রংপুর সিটি করপোরেশনে টেন্ডার আহ্বান করার আগেই প্রায় তিন কোটি টাকা মূল্যের ৮টি গ্রুপের কাজ পছন্দের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে আগাম প্রদান করা হয়েছে এবং জায়েজ করার জন্য আগামী ৯ ডিসেম্বর লোক দেখানো টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। টেন্ডার আহ্বানের আগে ঠিকাদার নির্বাচন এবং লোক দেখানো টেন্ডার আহ্বানের বিষয়টি জানাজানি হলে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
বিষয়টি সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা থেকে শুরু করে প্রকৌশল বিভাগ পুরো বিষয়টি অবহিত হবার পরেও কেউই মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না। এমনকি টেন্ডার আহ্বানের আগে কাজ শেষ করে ফেলার বিষয়টি জানাজানি হলে ওই সব এলাকায় সাংবাদিকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বিষয়টি এখন টক অব দ্যা টাউনে পরিণত হয়েছে।
সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, রংপুর সিটি করপোরেশনের চিকলী বিনোদন পার্কসহ বিভিন্ন অফিস সংস্কার, মাটি ভরাট, রাস্তা নির্মাণসহ বিভিন্ন ধরনের কাজের জন্য সিটি মেয়র ২৬ কোটি ৬০ লাখ ৬৭৯ টাকার বেশ কয়েকটি গ্রুপের দরপত্র আহ্বান করেন মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। গত ১৩ নভেম্বর তার স্বাক্ষরিত টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।
সেখানে উল্লেখ করা হয়, টেন্ডার সিডিউল বিক্রয়ের শেষ তারিখ ৮ ডিসেম্বর এবং টেন্ডার দাখিলের শেষ তারিখ ৯ ডিসেম্বর। সিটি করপোরেশনের স্মারক নম্বর ১৪৭২ তারিখ ৩.১১.২১ ইং। টেন্ডার নোটিশ নম্বর ৯৬/২০২১-২০২২। টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হবার পর পরই থলের বিড়াল বেরিয়ে আসে।
জানা যায়, আহ্বান করা টেন্ডারের ৮টি গ্রুপের কাজ পছন্দের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে অনেক আগেই প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্যে শতকরা ৯৮ ভাগ কাজ শেষও হয়ে গেছে। তবে সংবাদের অনুসন্ধানে বিষয়টি নজরে আসে। সরজমিন নগরীর চিকলী বিনোদন উদ্যানে গিয়ে দেখা যায় সেখানে গোপনে মাটি ভরাট ও আরসিসি রাস্তা নির্মাণ কাজ চলছে। ছবি নিতে গেলে এ প্রতিনিধিকে ভেতরে ঢুকতে দেয়া হয়নি কর্তব্যরত কর্মচারী সাফ জানিয়ে দেন, মেয়রের অনুমতি ছাড়া যাওয়া যাবে না।
বিষয়টি নিয়ে সিটি মেয়রের সঙ্গে তার চেম্বারে কথা বলতে গেলে তিনি টেন্ডার আহ্বানের আগেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ প্রদানের বিষয়টি কৌশলে এড়িয়ে যান। এ সংক্রান্ত খবর গত ২ অক্টোবর দৈনিক সংবাদে প্রকাশিত হলে সিটি মেয়র কাজটি বন্ধ রাখতে মৌখিক নির্দ্দেশ দেন। এর পরেই শুরু হয় টেন্ডার আহ্বানের আগেই পছন্দের ব্যক্তিদের ৮টি গ্রুপের কাজ জায়েজ করা। অর্থাৎ টেন্ডার আহ্বান করে জায়েজ করা। তার আগে ব্যাকডেটে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন ছাপানোর চেষ্টাও ব্যর্থ হয়ে যায়। সংবাদে খবর প্রকাশের পর এ ঘটনার পর সাংবাদিকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।
