একাব্বর হোসেনের মৃত্যুতে সংসদে শোক প্রস্তাব গৃহীত

টাঙ্গাইল-৭ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. একাব্বর হোসেনের মৃত্যুতে জাতীয় সংসদে সর্বসম্মতিক্রমে শোক প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে। গতকাল বুধবার স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সংসদে এ শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন। সংসদের রেওয়াজ অনুযায়ী একাব্বর হোসেনের জীবন ও কর্মের ওপর আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলোচনায় অংশ নেন। এ ছাড়া বিরোধীদলের উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের আলোচনায় অংশ নেন। অন্যদের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন- সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সরকারি দলের সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, আবদুস সোবহান মিয়া, বেনজির আহমেদ, আনোয়রুল আবেদীন খান ও বিরোধী দলের চিফ হুইপ মশিউর রহমান রাঙ্গা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শোক প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে বলেন, ভবিষ্যতে নেতৃত্ব দেয়ার মতো আদর্শিক, সৎ ও নিষ্ঠাবান যারা রয়েছে তাদের মধ্যে একাব্বরও একজন ছিল। আমাদের পরে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দেয়া ও দেশের উন্নয়নে অবদান রাখার জন্য যাদের তৈরি করছিলাম, তাদের একজনকে হারালাম। এই মৃত্যুতে দেশ ও আওয়ামী লীগের রাজনীতির অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গেল। দুর্ভাগ্য তাকে হারালাম।

মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত আমরা সংসদের ২০ জন সদস্যকে হারিয়েছি। বলতে গেলে প্রতিবারই সংসদ শুরু করতে হতো শোকপ্রস্তাব নিয়ে। কিন্তু শোকপ্রস্তাব এবার নেয়া হলেও কোনও এমপির মৃত্যুর জন্য আলোচনা করার দরকার হয়নি বলে আশ্বস্ত ছিলাম, স্বস্তি নিয়ে অধিবেশন শুরু করলাম ঠিকই কিন্তু ভয়াবহ আঘাতটা এলো।

একাব্বর হোসেন সক্রিয় একজন ছাত্রলীগ কর্মী ছিলেন উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, এমন একটি সময় সে ছাত্রলীগ করতো যখন সামরিক জান্তা ক্ষমতায় ছিল। সেই সময় কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ করাটা কঠিন ছিল।

ছাত্র রাজনীতি করাটাও কঠিন ছিল। তিনি বলেন, জনগণের সঙ্গে তার গভীর সম্পর্ক ছিল, আত্মার সম্পর্ক ছিল? যার কারণে সহজভাবে নির্বাচনে জিতে আসত।

আলোচনায় অংশ নিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে মরহুম একাব্বর হোসেন ছিলেন একজন সত্যিকারের ভালো মানুষ। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের প্রতি নিবেদিতপ্রাণ কর্মী একাব্বর হোসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুঃসময়ের পরীক্ষিত কর্মী ছিলেন। ওবায়দুল কাদের তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান এবং আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।

বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে একজন নিবেদিত আদর্শিক নেতা ছিলেন একাব্বর হোসেন। তিনি এমন নেতা ছিলেন যিনি কর্মীর কাতারে দাঁড়িয়ে দলের জন্য কাজ করে গেছেন।

মো. একাব্বর হোসেন ১৯৫৬ সালের ১২ জুলাই টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর উপজেলার পোষ্টকামুরী গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর একটি হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেন। তার বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর।

সংসদে শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনা শেষে মরহুমের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরপর তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত পরিচালনা করেন সরকারি দলের সদস্য এনামুল হক। এরপরই সংসদের রেওয়াজ অনুযায়ী দিনের সব কার্যসূচি স্থগিত করে সংসদের বৈঠক মুলতবি করা হয়।

বৃহস্পতিবার, ১৮ নভেম্বর ২০২১ , ৩ অগ্রহায়ণ ১৪২৮ ১২ রবিউস সানি ১৪৪৩

একাব্বর হোসেনের মৃত্যুতে সংসদে শোক প্রস্তাব গৃহীত

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

image

টাঙ্গাইল-৭ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. একাব্বর হোসেনের মৃত্যুতে জাতীয় সংসদে সর্বসম্মতিক্রমে শোক প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে। গতকাল বুধবার স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সংসদে এ শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন। সংসদের রেওয়াজ অনুযায়ী একাব্বর হোসেনের জীবন ও কর্মের ওপর আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলোচনায় অংশ নেন। এ ছাড়া বিরোধীদলের উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের আলোচনায় অংশ নেন। অন্যদের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন- সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সরকারি দলের সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, আবদুস সোবহান মিয়া, বেনজির আহমেদ, আনোয়রুল আবেদীন খান ও বিরোধী দলের চিফ হুইপ মশিউর রহমান রাঙ্গা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শোক প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে বলেন, ভবিষ্যতে নেতৃত্ব দেয়ার মতো আদর্শিক, সৎ ও নিষ্ঠাবান যারা রয়েছে তাদের মধ্যে একাব্বরও একজন ছিল। আমাদের পরে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দেয়া ও দেশের উন্নয়নে অবদান রাখার জন্য যাদের তৈরি করছিলাম, তাদের একজনকে হারালাম। এই মৃত্যুতে দেশ ও আওয়ামী লীগের রাজনীতির অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গেল। দুর্ভাগ্য তাকে হারালাম।

মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত আমরা সংসদের ২০ জন সদস্যকে হারিয়েছি। বলতে গেলে প্রতিবারই সংসদ শুরু করতে হতো শোকপ্রস্তাব নিয়ে। কিন্তু শোকপ্রস্তাব এবার নেয়া হলেও কোনও এমপির মৃত্যুর জন্য আলোচনা করার দরকার হয়নি বলে আশ্বস্ত ছিলাম, স্বস্তি নিয়ে অধিবেশন শুরু করলাম ঠিকই কিন্তু ভয়াবহ আঘাতটা এলো।

একাব্বর হোসেন সক্রিয় একজন ছাত্রলীগ কর্মী ছিলেন উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, এমন একটি সময় সে ছাত্রলীগ করতো যখন সামরিক জান্তা ক্ষমতায় ছিল। সেই সময় কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ করাটা কঠিন ছিল।

ছাত্র রাজনীতি করাটাও কঠিন ছিল। তিনি বলেন, জনগণের সঙ্গে তার গভীর সম্পর্ক ছিল, আত্মার সম্পর্ক ছিল? যার কারণে সহজভাবে নির্বাচনে জিতে আসত।

আলোচনায় অংশ নিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে মরহুম একাব্বর হোসেন ছিলেন একজন সত্যিকারের ভালো মানুষ। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের প্রতি নিবেদিতপ্রাণ কর্মী একাব্বর হোসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুঃসময়ের পরীক্ষিত কর্মী ছিলেন। ওবায়দুল কাদের তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান এবং আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।

বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে একজন নিবেদিত আদর্শিক নেতা ছিলেন একাব্বর হোসেন। তিনি এমন নেতা ছিলেন যিনি কর্মীর কাতারে দাঁড়িয়ে দলের জন্য কাজ করে গেছেন।

মো. একাব্বর হোসেন ১৯৫৬ সালের ১২ জুলাই টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর উপজেলার পোষ্টকামুরী গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর একটি হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেন। তার বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর।

সংসদে শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনা শেষে মরহুমের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরপর তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত পরিচালনা করেন সরকারি দলের সদস্য এনামুল হক। এরপরই সংসদের রেওয়াজ অনুযায়ী দিনের সব কার্যসূচি স্থগিত করে সংসদের বৈঠক মুলতবি করা হয়।