ঢাকা মেডিকেলে ‘রেড টিউব’ সংকট, ভোগান্তিতে রোগীরা

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগ নির্ণয়ের জন্য বাহির থেকে রক্ত পরীক্ষার রেড টিউব কিনে প্যাথলজি বিভাগে জমা দিতে হচ্ছে রোগীদের। জানা গেছে, ইলেকট্রোলাইট, ক্রিটিনাইন, লেফটসহ(লিভারের পরীক্ষা) প্রায় ৩০টি রোগ নির্ণয়ের জন্য রোগীদের রক্ত রেড টিউবে ভরে প্যাথলজিতে সংরক্ষণ করতে হয়। রোগ নির্ণয়ে অতি প্রয়োজনীয় এই টিউবটি গত প্রায় এক মাসের অধিক সময় ধরে ঢামেক প্যাথলজি বিভাগে সাপ্লাই নেই। যার দরুন হাসপাতালের বাহির থেকে রোগীদের কিনতে হচ্ছে রেড টিউব। অভিযোগ রয়েছে, রেড টিউবের সঙ্কটের কারণে যথাসময়ে রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট পেতে ভোগান্তির শিকার হতে হয় ভুক্তভোগীদের। ভুক্তভোগী রোগীদের অভিযোগ, রোগ নির্ণয়ের টাকা জমা দেয়ার সময় ঠিকই রেড টিউব মূল্য বাবদ রোগীদের কাছ থেকে টাকা কেটে নিচ্ছে ঢামেক প্যাথলজি বিভাগ। রেড টিউব সঙ্কট নিয়ে গতকাল কয়েকজন ভুক্তভোগীরা সংবাদকে জানান তাদের ভোগান্তির কথা।

পুরান ঢাকার আগামাসি লেনের জেরিন ফাতেমা নামে এক রোগী জানান, আমি ফার্মেসী থেকে দুটি রেড টিউব ২০ টাকা দিয়ে কিনে ঢামেক প্যাথলজি বিভাগে জমা দেই। ঢামেক-২, ভবনের দ্বিতীয় তলায় অবস্থিত প্যাথলজি বিভাগের কাউন্টারের লোক তিনটি টেস্টের জন্য আমার কাছ থেকে ৩২০ টাকা নেয়। অথচ এই টাকার মধ্যে রেড টিউবের দামও কেটে রাখা হয়েছে। তাদের উচিত রেড টিউবের দাম রোগীদের কাছ থেকে না রাখা। এভাবে রেড টিউবের সঙ্কট নিয়ে কামরাঙ্গীচরের আঞ্জুমানসহ আরও একাধিক রোগী একই অভিযোগ করেন।

ভুক্তভোগীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা অনেকে গ্রাম থেকে আসি। আমরা কি অত কিছু বুঝি! রেড টিউব নিয়ে আমাদের বাড়তি টাকা খরচের পাশাপাশি ভোগান্তিতেও পড়তে হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢামেক প্যাথলজি বিভাগে কর্মরত এক কর্মী জানান, রেড টিউব না পেয়ে অনেক রোগী ও তাদের স্বজনরা আমাদের সঙ্গে চিল্লাচিল্লি করে।

এ বিষয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক সংবাদকে জানান, ‘ঢামেকে যে কোম্পানি রেড টিউব সাপ্লাইয়ের কাজ পেয়েছিল তারা ঠিক মতো দিতে না পারার কারণে এ সঙ্কট দেখা দিয়েছে। ঢামেক থেকে প্রেসারক্রিট করার পর তারা গত বৃহস্পতিবার কিছু রেড টিউব ঢামেকের প্যাথলজি বিভাগে সাপ্লাই দিয়েছে।’

পরিচালক জানান, ‘রেড টিউব নিয়ে রোগীদের ভোগান্তির জন্য দায়ী উক্ত কোম্পানিকে প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আমরা বাদ দেব। শীঘ্রই রেড টিউব নিরবিচ্ছিন্ন সাপ্লাইয়ের জন্য ঢামেক কর্তৃপক্ষ নতুন টেন্ডারের মাধ্যমে অন্য ভালো কোন কোম্পানিকে কাজ দিবে।’

