এইচএসসি পরীক্ষা শুরু ২ ডিসেম্বর পরীক্ষার্থী প্রায় ১৪ লাখ

করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হবে আগামী ২ ডিসেম্বর, শেষ হবে ৩০ ডিসেম্বর। এ বছর পরীক্ষাটিতে অংশ নেবেন ১৩ লাখ ৯৯ হাজার ৬৯০ জন শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে ছাত্র ৭ লাখ ২৯ হাজার ৭৩৮ জন এবং ছাত্রী ৬ লাখ ৬৯ হাজার ৯৫২ জন। এইচএসসি পরীক্ষা আয়োজনের লক্ষ্যে জাতীয় মনিটরিং ও আইনশৃঙ্খলা কমিটির বৈঠক শেষে নিজ দপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপুমনি।

বৈঠকে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক, আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাবকমিটির সভাপতি অধ্যাপক নেহাল আহমেদ অংশ নেন।

সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী জানান, এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগের পরীক্ষার্থীরা ২৫টি এমসিকিউ’র (বহু নির্বাচনী প্রশ্ন) মধ্যে ১২টির উত্তর দেবে। এ জন্য সময় বরাদ্দ ১৫ মিনিট। তত্ত্বীয় পরীক্ষায় আটটি প্রশ্নের মধ্যে দুটির উত্তর দিতে হবে। এতে সময় পাওয়া যাবে ১ ঘণ্টা ১৫ মিনিট।

মানবিক ও ব্যবসায় শাখার পরীক্ষার্থীদের ৩০টি এমসিকিউ’র মধ্যে ১৫টির উত্তর দিতে হবে। এজন্য সময় থাকবে ১৫ মিনিট। তত্ত্বীয় পরীক্ষায় ১১টি প্রশ্নের মধ্যে ৩টির উত্তর দিতে হবে। সময় পাওয়া যাবে ১ ঘণ্টা ১৫ মিনিট। পরীক্ষা শুরুর আগে হল পরিদর্শকরা এসব বিষয় পরীক্ষার্থীদের অবশ্যই অবহিত করবেন।

সাধারণ শিক্ষা বোর্ডগুলোর অধীনে তত্ত্বীয় পরীক্ষা ২ ডিসেম্বর শুরু হয়ে ৩০ ডিসেম্বরে শেষ হবে। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের তত্ত্বীয় পরীক্ষা ২ ডিসেম্বর শুরু হয়ে ১৯ ডিসেম্বর শেষ হবে। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের তত্ত্বীয় পরীক্ষা ২ ডিসেম্বর শুরু হয়ে ৮ ডিসেম্বরে শেষ হবে।

পরীক্ষার ৩০ মিনিট আগে হলে ঢুকতে হবে

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, পরীক্ষার কমপক্ষে ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার্থীদের অবশ্যই পরীক্ষার হলে প্রবেশ করতে হবে। হলে কাউকে পরে প্রবেশ করতে দেয়া হলে নাম, রোল নম্বর, প্রবেশের সময়, বিলম্ব হওয়ার কারণ ইত্যাদি লিপিবদ্ধ করে সেদিনই সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডে প্রতিবেদন দিতে হবে।

ডা. দীপু মনি বলেন, ট্রেজারি থেকে নির্দিষ্ট তারিখের পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের সব সেট কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হবে। প্রশ্নপত্র কেন্দ্রে পৌঁছে দেয়ার জন্য নির্ধারিত কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট আগে এসএমএসের মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের কাছে প্রশ্নপত্রের সেট কোড জানিয়ে দেয়া হবে।

তিনি বলেন, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছাড়া অন্য কেউ মোবাইল ফোন/ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন না, শুধু ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন। তবে ছবি তোলা যায় না এমন ফোন ব্যবহার করতে হবে।

পরীক্ষায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে- যোগ করেন মন্ত্রী। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য অভিভাবকদের অনুরোধ করেন তিনি।

২৫ নভেম্বর থেকে সব কোচিং সেন্টার বন্ধ

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা উপলক্ষে আগামী ২৫ নভেম্বর থেকে ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশের সব কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে।

