পর্যটন মৌসুমে কক্সবাজারে ভোগান্তি রাস্তায় খোঁড়াখুঁড়ি, শহরজুড়ে ধুলা

পর্যটন মৌসুমে কক্সবাজারের বিভিন্ন পর্যটন স্পটে হাজার হাজার পর্যটক চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। করোনা মহামারীর প্রভাব কিছুটা কমার কারণে অনেক পর্যটক চলতি (নভেম্বর) মাসের শুরুতে পরিবার নিয়ে কক্সবাজারে ঘুরতে গিয়ে এ বিপাকে পড়েছেন।

পর্যটকদের দুঃখের কথা শোনার কেউ নেই। অনেকেই নিদিষ্ট সময়ের আগে কক্সবাজার থেকে ফিরে আসছেন। সমুদ্র সৈকতে নানা পণ্য বিক্রেতা থেকে শুরু করে ভিক্ষুকের যন্ত্রণায় দাঁড়িয়ে বা বসিয়ে থাকা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। প্রতি মিনিটে (আপা-ভাই) ছবি তুলবেন গ্রুপের (ফটোগ্রাফারদের) দৌরাত্বে অতিষ্ঠ পর্যটকরা। অভিযোগ করেছে, যারা লাইসেন্স নিয়েছেন তারা লাইসেন্স ভাড়া দিয়েছেন। এক লাইসেন্সে অনেকে ছবি তোলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

সরজমিনে দেখা গেছে, খোঁড়াখুঁড়ির কারণে সুগন্ধা বিচ থেকে বিভিন্নস্থানে ধুলাবালিতে পর্যটকদের যাতায়াতে মারাত্বক সমস্যা হচ্ছে। মেরিনড্রাইভ সড়কের হিমছড়ি, ইনানী বিচ ও পাটুয়ারটেক পাথরের রানী বিচের কাছে প্রধান রাস্তায় গাড়ি পার্কিংয়ের নামে টাকা আদায় করা হচ্ছে। গাড়ি থামার আগে টাকা নিচ্ছে। পর্যটকরা ৮শ’ থেকে ১২শ’ টাকা গাড়ি ভাড়া দেয়ার পরও সড়কে গাড়ি থামলে বাড়তি টাকা নেয়া হচ্ছে। ভাড়ার বাহিরে অতিরিক্ত ওই টাকা পর্যটকদের দিতে হয়। কেন টাকা টাকা নিচ্ছেন এ কথা জিজ্ঞাসা করলেও কেউ কথা বলছেন না।

কক্সবাজার মেরিনড্রাইভ সড়কে প্রকাশ্যে এ টাকা নেয়া হচ্ছে। কিন্তু সেখানে কোন পার্কিংয়ের ব্যবস্থা নেই। ডিজিটাল যুগে তিনটি পয়েন্টে টাকা নেয়ার বিষয় কেউ সঠিকভাবে কিছু বলতে পারছে না।

ট্যুরিস্ট পুলিশের কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, গাড়ি পার্কিংয়ের কোন ব্যবস্থা নেই। রাস্তার পাশে গাড়ি থামলে (ইজিবাইম ও টমটম) টাকা নেয়ার বিষয় তারা অবগত আছেন। কিন্তু সেখানে কি কারণে টাকা নিচ্ছে। টাকা নেয়ার পক্ষে কোন যুক্তি নেই। কোন গাড়ি থেকে কত টাকা নিবে। কেন নিবে তার দিক নির্দেশনা (সাইন বোর্ড) বলে কিছুই নেই। এটার সুনির্দিষ্ট নিয়ম বা নীতিমালা করা দরকার। তাহলে পর্যটকদের ভোগান্তি কমবে বলে তারা মন্তব্য করেন।

সমুদ্র সৈকতে সন্ধ্যার পরে দেখা দেয় বিশৃঙ্খলা। শিশুসহ নানা বয়সের মানুষ সৈকতে বেড়াতে যায়। কিন্তু সৈকতে নামার আগে ফটোগ্রাফাররা নানাভাবে বিরক্ত করেন। ছবি তুলতে না চাইলে তারা চাপ সৃষ্টি করেন। এমনকি রাস্তায় দাঁড়িয়ে আগেই একজন পর্যটককে কয়েকজন মিলে ঘেরাও করে ছবি তোলার কথা বলেন।

