রংপুর সিটির কোটি টাকার আটটি যানবাহন ৫ লাখ টাকায় নিলামে বিক্রি

রংপুর সিটি করপোরেশনের যান্ত্রিক শাখায় চলছে নানা অনিয়ম দুর্নীতি ও লুটপাট। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অমান্য করে দুই দফা কমিটি পরিবর্তন করে ৮টি গাড়ি ও রোলারকে অকেজো দেখিয়ে দরপত্র আহ্বান ছাড়াই কোটি টাকা মূল্যের যানবাহন মাত্র পৌনে ৫ লাখ টাকায় গোপনে বিক্রি দেয়া হয়েছে। ঘটনাটিকে ধামাচাপা দিতে ভুয়া কোটেশন আহ্বান করা এবং প্রতিটি কোটেশনে ২ থেকে ৩ জনকে অংশ নেয়া দেখানো হয়েছে। এ ঘটনার মধ্যদিয়ে সরকারের বিপুল পরিমাণ অর্থের ক্ষতি করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পুরো ঘটনাটি ঘটিয়েছেন সিটি করপোরেশনের যান্ত্রিক শাখার সহকারী প্রকৌশলী সাজ্জাদুর রহমান। তিনি কোটেশন প্রক্রিয়ায় চরম অনিয়মের কথা স্বীকার করে খবরটি পরিবেশন না করার জন্য এ প্রতিনিধিকে নানাভাবে চাপ দিয়েছেন।

সিটি করপোরেশনের যান্ত্রিক শাখা সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীন রংপুর সিটি করপোরেশনসহ দেশের সব সিটি করপোরেশন পরিচালিত হয়। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী কোন যানবাহন অকেজো ঘোষণা করতে হলে মন্ত্রণালয়ের নির্ধারণ করে দেয়া কমিটির মাধ্যমেই করতে হয়। কমিটি সরেজমিন পরীক্ষার পরেই অকেজো ঘোষণা, তারপর নিলামে বিক্রয়ের প্রশ্ন আসে। মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন শাখার (স্মারক নম্বর ২-/ ২০০৯/১৩৩৬ তারিখ ২৬/০৯/২০১০ইং অনুযায়ী) স্থানীয় সরকার বিভাগ এবং এর আওতাধীন দপ্তর বা সংস্থার সরকারি যানবাহন অকেজো ঘোষণার জন্য ৫ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি রয়েছে। এর আহ্বায়ক যুগ্ম সচিব প্রশাসন স্থানীয় সরকার বিভাগ, সভাপতি মোটর মেরামত সংক্রান্ত অভিজ্ঞ ঊর্ধ্বতন প্রকৌশলী একজন সদস্য, অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন উপসচিব, সংশ্লিষ্ট গাড়ির মালিক মালিকানা বিভাগের একজন কর্মকর্তা সদস্য এবং উপসচিব প্রশাসন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করবেন। গত ১৭/০২/২১ইং তারিখে রংপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাসহ অন্যান্য কর্মকর্তা এভাবেই ফাইল নোট দিয়ে উপস্থাপন করেন। অথচ এ মন্ত্রণালয়ের এ আদেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে গত ১৯ নভেম্বর ২০১৮ইং তারিখে রংপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে সভাপতি করে রংপুর সিটি করপোরেশনের তত্তাবধায়ক প্রকৌশলী, বিআরটিএ প্রতিনিধি, সহকারী প্রকৌশলী যান্ত্রিক সড়ক ও জনপথ বিভাগকে সদস্য এবং সিটি করপোরেশনের সহকারী প্রকৌশলী যান্ত্রিক প্রকৌশলীকে সদস্য সচিব করে একটি কমিটি গঠন করার প্রস্তাব দেয়া হয়। সেই প্রস্তাবে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সম্মত না হয়ে স্বাক্ষর করেননি। এরপর যান্ত্রিক শাখার সহকারী প্রকৌশলী ৮টি যানবাহনসহ অন্যান্য মালামাল পানির দামে বিক্রয় করার জন্য নানান কৌশল অবলম্বন করেন। শেষ পর্যন্ত সরকারের দেয়া সিদ্ধান্ত অমান্য করে মাহমুদুর রহমান প্যানেল মেয়রকে আহ্বায়ক করে ৩ কমিশনারকে সদস্য এবং বিআরটিএর একজন প্রতিনিধিকে সদস্য করে গাড়ি অকোজো ঘোষণা ও মূল্য নির্ধারণ করে দেয়া হয়। সেই কমিটি গত ২৯/১২/১৯ইং তারিখে সভা দেখিয়ে কোটি টাকার ৮টি যানবাহন পৌনে ৫ লাখ টাকায় কোটেশনের মাধ্যমে বিক্রয় করার অনুমতি প্রদান করে। যা তাদের ক্ষমতার বহির্ভূত এবং মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার পরিপন্থী বলে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা জানান।