প্রতিটি পাবলিক পরীক্ষার সময় আপনাদের ঘোষণা থাকে, কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে। কিন্তু এটি অনেকাংশেই কোচিং সেন্টারের মালিকরা মানেন না। এসএসসি পরীক্ষা চলাকালীন কোচিং সেন্টারগুলো চলতে দেখা গেছে- একজন সাংবাদিক এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, কোচিং সেন্টারগুলো সারাদেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। একেবারে প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত কোচিং সেন্টার আছে। আমাদের নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা যেমন কাজ করেন, একইভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এবং স্থানীয় প্রশাসনের সবাই আমাদের সহযোগিতা করেন।

তিনি বলেন, কোচিং সেন্টারগুলোতে নানা ধরনের কোচিং হয়। সে বিবেচনায় স্থানীয় পর্যায়ে হয়তো মনে করা হয়, এটা বিদেশি পরীক্ষার কোচিং কিংবা ইউনিভার্সিটি পরীক্ষার কোচিং হচ্ছে কিংবা বিসিএস পরীক্ষার কোচিং হচ্ছে বা আইএলটিএস পরীক্ষার কোচিং হচ্ছে, সে কারণে কিছু ছাড় দেয়া যায় কিনা, অনেক সময় এ ধরনের চিন্তা-ভাবনা হয়।

মন্ত্রী বলেন, যেহেতু আমরা দেখেছি যে, কখনও কখনও কোচিং সেন্টারকে ভিত্তি করেই প্রশ্নপত্র ফাঁস করার একটা অপচেষ্টা কিংবা গুজব ছড়ানোর একটা অপচেষ্টা দেখা যায়, একটা যোগসূত্র থাকে, সে কারণেই কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, আজকেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে আমাদের যে সভা হয়েছে, সেখানেও নির্দেশনাটিই দিয়েছি। আশা করবো সংশ্লিষ্ট সবাই তাদের দায়িত্ব পালন করবে। বিশেষ করে কোচিং সেন্টারগুলোর কাছে আমাদের অনুরোধ থাকবে, তারা তাদের এ কোচিং বন্ধ রাখবেন।

‘বিশেষভাবে সক্ষম’ পরীক্ষার্থীরা পাবে অতিরিক্ত সময়

এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ‘বিশেষভাবে সক্ষম’ শিক্ষার্থীরা অতিরিক্ত সময় পাবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, সেরিব্রাল পালসজনিত প্রতিবন্ধী এবং হাত নেই এমন প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থী স্ক্রাইব (শ্রুতি লেখক) সঙ্গে নিয়ে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে। এ ধরনের পরীক্ষার্থী ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীদের জন্য ১০ মিনিট সময় বাড়ানো হয়েছে।

তিনি বলেন, প্রতিবন্ধী (অটিস্টিক, ডাউন সিনড্রোম) পরীক্ষার্থীদের অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময় বৃদ্ধিসহ শিক্ষক/অভিভাবক/সাহায্যকারীর বিশেষ সহায়তায় পরীক্ষার সুযোগ দেয়া হয়েছে।

২০২২ সালেও সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে এসএসসি-এইচএসসি

মন্ত্রী বলেন, ২০২২ সালের এইচএসসি ও এসএসসি পরীক্ষা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসেই হবে। সেই সিলেবাসও তাদের (শিক্ষার্থী) দিয়ে দেয়া হয়েছে। কারণ তারাও তো এ বছর সরাসরি শ্রেণীকক্ষে বেশিরভাগ সময়ই ক্লাস করতে পারেনি।

তিনি বলেন, ফেব্রুয়ারি ও এপ্রিলে পরীক্ষা নেয়ার সুযোগ কিছুটা কম। সেক্ষেত্রে কিছুটা পেছাবে। কতটা পেছাবে, এটাও এ মুহূর্তে বলা খুব জটিল। কারণ সারাবিশ্বে করোনা আবার বাড়ছে। আমাদের এখানে পরপর দু বছরই কিন্তু মার্চ মাসের দিকেই করোনা বেড়েছিল। তিনি আরও বলেন, আগামী মার্চ-এপ্রিলে কী অবস্থা হবে, তা আমরা বলতে পারছি না। সেজন্য পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়েই পরীক্ষার সময়সূচি নির্ধারণ করব।