অনুসন্ধানে জানা যায়, আগামী ৯ ডিসেম্বর টেন্ডার দাখিলের শেষ দিন বলে যে টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে সেসব কাজের মধ্যে ৮টি কাজ ইতিমধ্যেই শেষ হয়ে গেছে। কাজগুলো হলো চিকলী পার্কে মাটি ভরাট প্রাক্কলিত মূল্য ৮৫ লাখ ৬১ হাজার ৮৩১ টাকা। রংপুর সিটি করপোরেশনের রাধাবল্লভস্থ ল্যাবরেটরি অফিস সংস্কার ও পানি সরবরাহ, অফিসের ভবন সংস্কার কাজ যার প্রাক্কলিত মূল্য ১৪ লাখ ৮৭ হাজার ৩শ টাকা।
চিকলী পার্কের অভ্যন্তরীণ আরসিসি রাস্তা নির্মাণ, যার প্রাক্কলিত মূল্য ৬১ লাখ ৮৫ হাজার ২৭৮ টাকা, সাগরপাড়া ও হনুমানতলা প্রবেশ মুখে দুটি গেট অ্যাপ্রোচ রাস্তা নির্মাণ, প্রাক্কলিত মূল্য ৪৮ লাখ ৪৩ হাজার ৭১৯ টাকা। কলাবাড়ি ডাম্পিং স্টেশনের পাশে ৩ রুমবিশিষ্ট গেস্টহাউস নির্মাণ, যার প্রাক্কলিত মূল্য ১১ লাখ ৭৪ হাজার ৮১ টাকা, কলাবাড়ি ডাম্পিং স্টেশনের পাশে স্কেভেটর, বুলডোজার ইত্যাদি মেশিন রাখার সেড নির্মাণ, যার প্রাক্কলিত মূল্য ১৭ লাখ ৮ হাজার ৫০৯ টাকা এবং আঙ্গুর মিয়া কেডি ক্যানালের ব্রিজসংলগ্ন উত্তর পাশে হাঁটা পথটি প্যালাসাইডিং নির্মাণসহ মাটি ভরাট, যার প্রাক্কলিত মূল্য ২৬ লাখ ৩৪ হাজার ৬৫৭ টাকা।
উপরোক্ত প্রায় তিন কোটি টাকার ৮টি গ্রুপের কাজ টেন্ডার আহ্বানের আগেই প্রদান করা হয়েছে এবং কাজগুলো শেষ হয়ে গেছে। মূলত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিল প্রদান করার জন্যই টেন্ডার আহ্বানের নাটক করা হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন প্রকৌশল শাখার নিম্নপদস্থ কর্মচারী জানালেন, সাধারণত যে কোন কাজের টেন্ডার আহ্বান করা হয় এরপর ঠিকাদার নির্বাচিত হবার পর কার্যাদেশ দেয়া হলে সেসব কাজ তদারকি করতে তারা যান। যে ৮টি কাজ টেন্ডার আহ্বানের আগেই শেষ করে ফেলা হয়েছে তা জানলেও কাজের স্থানে যাননি কোন তদারকিও করেননি। ফলে কাজের গুণগত মান এবং কতটুকু কাজ হয়েছে তারা বলতে পারবেন না। এভাবে আগাম কাজ প্রদান করে সিটি করপোরেশনের দীর্ঘদিনের সুনাম নষ্ট করা হয়েছে। এর দায় প্রকৌশল বিভাগ নেবে বলে মনে হয় না।
গণপূর্ত বিভাগের একজন অবসরপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, দীর্ঘ চাকরি জীবনে কখনও শুনিনি টেন্ডার আহ্বানের আগেই ঠিকাদার নির্বাচন আর কাজ শেষ করে ফেলা। এটা পিপিআর আইনের লংঘন, এর দায় সংশ্লিষ্ঠ টেন্ডার আহ্বানকারী কোনভাবেই এড়াতে পারেন না।
এ ব্যাপারে দুদকের সহযোগী সংগঠন রংপুর জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর হোসেন বলেন, টেন্ডার আহ্বানের আগেই ঠিকাদার নির্বাচন করা, কাজ শেষ করা, পিপিআর আইনের সুস্পষ্ঠ লংঘন। এটা আইনবিরোধী হচ্ছে বলেও তিনি মনে করেন ।
সার্বিক বিষয়ে জানতে সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন মিয়ার সঙ্গে তার চেম্বারে গিয়ে টেন্ডার আহ্বানের আগে ঠিকাদার নির্বাচন, ৮টি গ্রুপের কাজ শেষ করার বিষয় জানতে চাইলে এসব কিছুই জানেন না বলে জানান এবং বলেন, বিষয়টি তিনি দেখছেন। অন্যদিকে নির্বাহী প্রকৌশলী আলী আজম ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এমদাদ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা দুজনেই বলেন, মেয়র মহোদয়ের অনুমতি ছাড়া তারা কোন কথাই বলবেন না।
রংপুর সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফার সঙ্গে বেশ কয়েকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বুধবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২১ , ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪২৮ ২৫ রবিউস সানি ১৪৪৩