ঢামেক প্যাথলজি বিভাগে শীঘ্রই রেড টিউব সঙ্কট কেটে যাবে বলে আস্বস্ত করেন পরিচালক।

শনিবার, ২০ নভেম্বর ২০২১ , ৫ অগ্রহায়ণ ১৪২৮ ১৪ রবিউস সানি ১৪৪৩

ঢাকা মেডিকেলে ‘রেড টিউব’ সংকট, ভোগান্তিতে রোগীরা

খন্দকার জাফর আহমদ

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগ নির্ণয়ের জন্য বাহির থেকে রক্ত পরীক্ষার রেড টিউব কিনে প্যাথলজি বিভাগে জমা দিতে হচ্ছে রোগীদের। জানা গেছে, ইলেকট্রোলাইট, ক্রিটিনাইন, লেফটসহ(লিভারের পরীক্ষা) প্রায় ৩০টি রোগ নির্ণয়ের জন্য রোগীদের রক্ত রেড টিউবে ভরে প্যাথলজিতে সংরক্ষণ করতে হয়। রোগ নির্ণয়ে অতি প্রয়োজনীয় এই টিউবটি গত প্রায় এক মাসের অধিক সময় ধরে ঢামেক প্যাথলজি বিভাগে সাপ্লাই নেই। যার দরুন হাসপাতালের বাহির থেকে রোগীদের কিনতে হচ্ছে রেড টিউব। অভিযোগ রয়েছে, রেড টিউবের সঙ্কটের কারণে যথাসময়ে রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট পেতে ভোগান্তির শিকার হতে হয় ভুক্তভোগীদের। ভুক্তভোগী রোগীদের অভিযোগ, রোগ নির্ণয়ের টাকা জমা দেয়ার সময় ঠিকই রেড টিউব মূল্য বাবদ রোগীদের কাছ থেকে টাকা কেটে নিচ্ছে ঢামেক প্যাথলজি বিভাগ। রেড টিউব সঙ্কট নিয়ে গতকাল কয়েকজন ভুক্তভোগীরা সংবাদকে জানান তাদের ভোগান্তির কথা।

পুরান ঢাকার আগামাসি লেনের জেরিন ফাতেমা নামে এক রোগী জানান, আমি ফার্মেসী থেকে দুটি রেড টিউব ২০ টাকা দিয়ে কিনে ঢামেক প্যাথলজি বিভাগে জমা দেই। ঢামেক-২, ভবনের দ্বিতীয় তলায় অবস্থিত প্যাথলজি বিভাগের কাউন্টারের লোক তিনটি টেস্টের জন্য আমার কাছ থেকে ৩২০ টাকা নেয়। অথচ এই টাকার মধ্যে রেড টিউবের দামও কেটে রাখা হয়েছে। তাদের উচিত রেড টিউবের দাম রোগীদের কাছ থেকে না রাখা। এভাবে রেড টিউবের সঙ্কট নিয়ে কামরাঙ্গীচরের আঞ্জুমানসহ আরও একাধিক রোগী একই অভিযোগ করেন।

ভুক্তভোগীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা অনেকে গ্রাম থেকে আসি। আমরা কি অত কিছু বুঝি! রেড টিউব নিয়ে আমাদের বাড়তি টাকা খরচের পাশাপাশি ভোগান্তিতেও পড়তে হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢামেক প্যাথলজি বিভাগে কর্মরত এক কর্মী জানান, রেড টিউব না পেয়ে অনেক রোগী ও তাদের স্বজনরা আমাদের সঙ্গে চিল্লাচিল্লি করে।

এ বিষয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক সংবাদকে জানান, ‘ঢামেকে যে কোম্পানি রেড টিউব সাপ্লাইয়ের কাজ পেয়েছিল তারা ঠিক মতো দিতে না পারার কারণে এ সঙ্কট দেখা দিয়েছে। ঢামেক থেকে প্রেসারক্রিট করার পর তারা গত বৃহস্পতিবার কিছু রেড টিউব ঢামেকের প্যাথলজি বিভাগে সাপ্লাই দিয়েছে।’

পরিচালক জানান, ‘রেড টিউব নিয়ে রোগীদের ভোগান্তির জন্য দায়ী উক্ত কোম্পানিকে প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আমরা বাদ দেব। শীঘ্রই রেড টিউব নিরবিচ্ছিন্ন সাপ্লাইয়ের জন্য ঢামেক কর্তৃপক্ষ নতুন টেন্ডারের মাধ্যমে অন্য ভালো কোন কোম্পানিকে কাজ দিবে।’

ঢামেক প্যাথলজি বিভাগে শীঘ্রই রেড টিউব সঙ্কট কেটে যাবে বলে আস্বস্ত করেন পরিচালক।