২০২২ সালে সব বিষয়ে পরীক্ষা হবে কি না- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, কতদিন আমরা তাদের ক্লাস করাতে পারব, সেটির ওপর নির্ভর করেই পরে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

পরীক্ষার সময় পরিবর্তনের কোন চিন্তা রয়েছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এটা নিয়ে আমাদের ভাবনায় আছে। আজকের সভায়ও আলাপ করেছি। আগামী বছর থেকে আমরা চেষ্টা করতে পারি, বিশেষ করে যেদিন সবচাইতে বেশি পরীক্ষার্থী থাকে অর্থাৎ মূল বিষয়গুলো বা আবশ্যিক বিষয়গুলোর যে পরীক্ষা হয়, সেদিন পরীক্ষাগুলো আরেকটু পরে শুরু করা যায় কিনা, সে ব্যাপারে আমরা সিদ্ধান্ত নেব আগামী বছর থেকে। এটা নিয়ে আমাদের মধ্যে আলাপ হয়েছে।

তিনি বলেন, আমাদের দেশে এসএসসি, এইচএসসির মতো পাবলিক পরীক্ষার গুরুত্ব কেমন, পরীক্ষার্থী থেকে শুরু করে তার পুরো পরিবার-সমাজ সবার কাছেই গুরুত্ব দেয়া হয়। সে কারণেই এ পরীক্ষাগুলোর সময় পরীক্ষার্থীদের যাতায়াতে বিঘ্ন হয়, এরকম কোন ধরনের কোন কিছুই কারও করা উচিত নয়।

শুক্রবার, ১৯ নভেম্বর ২০২১ , ৪ অগ্রহায়ণ ১৪২৮ ১৩ রবিউস সানি ১৪৪৩

এইচএসসি পরীক্ষা শুরু ২ ডিসেম্বর পরীক্ষার্থী প্রায় ১৪ লাখ

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হবে আগামী ২ ডিসেম্বর, শেষ হবে ৩০ ডিসেম্বর। এ বছর পরীক্ষাটিতে অংশ নেবেন ১৩ লাখ ৯৯ হাজার ৬৯০ জন শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে ছাত্র ৭ লাখ ২৯ হাজার ৭৩৮ জন এবং ছাত্রী ৬ লাখ ৬৯ হাজার ৯৫২ জন। এইচএসসি পরীক্ষা আয়োজনের লক্ষ্যে জাতীয় মনিটরিং ও আইনশৃঙ্খলা কমিটির বৈঠক শেষে নিজ দপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপুমনি।

বৈঠকে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক, আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাবকমিটির সভাপতি অধ্যাপক নেহাল আহমেদ অংশ নেন।

সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী জানান, এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগের পরীক্ষার্থীরা ২৫টি এমসিকিউ’র (বহু নির্বাচনী প্রশ্ন) মধ্যে ১২টির উত্তর দেবে। এ জন্য সময় বরাদ্দ ১৫ মিনিট। তত্ত্বীয় পরীক্ষায় আটটি প্রশ্নের মধ্যে দুটির উত্তর দিতে হবে। এতে সময় পাওয়া যাবে ১ ঘণ্টা ১৫ মিনিট।

মানবিক ও ব্যবসায় শাখার পরীক্ষার্থীদের ৩০টি এমসিকিউ’র মধ্যে ১৫টির উত্তর দিতে হবে। এজন্য সময় থাকবে ১৫ মিনিট। তত্ত্বীয় পরীক্ষায় ১১টি প্রশ্নের মধ্যে ৩টির উত্তর দিতে হবে। সময় পাওয়া যাবে ১ ঘণ্টা ১৫ মিনিট। পরীক্ষা শুরুর আগে হল পরিদর্শকরা এসব বিষয় পরীক্ষার্থীদের অবশ্যই অবহিত করবেন।

