আর্থিক দুর্নীতির প্রতিবেদন ড্রয়ারেই চাপা পড়ে থাকে : ফরাস উদ্দিন

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাস উদ্দিন বলেছেন, ‘আর্থিক দুর্নীতি বা তদন্ত প্রতিবেদন যদি ড্রয়ারে চলে যায় তাহলে দুর্নীতির প্রবাহ শুরু হয়। কোভিডকালে যে প্রণোদনা দেয়া হয়েছে এর ৮০ শতাংশই পেয়েছে বড় উদ্যোক্তারা। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা সেভাবে প্রণোদনার অর্থ পাননি। বিষয়টি নিয়ে আরও ভাবতে হবে। মানি লন্ডারিং ঠেকাতে বাংলাদেশ ব্যাংককে গুরুত্বপূর্ণ ও কঠোর ভূমিকা পালন করতে হবে।’

এতে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, সাবেক গভর্ণর ফখরুদ্দীন আহমদ, সালেহউদ্দিন আহমেদ, আতিউর রহমান ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব আবদুর রউফ তালুকদার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বলেছেন, ‘বাংলাদেশ এখন বিশ্বের শীর্ষ ৪১তম বড় অর্থনীতির দেশ। তবে আগামী ২০৩৫ সালে ২৫তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ হবে বাংলাদেশ।’ গতকাল হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

ফজলে কবির বলেন, ‘সামনের দিনে দেশের অর্থনীতিতে বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্চ রয়েছে। এর মধ্যে কোভিডের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কোভিড পরিস্থিতিতে বিশ্ব অর্থনীতি বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। নতুন করে দারিদ্র্যসীমায় প্রবেশের সংখ্যা বেড়েছে আশঙ্কাজনক হারে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের তুলনায় বাংলাদেশের অর্থনীতি তেমন একটা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েনি। দেশের অর্থনীতির মেরুদ- সোজা রাখতে এবং কোভিডের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে নেতৃত্ব দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান বলেছেন, ‘কোভিড-১৯ এর কারণে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে সবচেয়ে বড় যে তিনটি খাত ভূমিকা রেখেছে, তার মধ্যে রেমিট্যান্স অন্যতম। এ কারণে রেমিট্যান্সে প্রণোদনা আরও এক শতাংশ বাড়ানো উচিত। অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে দেশের কৃষি খাত ছিল রক্ষাকবচ। এর পরেই ভূমিকা রেখেছে প্রবাসী আয় ও রপ্তানি খাত। করোনাকালে সারা পৃথিবীর অর্থনীতি যখন ধসে গেছে। বাংলাদেশের অর্থনীতি তখনও দাঁড়িয়েছিল। এটা সম্ভব হয়েছে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ফলে। করোনার কারণে আমাদের আমদানি বেড়েছে ৫৪ শতাংশ। আশার কথা হলো, এর বেশিরভাগই কাঁচামাল। ফলে এটা শিল্পের জন্য সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।’

বাংলাদেশ ব্যাংক নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে সামষ্টিক অর্থনীতি স্থিতিশীল রয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন ভরসার প্রতীক। এই ভরসা ধরে রাখতে হবে। তাহলে দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধি ও টেকসই হবে।’

অনুষ্ঠানে সরকারের অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আবদুর রউফ তালুকদার বলেন, ‘বিশ্বের ৪১টি শীর্ষ অর্থনীতি দেশের মধ্যে মাত্র আটটি দেশের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ইতিবাচক ছিল গত অর্থবছরে। এর মধ্যে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি ছিল। এটি সম্ভব হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে যথাযথ যোগসূত্র থাকার কারণে।’

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন বিশ্বের শীর্ষ ৪১তম বড় অর্থনীতির দেশ, যা ২০৩৫ সালে ২৫তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ হবে। কোভিডজনিত ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বাংলাদেশ ব্যাংক নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করেছে।’

সরকারের অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আবদুর রউফ তালুকদার বলেছেন, ‘বিশ্বের ৪১টি শীর্ষ অর্থনীতি দেশের মধ্যে মাত্র আটটি দেশের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ইতিবাচক ছিল গত অর্থবছরে। এর মধ্যে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি ছিল। এটি সম্ভব হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে যথাযথ যোগসূত্র থাকার কারণে। অর্থনৈতিক এই প্রবৃদ্ধিকে আরও গতিশীল রাখতে হলে বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমন্বয়ের প্রয়োজন আছে।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের ভূমিকার প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান কাজ হলো ফাইন্যান্স ও মূল্যস্ফীতি স্থিতিশীল রাখা। কিন্তু সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে। স্বাধীনতার ৫০ বছরে দেশের অর্থনীতি অনেক দূর এগিয়েছে। শেষ ১০ বছরে বাংলাদেশ ব্যাংকের অবদান হলো অটোমেশন। একসময় সরকারিভাবে ১০০ টাকা বিতরণ করতে গেলে ২৫ টাকা খরচ করতে হতো, এখন তা হচ্ছে না। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন অ্যাকাউন্টে চলে যাচ্ছে।’

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন বিশ্বের শীর্ষ ৪১তম বড় অর্থনীতির দেশ, যা ২০৩৫ সালে ২৫তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ হবে। কোভিডজনিত ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বাংলাদেশ ব্যাংক নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করেছে। তবে সামনের দিনে দেশের অর্থনীতিতে বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্চ রয়েছে।’

