প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করুন

নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলা সদরের ৫০ শয্যা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি জরুরি প্রসূতি সেবায় তিনবার জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিল। সেই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এখন বন্ধ রয়েছে এ সেবা। কারণ প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও লোকবল সংকট। এছাড়া সংকট রয়েছে চিকিৎসা সংক্রান্ত যন্ত্রপাতিরও। তাই স্বাস্থ্য সেবার মতো মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার লখো মানুষ। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন জরুরি প্রসূতি সেবা নিতে আসা রোগী ও তার স্বজনরা। এ নিয়ে গত মঙ্গলবার সংবাদ-এ বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অধীনে চিকিৎসকসহ ১৮১ জন লোকবল থাকার কথা ছিল। তাদের মধ্যে আছেন মাত্র ১৩৮ জন। মোট লোকবলের ৩৩ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও রয়েছেন মাত্র ১৬ জন। বাকিরা মাঠপর্যায়ের স্বাস্থ্যকর্মী, স্বাস্থ্য সহকারী, অ্যাম্বুলেন্স চালকসহ অন্যান্য পদের। এর বাইরে সংকট রয়েছে বিভিন্ন আধুনিক যন্ত্রপাতিরও।

উপযুক্ত সেবা না পেয়ে ছোটখাটো সমস্যাতেই রোগীদের নওগাঁ সদর আধুনিক হাসপাতাল অথবা রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতালে যেতে হচ্ছে। তাই প্রসূতিসহ সাধারণ রোগীদের জেলা শহরসহ বিভিন্ন ক্লিনিক ও বেসরকারি হাসপাতালের ওপর নির্ভর করতে হয়। সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়তে হচ্ছে এ উপজেলার গরিব-অসহায়, মধ্যবিত্ত ও ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠী পরিবারের লোকজনকে। প্রসূতি মায়েরাসহ তাদের স্বজরা জানান, সিজার অপারেশন করতে হলে প্রাইভেট ক্লিনিকে ভর্তি হতে হয়। আর্থিক সঙ্গতি না থাকায় অনেকেই নানা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। অনেককেই আবার ঋণ করতে হচ্ছে।

শুধু নওগাঁর পত্নীতলাই নয়, প্রায়ই দেশের বিভিন্ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বা হাসপাতালে এমন সংকটের কথা শোনা যায়। জনসাধারণের স্বাস্থ্যসেবা দেয়ার জন্য হাসপাতাল করা হয়। সেখানে যদি চিকিৎসকই না থাকেন তাহলে তারা স্বাস্থ্যসেবা পাবেন কীভাবে? হাসপাতালগুলোতে সংশ্লিষ্ট সব পদ আছে কিন্তু লোকবল নিয়োগ দেয়া হয় না। আবার নিয়োগ দেয়া হলেও অনেক চিকিৎসক ঢাকার বাইরে যেতে চান নাÑএমন অভিযোগ অনেক পুরনো।

হাসপাতাল আছে, অথচ তাদের স্বাস্থ্যসেবা নেয়ার জন্য দূর-দূরান্ত যেতে হয়, ভোগান্তি পোহাতে হয়। প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও যন্ত্রপাতি থাকলে তাদের এ ভোগান্তি লাঘব হতো। প্রত্যন্ত অঞ্চলের জনসাধারণের স্বাস্থ্য সেবার কথা চিন্তা করে পত্নীতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দ্রুত চিকিৎসকসহ প্রয়োজনীয় লোকবল নিয়োগ দেয়া হোক। যাদের নিয়োগ দেয়া হবে তারা যেন সেখানে অবস্থান করেন, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সব প্রচেষ্টা চালাতে হবে।

বৃহস্পতিবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২১ , ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪২৮ ৪ জমাদিউল আউয়াল

প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করুন

নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলা সদরের ৫০ শয্যা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি জরুরি প্রসূতি সেবায় তিনবার জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিল। সেই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এখন বন্ধ রয়েছে এ সেবা। কারণ প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও লোকবল সংকট। এছাড়া সংকট রয়েছে চিকিৎসা সংক্রান্ত যন্ত্রপাতিরও। তাই স্বাস্থ্য সেবার মতো মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার লখো মানুষ। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন জরুরি প্রসূতি সেবা নিতে আসা রোগী ও তার স্বজনরা। এ নিয়ে গত মঙ্গলবার সংবাদ-এ বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অধীনে চিকিৎসকসহ ১৮১ জন লোকবল থাকার কথা ছিল। তাদের মধ্যে আছেন মাত্র ১৩৮ জন। মোট লোকবলের ৩৩ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও রয়েছেন মাত্র ১৬ জন। বাকিরা মাঠপর্যায়ের স্বাস্থ্যকর্মী, স্বাস্থ্য সহকারী, অ্যাম্বুলেন্স চালকসহ অন্যান্য পদের। এর বাইরে সংকট রয়েছে বিভিন্ন আধুনিক যন্ত্রপাতিরও।

উপযুক্ত সেবা না পেয়ে ছোটখাটো সমস্যাতেই রোগীদের নওগাঁ সদর আধুনিক হাসপাতাল অথবা রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতালে যেতে হচ্ছে। তাই প্রসূতিসহ সাধারণ রোগীদের জেলা শহরসহ বিভিন্ন ক্লিনিক ও বেসরকারি হাসপাতালের ওপর নির্ভর করতে হয়। সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়তে হচ্ছে এ উপজেলার গরিব-অসহায়, মধ্যবিত্ত ও ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠী পরিবারের লোকজনকে। প্রসূতি মায়েরাসহ তাদের স্বজরা জানান, সিজার অপারেশন করতে হলে প্রাইভেট ক্লিনিকে ভর্তি হতে হয়। আর্থিক সঙ্গতি না থাকায় অনেকেই নানা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। অনেককেই আবার ঋণ করতে হচ্ছে।

শুধু নওগাঁর পত্নীতলাই নয়, প্রায়ই দেশের বিভিন্ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বা হাসপাতালে এমন সংকটের কথা শোনা যায়। জনসাধারণের স্বাস্থ্যসেবা দেয়ার জন্য হাসপাতাল করা হয়। সেখানে যদি চিকিৎসকই না থাকেন তাহলে তারা স্বাস্থ্যসেবা পাবেন কীভাবে? হাসপাতালগুলোতে সংশ্লিষ্ট সব পদ আছে কিন্তু লোকবল নিয়োগ দেয়া হয় না। আবার নিয়োগ দেয়া হলেও অনেক চিকিৎসক ঢাকার বাইরে যেতে চান নাÑএমন অভিযোগ অনেক পুরনো।

হাসপাতাল আছে, অথচ তাদের স্বাস্থ্যসেবা নেয়ার জন্য দূর-দূরান্ত যেতে হয়, ভোগান্তি পোহাতে হয়। প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও যন্ত্রপাতি থাকলে তাদের এ ভোগান্তি লাঘব হতো। প্রত্যন্ত অঞ্চলের জনসাধারণের স্বাস্থ্য সেবার কথা চিন্তা করে পত্নীতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দ্রুত চিকিৎসকসহ প্রয়োজনীয় লোকবল নিয়োগ দেয়া হোক। যাদের নিয়োগ দেয়া হবে তারা যেন সেখানে অবস্থান করেন, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। প্রান্তিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সব প্রচেষ্টা চালাতে হবে।