সাধারণ শিক্ষা বোর্ডগুলোর অধীনে তত্ত্বীয় পরীক্ষা ২ ডিসেম্বর শুরু হয়ে ৩০ ডিসেম্বরে শেষ হবে। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের তত্ত্বীয় পরীক্ষা ২ ডিসেম্বর শুরু হয়ে ১৯ ডিসেম্বর শেষ হবে। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের তত্ত্বীয় পরীক্ষা ২ ডিসেম্বর শুরু হয়ে ৮ ডিসেম্বরে শেষ হবে।

পরীক্ষার ৩০ মিনিট আগে হলে ঢুকতে হবে

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, পরীক্ষার কমপক্ষে ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষার্থীদের অবশ্যই পরীক্ষার হলে প্রবেশ করতে হবে। হলে কাউকে পরে প্রবেশ করতে দেয়া হলে নাম, রোল নম্বর, প্রবেশের সময়, বিলম্ব হওয়ার কারণ ইত্যাদি লিপিবদ্ধ করে সেদিনই সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডে প্রতিবেদন দিতে হবে।

ডা. দীপু মনি বলেন, ট্রেজারি থেকে নির্দিষ্ট তারিখের পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের সব সেট কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হবে। প্রশ্নপত্র কেন্দ্রে পৌঁছে দেয়ার জন্য নির্ধারিত কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। পরীক্ষা শুরুর ২৫ মিনিট আগে এসএমএসের মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের কাছে প্রশ্নপত্রের সেট কোড জানিয়ে দেয়া হবে।

তিনি বলেন, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছাড়া অন্য কেউ মোবাইল ফোন/ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন না, শুধু ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন। তবে ছবি তোলা যায় না এমন ফোন ব্যবহার করতে হবে।

পরীক্ষায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে- যোগ করেন মন্ত্রী। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য অভিভাবকদের অনুরোধ করেন তিনি।

২৫ নভেম্বর থেকে সব কোচিং সেন্টার বন্ধ

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা উপলক্ষে আগামী ২৫ নভেম্বর থেকে ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশের সব কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে।

প্রতিটি পাবলিক পরীক্ষার সময় আপনাদের ঘোষণা থাকে, কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে। কিন্তু এটি অনেকাংশেই কোচিং সেন্টারের মালিকরা মানেন না। এসএসসি পরীক্ষা চলাকালীন কোচিং সেন্টারগুলো চলতে দেখা গেছে- একজন সাংবাদিক এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, কোচিং সেন্টারগুলো সারাদেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। একেবারে প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত কোচিং সেন্টার আছে। আমাদের নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা যেমন কাজ করেন, একইভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এবং স্থানীয় প্রশাসনের সবাই আমাদের সহযোগিতা করেন।

তিনি বলেন, কোচিং সেন্টারগুলোতে নানা ধরনের কোচিং হয়। সে বিবেচনায় স্থানীয় পর্যায়ে হয়তো মনে করা হয়, এটা বিদেশি পরীক্ষার কোচিং কিংবা ইউনিভার্সিটি পরীক্ষার কোচিং হচ্ছে কিংবা বিসিএস পরীক্ষার কোচিং হচ্ছে বা আইএলটিএস পরীক্ষার কোচিং হচ্ছে, সে কারণে কিছু ছাড় দেয়া যায় কিনা, অনেক সময় এ ধরনের চিন্তা-ভাবনা হয়।

মন্ত্রী বলেন, যেহেতু আমরা দেখেছি যে, কখনও কখনও কোচিং সেন্টারকে ভিত্তি করেই প্রশ্নপত্র ফাঁস করার একটা অপচেষ্টা কিংবা গুজব ছড়ানোর একটা অপচেষ্টা দেখা যায়, একটা যোগসূত্র থাকে, সে কারণেই কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার নির্দেশনা দিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, আজকেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে আমাদের যে সভা হয়েছে, সেখানেও নির্দেশনাটিই দিয়েছি। আশা করবো সংশ্লিষ্ট সবাই তাদের দায়িত্ব পালন করবে। বিশেষ করে কোচিং সেন্টারগুলোর কাছে আমাদের অনুরোধ থাকবে, তারা তাদের এ কোচিং বন্ধ রাখবেন।