অভিযোগ রয়েছে, একজন লাইসেন্স নেয়। অন্য ৮ থেকে ১০ জন ছবি তোলে। তাদের পরিচয়পত্র থাকে না। তাদের স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী নিয়ন্ত্রণ করেন। তারা ছবি তুলে অতিরিক্ত টাকা আদায় করেন। নিয়ম কানুন নেই। এরপর পর্যটকরা জিম্মি হয়ে পড়েন।

রাতে কিছু কিছু পর্যটক সৈকতে বসে সিগারেটসসহ নানা নেশা করেন। তাদের নেশার কারণে শিশু ও নারী পর্যটকরা অতিষ্ঠ। কিছু না বলে অন্যস্থানে চলে যান। আবার পুরো সৈকত জুড়ে ধুলাবালু ছাড়া আর কিছুই নেই। ধুলা ও গবাদি পশু (গরুর পাল) সৈকতে দেখা যায়। পর্যটকদের ফেলে দেয়া কলার খোসা ও বাদামের খোসা পশু গুলো খেয়ে থাকে।

সুগন্ধা ও কলাতলী বিচে ডিম বিক্রেতা, বাদাম বিক্রেতা ঝিনুক মালা বিক্রেতা বেশিরভাগই শিশু। যাদের বয়স ১০ থেকে ১২ বছর হবে। ওই সব ক্ষুদ্র বিক্রেতারা খুবই অসহায়। তারা স্থানীয় দরিদ্র পরিবারের সন্তান। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সৈকতে অবস্থান নিয়ে কেনাবেচা করেন। কিছু না কিনলেও তাদের টাকা দিতে হয়। আবার কেউ মাথায় হাত দিয়ে ম্যাসেজ করে দিয়ে টাকা চান। এ সব দৃশ্য দেখে অনেক পর্যটকের মন খারাপ হয়ে যায়। কেউ কেউ বিরক্ত হন।

কয়েকজন পর্যটক অভিযোগ করে বলেন, গত ১০ বছরেও সমুদ্র সৈকতের কোন উন্নয়ন হয়নি। যার কারণে সৈকতে বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে আর পর্যটকরা কক্সবাজারে বেড়াতে গিয়ে ঘাঁটে-ঘাঁটে এভাবে ভোগান্তির শিকার হন।

করোনা মহামারীর পর এ বছর পর্যটন জেলা কক্সবাজারে জিনিসপত্রের মূল্য নিয়ন্ত্রণহীন। সৈকতে বসে প্রতিটি ডাব ছোট হলে ৭০ টাকা। আর একটু বড় হলে ১শ’ থেকে দেড়শ’ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে। হোটেল ভাড়ার কোন নীতিমালা নেই। পর্যটকের চাপ বেশি হলে হোটেল ভাড়া বেড়ে যায়। বিভিন্ন পর্যটন স্পট বা সৈকতে দোকান বসানোর কোন নীতিমালা নেই। যে যেখানে ইচ্ছা নিজেদের প্রভাব বিস্তার করে দোকান বসিয়ে ভাড়া দিচ্ছেন। এমনকি বিচ নিয়ন্ত্রণ কমিটির কেউ কেউ প্রভাব বিস্তার করে নিজেরাই দোকান বসাচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

এ সম্পর্কে ট্যুরিস্ট পুলিশের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা সংবাদকে জানান, পর্যটকদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশ সর্বক্ষণ নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন। পর্যটকরা যাতে নিরাপদে কক্সবাজার ও সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে পারেন তার জন্য তারা বিভিন্ন স্পটে দায়িত্ব পালন করেন।

হিমছড়ি, ইনানী ও পাটুয়ারটেক (পাথরের রানী বিচ) যারা ইজারা নিয়ে টাকা আদায় করছেন। সেখানে কোন সাইনবোর্ড নেই। পার্কিংয়ের ব্যবস্থা নেই। রাস্তায় পর্যটকদের গাড়ি পার্কিং করলে পর্যটককে টাকা (৩০ টাকা) দিতে হবে কেন। তিনটি পয়েন্টে মোট ৯০ টাকা নেয়া হয় অথচ পার্কিংয়ের ব্যবস্থা নেই। এটার একটা সুনির্দিষ্ট নীতিমালা থাকা দরকার বলে তারা মনে করেন।

