কালীগঞ্জে করোনার ঘাটতি পুষিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা নাকফুল ব্যবসায়ীদের

সারাদেশের স্বর্ণালঙ্কারের বাজারে ঝিনাইদহ কালীগঞ্জের কারিগরদের তৈরি নাকফুলের কদর দীর্ঘদিনের। করোনা বিস্তারে নাকফুল কিনতে অন্য জেলা থেকে আসতো না কোন পাইকারা। প্রায় বন্ধ হয়ে যায় কারখানা। বেকার হয়ে পড়ে কমপক্ষে সাড়ে ৩ হাজারের অধিক কারিগর। কারখানার মালিকেরা হারায় পুঁজি। সম্প্রতি ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় মালিক শ্রমিক উভয়ই ব্যস্ত।

স্বর্ণকারদের সূত্র জানায়, এখানকার নাকফুলের চাহিদা সারাদেশে। ঢাকাসহ দেশের বড় বড় শহরের স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের পাইকারেরা এসে এখানকার ঐতিহ্যবাহী নাকফুল কিনে নিয়ে যান। এটা অনেক পূর্ব থেকে বয়ে আসছে। যা করোনার কারণে দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর ধরে বন্ধ ছিল। এখানকার নাকফুলের নক্সা অত্যন্ত আকর্ষণীয়। অসংখ্য নক্সার নাকফুল কারিগরেরা তৈরি করে রেখে দেয় যে মডেলগুলো পছন্দ করে কিনে নিয়ে যান। সব ধরনের নাকফুলের চাহিদা রয়েছে তবে আড়াইশ থেকে এক হাজার টাকা পর্যন্ত মূল্যের নাকফুল ঢাকার পাইকারেরা বেশি পছন্দ করেন।

স্বর্ণ কারিগর কালীগঞ্জ পৌরসভার কলেজপাড়া গ্রামের শুশান্ত বিশ^াস জানান, প্রায় ২০ বছর আগে থেকে নাকফুল তৈরির কাজ করে আসছেন। প্রতিদিন এ কাজ করে সাড়ে ৪শ’ থেকে ৫শ’ টাকা আয় করেন। তা দিয়ে ৫ সদস্যের সংসার চালাতে হয় তার। করোনার সময়ে এ এলাকার নাকফুলের সমস্ত কারখানা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। সে সময়ে কোন অলঙ্কার বিক্রিও ছিল না।

এখন আবার তাদের কাজ আস্তে আস্তে স্বাভাবিক পর্যায়ে যাচ্ছে।

জিহাদ হোসেন নামের আরেক কারিগর জানান, সারাদেশে তাদের তৈরি বিশেষ নকশা করা নাকফুলের চাহিদা রয়েছে। তারা মজুরি ভিত্তিতে কাজ করেন। যে কারণে কারখানা বন্ধ থাকলে তাদের রোজগার থাকে না। তখন তাদের অনাটন শুরু হয়।

কালীগঞ্জ উপজেলা কালীগঞ্জ উপজেলা জুয়েলারি মালিক সমিতির (বাজুস) সভাপতির ওসমান আলী জানান, করোনার সময়ে তাদের পেশাজীবীদের পর্যাপ্ত ক্ষতি হয়েছে। কারণ এ সময়ে সব ধরনের মানুষ করোনার ভয়ে ভীতু ছিল। সৌখিন অলঙ্কার কেনাকাটার কথা কেউ ভাবতই না। তাই সৌখিন এ খাতে বেশি ক্ষতি হয়েছে। অনেক স্বর্ণাকার মালিক অভাবে পড়ে দায়দেনার শিকার হয়েছেন। এ ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে তাদের বেশ সময় লাগবে। তারপরও নতুন উদ্যামে তারা আবার ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া জেরিন জানন, আমি নতুন যোগদান করেছি তবে কর্মহীন সকল শ্রমিককে সহযোগিতা করা হবে। আমি স্বর্ণ কারিগরদের জন্য সরকারি সহযোগিতার ব্যবস্থা করব।

