জিডিপিতে শেয়ারবাজারের আকার বৃদ্ধিতে গুরুত্বারোপ করলো বিএসইসি চেয়ারম্যান

শেয়ারবাজারের উন্নয়নে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেছেন, ‘আমরা শেয়ারবাজারের উন্নয়নে এখনও কিছুই করতে পারিনি। তারপরেও স্টেকহোল্ডাররা যেভাবে প্রশংসা করেন, তাতে সত্যিই ধন্য হয়ে যাই। আমাদের শেয়ারবাজারের আকার জিডিপির (মোট দেশজ উৎপাদন) মাত্র ২০ শতাংশ। এটা কোন মার্কেট হলো না। এর আকার বৃদ্ধি করতে হবে। তারপরেও কতলোক বলে ফেলছে, মার্কেট অনেক বড় ও অতিমূল্যায়িত হয়ে গেছে। এ বিষয়গুলো মোকাবিলা করতে হবে যা আমাদের একার পক্ষে সম্ভব না। এ ক্ষেত্রে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’

গতকাল রাজধানীর আল-রাজী কমপ্লেক্সে ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরামের (সিএমজেএফ) নিজস্ব অফিস উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন বিএসইসি চেয়ারম্যান।

অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, ‘বিএসইসির বিদ্যমান জনবল দিয়ে ১১শ প্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রণ করা খুবই কঠিন। আমাদের সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত কাজ করতে হয়। তাই ক্যাপিটাল মার্কেট বিটের সাংবাদিকদের বিভিন্ন ইস্যুতে সঠিক তথ্য তুলে আনতে হবে। যা কমিশনের কাজকে সহজ ও দ্রুত করে তুলবে।’

বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘দেশে শেয়ারবাজারের সম্ভাবনা বাড়ছে। চাহিদা ও সরবরাহ দুইদিক থেকেই সমৃদ্ধ হচ্ছে বাজার। ফলে দেশি বিদেশি বিনিয়োগকারী এবং উদ্যোক্তাদের আস্থাও বাড়ছে। একটি শক্তিশালী বাজারের জন্য যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর সম্ভাবনা কাজে লাগাতে কাজ করে যাচ্ছে বর্তমান কমিশন। সামগ্রিকভাবে সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও বিনিয়োগকারীদের পুঁজির নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।’

এসময় যেসব ব্যবসায়ীদের পত্রিকা রয়েছে, তাদের নিজেদের স্বার্থরক্ষা বা প্রভাবিত করতে গিয়ে ভুল সংবাদ প্রকাশ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা কিন্তু নিউজ দেখলেই বুঝি কোন বা কি স্বার্থে করা হয়েছে। আমরা সত্য সংবাদ দেখতে চাই। নিজের ব্যবসার সুবিধার জন্য অন্যের ক্ষতি হয় এমন কোন সংবাদ চাই না। নিজের বাসা বা ঠিকানা যে কি পরিমাণ প্রয়োজন, তা আমরা সবাই বুঝি। যারা নিজেদের বাসায় থাকি, তারা নিজেদের অনেক ভাগ্যবান মনে করি। আসলে কোনকিছুই স্থায়ী ঠিকানা ছাড়া ভালোভাবে করা সম্ভব হয়নি। সিএসজেএফ এতদিন ধরে যতকিছু করতে চাচ্ছিলেন, তা ঠিকভাবে করতে পারছিলেন না। ঠিকভাবে করতে গেলে স্থায়ী ঠিকানা খুবই দরকার।’

সম্প্রতি রোড শো নিয়ে তিনি বলেন, ‘রোড শোতে মার্চেন্ট ব্যাংকসহ পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট সব স্টেকহোল্ডার উপস্থিত ছিলেন। দেশি-বিদেশি ইনভেস্টর, যারা আমাদের প্রেজেন্টেশনের পর উৎসাহী হয়ে উঠেছে, ফান্ড ম্যানেজমেন্ট কর্তৃপক্ষ তাদের সঙ্গে কথা বলেছে, কিভাবে কি করা যায়, কিসে তাদের উৎসাহ, কোথায় তাদের ফান্ড আছে, এসব তথ্য বিনিময় হয়েছে। সেখানে রিটেইলার পর্যায়ে অনেক ইনভেস্টমেন্ট আসা শুরু হয়েছে। কিন্তু আমরা তো বড় বিনিয়োগ নিয়ে কথা বলছি, এগুলো আসতে হয়তো আগামী ৬ মাস বা এক বছর সময় লাগবে। কিন্তু আমরা শুরু না করলে রেজাল্ট কখনই পেতাম না। এবার আমরা রেজাল্ট পাওয়া শুরু করবো। রিটেইল শুরু হয়ে গেছে। হোলসেলগুলো পেতে একটু সময় লাগবে।’

সিএমজেএফের সভাপতি হাসান ইমাম রুবেলের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মো. মনির হোসেন সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান ড. খায়রুল হোসেন, বর্তমান কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দীন আহমেদ, ড. মিজানুর রহমান, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমান, বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি মো. ছায়েদুর রহমান প্রমুখ।