আর সৈকতে ছোট শিশুদের জিনিসপত্র কেনাবেচা দেখলে পর্যটকদের মনস্তাত্বিক সমস্যা হয়। এসব কারণে সৈকতে যাওয়ার ব্যাপারে এখনই নিয়ম-কানুন করলে পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়বে। নানা কারণে এখন বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা কমে গেছে। কক্সবাজারে এনজিও করে এমন কিছু বিদেশি নাগরিক ছাড়া এখন বিদেশি পর্যটক নানা অব্যবস্থাপনার কারণে আসে না বলে অভিযোগ রয়েছে।

ট্যুরিস্ট পুলিশ সদর দপ্তরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সংবাদকে বলেন, বাংলাদেশ পর্যটন শিল্পের অপার সম্ভাবনার দেশ। দেশি বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়াতে পর্যটন খাতকে আরও উন্নত করতে হবে। সবচেয়ে আগে পর্যটকদের নিরাপত্তা ও সেবার মান আরও বাড়াতে হবে। এ লক্ষ্যে ট্যুরিস্ট পুলিশ কাজ করছেন। সবাই এগিয়ে এলে বাংলাদেশে পর্যটনের বিশাল সম্ভাবনা দেখা দিবে।

কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কর্নেল (অব) ফোরকান আহমেদ সংবাদকে মুঠোফোনে জানান, কক্সবাজার উন্নয়নে তারা বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ করছেন। আগামী ২০২২ সালের জুন মাস পর্যন্ত প্রকল্পগুলোর ৭০ ভাগ কাজ শেষ হবে। করোনাভাইরাস ও বর্ষাসহ নানা কারণে কিছুটা সমস্যা হয়েছিল। এখন পুরোদমে কাজ চলছে। পৌরসভা, সড়ক ও জনপদ বিভাগের উন্নয়নমূলক কাজ করছেন। সবাই আন্তরিক হলে দ্রুত উন্নতি হবে বলে তিনি আশাবাদী।

রবিবার, ২১ নভেম্বর ২০২১ , ৬ অগ্রহায়ণ ১৪২৮ ১৫ রবিউস সানি ১৪৪৩

পর্যটন মৌসুমে কক্সবাজারে ভোগান্তি রাস্তায় খোঁড়াখুঁড়ি, শহরজুড়ে ধুলা

বাকী বিল্লাহ, কক্সবাজার থেকে ফিরে

পর্যটন মৌসুমে কক্সবাজারের বিভিন্ন পর্যটন স্পটে হাজার হাজার পর্যটক চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। করোনা মহামারীর প্রভাব কিছুটা কমার কারণে অনেক পর্যটক চলতি (নভেম্বর) মাসের শুরুতে পরিবার নিয়ে কক্সবাজারে ঘুরতে গিয়ে এ বিপাকে পড়েছেন।

পর্যটকদের দুঃখের কথা শোনার কেউ নেই। অনেকেই নিদিষ্ট সময়ের আগে কক্সবাজার থেকে ফিরে আসছেন। সমুদ্র সৈকতে নানা পণ্য বিক্রেতা থেকে শুরু করে ভিক্ষুকের যন্ত্রণায় দাঁড়িয়ে বা বসিয়ে থাকা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। প্রতি মিনিটে (আপা-ভাই) ছবি তুলবেন গ্রুপের (ফটোগ্রাফারদের) দৌরাত্বে অতিষ্ঠ পর্যটকরা। অভিযোগ করেছে, যারা লাইসেন্স নিয়েছেন তারা লাইসেন্স ভাড়া দিয়েছেন। এক লাইসেন্সে অনেকে ছবি তোলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

সরজমিনে দেখা গেছে, খোঁড়াখুঁড়ির কারণে সুগন্ধা বিচ থেকে বিভিন্নস্থানে ধুলাবালিতে পর্যটকদের যাতায়াতে মারাত্বক সমস্যা হচ্ছে। মেরিনড্রাইভ সড়কের হিমছড়ি, ইনানী বিচ ও পাটুয়ারটেক পাথরের রানী বিচের কাছে প্রধান রাস্তায় গাড়ি পার্কিংয়ের নামে টাকা আদায় করা হচ্ছে। গাড়ি থামার আগে টাকা নিচ্ছে। পর্যটকরা ৮শ’ থেকে ১২শ’ টাকা গাড়ি ভাড়া দেয়ার পরও সড়কে গাড়ি থামলে বাড়তি টাকা নেয়া হচ্ছে। ভাড়ার বাহিরে অতিরিক্ত ওই টাকা পর্যটকদের দিতে হয়। কেন টাকা টাকা নিচ্ছেন এ কথা জিজ্ঞাসা করলেও কেউ কথা বলছেন না।