মজার ব্যাপার ৮টি যানবাহনের মধ্যে একটি অ্যাম্বুলেন্সকে অকেজো দেখিয়ে মাত্র ৬০ হাজার টাকা দুটি জীপ গাড়ি যথাক্রমে ৮১ হাজার ও ৬২ হাজার টাকা একটি মিনি ট্রাক মাত্র ১ লাখ ২ হাজার টাকা একটি ট্রাক মাত্র ৯২ হাজার টাকায় একটি রোড রোলার মাত্র ৩২ হাজার টাকায় হ্যান্ড রোলার মাত্র ১২ হাজার টাকায় ও একটি মিনি ট্রাক ৩২ হাজার টাকায় অকেজো দেখিয়ে বিক্রি করে দেয়া হয়। ওই সংক্রান্ত ফাইল নোটে সহকারী প্রকৌশলী যান্ত্রিক সাজ্জাদুর রহমান ছাড়া রংপুর সিটি করপোরেশনের কোন কর্মকর্তা স্বাক্ষর করেননি। বরং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা যানবাহনগুলো নিলাম রুল অনুযায়ী বিক্রয় করার মতামত প্রদান করেন। শুধু তাই নয় সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা ৪/৩/২০ইং তারিখে ফাইল নোটে উল্লেখ করেন ইকুইপম্যান্ট অফ ভিকেল আইন অনুযায়ী নিলাম হয়েছে কিনা তার বিস্তারিত বিবরণ জানতে চেয়ে মতামত প্রদান করেন। এরপর গত ৯ মার্চ ২০২০ইং তারিখে ফাইল নোটে উল্লেখ করা হয় এ ঘটনার জন্য পরোক্ষাভাবে যান্ত্রিক শাখাকে দায়ী করে মতামত দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে মেয়র আবারও ১৮ মার্চ ২০২০ইং তারিখে নিলাম প্রক্রিয়া সঠিকভাবে হয়েছে কিনা জানতে চান। এর পরিপ্রেক্ষিতে যান্ত্রিক শাখার দুই কর্মকর্তা নিলাম প্রক্রিয়া সঠিক হয়েছে বলে মতামত দেন। কিন্তু সেখানে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাসহ কেউ স্বাক্ষর করেনি।

এদিকে সিটি করপোরেশনের যান্ত্রিক ও প্রকৌশল শাখার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা এ প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন যেখানে অকেজো ঘোষণার ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ের একটি কমিটি করে দেয়া হয়েছে সেই বিষয়টি যান্ত্রিক শাখার সহকারী প্রকৌশলী ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হবার জন্যই পানির দামে অকেজো দেখিয়ে কোটি টাকার মালামাল পৌনে ৫ লাখ টাকায় বিক্রি করিয়েছেন।

এ ব্যাপারে নির্বাহী প্রকৌশলী আলী আযম তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এমদাদ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা এ ব্যাপারে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি বরং বলেছেন, মেয়রের অনুমতি ছাড়া কোন কথা বলা যাবে না। অপরদিকে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনিও কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।

সার্বিক বিষয়ে জানতে যান্ত্রিক শাখার সহকারী প্রকৌশলী সাজ্জাদুর রহমানের সঙ্গে কথা বলার জন্য তার চেম্বারে গেলে তিনি ভেতর থেকে দরজা বন্ধ রেখে পিয়ন দিয়ে বলে পাঠান তিনি নেই। ফোন করা হলেও ফোন রিসিভ করেননি। এভাবে ৫ দিন তার সঙ্গে দেখা করে বক্তব্য জানার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এমদাদ হোসেনের কাছে বিষয়টি জানান, তিনি নিজেও ফোন করলে ফোন ধরেননি ওই কর্মকর্তা। পরে তার মোবাইল ফোনে ম্যাসেজ দিলে ফোন ধরেন। পরে তার সঙ্গে দেখা করলে তিনি যানবাহন বিক্রির প্রক্রিয়ায় অনিয়ম হয়েছে স্বীকার করে বলেন, আমরা মেয়রের অধীনে চাকরি করি, তার আদেশ অমান্য করতে পারি না। এক পর্যায়ে খবরটি না করার জন্য নিজের চেয়ার থেকে উঠে তার দরজায় এসে এ প্রতিনিধির কাছে অনুনয়-বিনয় ও বার বার পকেটে হাত দিচ্ছিলেন। পক্ষান্তরে টাকা দিয়ে তিনি ম্যানেজ করতে চাইছিলেন।

এ ব্যাপারে সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফার মোবাইলে ফোনে ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

