দেশবাসী চান চিকিৎসার জন্য খালেদাকে অবিলম্বে বিদেশ পাঠাতে মির্জা ফখরুল

দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে বিএনপির কর্মসূচির মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়েছে, এ দেশের মানুষ আর একবারও চায় না এই অনির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় থাকুক।

গতকাল গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, দেশের মানুষ চায় না তারা এভাবে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করুক। প্রমাণিত হয়েছে, দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি এ দেশের মানুষ এই মুহূর্তেই চান এবং তার চিকিৎসার জন্য অবিলম্বে বিদেশে পাঠাতে চান।

ফখরুল বলেন, আপনারা জানেন বাংলাদেশের ৩ বারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত জটিল অসুখে আক্রান্ত হয়ে সংকটাপন্ন অবস্থায় আছেন। চিকিৎসকরা বলছেন তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো দরকার। সেই দাবিতে সব মহানগর ও প্রায় ৩২টি জেলায় অত্যন্ত সফল্যের সঙ্গে সমাবেশের আয়োজন করেছি। এই সমাবেশগুলোতে জনগণের যে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ, তাতে উদ্বিগ্ন হয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী এবং সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রতিটি কর্মসূচিতে বাধা প্রদান করেছে।

প্রথম থেকেই বিভিন্ন পদ্ধতিতে কখনো সেøা করে দেয়া, কখনো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আক্রমণ সরাসরি, কখনো আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দিয়ে হমলা চালিয়ে তার এই আন্দোলনকে দমন করার চেষ্টা করেছে। ফখরুল বলেন, সবচেয়ে ভয়াবহ যে কাজটা ঘটেছিল হবিগঞ্জে, সেখানে ছাত্রদলের কয়েক জনের চোখ নষ্ট হয়ে গেছে। এখনো কয়েকজন গ্রেপ্তার হয়ে আছে। প্রায় দুই হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে গায়েবি মামলা করা হয়েছে।

দলীয় কর্মসূচিতে বাধা দেয়ার অভিযোগ তুলে তিনি আরও বলেন, পটুয়াখালীতে বিএনপির সমাবেশে হামলা হয়েছে, ৩৫ জন আহত হয়েছে। নওগাঁয় সভাই করতে দেয়া হয়নি। প্রত্যেকটি জায়গা যেখানে ঠিক করা হয়েছে সেখানে আওয়ামী লীগ তাদের কর্মসূচি দেয়াতে ১৪৪ ধারা দেয়া হয়েছে। ফেনী ও যশোরে ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করেই বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। ঠাকুরগাঁওয়ে মঞ্চ বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। পরে তারা প্রত্যাহার করেছে। ঝিনাইদহে পথে পথে বাধা দেয়া হয়েছে। গাজীপুর-টাঙ্গাইলে গাড়ি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। সিরাজগঞ্জে যেটা হয়েছে, আমি জোর গলায় বলতে চাই সন্ত্রাসী কার্যকলাপের মধ্য দিয়ে অসংখ্য মানুষকে হতাহত করে অস্ত্রধারীরা গোলাগুলি করে সমাবেশ প- করতে চেয়েছে। কিন্তু জনগণের যে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তাকে বিদেশে পাঠানোর দাবিতে নেতা কর্মী-সমর্থক ও যারা বাংলাদেশকে ভালোবাসে তারা এটাকে এড়িয়ে সেই সভাকে তারা সফল করতে সক্ষম হয়েছে।

শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দাবি আদায়ের যে প্রক্রিয়া আমরা শুরু করেছি, এতে ভীত হয়ে আওয়ামী লীগ এবং এই অনির্বাচিত সরকার গণতান্ত্রিক শক্তির ওপরে আক্রমণের পর আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে। এই কর্মসূচির মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়েছে এ দেশের মানুষ আর একবারও চায় না এই অনির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় থাকুক। এভাবে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করুক। প্রমাণিত হয়েছে, দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি এ দেশের মানুষ এই মুহূর্তেই চান এবং তার চিকিৎসার জন্য অবিলম্বে বিদেশে পাঠাতে চান বলেন ফখরুল।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, দুর্ভাগ্য আমাদের, আজকে এই অনির্বাচিত সরকার, মিডনাইট সরকার বলে অনেকে, তার বিষয়টি পুরোপুরি এড়িয়ে গিয়ে তাদের একদলীয় শাসনের নীল নকশা প্রতিষ্ঠা করতে চায়। সে জন্য অতীতের মতোই নির্যাতন, নিপীড়ন, খুন, গুমের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার লড়াই তারা ব্যাহত করতে চায়। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, বাংলাদেশের মানুষ জেগে উঠেছে এবং বাংলাদেশের মানুষ রাজপথে সংগ্রামের মধ্য দিয়েই তারা তাদের দাবি আদায় করবে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করবে, দেশনেত্রীর মুক্তি আদায় করবে এবং তার সুচিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে সক্ষম হবে।

সরকারের প্রতি দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, নেতাকর্মী যারা আহত হয়েছে, হাসপাতালে আছে অবিলম্বের তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের অবিলম্বে মুক্তি দিয়ে সমস্ত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে, মূলত যারা এই ঘটনার জন্য দায়ী, পত্রিকায় অস্ত্র হাতে ছবি বেরিয়েছে তাদের গ্রেপ্তার করার আহ্বান জানাচ্ছি। দুর্ভাগ্য আমাদের, যদিও সিরাজগঞ্জের ঘটনায় ৬টি মামলা হয়েছে। সেখানে আসামি করা হয়েছে যারা শান্তিপূর্ণভাবে সভা করছিল। দেশের ভেতরে অস্ত্র এসে গেছে এটা শুভ লক্ষণ না, সন্ত্রাস করবে তারা আবার দেখা যাবে বিরোধী দলকে দোষারোপ করছে। সুতরাং আমরা অবিলম্বে অস্ত্রধারীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।

সোমবার, ০৩ জানুয়ারী ২০২২ , ১৯ পৌষ ১৪২৮ ২৯ জমাদিউল আউয়াল

দেশবাসী চান চিকিৎসার জন্য খালেদাকে অবিলম্বে বিদেশ পাঠাতে মির্জা ফখরুল

নিজস্ব বাতা পরিবেশক

দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে বিএনপির কর্মসূচির মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়েছে, এ দেশের মানুষ আর একবারও চায় না এই অনির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় থাকুক।

গতকাল গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, দেশের মানুষ চায় না তারা এভাবে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করুক। প্রমাণিত হয়েছে, দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি এ দেশের মানুষ এই মুহূর্তেই চান এবং তার চিকিৎসার জন্য অবিলম্বে বিদেশে পাঠাতে চান।

ফখরুল বলেন, আপনারা জানেন বাংলাদেশের ৩ বারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত জটিল অসুখে আক্রান্ত হয়ে সংকটাপন্ন অবস্থায় আছেন। চিকিৎসকরা বলছেন তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো দরকার। সেই দাবিতে সব মহানগর ও প্রায় ৩২টি জেলায় অত্যন্ত সফল্যের সঙ্গে সমাবেশের আয়োজন করেছি। এই সমাবেশগুলোতে জনগণের যে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ, তাতে উদ্বিগ্ন হয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী এবং সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রতিটি কর্মসূচিতে বাধা প্রদান করেছে।

প্রথম থেকেই বিভিন্ন পদ্ধতিতে কখনো সেøা করে দেয়া, কখনো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আক্রমণ সরাসরি, কখনো আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দিয়ে হমলা চালিয়ে তার এই আন্দোলনকে দমন করার চেষ্টা করেছে। ফখরুল বলেন, সবচেয়ে ভয়াবহ যে কাজটা ঘটেছিল হবিগঞ্জে, সেখানে ছাত্রদলের কয়েক জনের চোখ নষ্ট হয়ে গেছে। এখনো কয়েকজন গ্রেপ্তার হয়ে আছে। প্রায় দুই হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে গায়েবি মামলা করা হয়েছে।

