জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক উত্তোলন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ কোটি ৭৬ লাখ ব্যারেলে

বিশ্বব্যাপি চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় জ্বালানি তেলের উত্তোলন ব্যাপক বেড়েছে। অক্টোবরে জ্বালানি পণ্যটির উত্তোলন ১ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেড়ে দৈনিক ৯ কোটি ৭৬ লাখ ৭০ হাজার ব্যারেলে উন্নীত হয়েছে। বৈশ্বিক উত্তোলন বৃদ্ধিতে প্রধান ভূমিকা রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সির (আইইএ) অয়েল মার্কেট রিপোর্টে এ তথ্য উঠে এসেছে। রয়টার্স।

আইইএ বলছে, চলতি বছরের আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রের লুইজিয়ানা রাজ্যে আঘাত হানে হারিকেন আইডা। হারিকেনের তা-বে বিপর্যয় নামে দেশটির মেক্সিকো উপসাগরীয় অঞ্চলের জ্বালানি তেল উত্তোলনে। নেতিবাচক প্রভাব পড়ে দেশীয় সরবরাহে। তবে এরই মধ্যে দেশটি হারিকেন আইডার প্রভাব কাটিয়ে উঠেছে। অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্রের মাসভিত্তিক জ্বালানি তেল উত্তোলন বেড়েছে দৈনিক ১৪ লাখ ব্যারেল করে। এটি বৈশ্বিক উত্তোলনকে দৈনিক ৯ কোটি ৭৭ লাখ ব্যারেলে নিয়ে গেছে।

এদিকে উত্তোলন বেড়েছে জ্বালানি তেল রফতানিকারক দেশগুলোর জোট ওপেকেরও। অক্টোবরে জোটভুক্ত দেশগুলোর দৈনিক উত্তোলন ২ কোটি ৭৪ লাখ ২০ হাজার ব্যারেলে উন্নীত হয়। সেপ্টেম্বরের তুলনায় উত্তোলন দৈনিক ২ লাখ ৪০ হাজার ব্যারেল বেড়েছে। ওই মাসে চুক্তির বাইরে ওপেকভুক্ত দেশগুলোর উত্তোলন দৈনিক ৫৩ লাখ ১০ হাজার ব্যারেলে পৌঁছেছে। এটি ওপেকের মোট উত্তোলনকে দৈনিক ৩ কোটি ২৭ লাখ ৩০ হাজার ব্যারেলে উন্নীত করেছে।

অন্যদিকে নন-ওপেক দেশগুলোর দৈনিক অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন প্রায় ১১ লাখ ৭০ হাজার করে বেড়েছে। অক্টোবরে মোট দৈনিক উত্তোলন দাঁড়িয়েছে ৬ কোটি ৪৯ লাখ ৪০ হাজার ব্যারেলে।

রিপোর্টের তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবর-ডিসেম্বর পর্যন্ত অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক সরবরাহ দৈনিক ১৫ লাখ ব্যারেলে পৌঁছতে পারে। আইইএর প্রাক্কলন বলছে, সরবরাহ বৃদ্ধিতেও যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব ভূমিকা রাখছে। দেশটির দৈনিক সরবরাহ পৌঁছবে চার লাখ ব্যারেলে। সৌদি আরব ও রাশিয়া ওপেক প্লাসের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী, দৈনিক ৩ লাখ ৩০ হাজার ব্যারেল করে সরবরাহ বাড়াতে সক্ষম হবে।

আইইএ জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক চাহিদা পূর্বাভাস আগের প্রাক্কলনের মতোই অপরিবর্তিত রেখেছে। সংস্থাটির ভাষ্য, বছরের বাকি সময়জুড়ে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক চাহিদা শক্তিশালী থাকবে। কারণ বেশির ভাগ দেশ সীমান্ত পারাপারে কভিডজনিত বিধিনিষেধ তুলে দিয়েছে। চলাচলে গতি এসেছে। জোরদার হয়েছে টিকাদান কর্মসূচি। বিষয়গুলো চাহিদা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে।

তবে উদ্বেগ তৈরি করেছে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন। ইউরোপের দেশগুলোয় বেড়েছে সংক্রমণ প্রবাহ। এর পাশাপাশি মন্থর শিল্প উৎপাদন কার্যক্রম ও জ্বালানি তেলের দামে ঊর্ধ্বগতিও আশঙ্কার বার্তা দিচ্ছে। ফলে বিশ্বজুড়ে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদায় পুনরুদ্ধার ঘটলেও চলতি ও আগামী বছরের জন্য পূর্বাভাস অপরিবর্তিত রেখেছে আইইএ।

সংস্থাটি জানিয়েছে, চলতি বছর অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক চাহিদা প্রায় ৯ কোটি ৬২ লাখ ৮০ হাজার ব্যারেলের পৌঁছবে। গত বছরের তুলনায় চাহিদা বাড়বে দৈনিক ৫৪ লাখ ৯০ হাজার ব্যারেল করে। আগামী বছর দৈনিক ৩৩ লাখ ৭০ হাজার ব্যারেল বেড়ে বৈশ্বিক চাহিদার পরিমাণ দাঁড়াবে ৯ কোটি ৯৬ লাখ ৫০ হাজার ব্যারেলে। এ সময় চাহিদা মহামারীপূর্ব অবস্থায় ফিরে যাবে বলে মনে করছে সংস্থাটি।