কক্সবাজার মেরিনড্রাইভ সড়কে প্রকাশ্যে এ টাকা নেয়া হচ্ছে। কিন্তু সেখানে কোন পার্কিংয়ের ব্যবস্থা নেই। ডিজিটাল যুগে তিনটি পয়েন্টে টাকা নেয়ার বিষয় কেউ সঠিকভাবে কিছু বলতে পারছে না।

ট্যুরিস্ট পুলিশের কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, গাড়ি পার্কিংয়ের কোন ব্যবস্থা নেই। রাস্তার পাশে গাড়ি থামলে (ইজিবাইম ও টমটম) টাকা নেয়ার বিষয় তারা অবগত আছেন। কিন্তু সেখানে কি কারণে টাকা নিচ্ছে। টাকা নেয়ার পক্ষে কোন যুক্তি নেই। কোন গাড়ি থেকে কত টাকা নিবে। কেন নিবে তার দিক নির্দেশনা (সাইন বোর্ড) বলে কিছুই নেই। এটার সুনির্দিষ্ট নিয়ম বা নীতিমালা করা দরকার। তাহলে পর্যটকদের ভোগান্তি কমবে বলে তারা মন্তব্য করেন।

সমুদ্র সৈকতে সন্ধ্যার পরে দেখা দেয় বিশৃঙ্খলা। শিশুসহ নানা বয়সের মানুষ সৈকতে বেড়াতে যায়। কিন্তু সৈকতে নামার আগে ফটোগ্রাফাররা নানাভাবে বিরক্ত করেন। ছবি তুলতে না চাইলে তারা চাপ সৃষ্টি করেন। এমনকি রাস্তায় দাঁড়িয়ে আগেই একজন পর্যটককে কয়েকজন মিলে ঘেরাও করে ছবি তোলার কথা বলেন।

অভিযোগ রয়েছে, একজন লাইসেন্স নেয়। অন্য ৮ থেকে ১০ জন ছবি তোলে। তাদের পরিচয়পত্র থাকে না। তাদের স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী নিয়ন্ত্রণ করেন। তারা ছবি তুলে অতিরিক্ত টাকা আদায় করেন। নিয়ম কানুন নেই। এরপর পর্যটকরা জিম্মি হয়ে পড়েন।

রাতে কিছু কিছু পর্যটক সৈকতে বসে সিগারেটসসহ নানা নেশা করেন। তাদের নেশার কারণে শিশু ও নারী পর্যটকরা অতিষ্ঠ। কিছু না বলে অন্যস্থানে চলে যান। আবার পুরো সৈকত জুড়ে ধুলাবালু ছাড়া আর কিছুই নেই। ধুলা ও গবাদি পশু (গরুর পাল) সৈকতে দেখা যায়। পর্যটকদের ফেলে দেয়া কলার খোসা ও বাদামের খোসা পশু গুলো খেয়ে থাকে।

সুগন্ধা ও কলাতলী বিচে ডিম বিক্রেতা, বাদাম বিক্রেতা ঝিনুক মালা বিক্রেতা বেশিরভাগই শিশু। যাদের বয়স ১০ থেকে ১২ বছর হবে। ওই সব ক্ষুদ্র বিক্রেতারা খুবই অসহায়। তারা স্থানীয় দরিদ্র পরিবারের সন্তান। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সৈকতে অবস্থান নিয়ে কেনাবেচা করেন। কিছু না কিনলেও তাদের টাকা দিতে হয়। আবার কেউ মাথায় হাত দিয়ে ম্যাসেজ করে দিয়ে টাকা চান। এ সব দৃশ্য দেখে অনেক পর্যটকের মন খারাপ হয়ে যায়। কেউ কেউ বিরক্ত হন।