শনিবার, ২০ নভেম্বর ২০২১ , ৫ অগ্রহায়ণ ১৪২৮ ১৪ রবিউস সানি ১৪৪৩

জিডিপিতে শেয়ারবাজারের আকার বৃদ্ধিতে গুরুত্বারোপ করলো বিএসইসি চেয়ারম্যান

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

image

শেয়ারবাজারের উন্নয়নে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেছেন, ‘আমরা শেয়ারবাজারের উন্নয়নে এখনও কিছুই করতে পারিনি। তারপরেও স্টেকহোল্ডাররা যেভাবে প্রশংসা করেন, তাতে সত্যিই ধন্য হয়ে যাই। আমাদের শেয়ারবাজারের আকার জিডিপির (মোট দেশজ উৎপাদন) মাত্র ২০ শতাংশ। এটা কোন মার্কেট হলো না। এর আকার বৃদ্ধি করতে হবে। তারপরেও কতলোক বলে ফেলছে, মার্কেট অনেক বড় ও অতিমূল্যায়িত হয়ে গেছে। এ বিষয়গুলো মোকাবিলা করতে হবে যা আমাদের একার পক্ষে সম্ভব না। এ ক্ষেত্রে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’

গতকাল রাজধানীর আল-রাজী কমপ্লেক্সে ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরামের (সিএমজেএফ) নিজস্ব অফিস উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন বিএসইসি চেয়ারম্যান।

অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, ‘বিএসইসির বিদ্যমান জনবল দিয়ে ১১শ প্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রণ করা খুবই কঠিন। আমাদের সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত কাজ করতে হয়। তাই ক্যাপিটাল মার্কেট বিটের সাংবাদিকদের বিভিন্ন ইস্যুতে সঠিক তথ্য তুলে আনতে হবে। যা কমিশনের কাজকে সহজ ও দ্রুত করে তুলবে।’

বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘দেশে শেয়ারবাজারের সম্ভাবনা বাড়ছে। চাহিদা ও সরবরাহ দুইদিক থেকেই সমৃদ্ধ হচ্ছে বাজার। ফলে দেশি বিদেশি বিনিয়োগকারী এবং উদ্যোক্তাদের আস্থাও বাড়ছে। একটি শক্তিশালী বাজারের জন্য যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর সম্ভাবনা কাজে লাগাতে কাজ করে যাচ্ছে বর্তমান কমিশন। সামগ্রিকভাবে সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও বিনিয়োগকারীদের পুঁজির নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।’

এসময় যেসব ব্যবসায়ীদের পত্রিকা রয়েছে, তাদের নিজেদের স্বার্থরক্ষা বা প্রভাবিত করতে গিয়ে ভুল সংবাদ প্রকাশ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা কিন্তু নিউজ দেখলেই বুঝি কোন বা কি স্বার্থে করা হয়েছে। আমরা সত্য সংবাদ দেখতে চাই। নিজের ব্যবসার সুবিধার জন্য অন্যের ক্ষতি হয় এমন কোন সংবাদ চাই না। নিজের বাসা বা ঠিকানা যে কি পরিমাণ প্রয়োজন, তা আমরা সবাই বুঝি। যারা নিজেদের বাসায় থাকি, তারা নিজেদের অনেক ভাগ্যবান মনে করি। আসলে কোনকিছুই স্থায়ী ঠিকানা ছাড়া ভালোভাবে করা সম্ভব হয়নি। সিএসজেএফ এতদিন ধরে যতকিছু করতে চাচ্ছিলেন, তা ঠিকভাবে করতে পারছিলেন না। ঠিকভাবে করতে গেলে স্থায়ী ঠিকানা খুবই দরকার।’

সম্প্রতি রোড শো নিয়ে তিনি বলেন, ‘রোড শোতে মার্চেন্ট ব্যাংকসহ পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট সব স্টেকহোল্ডার উপস্থিত ছিলেন। দেশি-বিদেশি ইনভেস্টর, যারা আমাদের প্রেজেন্টেশনের পর উৎসাহী হয়ে উঠেছে, ফান্ড ম্যানেজমেন্ট কর্তৃপক্ষ তাদের সঙ্গে কথা বলেছে, কিভাবে কি করা যায়, কিসে তাদের উৎসাহ, কোথায় তাদের ফান্ড আছে, এসব তথ্য বিনিময় হয়েছে। সেখানে রিটেইলার পর্যায়ে অনেক ইনভেস্টমেন্ট আসা শুরু হয়েছে। কিন্তু আমরা তো বড় বিনিয়োগ নিয়ে কথা বলছি, এগুলো আসতে হয়তো আগামী ৬ মাস বা এক বছর সময় লাগবে। কিন্তু আমরা শুরু না করলে রেজাল্ট কখনই পেতাম না। এবার আমরা রেজাল্ট পাওয়া শুরু করবো। রিটেইল শুরু হয়ে গেছে। হোলসেলগুলো পেতে একটু সময় লাগবে।’

সিএমজেএফের সভাপতি হাসান ইমাম রুবেলের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মো. মনির হোসেন সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান ড. খায়রুল হোসেন, বর্তমান কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দীন আহমেদ, ড. মিজানুর রহমান, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমান, বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) সভাপতি মো. ছায়েদুর রহমান প্রমুখ।