লিয়াকত আলী বাদল, রংপুর
রংপুর সিটি করপোরেশনে টেন্ডার আহ্বান করার আগেই প্রায় তিন কোটি টাকা মূল্যের ৮টি গ্রুপের কাজ পছন্দের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে আগাম প্রদান করা হয়েছে এবং জায়েজ করার জন্য আগামী ৯ ডিসেম্বর লোক দেখানো টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। টেন্ডার আহ্বানের আগে ঠিকাদার নির্বাচন এবং লোক দেখানো টেন্ডার আহ্বানের বিষয়টি জানাজানি হলে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
বিষয়টি সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা থেকে শুরু করে প্রকৌশল বিভাগ পুরো বিষয়টি অবহিত হবার পরেও কেউই মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না। এমনকি টেন্ডার আহ্বানের আগে কাজ শেষ করে ফেলার বিষয়টি জানাজানি হলে ওই সব এলাকায় সাংবাদিকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বিষয়টি এখন টক অব দ্যা টাউনে পরিণত হয়েছে।
সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, রংপুর সিটি করপোরেশনের চিকলী বিনোদন পার্কসহ বিভিন্ন অফিস সংস্কার, মাটি ভরাট, রাস্তা নির্মাণসহ বিভিন্ন ধরনের কাজের জন্য সিটি মেয়র ২৬ কোটি ৬০ লাখ ৬৭৯ টাকার বেশ কয়েকটি গ্রুপের দরপত্র আহ্বান করেন মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। গত ১৩ নভেম্বর তার স্বাক্ষরিত টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।
সেখানে উল্লেখ করা হয়, টেন্ডার সিডিউল বিক্রয়ের শেষ তারিখ ৮ ডিসেম্বর এবং টেন্ডার দাখিলের শেষ তারিখ ৯ ডিসেম্বর। সিটি করপোরেশনের স্মারক নম্বর ১৪৭২ তারিখ ৩.১১.২১ ইং। টেন্ডার নোটিশ নম্বর ৯৬/২০২১-২০২২। টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হবার পর পরই থলের বিড়াল বেরিয়ে আসে।
জানা যায়, আহ্বান করা টেন্ডারের ৮টি গ্রুপের কাজ পছন্দের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে অনেক আগেই প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্যে শতকরা ৯৮ ভাগ কাজ শেষও হয়ে গেছে। তবে সংবাদের অনুসন্ধানে বিষয়টি নজরে আসে। সরজমিন নগরীর চিকলী বিনোদন উদ্যানে গিয়ে দেখা যায় সেখানে গোপনে মাটি ভরাট ও আরসিসি রাস্তা নির্মাণ কাজ চলছে। ছবি নিতে গেলে এ প্রতিনিধিকে ভেতরে ঢুকতে দেয়া হয়নি কর্তব্যরত কর্মচারী সাফ জানিয়ে দেন, মেয়রের অনুমতি ছাড়া যাওয়া যাবে না।
বিষয়টি নিয়ে সিটি মেয়রের সঙ্গে তার চেম্বারে কথা বলতে গেলে তিনি টেন্ডার আহ্বানের আগেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ প্রদানের বিষয়টি কৌশলে এড়িয়ে যান। এ সংক্রান্ত খবর গত ২ অক্টোবর দৈনিক সংবাদে প্রকাশিত হলে সিটি মেয়র কাজটি বন্ধ রাখতে মৌখিক নির্দ্দেশ দেন। এর পরেই শুরু হয় টেন্ডার আহ্বানের আগেই পছন্দের ব্যক্তিদের ৮টি গ্রুপের কাজ জায়েজ করা। অর্থাৎ টেন্ডার আহ্বান করে জায়েজ করা। তার আগে ব্যাকডেটে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন ছাপানোর চেষ্টাও ব্যর্থ হয়ে যায়। সংবাদে খবর প্রকাশের পর এ ঘটনার পর সাংবাদিকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।
