পেঁয়াজ-আলু সংরক্ষণে উন্নত ল্যাব নির্মাণে সহযোগিতা পাওয়া যাবে

দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ীদের নিয়ে সরকারের প্রতিনিধিদের নেদারল্যান্ডস ও যুক্তরাজ্য সফরে বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক মানের ল্যাব স্থাপন, পেঁয়াজ ও আলু সংরক্ষণে সহযোগিতা পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আবদুর রাজ্জাক। ইউরোপের বাজারে কৃষিপণ্যের রপ্তানি এবং কৃষিখাতে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়াতে গত ৯ থেকে ১৮ নভেম্বর ইউরোপ সফরের বিষয়ে গতকাল সচিবালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী এ কথা জানান।

তিনি জানান, কৃষিখাতে সহযোগিতা ও বাণিজ্য সম্পর্ক বৃদ্ধি করতে ২০২২ সালের মার্চ মাসে বাংলাদেশে ট্রেড মিশন পাঠাবে নেদারল্যান্ডস। একইসঙ্গে, দেশে আন্তর্জাতিক মানের ল্যাব স্থাপন, পেঁয়াজ ও আলু সংরক্ষণ, জলবায়ু পরিবর্তন সহনশীল ফসলের জাত উদ্ভাবন, গ্রিন হাউজ ও গ্লাস হাউজ তৈরির ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত সহায়তা পাওয়া যাবে।

আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘নেদারল্যান্ডসের বেসরকারিখাত থেকে উন্নত উৎপাদন প্রযুক্তি, সংগ্রহ, সংগ্রহত্তোর প্রযুক্তি, বিভিন্ন ধরনের মেশিনারিজ তৈরির প্রযুক্তিগত দিক, রিয়েল টাইম স্বয়ক্রিয় রিপোর্টিং ব্যবস্থায় প্রযুক্তিগত সহায়তা এবং মানবসম্পদ উন্নয়নে প্রশিক্ষণ ও উচ্চ শিক্ষায় সহায়তা পাওয়া যাবে। এসব বিষয়ে ওখেনিয়েন বিশ্ববিদ্যালয় ও রিসার্চের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক শীঘ্রই স্বাক্ষর হবে। এছাড়া দেশে ঘাটতি হলে সেপ্টেম্বর মাসে নেদারল্যান্ডসে উৎপাদিত নতুন পেঁয়াজ আমদানির ব্যবস্থা ও কৃষি প্রক্রিয়াকরণে ডাচ বিনিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মানের ল্যাবরেটরি স্থাপন, ‘ইন্টার ল্যাবরেটরি টেস্টিং ভ্যালিডেশন, আইএসও ১৭০২৫ স্ট্যান্ডার্ড’ এর জন্য কারিগরি সহযোগিতা দিতে ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যের ফুড স্ট্যান্ডার্ড এজেন্সি এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হবে। এছাড়া গ্রিনিচ ইউনিভার্সিটির সঙ্গে প্রশিক্ষণ সহযোগিতার প্রক্রিয়া এবং ব্রিটেনের সুপার স্টোর সেইন্টসবারি, আজডা, টেসকোর সঙ্গে ব্রিটিশ-বাংলাদেশ চেম্বারের মাধ্যমে বাজার সংযোগ সৃষ্টি হবে।

আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘আমরা কৃষিকে লাভজনক ও বাণিজ্যিকীকরণ করতে চাই। এটি করতে হলে কৃষিপণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধি, দেশে কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্পপ্রতিষ্ঠান স্থাপন ও প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজার বিস্তৃত করতে হবে। এতে উৎপাদন মৌসুমে কৃষকের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তি ও লাভ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। এসব উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই আমরা নেদারল্যান্ডস ও যুক্তরাজ্য সফর করেছি।’

কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকারের আমলে দেশে খাদ্য উৎপাদনে অভাবনীয় সাফল্য অর্জিত হয়েছে। আলু, শাকসবজি, আমসহ অনেক ফসলে আমরা উদ্বৃত্ত। এসব কৃষিজ পণ্য রপ্তানির এক বিশাল সম্ভাবনা থাকলেও সেই সুযোগ আমরা পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারছি না। গত অর্থবছরে কৃষিপণ্য রপ্তানি পূর্বের বছরের তুলনায় প্রায় চারগুণ বেড়ে এক বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে। রপ্তানির এই প্রবৃদ্ধি টেকসই ও ত্বরান্বিত করতে সরকার বদ্ধপরিকর এবং এ লক্ষে প্রাইমারি প্রসেসিং, প্যাকিং হাউস ও টেস্টিং ক্যাপাসিটি উন্নয়ন তথা আন্তর্জাতিক মানের ল্যাব স্থাপন ও উন্নয়নে কাজ করছে।’

এ সময় কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও সচিবের রুটিন দায়িত্বরত মো. আবদুর রৌফ, অতিরিক্ত সচিব মো. রুহুল আমিন তালুকদার, হাসানুজ্জামান কল্লোল, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ ইউসুফ, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আহসান খান চৌধুরী, এসিআই অ্যাগ্রো লিংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও এফএইচ আনসারী, স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজের চিফ অপারেটিং অফিসার পারভেজ সাইফুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বৃহস্পতিবার, ২৫ নভেম্বর ২০২১ , ১০ অগ্রহায়ণ ১৪২৮ ১৯ রবিউস সানি ১৪৪৩

