বেগম রোকেয়া দিবস আজ

আজ ৯ ডিসেম্বর রোকেয়া দিবস। বেগম রোকেয়ার জন্মদিন। ১৮৮০ সালের ৯ ডিসেম্বর রংপুরের পায়রাবন্দে এক জমিদার পরিবারে রোকেয়ার জন্ম হয়। ১৯৩২ সালের একই দিনেই মারা যান তিনি। দিনটি রোকেয়া দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।

রোকেয়া খাতুন, রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন, মিসেস আর এস হোসেন নামেও লিখতেন এবং পরিচিত ছিলেন তিনি। উনবিংশ শতকে নারীরা যখন অবরোধবাসিনী, সেই সময়ে নারীর পরাধীনতার বিরুদ্ধে তিনি আওয়াজ তুলেছেন। রোকেয়া দিবস উপলক্ষে বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন।

রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের স্বপ্ন ছিল সমাজে নারী-পুরুষ সমান মর্যাদা আর অধিকার নিয়ে বাঁচবে। সেই স্বপ্নের কথাই তিনি লিখে গেছেন তার গল্প-উপন্যাস-প্রবন্ধগুলোতে। নারীশিক্ষার প্রসারে কাজ করে গেছেন আমৃত্যু। নারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা, তাদের ক্ষমতায়ন, ভোটাধিকারের জন্য লড়াইটা এই বাংলায় রোকেয়াই শুরু করেছিলেন।

দিবসটি উপলক্ষে নানা আনুষ্ঠানিকতায় স্মরণ করা হবে তাকে। মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে রোকেয়া দিবস উদযাপন ও বেগম রোকেয়া পদক-২০২১ প্রদান করা হবে। রোকেয়া দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ তার বাণীতে বলেন, বেগম রোকেয়া শুধু নারী শিক্ষার অগ্রদূতই ছিলেন না, তিনি ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী নিবেদিতপ্রাণ একজন সমাজকর্মী। গতকাল ‘বেগম রোকেয়া দিবস’ উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে রাষ্ট্রপতি এ কথা বলেন।

রাষ্ট্রপতি সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘সমাজের সব স্তরে নারীর ক্ষমতায়নের পথ সুগম করতে পুরুষদের সহযোগিতা খুবই জরুরি।’ এ বছর যারা ‘বেগম রোকেয়া পদক’ পেয়েছেন, রাষ্ট্রপতি তাদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, বেগম রোকেয়া ছিলেন দূরদৃষ্টিসম্পন্ন একজন আধুনিক নারী।

তিনি বলেন, ‘বেগম রোকেয়া উপলব্ধি করেছিলেন সমাজ তথা রাষ্ট্রের সার্বিক উন্নয়নের জন্য পুরুষের পাশাপাশি নারীকে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার মাধ্যমে উপযুক্ত করে গড়ে তোলা একান্ত প্রয়োজন। তার এই উপলব্ধি ও আদর্শ আজও আমাদের অনুপ্রেরণা যোগায়।’

ডিজিটাল বাংলাদেশের সফল বাস্তবায়নে নারীর অংশগ্রহণ এখন দৃশ্যমান উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নারী উন্নয়নের স্বীকৃতি হিসেবে আমরা জাতিসংঘের ‘প্লানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন’সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন করেছি।’

প্রধানমন্ত্রী ‘বেগম রোকেয়া দিবস-২০২১’ উপলক্ষে আয়োজিত সব কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।

এ বছরের পদকের জন্য মনোনীত হয়েছেন- নারী শিক্ষায় বিশেষ অবদানের জন্য কুমিল্লা জেলার অধ্যাপিকা হাসিনা জাকারিয়া বেলা। নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় যশোরের অর্চনা বিশ্বাস। নারীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখায় কুমিল্লার শামসুন্নাহার রহমান পরাণ (মরোণোত্তর)। সাহিত্য ও সংস্কৃতির মাধ্যমে নারী জাগরণের জন্য ঢাবির সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও রোকেয়া হলের প্রভোস্ট ড. জিনাত হুদা। তার নিজ জেলা মুন্সিগঞ্জ। এছাড়া পল্লী উন্নয়নে অবদান রাখায় কুষ্টিয়ার গবেষক ড. সারিয়া সুলতানা পাচ্ছেন এই পদক।

মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় বেগম রোকেয়া পদক-২০২১ প্রদান এবং বেগম রোকেয়া দিবস উদযাপনে বিস্তারিত কর্মসূচি নিয়েছে। পদক প্রদান অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারসহ অন্য টেলিভশন ও সোশ্যাল মিডিয়ায় সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।

এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে বিশেষ ক্রোড়পত্র, পোস্টার, বুকলেট ও স্যুভেনির প্রকাশ করা হবে। যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে দেশব্যাপী জেলা ও উপজেলা পর্যায়েও বিভিন্ন কর্মসূচি নেয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২১ , ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪২৮ ৪ জমাদিউল আউয়াল

