করোনা, ২৪ ঘণ্টায় ৬০০ ছাড়িয়েছে সংক্রমণ

এই মুহূর্তে লকডাউনের কথা ভাবা হচ্ছে না, তবে কিছু বিধিনিষেধ দেয়া হতে পারে : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

একদিনে কোভিড রোগী শনাক্ত ছয়শ’ ছাড়িয়ে গেছে। এ সময়ে করোনা সংক্রমণ শনাক্তের হার ও মৃত্যু সবই বেড়েছে। এদিন নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় করোনা সংক্রমণ শনাক্তের হার সাড়ে তিন শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছেছে, যা গত তিনমাসের মধ্যে সর্বোচ্চ।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক গতকাল সন্ধ্যায় সচিবালয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের এক সভা শেষে সাংবাদিকদের বলেন, এই মুহূর্তে দেশে ‘লকডাউনের’ কথা ভাবা হচ্ছে না। তবে টিকা ছাড়া রেস্টুরেন্টে খাওয়া যাবে না। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। সব ধরনের অনুষ্ঠান সীমিত করার পাশাপাশি মাস্ক না পরলে জরিমানা করার কথাও জানিয়েছেন মন্ত্রী।

করোনার নতুন ধরন ‘ওমিক্রন’ ইস্যুতে আন্তঃমন্ত্রণালয় ওই বৈঠক বসে। এতে গণপরিবহনে যাত্রী চলাচলের ক্ষেত্রে নির্ধারিত আসনের চেয়ে কম যাত্রী পরিবহনের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, সরকার ওমিক্রন নিয়ে উদ্বিগ্ন, তবে এখনই লকডাউনের বিষয়ে ভাবা হচ্ছে না। পরিস্থিতি এখনও ওই পর্যায়ে যায়নি। তবে করোনা বাড়ছে যা উদ্বেগের বিষয়। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা লকডাউনের সুপারিশও করিনি। লকডাউনের পর্যায় পর্যন্ত যাতে না যেতে হয়, সেজন্যই এ বৈঠক। যা যা পদক্ষেপ নেয়ার, সেগুলো নিই। এরপর দেখা যাক কী দাঁড়ায়।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গতকাল সকাল আটটা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৬৭৪ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের জীবাণু শনাক্ত হয়েছে। এর আগে একদিনে এর চেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয় গত ৬ অক্টোবর। ওইদিন ৭০৩ জনের শরীরে জীবাণু শনাক্ত হয়েছিল।

মার্চ-এপ্রিলে সংক্রমণ বৃদ্ধির শঙ্কা স্বাস্থ্য বিভাগের : আগামী ‘মার্চ-এপ্রিলে আবার করোনা সংক্রমণ বাড়তে পারে’ জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মো. খুরশীদ আলম গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, তাই পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলা পর্যায়ে হাসপাতালের পুরো প্রস্তুতি জানুয়ারিতে শেষ করার লক্ষ্য রয়েছে।

করোনা প্রতিরোধে দু’একদিনের মধ্যেই বুস্টার ডোজের বয়সসীমা কমানো হবে জানিয়ে মহাপরিচালক বলেন, এসএমএস ছাড়াও ৬০ বছরের কম বয়সী ‘কোমরবিডিটি’ রোগীরা আগের কেন্দ্রে টিকা নিতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে তাদের রোগের প্রয়োজনীয় তথ্যপ্রমাণ থাকতে হবে।

শনাক্ত রোগীর বেশির ভাগই ঢাকায় : সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত রোগীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঢাকা জেলাতে। এই জেলায় ৫৬৮ জনের দেহে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এটি একদিনের মোট শনাক্তের ৮৪ দশমিক ২৭ শতাংশ। এদিন দেশের ২৮ জেলায় নতুন কোন রোগী শনাক্ত হয়নি।