কৃষিমন্ত্রীর নেদারল্যান্ডস ও যুক্তরাজ্য সফর

পেঁয়াজ-আলু সংরক্ষণে উন্নত ল্যাব নির্মাণে সহযোগিতা পাওয়া যাবে

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ীদের নিয়ে সরকারের প্রতিনিধিদের নেদারল্যান্ডস ও যুক্তরাজ্য সফরে বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক মানের ল্যাব স্থাপন, পেঁয়াজ ও আলু সংরক্ষণে সহযোগিতা পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আবদুর রাজ্জাক। ইউরোপের বাজারে কৃষিপণ্যের রপ্তানি এবং কৃষিখাতে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়াতে গত ৯ থেকে ১৮ নভেম্বর ইউরোপ সফরের বিষয়ে গতকাল সচিবালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী এ কথা জানান।

তিনি জানান, কৃষিখাতে সহযোগিতা ও বাণিজ্য সম্পর্ক বৃদ্ধি করতে ২০২২ সালের মার্চ মাসে বাংলাদেশে ট্রেড মিশন পাঠাবে নেদারল্যান্ডস। একইসঙ্গে, দেশে আন্তর্জাতিক মানের ল্যাব স্থাপন, পেঁয়াজ ও আলু সংরক্ষণ, জলবায়ু পরিবর্তন সহনশীল ফসলের জাত উদ্ভাবন, গ্রিন হাউজ ও গ্লাস হাউজ তৈরির ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত সহায়তা পাওয়া যাবে।

আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘নেদারল্যান্ডসের বেসরকারিখাত থেকে উন্নত উৎপাদন প্রযুক্তি, সংগ্রহ, সংগ্রহত্তোর প্রযুক্তি, বিভিন্ন ধরনের মেশিনারিজ তৈরির প্রযুক্তিগত দিক, রিয়েল টাইম স্বয়ক্রিয় রিপোর্টিং ব্যবস্থায় প্রযুক্তিগত সহায়তা এবং মানবসম্পদ উন্নয়নে প্রশিক্ষণ ও উচ্চ শিক্ষায় সহায়তা পাওয়া যাবে। এসব বিষয়ে ওখেনিয়েন বিশ্ববিদ্যালয় ও রিসার্চের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক শীঘ্রই স্বাক্ষর হবে। এছাড়া দেশে ঘাটতি হলে সেপ্টেম্বর মাসে নেদারল্যান্ডসে উৎপাদিত নতুন পেঁয়াজ আমদানির ব্যবস্থা ও কৃষি প্রক্রিয়াকরণে ডাচ বিনিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মানের ল্যাবরেটরি স্থাপন, ‘ইন্টার ল্যাবরেটরি টেস্টিং ভ্যালিডেশন, আইএসও ১৭০২৫ স্ট্যান্ডার্ড’ এর জন্য কারিগরি সহযোগিতা দিতে ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যের ফুড স্ট্যান্ডার্ড এজেন্সি এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হবে। এছাড়া গ্রিনিচ ইউনিভার্সিটির সঙ্গে প্রশিক্ষণ সহযোগিতার প্রক্রিয়া এবং ব্রিটেনের সুপার স্টোর সেইন্টসবারি, আজডা, টেসকোর সঙ্গে ব্রিটিশ-বাংলাদেশ চেম্বারের মাধ্যমে বাজার সংযোগ সৃষ্টি হবে।

আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘আমরা কৃষিকে লাভজনক ও বাণিজ্যিকীকরণ করতে চাই। এটি করতে হলে কৃষিপণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধি, দেশে কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্পপ্রতিষ্ঠান স্থাপন ও প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বাজার বিস্তৃত করতে হবে। এতে উৎপাদন মৌসুমে কৃষকের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তি ও লাভ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। এসব উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই আমরা নেদারল্যান্ডস ও যুক্তরাজ্য সফর করেছি।’

কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকারের আমলে দেশে খাদ্য উৎপাদনে অভাবনীয় সাফল্য অর্জিত হয়েছে। আলু, শাকসবজি, আমসহ অনেক ফসলে আমরা উদ্বৃত্ত। এসব কৃষিজ পণ্য রপ্তানির এক বিশাল সম্ভাবনা থাকলেও সেই সুযোগ আমরা পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারছি না। গত অর্থবছরে কৃষিপণ্য রপ্তানি পূর্বের বছরের তুলনায় প্রায় চারগুণ বেড়ে এক বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে। রপ্তানির এই প্রবৃদ্ধি টেকসই ও ত্বরান্বিত করতে সরকার বদ্ধপরিকর এবং এ লক্ষে প্রাইমারি প্রসেসিং, প্যাকিং হাউস ও টেস্টিং ক্যাপাসিটি উন্নয়ন তথা আন্তর্জাতিক মানের ল্যাব স্থাপন ও উন্নয়নে কাজ করছে।’

এ সময় কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও সচিবের রুটিন দায়িত্বরত মো. আবদুর রৌফ, অতিরিক্ত সচিব মো. রুহুল আমিন তালুকদার, হাসানুজ্জামান কল্লোল, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ ইউসুফ, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আহসান খান চৌধুরী, এসিআই অ্যাগ্রো লিংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও এফএইচ আনসারী, স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজের চিফ অপারেটিং অফিসার পারভেজ সাইফুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।