বেগম রোকেয়া দিবস আজ

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

আজ ৯ ডিসেম্বর রোকেয়া দিবস। বেগম রোকেয়ার জন্মদিন। ১৮৮০ সালের ৯ ডিসেম্বর রংপুরের পায়রাবন্দে এক জমিদার পরিবারে রোকেয়ার জন্ম হয়। ১৯৩২ সালের একই দিনেই মারা যান তিনি। দিনটি রোকেয়া দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।

রোকেয়া খাতুন, রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন, মিসেস আর এস হোসেন নামেও লিখতেন এবং পরিচিত ছিলেন তিনি। উনবিংশ শতকে নারীরা যখন অবরোধবাসিনী, সেই সময়ে নারীর পরাধীনতার বিরুদ্ধে তিনি আওয়াজ তুলেছেন। রোকেয়া দিবস উপলক্ষে বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন।

রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের স্বপ্ন ছিল সমাজে নারী-পুরুষ সমান মর্যাদা আর অধিকার নিয়ে বাঁচবে। সেই স্বপ্নের কথাই তিনি লিখে গেছেন তার গল্প-উপন্যাস-প্রবন্ধগুলোতে। নারীশিক্ষার প্রসারে কাজ করে গেছেন আমৃত্যু। নারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা, তাদের ক্ষমতায়ন, ভোটাধিকারের জন্য লড়াইটা এই বাংলায় রোকেয়াই শুরু করেছিলেন।

দিবসটি উপলক্ষে নানা আনুষ্ঠানিকতায় স্মরণ করা হবে তাকে। মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে রোকেয়া দিবস উদযাপন ও বেগম রোকেয়া পদক-২০২১ প্রদান করা হবে। রোকেয়া দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ তার বাণীতে বলেন, বেগম রোকেয়া শুধু নারী শিক্ষার অগ্রদূতই ছিলেন না, তিনি ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী নিবেদিতপ্রাণ একজন সমাজকর্মী। গতকাল ‘বেগম রোকেয়া দিবস’ উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে রাষ্ট্রপতি এ কথা বলেন।

রাষ্ট্রপতি সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘সমাজের সব স্তরে নারীর ক্ষমতায়নের পথ সুগম করতে পুরুষদের সহযোগিতা খুবই জরুরি।’ এ বছর যারা ‘বেগম রোকেয়া পদক’ পেয়েছেন, রাষ্ট্রপতি তাদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, বেগম রোকেয়া ছিলেন দূরদৃষ্টিসম্পন্ন একজন আধুনিক নারী।

তিনি বলেন, ‘বেগম রোকেয়া উপলব্ধি করেছিলেন সমাজ তথা রাষ্ট্রের সার্বিক উন্নয়নের জন্য পুরুষের পাশাপাশি নারীকে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার মাধ্যমে উপযুক্ত করে গড়ে তোলা একান্ত প্রয়োজন। তার এই উপলব্ধি ও আদর্শ আজও আমাদের অনুপ্রেরণা যোগায়।’

ডিজিটাল বাংলাদেশের সফল বাস্তবায়নে নারীর অংশগ্রহণ এখন দৃশ্যমান উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নারী উন্নয়নের স্বীকৃতি হিসেবে আমরা জাতিসংঘের ‘প্লানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন’সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন করেছি।’

প্রধানমন্ত্রী ‘বেগম রোকেয়া দিবস-২০২১’ উপলক্ষে আয়োজিত সব কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।

এ বছরের পদকের জন্য মনোনীত হয়েছেন- নারী শিক্ষায় বিশেষ অবদানের জন্য কুমিল্লা জেলার অধ্যাপিকা হাসিনা জাকারিয়া বেলা। নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় যশোরের অর্চনা বিশ্বাস। নারীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখায় কুমিল্লার শামসুন্নাহার রহমান পরাণ (মরোণোত্তর)। সাহিত্য ও সংস্কৃতির মাধ্যমে নারী জাগরণের জন্য ঢাবির সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও রোকেয়া হলের প্রভোস্ট ড. জিনাত হুদা। তার নিজ জেলা মুন্সিগঞ্জ। এছাড়া পল্লী উন্নয়নে অবদান রাখায় কুষ্টিয়ার গবেষক ড. সারিয়া সুলতানা পাচ্ছেন এই পদক।

মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় বেগম রোকেয়া পদক-২০২১ প্রদান এবং বেগম রোকেয়া দিবস উদযাপনে বিস্তারিত কর্মসূচি নিয়েছে। পদক প্রদান অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারসহ অন্য টেলিভশন ও সোশ্যাল মিডিয়ায় সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।

এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে বিশেষ ক্রোড়পত্র, পোস্টার, বুকলেট ও স্যুভেনির প্রকাশ করা হবে। যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে দেশব্যাপী জেলা ও উপজেলা পর্যায়েও বিভিন্ন কর্মসূচি নেয়া হয়েছে।