জানতে চাইলে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণ প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও বর্তমান উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, ওমিক্রনের প্রভাবেই এখন সংক্রমণ বাড়ছে। দেশে এখন ওমিক্রনের ক্লাস্টার ট্রান্সমিশন বা গুচ্ছ সংক্রমণ হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে এটি কমিউনিটি ট্রান্সমিশনে রূপ নেবে।

তিন মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ সংক্রমণ হার :

সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশে নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে করোনা শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে তিন দশমিক ৩৭ শতাংশ, যা গত তিন মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে একদিনে এর চেয়ে বেশি শনাক্তের হার ছিল গত ২ অক্টোবর। ওইদিন তিন দশমিক ৪১ শতাংশ করোনা শনাক্তের কথা জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। আর ২ জানুয়ারি দেশে সংক্রমণের হার ছিল দুই দশমিক ৯৭ শতাংশ।

এত দিন ধরে শনাক্তের হার তিন শতাংশের নিচেই ছিল। এক সময় শনাক্তের হার দুই শতাংশের নিচে নেমে গিয়েছিল। ডিসেম্বরের শেষ দিকে পুনরায় সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে।

গত নভেম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকায় করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনের শনাক্তের পর থেকে বিশ^ব্যাপী সংক্রমণ বাড়ছে।

বাংলাদেশে গত ১১ ডিসেম্বর প্রথম ওমিক্রনের সংক্রমণ শনাক্তের কথা জানানো হয়। দেশে এ পর্যন্ত বিদেশফেরত সাতজনের দেহে ওমিক্রনের সংক্রমণ শনাক্তের কথা জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তবে দেশে শুধুমাত্র বিদেশ থেকে আসা ব্যক্তিদের নমুনা থেকে ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্সিং বা জিনবিন্যাস বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। এতে ওমিক্রনের প্রাদুর্ভাবের পূর্ণাঙ্গ চিত্র এখনও স্পষ্ট নয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, ২৭ ডিসেম্বর থেকে ২ জানুয়ারি পর্যন্ত এক সপ্তাহে মোট তিন হাজার ২১৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে, যা আগের সপ্তাহে ছিল দুই হাজার ১৭০ জন। এ হিসেবে এক সপ্তাহে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৪৮ দশমিক ১ শতাংশ বেড়েছে।

আর ওই এক সপ্তাহে মারা গেছেন ১৭ জন, আগের সপ্তাহে মৃত্যু হয়েছিল ১২ জন। এ হিসাবে এক সপ্তাহে কোভিডে মৃত্যুর সংখ্যা ৪১ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১৯ হাজার ৯৮০টি। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা দাঁড়ালো এক কোটি ১৫ লাখ ৪৫ হাজার ৮১২টি।

নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে দেশে এ পর্যন্ত কোভিড শনাক্তের হার হলো ১৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ। আর একদিনে শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯৭ দশমিক ৬৫ শতাংশ এবং মৃত্যুহার এক দশমিক ৭৭ শতাংশ।

একদিনে মৃত্যু হওয়া চার জনের মধ্যে পুরুষ একজন এবং নারী তিন জন। আর এ পর্যন্ত মোট মৃত্যু হওয়া লোকজনের মধ্যে পুরুষ ১৭ হাজার ৯৬০ জন এবং নারী ছিলেন দশ হাজার ১২১ জন।

বয়স বিশ্লেষণে দেখা গেছে, একদিনে যারা মারা গেছেন তাদের দুই জনের বয়স ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে, একজনের বয়স ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে এবং অপর একজনের বয়স ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ছিল। তাদের দুই জন ঢাকা বিভাগের এবং রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন দুজন।

গতকাল অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় অন্যদের মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব লোকমান হোসেন মিয়া, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোকাম্মেল হোসেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক আবুল বাশার মো. খুরশীদ আলম, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মকবুল হোসেন, তথ্য অধিদপ্তরের প্রধান তথ্য অফিসার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) শাহেনুর মিয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