বুধবার, ২৪ নভেম্বর ২০২১ , ৯ অগ্রহায়ণ ১৪২৮ ১৮ রবিউস সানি ১৪৪৩

কালীগঞ্জে করোনার ঘাটতি পুষিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা নাকফুল ব্যবসায়ীদের

সাবজাল হোসেন, কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ)

image

সারাদেশের স্বর্ণালঙ্কারের বাজারে ঝিনাইদহ কালীগঞ্জের কারিগরদের তৈরি নাকফুলের কদর দীর্ঘদিনের। করোনা বিস্তারে নাকফুল কিনতে অন্য জেলা থেকে আসতো না কোন পাইকারা। প্রায় বন্ধ হয়ে যায় কারখানা। বেকার হয়ে পড়ে কমপক্ষে সাড়ে ৩ হাজারের অধিক কারিগর। কারখানার মালিকেরা হারায় পুঁজি। সম্প্রতি ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় মালিক শ্রমিক উভয়ই ব্যস্ত।

স্বর্ণকারদের সূত্র জানায়, এখানকার নাকফুলের চাহিদা সারাদেশে। ঢাকাসহ দেশের বড় বড় শহরের স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের পাইকারেরা এসে এখানকার ঐতিহ্যবাহী নাকফুল কিনে নিয়ে যান। এটা অনেক পূর্ব থেকে বয়ে আসছে। যা করোনার কারণে দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর ধরে বন্ধ ছিল। এখানকার নাকফুলের নক্সা অত্যন্ত আকর্ষণীয়। অসংখ্য নক্সার নাকফুল কারিগরেরা তৈরি করে রেখে দেয় যে মডেলগুলো পছন্দ করে কিনে নিয়ে যান। সব ধরনের নাকফুলের চাহিদা রয়েছে তবে আড়াইশ থেকে এক হাজার টাকা পর্যন্ত মূল্যের নাকফুল ঢাকার পাইকারেরা বেশি পছন্দ করেন।

স্বর্ণ কারিগর কালীগঞ্জ পৌরসভার কলেজপাড়া গ্রামের শুশান্ত বিশ^াস জানান, প্রায় ২০ বছর আগে থেকে নাকফুল তৈরির কাজ করে আসছেন। প্রতিদিন এ কাজ করে সাড়ে ৪শ’ থেকে ৫শ’ টাকা আয় করেন। তা দিয়ে ৫ সদস্যের সংসার চালাতে হয় তার। করোনার সময়ে এ এলাকার নাকফুলের সমস্ত কারখানা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। সে সময়ে কোন অলঙ্কার বিক্রিও ছিল না।

এখন আবার তাদের কাজ আস্তে আস্তে স্বাভাবিক পর্যায়ে যাচ্ছে।

জিহাদ হোসেন নামের আরেক কারিগর জানান, সারাদেশে তাদের তৈরি বিশেষ নকশা করা নাকফুলের চাহিদা রয়েছে। তারা মজুরি ভিত্তিতে কাজ করেন। যে কারণে কারখানা বন্ধ থাকলে তাদের রোজগার থাকে না। তখন তাদের অনাটন শুরু হয়।

কালীগঞ্জ উপজেলা কালীগঞ্জ উপজেলা জুয়েলারি মালিক সমিতির (বাজুস) সভাপতির ওসমান আলী জানান, করোনার সময়ে তাদের পেশাজীবীদের পর্যাপ্ত ক্ষতি হয়েছে। কারণ এ সময়ে সব ধরনের মানুষ করোনার ভয়ে ভীতু ছিল। সৌখিন অলঙ্কার কেনাকাটার কথা কেউ ভাবতই না। তাই সৌখিন এ খাতে বেশি ক্ষতি হয়েছে। অনেক স্বর্ণাকার মালিক অভাবে পড়ে দায়দেনার শিকার হয়েছেন। এ ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে তাদের বেশ সময় লাগবে। তারপরও নতুন উদ্যামে তারা আবার ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া জেরিন জানন, আমি নতুন যোগদান করেছি তবে কর্মহীন সকল শ্রমিককে সহযোগিতা করা হবে। আমি স্বর্ণ কারিগরদের জন্য সরকারি সহযোগিতার ব্যবস্থা করব।