কয়েকজন পর্যটক অভিযোগ করে বলেন, গত ১০ বছরেও সমুদ্র সৈকতের কোন উন্নয়ন হয়নি। যার কারণে সৈকতে বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে আর পর্যটকরা কক্সবাজারে বেড়াতে গিয়ে ঘাঁটে-ঘাঁটে এভাবে ভোগান্তির শিকার হন।

করোনা মহামারীর পর এ বছর পর্যটন জেলা কক্সবাজারে জিনিসপত্রের মূল্য নিয়ন্ত্রণহীন। সৈকতে বসে প্রতিটি ডাব ছোট হলে ৭০ টাকা। আর একটু বড় হলে ১শ’ থেকে দেড়শ’ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে। হোটেল ভাড়ার কোন নীতিমালা নেই। পর্যটকের চাপ বেশি হলে হোটেল ভাড়া বেড়ে যায়। বিভিন্ন পর্যটন স্পট বা সৈকতে দোকান বসানোর কোন নীতিমালা নেই। যে যেখানে ইচ্ছা নিজেদের প্রভাব বিস্তার করে দোকান বসিয়ে ভাড়া দিচ্ছেন। এমনকি বিচ নিয়ন্ত্রণ কমিটির কেউ কেউ প্রভাব বিস্তার করে নিজেরাই দোকান বসাচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

এ সম্পর্কে ট্যুরিস্ট পুলিশের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা সংবাদকে জানান, পর্যটকদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশ সর্বক্ষণ নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন। পর্যটকরা যাতে নিরাপদে কক্সবাজার ও সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে পারেন তার জন্য তারা বিভিন্ন স্পটে দায়িত্ব পালন করেন।

হিমছড়ি, ইনানী ও পাটুয়ারটেক (পাথরের রানী বিচ) যারা ইজারা নিয়ে টাকা আদায় করছেন। সেখানে কোন সাইনবোর্ড নেই। পার্কিংয়ের ব্যবস্থা নেই। রাস্তায় পর্যটকদের গাড়ি পার্কিং করলে পর্যটককে টাকা (৩০ টাকা) দিতে হবে কেন। তিনটি পয়েন্টে মোট ৯০ টাকা নেয়া হয় অথচ পার্কিংয়ের ব্যবস্থা নেই। এটার একটা সুনির্দিষ্ট নীতিমালা থাকা দরকার বলে তারা মনে করেন।

আর সৈকতে ছোট শিশুদের জিনিসপত্র কেনাবেচা দেখলে পর্যটকদের মনস্তাত্বিক সমস্যা হয়। এসব কারণে সৈকতে যাওয়ার ব্যাপারে এখনই নিয়ম-কানুন করলে পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়বে। নানা কারণে এখন বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা কমে গেছে। কক্সবাজারে এনজিও করে এমন কিছু বিদেশি নাগরিক ছাড়া এখন বিদেশি পর্যটক নানা অব্যবস্থাপনার কারণে আসে না বলে অভিযোগ রয়েছে।

ট্যুরিস্ট পুলিশ সদর দপ্তরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সংবাদকে বলেন, বাংলাদেশ পর্যটন শিল্পের অপার সম্ভাবনার দেশ। দেশি বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়াতে পর্যটন খাতকে আরও উন্নত করতে হবে। সবচেয়ে আগে পর্যটকদের নিরাপত্তা ও সেবার মান আরও বাড়াতে হবে। এ লক্ষ্যে ট্যুরিস্ট পুলিশ কাজ করছেন। সবাই এগিয়ে এলে বাংলাদেশে পর্যটনের বিশাল সম্ভাবনা দেখা দিবে।

কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কর্নেল (অব) ফোরকান আহমেদ সংবাদকে মুঠোফোনে জানান, কক্সবাজার উন্নয়নে তারা বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ করছেন। আগামী ২০২২ সালের জুন মাস পর্যন্ত প্রকল্পগুলোর ৭০ ভাগ কাজ শেষ হবে। করোনাভাইরাস ও বর্ষাসহ নানা কারণে কিছুটা সমস্যা হয়েছিল। এখন পুরোদমে কাজ চলছে। পৌরসভা, সড়ক ও জনপদ বিভাগের উন্নয়নমূলক কাজ করছেন। সবাই আন্তরিক হলে দ্রুত উন্নতি হবে বলে তিনি আশাবাদী।