মঙ্গলবার, ০৪ জানুয়ারী ২০২২ , ২০ পৌষ ১৪২৮ ৩০ জমাদিউল আউয়াল

করোনা, ২৪ ঘণ্টায় ৬০০ ছাড়িয়েছে সংক্রমণ

এই মুহূর্তে লকডাউনের কথা ভাবা হচ্ছে না, তবে কিছু বিধিনিষেধ দেয়া হতে পারে : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

image

একদিনে কোভিড রোগী শনাক্ত ছয়শ’ ছাড়িয়ে গেছে। এ সময়ে করোনা সংক্রমণ শনাক্তের হার ও মৃত্যু সবই বেড়েছে। এদিন নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় করোনা সংক্রমণ শনাক্তের হার সাড়ে তিন শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছেছে, যা গত তিনমাসের মধ্যে সর্বোচ্চ।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক গতকাল সন্ধ্যায় সচিবালয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের এক সভা শেষে সাংবাদিকদের বলেন, এই মুহূর্তে দেশে ‘লকডাউনের’ কথা ভাবা হচ্ছে না। তবে টিকা ছাড়া রেস্টুরেন্টে খাওয়া যাবে না। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। সব ধরনের অনুষ্ঠান সীমিত করার পাশাপাশি মাস্ক না পরলে জরিমানা করার কথাও জানিয়েছেন মন্ত্রী।

করোনার নতুন ধরন ‘ওমিক্রন’ ইস্যুতে আন্তঃমন্ত্রণালয় ওই বৈঠক বসে। এতে গণপরিবহনে যাত্রী চলাচলের ক্ষেত্রে নির্ধারিত আসনের চেয়ে কম যাত্রী পরিবহনের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, সরকার ওমিক্রন নিয়ে উদ্বিগ্ন, তবে এখনই লকডাউনের বিষয়ে ভাবা হচ্ছে না। পরিস্থিতি এখনও ওই পর্যায়ে যায়নি। তবে করোনা বাড়ছে যা উদ্বেগের বিষয়। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা লকডাউনের সুপারিশও করিনি। লকডাউনের পর্যায় পর্যন্ত যাতে না যেতে হয়, সেজন্যই এ বৈঠক। যা যা পদক্ষেপ নেয়ার, সেগুলো নিই। এরপর দেখা যাক কী দাঁড়ায়।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গতকাল সকাল আটটা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৬৭৪ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের জীবাণু শনাক্ত হয়েছে। এর আগে একদিনে এর চেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয় গত ৬ অক্টোবর। ওইদিন ৭০৩ জনের শরীরে জীবাণু শনাক্ত হয়েছিল।

মার্চ-এপ্রিলে সংক্রমণ বৃদ্ধির শঙ্কা স্বাস্থ্য বিভাগের : আগামী ‘মার্চ-এপ্রিলে আবার করোনা সংক্রমণ বাড়তে পারে’ জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মো. খুরশীদ আলম গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, তাই পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলা পর্যায়ে হাসপাতালের পুরো প্রস্তুতি জানুয়ারিতে শেষ করার লক্ষ্য রয়েছে।

করোনা প্রতিরোধে দু’একদিনের মধ্যেই বুস্টার ডোজের বয়সসীমা কমানো হবে জানিয়ে মহাপরিচালক বলেন, এসএমএস ছাড়াও ৬০ বছরের কম বয়সী ‘কোমরবিডিটি’ রোগীরা আগের কেন্দ্রে টিকা নিতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে তাদের রোগের প্রয়োজনীয় তথ্যপ্রমাণ থাকতে হবে।

শনাক্ত রোগীর বেশির ভাগই ঢাকায় : সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত রোগীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঢাকা জেলাতে। এই জেলায় ৫৬৮ জনের দেহে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এটি একদিনের মোট শনাক্তের ৮৪ দশমিক ২৭ শতাংশ। এদিন দেশের ২৮ জেলায় নতুন কোন রোগী শনাক্ত হয়নি।