বৃহস্পতিবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২১ , ২০ পৌষ ১৪২৮ ২৫ জমাদিউল আউয়াল

আর্থিক দুর্নীতির প্রতিবেদন ড্রয়ারেই চাপা পড়ে থাকে : ফরাস উদ্দিন

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাস উদ্দিন বলেছেন, ‘আর্থিক দুর্নীতি বা তদন্ত প্রতিবেদন যদি ড্রয়ারে চলে যায় তাহলে দুর্নীতির প্রবাহ শুরু হয়। কোভিডকালে যে প্রণোদনা দেয়া হয়েছে এর ৮০ শতাংশই পেয়েছে বড় উদ্যোক্তারা। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা সেভাবে প্রণোদনার অর্থ পাননি। বিষয়টি নিয়ে আরও ভাবতে হবে। মানি লন্ডারিং ঠেকাতে বাংলাদেশ ব্যাংককে গুরুত্বপূর্ণ ও কঠোর ভূমিকা পালন করতে হবে।’

এতে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, সাবেক গভর্ণর ফখরুদ্দীন আহমদ, সালেহউদ্দিন আহমেদ, আতিউর রহমান ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব আবদুর রউফ তালুকদার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বলেছেন, ‘বাংলাদেশ এখন বিশ্বের শীর্ষ ৪১তম বড় অর্থনীতির দেশ। তবে আগামী ২০৩৫ সালে ২৫তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ হবে বাংলাদেশ।’ গতকাল হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

ফজলে কবির বলেন, ‘সামনের দিনে দেশের অর্থনীতিতে বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্চ রয়েছে। এর মধ্যে কোভিডের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কোভিড পরিস্থিতিতে বিশ্ব অর্থনীতি বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। নতুন করে দারিদ্র্যসীমায় প্রবেশের সংখ্যা বেড়েছে আশঙ্কাজনক হারে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের তুলনায় বাংলাদেশের অর্থনীতি তেমন একটা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েনি। দেশের অর্থনীতির মেরুদ- সোজা রাখতে এবং কোভিডের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে নেতৃত্ব দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান বলেছেন, ‘কোভিড-১৯ এর কারণে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে সবচেয়ে বড় যে তিনটি খাত ভূমিকা রেখেছে, তার মধ্যে রেমিট্যান্স অন্যতম। এ কারণে রেমিট্যান্সে প্রণোদনা আরও এক শতাংশ বাড়ানো উচিত। অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে দেশের কৃষি খাত ছিল রক্ষাকবচ। এর পরেই ভূমিকা রেখেছে প্রবাসী আয় ও রপ্তানি খাত। করোনাকালে সারা পৃথিবীর অর্থনীতি যখন ধসে গেছে। বাংলাদেশের অর্থনীতি তখনও দাঁড়িয়েছিল। এটা সম্ভব হয়েছে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ফলে। করোনার কারণে আমাদের আমদানি বেড়েছে ৫৪ শতাংশ। আশার কথা হলো, এর বেশিরভাগই কাঁচামাল। ফলে এটা শিল্পের জন্য সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।’

বাংলাদেশ ব্যাংক নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে সামষ্টিক অর্থনীতি স্থিতিশীল রয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন ভরসার প্রতীক। এই ভরসা ধরে রাখতে হবে। তাহলে দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধি ও টেকসই হবে।’

অনুষ্ঠানে সরকারের অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আবদুর রউফ তালুকদার বলেন, ‘বিশ্বের ৪১টি শীর্ষ অর্থনীতি দেশের মধ্যে মাত্র আটটি দেশের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ইতিবাচক ছিল গত অর্থবছরে। এর মধ্যে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি ছিল। এটি সম্ভব হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে যথাযথ যোগসূত্র থাকার কারণে।’

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন বিশ্বের শীর্ষ ৪১তম বড় অর্থনীতির দেশ, যা ২০৩৫ সালে ২৫তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ হবে। কোভিডজনিত ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বাংলাদেশ ব্যাংক নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করেছে।’

সরকারের অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আবদুর রউফ তালুকদার বলেছেন, ‘বিশ্বের ৪১টি শীর্ষ অর্থনীতি দেশের মধ্যে মাত্র আটটি দেশের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ইতিবাচক ছিল গত অর্থবছরে। এর মধ্যে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি ছিল। এটি সম্ভব হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে যথাযথ যোগসূত্র থাকার কারণে। অর্থনৈতিক এই প্রবৃদ্ধিকে আরও গতিশীল রাখতে হলে বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমন্বয়ের প্রয়োজন আছে।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের ভূমিকার প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান কাজ হলো ফাইন্যান্স ও মূল্যস্ফীতি স্থিতিশীল রাখা। কিন্তু সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে। স্বাধীনতার ৫০ বছরে দেশের অর্থনীতি অনেক দূর এগিয়েছে। শেষ ১০ বছরে বাংলাদেশ ব্যাংকের অবদান হলো অটোমেশন। একসময় সরকারিভাবে ১০০ টাকা বিতরণ করতে গেলে ২৫ টাকা খরচ করতে হতো, এখন তা হচ্ছে না। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন অ্যাকাউন্টে চলে যাচ্ছে।’

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন বিশ্বের শীর্ষ ৪১তম বড় অর্থনীতির দেশ, যা ২০৩৫ সালে ২৫তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ হবে। কোভিডজনিত ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বাংলাদেশ ব্যাংক নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করেছে। তবে সামনের দিনে দেশের অর্থনীতিতে বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্চ রয়েছে।’