অনুসন্ধানে জানা যায়, আগামী ৯ ডিসেম্বর টেন্ডার দাখিলের শেষ দিন বলে যে টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে সেসব কাজের মধ্যে ৮টি কাজ ইতিমধ্যেই শেষ হয়ে গেছে। কাজগুলো হলো চিকলী পার্কে মাটি ভরাট প্রাক্কলিত মূল্য ৮৫ লাখ ৬১ হাজার ৮৩১ টাকা। রংপুর সিটি করপোরেশনের রাধাবল্লভস্থ ল্যাবরেটরি অফিস সংস্কার ও পানি সরবরাহ, অফিসের ভবন সংস্কার কাজ যার প্রাক্কলিত মূল্য ১৪ লাখ ৮৭ হাজার ৩শ টাকা।
চিকলী পার্কের অভ্যন্তরীণ আরসিসি রাস্তা নির্মাণ, যার প্রাক্কলিত মূল্য ৬১ লাখ ৮৫ হাজার ২৭৮ টাকা, সাগরপাড়া ও হনুমানতলা প্রবেশ মুখে দুটি গেট অ্যাপ্রোচ রাস্তা নির্মাণ, প্রাক্কলিত মূল্য ৪৮ লাখ ৪৩ হাজার ৭১৯ টাকা। কলাবাড়ি ডাম্পিং স্টেশনের পাশে ৩ রুমবিশিষ্ট গেস্টহাউস নির্মাণ, যার প্রাক্কলিত মূল্য ১১ লাখ ৭৪ হাজার ৮১ টাকা, কলাবাড়ি ডাম্পিং স্টেশনের পাশে স্কেভেটর, বুলডোজার ইত্যাদি মেশিন রাখার সেড নির্মাণ, যার প্রাক্কলিত মূল্য ১৭ লাখ ৮ হাজার ৫০৯ টাকা এবং আঙ্গুর মিয়া কেডি ক্যানালের ব্রিজসংলগ্ন উত্তর পাশে হাঁটা পথটি প্যালাসাইডিং নির্মাণসহ মাটি ভরাট, যার প্রাক্কলিত মূল্য ২৬ লাখ ৩৪ হাজার ৬৫৭ টাকা।
উপরোক্ত প্রায় তিন কোটি টাকার ৮টি গ্রুপের কাজ টেন্ডার আহ্বানের আগেই প্রদান করা হয়েছে এবং কাজগুলো শেষ হয়ে গেছে। মূলত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিল প্রদান করার জন্যই টেন্ডার আহ্বানের নাটক করা হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন প্রকৌশল শাখার নিম্নপদস্থ কর্মচারী জানালেন, সাধারণত যে কোন কাজের টেন্ডার আহ্বান করা হয় এরপর ঠিকাদার নির্বাচিত হবার পর কার্যাদেশ দেয়া হলে সেসব কাজ তদারকি করতে তারা যান। যে ৮টি কাজ টেন্ডার আহ্বানের আগেই শেষ করে ফেলা হয়েছে তা জানলেও কাজের স্থানে যাননি কোন তদারকিও করেননি। ফলে কাজের গুণগত মান এবং কতটুকু কাজ হয়েছে তারা বলতে পারবেন না। এভাবে আগাম কাজ প্রদান করে সিটি করপোরেশনের দীর্ঘদিনের সুনাম নষ্ট করা হয়েছে। এর দায় প্রকৌশল বিভাগ নেবে বলে মনে হয় না।
গণপূর্ত বিভাগের একজন অবসরপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, দীর্ঘ চাকরি জীবনে কখনও শুনিনি টেন্ডার আহ্বানের আগেই ঠিকাদার নির্বাচন আর কাজ শেষ করে ফেলা। এটা পিপিআর আইনের লংঘন, এর দায় সংশ্লিষ্ঠ টেন্ডার আহ্বানকারী কোনভাবেই এড়াতে পারেন না।
এ ব্যাপারে দুদকের সহযোগী সংগঠন রংপুর জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর হোসেন বলেন, টেন্ডার আহ্বানের আগেই ঠিকাদার নির্বাচন করা, কাজ শেষ করা, পিপিআর আইনের সুস্পষ্ঠ লংঘন। এটা আইনবিরোধী হচ্ছে বলেও তিনি মনে করেন ।
সার্বিক বিষয়ে জানতে সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন মিয়ার সঙ্গে তার চেম্বারে গিয়ে টেন্ডার আহ্বানের আগে ঠিকাদার নির্বাচন, ৮টি গ্রুপের কাজ শেষ করার বিষয় জানতে চাইলে এসব কিছুই জানেন না বলে জানান এবং বলেন, বিষয়টি তিনি দেখছেন। অন্যদিকে নির্বাহী প্রকৌশলী আলী আজম ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এমদাদ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা দুজনেই বলেন, মেয়র মহোদয়ের অনুমতি ছাড়া তারা কোন কথাই বলবেন না।
রংপুর সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফার সঙ্গে বেশ কয়েকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।