জানতে চাইলে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণ প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও বর্তমান উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, ওমিক্রনের প্রভাবেই এখন সংক্রমণ বাড়ছে। দেশে এখন ওমিক্রনের ক্লাস্টার ট্রান্সমিশন বা গুচ্ছ সংক্রমণ হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে এটি কমিউনিটি ট্রান্সমিশনে রূপ নেবে।

তিন মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ সংক্রমণ হার :

সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশে নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে করোনা শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে তিন দশমিক ৩৭ শতাংশ, যা গত তিন মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে একদিনে এর চেয়ে বেশি শনাক্তের হার ছিল গত ২ অক্টোবর। ওইদিন তিন দশমিক ৪১ শতাংশ করোনা শনাক্তের কথা জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। আর ২ জানুয়ারি দেশে সংক্রমণের হার ছিল দুই দশমিক ৯৭ শতাংশ।

এত দিন ধরে শনাক্তের হার তিন শতাংশের নিচেই ছিল। এক সময় শনাক্তের হার দুই শতাংশের নিচে নেমে গিয়েছিল। ডিসেম্বরের শেষ দিকে পুনরায় সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে।

গত নভেম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকায় করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনের শনাক্তের পর থেকে বিশ^ব্যাপী সংক্রমণ বাড়ছে।

বাংলাদেশে গত ১১ ডিসেম্বর প্রথম ওমিক্রনের সংক্রমণ শনাক্তের কথা জানানো হয়। দেশে এ পর্যন্ত বিদেশফেরত সাতজনের দেহে ওমিক্রনের সংক্রমণ শনাক্তের কথা জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তবে দেশে শুধুমাত্র বিদেশ থেকে আসা ব্যক্তিদের নমুনা থেকে ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্সিং বা জিনবিন্যাস বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। এতে ওমিক্রনের প্রাদুর্ভাবের পূর্ণাঙ্গ চিত্র এখনও স্পষ্ট নয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, ২৭ ডিসেম্বর থেকে ২ জানুয়ারি পর্যন্ত এক সপ্তাহে মোট তিন হাজার ২১৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে, যা আগের সপ্তাহে ছিল দুই হাজার ১৭০ জন। এ হিসেবে এক সপ্তাহে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৪৮ দশমিক ১ শতাংশ বেড়েছে।

আর ওই এক সপ্তাহে মারা গেছেন ১৭ জন, আগের সপ্তাহে মৃত্যু হয়েছিল ১২ জন। এ হিসাবে এক সপ্তাহে কোভিডে মৃত্যুর সংখ্যা ৪১ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১৯ হাজার ৯৮০টি। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা দাঁড়ালো এক কোটি ১৫ লাখ ৪৫ হাজার ৮১২টি।

নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে দেশে এ পর্যন্ত কোভিড শনাক্তের হার হলো ১৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ। আর একদিনে শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯৭ দশমিক ৬৫ শতাংশ এবং মৃত্যুহার এক দশমিক ৭৭ শতাংশ।

একদিনে মৃত্যু হওয়া চার জনের মধ্যে পুরুষ একজন এবং নারী তিন জন। আর এ পর্যন্ত মোট মৃত্যু হওয়া লোকজনের মধ্যে পুরুষ ১৭ হাজার ৯৬০ জন এবং নারী ছিলেন দশ হাজার ১২১ জন।

বয়স বিশ্লেষণে দেখা গেছে, একদিনে যারা মারা গেছেন তাদের দুই জনের বয়স ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে, একজনের বয়স ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে এবং অপর একজনের বয়স ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ছিল। তাদের দুই জন ঢাকা বিভাগের এবং রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন দুজন।

গতকাল অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় অন্যদের মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব লোকমান হোসেন মিয়া, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোকাম্মেল হোসেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক আবুল বাশার মো. খুরশীদ আলম, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মকবুল হোসেন, তথ্য অধিদপ্তরের প্রধান তথ্য অফিসার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) শাহেনুর মিয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।