দলীয় কর্মসূচিতে বাধা দেয়ার অভিযোগ তুলে তিনি আরও বলেন, পটুয়াখালীতে বিএনপির সমাবেশে হামলা হয়েছে, ৩৫ জন আহত হয়েছে। নওগাঁয় সভাই করতে দেয়া হয়নি। প্রত্যেকটি জায়গা যেখানে ঠিক করা হয়েছে সেখানে আওয়ামী লীগ তাদের কর্মসূচি দেয়াতে ১৪৪ ধারা দেয়া হয়েছে। ফেনী ও যশোরে ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করেই বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। ঠাকুরগাঁওয়ে মঞ্চ বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। পরে তারা প্রত্যাহার করেছে। ঝিনাইদহে পথে পথে বাধা দেয়া হয়েছে। গাজীপুর-টাঙ্গাইলে গাড়ি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। সিরাজগঞ্জে যেটা হয়েছে, আমি জোর গলায় বলতে চাই সন্ত্রাসী কার্যকলাপের মধ্য দিয়ে অসংখ্য মানুষকে হতাহত করে অস্ত্রধারীরা গোলাগুলি করে সমাবেশ প- করতে চেয়েছে। কিন্তু জনগণের যে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তাকে বিদেশে পাঠানোর দাবিতে নেতা কর্মী-সমর্থক ও যারা বাংলাদেশকে ভালোবাসে তারা এটাকে এড়িয়ে সেই সভাকে তারা সফল করতে সক্ষম হয়েছে।

শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দাবি আদায়ের যে প্রক্রিয়া আমরা শুরু করেছি, এতে ভীত হয়ে আওয়ামী লীগ এবং এই অনির্বাচিত সরকার গণতান্ত্রিক শক্তির ওপরে আক্রমণের পর আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে। এই কর্মসূচির মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়েছে এ দেশের মানুষ আর একবারও চায় না এই অনির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় থাকুক। এভাবে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করুক। প্রমাণিত হয়েছে, দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি এ দেশের মানুষ এই মুহূর্তেই চান এবং তার চিকিৎসার জন্য অবিলম্বে বিদেশে পাঠাতে চান বলেন ফখরুল।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, দুর্ভাগ্য আমাদের, আজকে এই অনির্বাচিত সরকার, মিডনাইট সরকার বলে অনেকে, তার বিষয়টি পুরোপুরি এড়িয়ে গিয়ে তাদের একদলীয় শাসনের নীল নকশা প্রতিষ্ঠা করতে চায়। সে জন্য অতীতের মতোই নির্যাতন, নিপীড়ন, খুন, গুমের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার লড়াই তারা ব্যাহত করতে চায়। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, বাংলাদেশের মানুষ জেগে উঠেছে এবং বাংলাদেশের মানুষ রাজপথে সংগ্রামের মধ্য দিয়েই তারা তাদের দাবি আদায় করবে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করবে, দেশনেত্রীর মুক্তি আদায় করবে এবং তার সুচিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে সক্ষম হবে।

সরকারের প্রতি দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, নেতাকর্মী যারা আহত হয়েছে, হাসপাতালে আছে অবিলম্বের তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের অবিলম্বে মুক্তি দিয়ে সমস্ত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে, মূলত যারা এই ঘটনার জন্য দায়ী, পত্রিকায় অস্ত্র হাতে ছবি বেরিয়েছে তাদের গ্রেপ্তার করার আহ্বান জানাচ্ছি। দুর্ভাগ্য আমাদের, যদিও সিরাজগঞ্জের ঘটনায় ৬টি মামলা হয়েছে। সেখানে আসামি করা হয়েছে যারা শান্তিপূর্ণভাবে সভা করছিল। দেশের ভেতরে অস্ত্র এসে গেছে এটা শুভ লক্ষণ না, সন্ত্রাস করবে তারা আবার দেখা যাবে বিরোধী দলকে দোষারোপ করছে। সুতরাং আমরা অবিলম্বে অস্ত্রধারীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।