শনিবার, ২০ নভেম্বর ২০২১ , ৫ অগ্রহায়ণ ১৪২৮ ১৪ রবিউস সানি ১৪৪৩

জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক উত্তোলন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ কোটি ৭৬ লাখ ব্যারেলে

সংবাদ ডেস্ক

image

বিশ্বব্যাপি চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় জ্বালানি তেলের উত্তোলন ব্যাপক বেড়েছে। অক্টোবরে জ্বালানি পণ্যটির উত্তোলন ১ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেড়ে দৈনিক ৯ কোটি ৭৬ লাখ ৭০ হাজার ব্যারেলে উন্নীত হয়েছে। বৈশ্বিক উত্তোলন বৃদ্ধিতে প্রধান ভূমিকা রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সির (আইইএ) অয়েল মার্কেট রিপোর্টে এ তথ্য উঠে এসেছে। রয়টার্স।

আইইএ বলছে, চলতি বছরের আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রের লুইজিয়ানা রাজ্যে আঘাত হানে হারিকেন আইডা। হারিকেনের তা-বে বিপর্যয় নামে দেশটির মেক্সিকো উপসাগরীয় অঞ্চলের জ্বালানি তেল উত্তোলনে। নেতিবাচক প্রভাব পড়ে দেশীয় সরবরাহে। তবে এরই মধ্যে দেশটি হারিকেন আইডার প্রভাব কাটিয়ে উঠেছে। অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্রের মাসভিত্তিক জ্বালানি তেল উত্তোলন বেড়েছে দৈনিক ১৪ লাখ ব্যারেল করে। এটি বৈশ্বিক উত্তোলনকে দৈনিক ৯ কোটি ৭৭ লাখ ব্যারেলে নিয়ে গেছে।

এদিকে উত্তোলন বেড়েছে জ্বালানি তেল রফতানিকারক দেশগুলোর জোট ওপেকেরও। অক্টোবরে জোটভুক্ত দেশগুলোর দৈনিক উত্তোলন ২ কোটি ৭৪ লাখ ২০ হাজার ব্যারেলে উন্নীত হয়। সেপ্টেম্বরের তুলনায় উত্তোলন দৈনিক ২ লাখ ৪০ হাজার ব্যারেল বেড়েছে। ওই মাসে চুক্তির বাইরে ওপেকভুক্ত দেশগুলোর উত্তোলন দৈনিক ৫৩ লাখ ১০ হাজার ব্যারেলে পৌঁছেছে। এটি ওপেকের মোট উত্তোলনকে দৈনিক ৩ কোটি ২৭ লাখ ৩০ হাজার ব্যারেলে উন্নীত করেছে।

অন্যদিকে নন-ওপেক দেশগুলোর দৈনিক অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন প্রায় ১১ লাখ ৭০ হাজার করে বেড়েছে। অক্টোবরে মোট দৈনিক উত্তোলন দাঁড়িয়েছে ৬ কোটি ৪৯ লাখ ৪০ হাজার ব্যারেলে।

রিপোর্টের তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবর-ডিসেম্বর পর্যন্ত অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক সরবরাহ দৈনিক ১৫ লাখ ব্যারেলে পৌঁছতে পারে। আইইএর প্রাক্কলন বলছে, সরবরাহ বৃদ্ধিতেও যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব ভূমিকা রাখছে। দেশটির দৈনিক সরবরাহ পৌঁছবে চার লাখ ব্যারেলে। সৌদি আরব ও রাশিয়া ওপেক প্লাসের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী, দৈনিক ৩ লাখ ৩০ হাজার ব্যারেল করে সরবরাহ বাড়াতে সক্ষম হবে।

আইইএ জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক চাহিদা পূর্বাভাস আগের প্রাক্কলনের মতোই অপরিবর্তিত রেখেছে। সংস্থাটির ভাষ্য, বছরের বাকি সময়জুড়ে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক চাহিদা শক্তিশালী থাকবে। কারণ বেশির ভাগ দেশ সীমান্ত পারাপারে কভিডজনিত বিধিনিষেধ তুলে দিয়েছে। চলাচলে গতি এসেছে। জোরদার হয়েছে টিকাদান কর্মসূচি। বিষয়গুলো চাহিদা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে।

তবে উদ্বেগ তৈরি করেছে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন। ইউরোপের দেশগুলোয় বেড়েছে সংক্রমণ প্রবাহ। এর পাশাপাশি মন্থর শিল্প উৎপাদন কার্যক্রম ও জ্বালানি তেলের দামে ঊর্ধ্বগতিও আশঙ্কার বার্তা দিচ্ছে। ফলে বিশ্বজুড়ে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদায় পুনরুদ্ধার ঘটলেও চলতি ও আগামী বছরের জন্য পূর্বাভাস অপরিবর্তিত রেখেছে আইইএ।

সংস্থাটি জানিয়েছে, চলতি বছর অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বৈশ্বিক চাহিদা প্রায় ৯ কোটি ৬২ লাখ ৮০ হাজার ব্যারেলের পৌঁছবে। গত বছরের তুলনায় চাহিদা বাড়বে দৈনিক ৫৪ লাখ ৯০ হাজার ব্যারেল করে। আগামী বছর দৈনিক ৩৩ লাখ ৭০ হাজার ব্যারেল বেড়ে বৈশ্বিক চাহিদার পরিমাণ দাঁড়াবে ৯ কোটি ৯৬ লাখ ৫০ হাজার ব্যারেলে। এ সময় চাহিদা মহামারীপূর্ব অবস্থায় ফিরে যাবে বলে মনে করছে সংস্থাটি।