চলতি বছরের অক্টোবরে সঞ্চয়পত্র বিক্রির পরিমাণ মোট ৮ হাজার ৭২৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৭ হাজার ৯৫৬ কোটি টাকা মূল টাকা ও মুনাফা পরিশোধ হয়েছে। মূল অর্থ পরিশোধের পর অবশিষ্ট অর্থ নিট বিক্রির পরিমাণ ৭৬৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ সরকার অক্টোবরে সঞ্চয়পত্রে ঋণ নিয়েছে ৭৬৬ কোটি টাকা। এর আগের মাস সেপ্টেম্বরে ছিল ২ হাজার ৮২৫ কোটি টাকা। সে হিসেবে নিট বিক্রি কমেছে ৭২ দশমিক ৮৭ শতাংশ।
তবে সঞ্চয়পত্র বিক্রি হ্রাসকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন অর্থনীতিবিদরা। তারা বলছেন, আগে নামে বেনামে অনেক সঞ্চয়পত্র কেনা হতো। কড়াকড়ি আরোপের পর সেটা আর হচ্ছে না। এটা ইতিবাচক।
ঘাটতি বাজেট মেটাতে সরকার চলতি অর্থবছরে এক লাখ কোটি টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। মূল ও সুদসহ পরিশোধের পর নিট সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণের লক্ষ্য রয়েছে ৩২ হাজার কোটি টাকা। অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) মোট সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে ৩৫ হাজার ৩২৮ কোটি টাকা যা অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রার মোট ২৮ দশমিক ৩৪ শতাংশ। মূল টাকা ও মুনাফা পরিশোধের পর এ সময়ে সরকারের নিট ঋণ এসেছে ৯ হাজার ৩২৫ কোটি টাকা যা ২০২০-২০২১ অর্থবছরের একই সময়ের (জুলাই-অক্টোবর) তুলনায় ৬ হাজার ৩১৭ কোটি টাকা বা ৪০ শতাংশ কম।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের সীমা ও বিভিন্ন কড়াকড়ি করা হয়েছে। গত সেপ্টেম্বর থেকে সরকার ১৫ লাখ টাকার বেশি সব সঞ্চয়পত্র স্কিমে সুদহার কমিয়েছে। এর ফলে অনেকে সঞ্চয়পত্র কম কিনছে। তবে ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে সরকারের ঋণগ্রহণকে ইতিবাচক বলছেন অর্থনীতিবিদরা।
পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সঞ্চয়পত্রের সুদহার ব্যাংক ঋণের চেয়ে বেশি। এর আগে অনেকেই নামে-বেনামি সঞ্চয়পত্র কিনেছেন। সরকারের এ নিয়ে সরকারের কড়াকড়ি থাকায় সঞ্চয়পত্র ঋণ কমেছে। এটা সরকারের জন্য ভালো।’
এর আগে সঞ্চয়পত্রের সুদ পূননির্ধারণ করা হয়। পাঁচ বছর মেয়াদি সঞ্চয়পত্রে যারা ১৫ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগ করবেন তারা মেয়াদ শেষে মুনাফা পাবেন ১০ দশমিক ৩০ শতাংশ হারে। আর ৩০ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগ হলে মুনাফা পাবেন ৯ দশমিক ৩০ শতাংশ হারে।
তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক তিন বছর মেয়াদি সঞ্চয়পত্রে ১৫ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগে মুনাফা পাবেন ১০ শতাংশ হারে। আর ৩০ লাখ টাকার বেশি যাদের বিনিয়োগে মুনাফা পাবেন ৯ শতাংশ হারে। পাঁচ বছর মেয়াদি পেনশনার সঞ্চয়পত্রে ১৫ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগ হলে মুনাফা পাবেন ১০ দশমিক ৭৫ শতাংশ হারে। আর ৩০ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগ হলে পাবেন ৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ হারে।
পাঁচ বছর মেয়াদি পরিবার সঞ্চয়পত্রে ১৫ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগে মুনাফা পাবেন ১০ দশমিক ৫০ শতাংশ। যা আগে ছিল ১১ দশমিক ৫২ শতাংশ। আর বিনিয়োগ ৩০ লাখ টাকার বেশি ৯ দশমিক ৫০ শতাংশ হারে মুনাফা পাবেন। ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকের মুনাফার হারে পরিবর্তন আনা হয়নি। ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকের সাধারণ হিসাবে বর্তমানে মুনাফার হার সাড়ে ৭ শতাংশ। এতে কোন পরিবর্তন আনা হয়নি।
ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকে তিন বছর মেয়াদি হিসেবে ১৫ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগে মুনাফা পাবেন ১০ দশমিক ৩০ শতাংশ হারে। বিনিয়োগ ৩০ লাখ টাকার বেশি হলে ৯ দশমিক ৩০ শতাংশ হারে মুনাফা পাবেন। আর ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকের সাধারণ হিসেবে সাড়ে ৭ শতাংশ হারে মুনাফা পাবেন।
বৃহস্পতিবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২১ , ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪২৮ ৪ জমাদিউল আউয়াল
অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক
চলতি বছরের অক্টোবরে সঞ্চয়পত্র বিক্রির পরিমাণ মোট ৮ হাজার ৭২৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৭ হাজার ৯৫৬ কোটি টাকা মূল টাকা ও মুনাফা পরিশোধ হয়েছে। মূল অর্থ পরিশোধের পর অবশিষ্ট অর্থ নিট বিক্রির পরিমাণ ৭৬৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ সরকার অক্টোবরে সঞ্চয়পত্রে ঋণ নিয়েছে ৭৬৬ কোটি টাকা। এর আগের মাস সেপ্টেম্বরে ছিল ২ হাজার ৮২৫ কোটি টাকা। সে হিসেবে নিট বিক্রি কমেছে ৭২ দশমিক ৮৭ শতাংশ।
তবে সঞ্চয়পত্র বিক্রি হ্রাসকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন অর্থনীতিবিদরা। তারা বলছেন, আগে নামে বেনামে অনেক সঞ্চয়পত্র কেনা হতো। কড়াকড়ি আরোপের পর সেটা আর হচ্ছে না। এটা ইতিবাচক।
ঘাটতি বাজেট মেটাতে সরকার চলতি অর্থবছরে এক লাখ কোটি টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। মূল ও সুদসহ পরিশোধের পর নিট সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণের লক্ষ্য রয়েছে ৩২ হাজার কোটি টাকা। অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) মোট সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে ৩৫ হাজার ৩২৮ কোটি টাকা যা অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রার মোট ২৮ দশমিক ৩৪ শতাংশ। মূল টাকা ও মুনাফা পরিশোধের পর এ সময়ে সরকারের নিট ঋণ এসেছে ৯ হাজার ৩২৫ কোটি টাকা যা ২০২০-২০২১ অর্থবছরের একই সময়ের (জুলাই-অক্টোবর) তুলনায় ৬ হাজার ৩১৭ কোটি টাকা বা ৪০ শতাংশ কম।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের সীমা ও বিভিন্ন কড়াকড়ি করা হয়েছে। গত সেপ্টেম্বর থেকে সরকার ১৫ লাখ টাকার বেশি সব সঞ্চয়পত্র স্কিমে সুদহার কমিয়েছে। এর ফলে অনেকে সঞ্চয়পত্র কম কিনছে। তবে ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে সরকারের ঋণগ্রহণকে ইতিবাচক বলছেন অর্থনীতিবিদরা।
পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সঞ্চয়পত্রের সুদহার ব্যাংক ঋণের চেয়ে বেশি। এর আগে অনেকেই নামে-বেনামি সঞ্চয়পত্র কিনেছেন। সরকারের এ নিয়ে সরকারের কড়াকড়ি থাকায় সঞ্চয়পত্র ঋণ কমেছে। এটা সরকারের জন্য ভালো।’
এর আগে সঞ্চয়পত্রের সুদ পূননির্ধারণ করা হয়। পাঁচ বছর মেয়াদি সঞ্চয়পত্রে যারা ১৫ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগ করবেন তারা মেয়াদ শেষে মুনাফা পাবেন ১০ দশমিক ৩০ শতাংশ হারে। আর ৩০ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগ হলে মুনাফা পাবেন ৯ দশমিক ৩০ শতাংশ হারে।
তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক তিন বছর মেয়াদি সঞ্চয়পত্রে ১৫ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগে মুনাফা পাবেন ১০ শতাংশ হারে। আর ৩০ লাখ টাকার বেশি যাদের বিনিয়োগে মুনাফা পাবেন ৯ শতাংশ হারে। পাঁচ বছর মেয়াদি পেনশনার সঞ্চয়পত্রে ১৫ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগ হলে মুনাফা পাবেন ১০ দশমিক ৭৫ শতাংশ হারে। আর ৩০ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগ হলে পাবেন ৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ হারে।
পাঁচ বছর মেয়াদি পরিবার সঞ্চয়পত্রে ১৫ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগে মুনাফা পাবেন ১০ দশমিক ৫০ শতাংশ। যা আগে ছিল ১১ দশমিক ৫২ শতাংশ। আর বিনিয়োগ ৩০ লাখ টাকার বেশি ৯ দশমিক ৫০ শতাংশ হারে মুনাফা পাবেন। ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকের মুনাফার হারে পরিবর্তন আনা হয়নি। ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকের সাধারণ হিসাবে বর্তমানে মুনাফার হার সাড়ে ৭ শতাংশ। এতে কোন পরিবর্তন আনা হয়নি।
ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকে তিন বছর মেয়াদি হিসেবে ১৫ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগে মুনাফা পাবেন ১০ দশমিক ৩০ শতাংশ হারে। বিনিয়োগ ৩০ লাখ টাকার বেশি হলে ৯ দশমিক ৩০ শতাংশ হারে মুনাফা পাবেন। আর ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকের সাধারণ হিসেবে সাড়ে ৭ শতাংশ হারে মুনাফা পাবেন।