদের এলাকায় পরিকল্পিত বর্জ্য ব্যবস্থা, বর্জ্য থেকে সম্পদ রূপান্তরের কর্মসূচি গ্রহণ করা, পরিকল্পিত নগর কৃষির আওতায় নগর বস্তি ও নগর দরিদ্রদের যুক্ত করা, নগরের নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য বিনামূল্যে নিরাপদ স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা, নগরের নি¤œ আয়ের মানুষদের জন্য পানি, বিদ্যুৎ, জ্বালানি, পয়ঃনিষ্কাশন ও বজ্র ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত কর?া, দুর্যোগ ঝুঁকি মোকাবিলায় নগর দরিদ্রদের জন্য বিশেষ ঝুঁকি ভাতা, প্রণোদনা, প্রশিক্ষণ দেয়া, ঢাকা শহরের খাল, প্রাকৃতিক জলাশয়, উন্মুক্ত স্থান, খেলার মাঠ, পার্ক, বিনোদন হল, শরীরচর্চা হলে নগরের সব শ্রেণীপেশার মানুষের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা এবং ‘সবার জন্য নগর’ এই সেøাগান অনুযায়ী নগর গড়ে তোলা।

সংলাপে বক্তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত নগর দরিদ্রদের জন্য বাসযোগ্য নগর ও নিরাপদ ভবিষ্যতের জন্য আমাদের মানবিক পরিকল্পনা ও দক্ষ নেতৃত্ব দরকার। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আজ কেউ সব হারিয়ে শহরে এসে আরও ঝুঁকিতে পড়বে, তা হবে না। তারা তো আর ইচ্ছে করে শহরে আসে না। এই মানুষরা যখন গ্রামে ছিল তখন তারা ছিল সম্পূর্ণ মানুষ। সেখানে তাদের সমাজ ছিল, সেখানে তাদের শেকড় ছিল। এই মানুষরা যখন জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে শহরে আসে তখন সেই সব হারায়, প্রাণ হারায়।

তারা আরও বলেন, ধনী দেশকে অবশ্যই সবার কার্বন নির্গমন বন্ধ করতে হবে, কারণ আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী নই। কিন্তু এজন্য আমরা প্রতিদিন সমস্যায় পড়ছি, নগরেও চাপ বাড়ছে। নগর বস্তিবাসীদের বাসযোগ্য পরিবেশ তৈরি করতে হলে, সঠিক অভিযোজন কর্মসূচি তৈরি করতে হলে তহবিল দরকার, আর এ জন্য সরকারকে আরও বেশি আন্তর্জাতিক চাপ তৈরি করতে হবে।

সংলাপে বক্তব্য রাখেন পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, স্থপতি শাসসুল ওয়ারেস, কোয়ালিশন ফর দ্য আরবান পুওর (কাপ) এর সহসভাপতি মো. মাহবুবুল হক, বুয়েটের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান স্থপতি মোসলেহ উদ্দিন, কাপের নির্বাহী পরিচালক খন্দকার রেবেকা সান ইয়াত, বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক পাভেল পার্থ, নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ ফোরাম (নাসফ)-এর সাধারণ সম্পাদক মো. তৈয়ব আলী, বাংলাদেশ গ্রিন রুফ মুভমেন্টের সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. গোলাম হায়দার, বারসিকের ফেরদৌস আহমেদ প্রমুখ।

বৃহস্পতিবার, ১৮ নভেম্বর ২০২১ , ৩ অগ্রহায়ণ ১৪২৮ ১২ রবিউস সানি ১৪৪৩

ধনী দেশগুলোকে অবশ্যই কার্বন নির্গমন বন্ধ করতে হবে

নগর দরিদ্রদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিতে ৯ দফা দাবি

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

ঢাকাসহ দেশের সব নগর দরিদ্রদের মৌলিক নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করাসহ ৯ দফা সুপারিশ জানিয়েছে বেসরকারি উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এবং কোয়ালিশন ফর দ্য আরবান পুওর (কাপ)।

গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে সংগঠন ৩টির যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এক সংলাপ থেকে এসব সুপারিশ জানানো হয়।

তাদের অন্যান্য সুপারিশগুলো হচ্ছে- জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে স্থানচ্যুত হয়ে নগরে আসা দরিদ্র মানুষদের তালিকা, তাদের সামগ্রিক ক্ষয়ক্ষতির হিসাব নিরূপণ ও জাতীয় ক্ষয়ক্ষতির প্রতিবেদনে এই তথ্য ও পরিসংখ্যান উপযুক্তভাবে নথিবদ্ধ করা, নগর দরিদ্রদের এলাকায় পরিকল্পিত বর্জ্য ব্যবস্থা, বর্জ্য থেকে সম্পদ রূপান্তরের কর্মসূচি গ্রহণ করা, পরিকল্পিত নগর কৃষির আওতায় নগর বস্তি ও নগর দরিদ্রদের যুক্ত করা, নগরের নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য বিনামূল্যে নিরাপদ স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা, নগরের নি¤œ আয়ের মানুষদের জন্য পানি, বিদ্যুৎ, জ্বালানি, পয়ঃনিষ্কাশন ও বজ্র ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত কর?া, দুর্যোগ ঝুঁকি মোকাবিলায় নগর দরিদ্রদের জন্য বিশেষ ঝুঁকি ভাতা, প্রণোদনা, প্রশিক্ষণ দেয়া, ঢাকা শহরের খাল, প্রাকৃতিক জলাশয়, উন্মুক্ত স্থান, খেলার মাঠ, পার্ক, বিনোদন হল, শরীরচর্চা হলে নগরের সব শ্রেণীপেশার মানুষের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা এবং ‘সবার জন্য নগর’ এই সেøাগান অনুযায়ী নগর গড়ে তোলা।

সংলাপে বক্তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত নগর দরিদ্রদের জন্য বাসযোগ্য নগর ও নিরাপদ ভবিষ্যতের জন্য আমাদের মানবিক পরিকল্পনা ও দক্ষ নেতৃত্ব দরকার। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আজ কেউ সব হারিয়ে শহরে এসে আরও ঝুঁকিতে পড়বে, তা হবে না। তারা তো আর ইচ্ছে করে শহরে আসে না। এই মানুষরা যখন গ্রামে ছিল তখন তারা ছিল সম্পূর্ণ মানুষ। সেখানে তাদের সমাজ ছিল, সেখানে তাদের শেকড় ছিল। এই মানুষরা যখন জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে শহরে আসে তখন সেই সব হারায়, প্রাণ হারায়।

তারা আরও বলেন, ধনী দেশকে অবশ্যই সবার কার্বন নির্গমন বন্ধ করতে হবে, কারণ আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী নই। কিন্তু এজন্য আমরা প্রতিদিন সমস্যায় পড়ছি, নগরেও চাপ বাড়ছে। নগর বস্তিবাসীদের বাসযোগ্য পরিবেশ তৈরি করতে হলে, সঠিক অভিযোজন কর্মসূচি তৈরি করতে হলে তহবিল দরকার, আর এ জন্য সরকারকে আরও বেশি আন্তর্জাতিক চাপ তৈরি করতে হবে।

সংলাপে বক্তব্য রাখেন পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, স্থপতি শাসসুল ওয়ারেস, কোয়ালিশন ফর দ্য আরবান পুওর (কাপ) এর সহসভাপতি মো. মাহবুবুল হক, বুয়েটের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান স্থপতি মোসলেহ উদ্দিন, কাপের নির্বাহী পরিচালক খন্দকার রেবেকা সান ইয়াত, বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক পাভেল পার্থ, নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ ফোরাম (নাসফ)-এর সাধারণ সম্পাদক মো. তৈয়ব আলী, বাংলাদেশ গ্রিন রুফ মুভমেন্টের সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. গোলাম হায়দার, বারসিকের ফেরদৌস আহমেদ প্রমুখ।