রবিবার, ২১ নভেম্বর ২০২১ , ৬ অগ্রহায়ণ ১৪২৮ ১৫ রবিউস সানি ১৪৪৩

রংপুর সিটির কোটি টাকার আটটি যানবাহন ৫ লাখ টাকায় নিলামে বিক্রি

লিয়াকত আলী বাদল, রংপুর

রংপুর সিটি করপোরেশনের যান্ত্রিক শাখায় চলছে নানা অনিয়ম দুর্নীতি ও লুটপাট। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অমান্য করে দুই দফা কমিটি পরিবর্তন করে ৮টি গাড়ি ও রোলারকে অকেজো দেখিয়ে দরপত্র আহ্বান ছাড়াই কোটি টাকা মূল্যের যানবাহন মাত্র পৌনে ৫ লাখ টাকায় গোপনে বিক্রি দেয়া হয়েছে। ঘটনাটিকে ধামাচাপা দিতে ভুয়া কোটেশন আহ্বান করা এবং প্রতিটি কোটেশনে ২ থেকে ৩ জনকে অংশ নেয়া দেখানো হয়েছে। এ ঘটনার মধ্যদিয়ে সরকারের বিপুল পরিমাণ অর্থের ক্ষতি করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পুরো ঘটনাটি ঘটিয়েছেন সিটি করপোরেশনের যান্ত্রিক শাখার সহকারী প্রকৌশলী সাজ্জাদুর রহমান। তিনি কোটেশন প্রক্রিয়ায় চরম অনিয়মের কথা স্বীকার করে খবরটি পরিবেশন না করার জন্য এ প্রতিনিধিকে নানাভাবে চাপ দিয়েছেন।

সিটি করপোরেশনের যান্ত্রিক শাখা সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীন রংপুর সিটি করপোরেশনসহ দেশের সব সিটি করপোরেশন পরিচালিত হয়। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী কোন যানবাহন অকেজো ঘোষণা করতে হলে মন্ত্রণালয়ের নির্ধারণ করে দেয়া কমিটির মাধ্যমেই করতে হয়। কমিটি সরেজমিন পরীক্ষার পরেই অকেজো ঘোষণা, তারপর নিলামে বিক্রয়ের প্রশ্ন আসে। মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন শাখার (স্মারক নম্বর ২-/ ২০০৯/১৩৩৬ তারিখ ২৬/০৯/২০১০ইং অনুযায়ী) স্থানীয় সরকার বিভাগ এবং এর আওতাধীন দপ্তর বা সংস্থার সরকারি যানবাহন অকেজো ঘোষণার জন্য ৫ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি রয়েছে। এর আহ্বায়ক যুগ্ম সচিব প্রশাসন স্থানীয় সরকার বিভাগ, সভাপতি মোটর মেরামত সংক্রান্ত অভিজ্ঞ ঊর্ধ্বতন প্রকৌশলী একজন সদস্য, অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন উপসচিব, সংশ্লিষ্ট গাড়ির মালিক মালিকানা বিভাগের একজন কর্মকর্তা সদস্য এবং উপসচিব প্রশাসন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করবেন। গত ১৭/০২/২১ইং তারিখে রংপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাসহ অন্যান্য কর্মকর্তা এভাবেই ফাইল নোট দিয়ে উপস্থাপন করেন। অথচ এ মন্ত্রণালয়ের এ আদেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে গত ১৯ নভেম্বর ২০১৮ইং তারিখে রংপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে সভাপতি করে রংপুর সিটি করপোরেশনের তত্তাবধায়ক প্রকৌশলী, বিআরটিএ প্রতিনিধি, সহকারী প্রকৌশলী যান্ত্রিক সড়ক ও জনপথ বিভাগকে সদস্য এবং সিটি করপোরেশনের সহকারী প্রকৌশলী যান্ত্রিক প্রকৌশলীকে সদস্য সচিব করে একটি কমিটি গঠন করার প্রস্তাব দেয়া হয়। সেই প্রস্তাবে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সম্মত না হয়ে স্বাক্ষর করেননি। এরপর যান্ত্রিক শাখার সহকারী প্রকৌশলী ৮টি যানবাহনসহ অন্যান্য মালামাল পানির দামে বিক্রয় করার জন্য নানান কৌশল অবলম্বন করেন। শেষ পর্যন্ত সরকারের দেয়া সিদ্ধান্ত অমান্য করে মাহমুদুর রহমান প্যানেল মেয়রকে আহ্বায়ক করে ৩ কমিশনারকে সদস্য এবং বিআরটিএর একজন প্রতিনিধিকে সদস্য করে গাড়ি অকোজো ঘোষণা ও মূল্য নির্ধারণ করে দেয়া হয়। সেই কমিটি গত ২৯/১২/১৯ইং তারিখে সভা দেখিয়ে কোটি টাকার ৮টি যানবাহন পৌনে ৫ লাখ টাকায় কোটেশনের মাধ্যমে বিক্রয় করার অনুমতি প্রদান করে। যা তাদের ক্ষমতার বহির্ভূত এবং মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার পরিপন্থী বলে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা জানান।