‘বিশেষভাবে সক্ষম’ পরীক্ষার্থীরা পাবে অতিরিক্ত সময়

এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ‘বিশেষভাবে সক্ষম’ শিক্ষার্থীরা অতিরিক্ত সময় পাবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, সেরিব্রাল পালসজনিত প্রতিবন্ধী এবং হাত নেই এমন প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থী স্ক্রাইব (শ্রুতি লেখক) সঙ্গে নিয়ে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে। এ ধরনের পরীক্ষার্থী ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীদের জন্য ১০ মিনিট সময় বাড়ানো হয়েছে।

তিনি বলেন, প্রতিবন্ধী (অটিস্টিক, ডাউন সিনড্রোম) পরীক্ষার্থীদের অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময় বৃদ্ধিসহ শিক্ষক/অভিভাবক/সাহায্যকারীর বিশেষ সহায়তায় পরীক্ষার সুযোগ দেয়া হয়েছে।

২০২২ সালেও সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে এসএসসি-এইচএসসি

মন্ত্রী বলেন, ২০২২ সালের এইচএসসি ও এসএসসি পরীক্ষা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসেই হবে। সেই সিলেবাসও তাদের (শিক্ষার্থী) দিয়ে দেয়া হয়েছে। কারণ তারাও তো এ বছর সরাসরি শ্রেণীকক্ষে বেশিরভাগ সময়ই ক্লাস করতে পারেনি।

তিনি বলেন, ফেব্রুয়ারি ও এপ্রিলে পরীক্ষা নেয়ার সুযোগ কিছুটা কম। সেক্ষেত্রে কিছুটা পেছাবে। কতটা পেছাবে, এটাও এ মুহূর্তে বলা খুব জটিল। কারণ সারাবিশ্বে করোনা আবার বাড়ছে। আমাদের এখানে পরপর দু বছরই কিন্তু মার্চ মাসের দিকেই করোনা বেড়েছিল। তিনি আরও বলেন, আগামী মার্চ-এপ্রিলে কী অবস্থা হবে, তা আমরা বলতে পারছি না। সেজন্য পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়েই পরীক্ষার সময়সূচি নির্ধারণ করব।

২০২২ সালে সব বিষয়ে পরীক্ষা হবে কি না- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, কতদিন আমরা তাদের ক্লাস করাতে পারব, সেটির ওপর নির্ভর করেই পরে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

পরীক্ষার সময় পরিবর্তনের কোন চিন্তা রয়েছে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এটা নিয়ে আমাদের ভাবনায় আছে। আজকের সভায়ও আলাপ করেছি। আগামী বছর থেকে আমরা চেষ্টা করতে পারি, বিশেষ করে যেদিন সবচাইতে বেশি পরীক্ষার্থী থাকে অর্থাৎ মূল বিষয়গুলো বা আবশ্যিক বিষয়গুলোর যে পরীক্ষা হয়, সেদিন পরীক্ষাগুলো আরেকটু পরে শুরু করা যায় কিনা, সে ব্যাপারে আমরা সিদ্ধান্ত নেব আগামী বছর থেকে। এটা নিয়ে আমাদের মধ্যে আলাপ হয়েছে।

তিনি বলেন, আমাদের দেশে এসএসসি, এইচএসসির মতো পাবলিক পরীক্ষার গুরুত্ব কেমন, পরীক্ষার্থী থেকে শুরু করে তার পুরো পরিবার-সমাজ সবার কাছেই গুরুত্ব দেয়া হয়। সে কারণেই এ পরীক্ষাগুলোর সময় পরীক্ষার্থীদের যাতায়াতে বিঘ্ন হয়, এরকম কোন ধরনের কোন কিছুই কারও করা উচিত নয়।