মজার ব্যাপার ৮টি যানবাহনের মধ্যে একটি অ্যাম্বুলেন্সকে অকেজো দেখিয়ে মাত্র ৬০ হাজার টাকা দুটি জীপ গাড়ি যথাক্রমে ৮১ হাজার ও ৬২ হাজার টাকা একটি মিনি ট্রাক মাত্র ১ লাখ ২ হাজার টাকা একটি ট্রাক মাত্র ৯২ হাজার টাকায় একটি রোড রোলার মাত্র ৩২ হাজার টাকায় হ্যান্ড রোলার মাত্র ১২ হাজার টাকায় ও একটি মিনি ট্রাক ৩২ হাজার টাকায় অকেজো দেখিয়ে বিক্রি করে দেয়া হয়। ওই সংক্রান্ত ফাইল নোটে সহকারী প্রকৌশলী যান্ত্রিক সাজ্জাদুর রহমান ছাড়া রংপুর সিটি করপোরেশনের কোন কর্মকর্তা স্বাক্ষর করেননি। বরং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা যানবাহনগুলো নিলাম রুল অনুযায়ী বিক্রয় করার মতামত প্রদান করেন। শুধু তাই নয় সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা ৪/৩/২০ইং তারিখে ফাইল নোটে উল্লেখ করেন ইকুইপম্যান্ট অফ ভিকেল আইন অনুযায়ী নিলাম হয়েছে কিনা তার বিস্তারিত বিবরণ জানতে চেয়ে মতামত প্রদান করেন। এরপর গত ৯ মার্চ ২০২০ইং তারিখে ফাইল নোটে উল্লেখ করা হয় এ ঘটনার জন্য পরোক্ষাভাবে যান্ত্রিক শাখাকে দায়ী করে মতামত দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে মেয়র আবারও ১৮ মার্চ ২০২০ইং তারিখে নিলাম প্রক্রিয়া সঠিকভাবে হয়েছে কিনা জানতে চান। এর পরিপ্রেক্ষিতে যান্ত্রিক শাখার দুই কর্মকর্তা নিলাম প্রক্রিয়া সঠিক হয়েছে বলে মতামত দেন। কিন্তু সেখানে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাসহ কেউ স্বাক্ষর করেনি।

এদিকে সিটি করপোরেশনের যান্ত্রিক ও প্রকৌশল শাখার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা এ প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন যেখানে অকেজো ঘোষণার ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ের একটি কমিটি করে দেয়া হয়েছে সেই বিষয়টি যান্ত্রিক শাখার সহকারী প্রকৌশলী ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হবার জন্যই পানির দামে অকেজো দেখিয়ে কোটি টাকার মালামাল পৌনে ৫ লাখ টাকায় বিক্রি করিয়েছেন।

এ ব্যাপারে নির্বাহী প্রকৌশলী আলী আযম তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এমদাদ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা এ ব্যাপারে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি বরং বলেছেন, মেয়রের অনুমতি ছাড়া কোন কথা বলা যাবে না। অপরদিকে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনিও কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।

সার্বিক বিষয়ে জানতে যান্ত্রিক শাখার সহকারী প্রকৌশলী সাজ্জাদুর রহমানের সঙ্গে কথা বলার জন্য তার চেম্বারে গেলে তিনি ভেতর থেকে দরজা বন্ধ রেখে পিয়ন দিয়ে বলে পাঠান তিনি নেই। ফোন করা হলেও ফোন রিসিভ করেননি। এভাবে ৫ দিন তার সঙ্গে দেখা করে বক্তব্য জানার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এমদাদ হোসেনের কাছে বিষয়টি জানান, তিনি নিজেও ফোন করলে ফোন ধরেননি ওই কর্মকর্তা। পরে তার মোবাইল ফোনে ম্যাসেজ দিলে ফোন ধরেন। পরে তার সঙ্গে দেখা করলে তিনি যানবাহন বিক্রির প্রক্রিয়ায় অনিয়ম হয়েছে স্বীকার করে বলেন, আমরা মেয়রের অধীনে চাকরি করি, তার আদেশ অমান্য করতে পারি না। এক পর্যায়ে খবরটি না করার জন্য নিজের চেয়ার থেকে উঠে তার দরজায় এসে এ প্রতিনিধির কাছে অনুনয়-বিনয় ও বার বার পকেটে হাত দিচ্ছিলেন। পক্ষান্তরে টাকা দিয়ে তিনি ম্যানেজ করতে চাইছিলেন।

এ ব্যাপারে সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফার মোবাইলে ফোনে ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।