৩৩% নারী নেতৃত্ব ঐচ্ছিক করার প্রস্তাব খেলাফত আন্দোলনের
নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, স্পিকার, প্রধান বিচারপতি ও অ্যাটর্নি জেনারেলকে নিয়ে একটি সাংবিধানিক কাউন্সিল গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে গণতন্ত্রী পার্টি। গতকাল বঙ্গভবনে নতুন ইসি গঠনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ প্রস্তাব পেশ করে দলটি।
সন্ধ্যায় বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নেতারা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে অংশ নেন। ধর্মভিত্তিক এই দলটি ইসি কর্তৃক রাজনৈতিক দলগুলোর ৩৩ শতাংশ নারী নেতৃত্ব রাখার বাধ্যবাধকতাকে ঐচ্ছিক করার প্রস্তাব দেয়।
বিকেলে গণতন্ত্রী পার্টির সভাপতি ব্যারিস্টার আরশ আলী এবং সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেনের নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেন।
সংলাপ শেষে রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন জানান, গণতন্ত্রী পার্টি ইসি গঠনে আইন প্রণয়ন এবং সাংবিধানিক কাউন্সিল গঠনসহ আট দফা প্রস্তাবনা দেন রাষ্ট্রপতির কাছে। তারা নির্বাচন কমিশন গঠনে প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, স্পিকার, প্রধান বিচারপতি ও অ্যাটর্নি জেনারেলকে নিয়ে একটি সাংবিধানিক কাউন্সিল গঠনেরও প্রস্তাব দেন।
সংলাপে গণতন্ত্রী পার্টির নেতারা বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ নিয়োগের ক্ষেত্রে একটি সাংবিধানিক কাউন্সিল গঠনের ও প্রস্তাব করেন। তারা প্রস্তাব করেন যে, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলের নেতা, স্পিকার, প্রধান বিচারপতি ও অ্যাটর্নি জেনারেলকে নিয়ে একটি সাংবিধানিক কাউন্সিল গঠন করা যেতে পারে এবং এই কাউন্সিল রাষ্ট্রপতির কাছে প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগের জন্য নাম প্রস্তাব করবেন।
এরপর সন্ধ্যায় বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের চেয়ারম্যান মাওলানা আতাউল্লাহ হাফেজি এবং মহাসচিব মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজীর নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল আলোচনায় অংশ নেন। সংলাপে তারা একটি নিরপেক্ষ, সক্ষম, শক্তিশালী, দক্ষ ও যোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনের গঠনের জন্য একটি স্থায়ী আইন প্রণয়নসহ ছয় দফা প্রস্তাবনা পেশ করেন রাষ্ট্রপতির কাছে।
খেলাফত আন্দোলনের প্রতিনিধিরা বলেন, ধর্মবিদ্বেষী, চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ, কালো টাকার মালিক, অবৈধ সম্পদের অধিকারী, সন্ত্রাসী, সাজাপ্রাপ্ত অপরাধী ও ঋণ খেলাপির সঙ্গে জড়িত ও তাদের পরিবারকে নির্বাচন কমিশনে অযোগ্য ঘোষণা করতে হবে। এছাড়া ধর্মভিত্তিক দলটি নির্বাচন কমিশন কর্তৃক রাজনৈতিক দলগুলোর ৩৩ শতাংশ নারী নেতৃত্ব রাখার বাধ্যবাধকতাকে ঐচ্ছিক করার প্রস্তাব দেয়।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন কমিশন যাতে গঠন করা যায় সেজন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সুচিন্তিত মতামত খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তাই সব রাজনৈতিক ব্যক্তি ও দলকে জনকল্যাণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে। রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিবরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।’
গত ২০ ডিসেম্বর প্রথম দিনে সংসদে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সঙ্গে সংলাপে বসে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। এখন পর্যন্ত মোট ১১টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে কাউন্সিল গঠনের এ প্রস্তাব ছাড়াও এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির সংলাপে অংশ নেয়া কয়েকটি দল সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছে। জাতীয় পার্টি, বিকল্প ধারা, তরিকত ফেডারেশনসহ কয়েকটি দল সার্চ কমিটির জন্য নামও প্রস্তাব করে এসেছে রাষ্ট্রপতির কাছে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা ছয়টায় বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল ও সন্ধ্যা সাতটায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, ৫ জানুয়ারি সন্ধ্যা ছয়টায় জাতীয় পার্টি (জেপি), সন্ধ্যা সাতটায় জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, ৬ জানুয়ারি সন্ধ্যা ছয়টায় গণফ্রন্ট, সন্ধ্যা সাতটায় লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সংলাপে অংশ নেয়ার কথা রয়েছে।
এদিকে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সঙ্গে আলোচনা হবে ৯ জানুয়ারি সন্ধ্যা ছয়টায় এবং বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল) এর সঙ্গে ওই দিন সন্ধ্যা সাতটায়। ১০ জানুয়ারি রোজ সোমবার সংলাপ হবে জাতীয় পার্টি (জেপি)-এর সঙ্গে সন্ধ্যা ছয়টায় এবং জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) সঙ্গে সন্ধ্যা সাতটায়।
অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার তারিখ এখনও নির্ধারিত হয়নি। বর্তমান ইসির পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি। এ সময়ের মধ্যেই রাষ্ট্রপতি নতুন কমিশন গঠন করবেন, যাদের অধীনে অনুষ্ঠিত হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন।
মঙ্গলবার, ০৪ জানুয়ারী ২০২২ , ২০ পৌষ ১৪২৮ ৩০ জমাদিউল আউয়াল
৩৩% নারী নেতৃত্ব ঐচ্ছিক করার প্রস্তাব খেলাফত আন্দোলনের
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক
নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, স্পিকার, প্রধান বিচারপতি ও অ্যাটর্নি জেনারেলকে নিয়ে একটি সাংবিধানিক কাউন্সিল গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে গণতন্ত্রী পার্টি। গতকাল বঙ্গভবনে নতুন ইসি গঠনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ প্রস্তাব পেশ করে দলটি।
সন্ধ্যায় বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নেতারা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে অংশ নেন। ধর্মভিত্তিক এই দলটি ইসি কর্তৃক রাজনৈতিক দলগুলোর ৩৩ শতাংশ নারী নেতৃত্ব রাখার বাধ্যবাধকতাকে ঐচ্ছিক করার প্রস্তাব দেয়।
বিকেলে গণতন্ত্রী পার্টির সভাপতি ব্যারিস্টার আরশ আলী এবং সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেনের নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেন।
সংলাপ শেষে রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন জানান, গণতন্ত্রী পার্টি ইসি গঠনে আইন প্রণয়ন এবং সাংবিধানিক কাউন্সিল গঠনসহ আট দফা প্রস্তাবনা দেন রাষ্ট্রপতির কাছে। তারা নির্বাচন কমিশন গঠনে প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, স্পিকার, প্রধান বিচারপতি ও অ্যাটর্নি জেনারেলকে নিয়ে একটি সাংবিধানিক কাউন্সিল গঠনেরও প্রস্তাব দেন।
সংলাপে গণতন্ত্রী পার্টির নেতারা বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ নিয়োগের ক্ষেত্রে একটি সাংবিধানিক কাউন্সিল গঠনের ও প্রস্তাব করেন। তারা প্রস্তাব করেন যে, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলের নেতা, স্পিকার, প্রধান বিচারপতি ও অ্যাটর্নি জেনারেলকে নিয়ে একটি সাংবিধানিক কাউন্সিল গঠন করা যেতে পারে এবং এই কাউন্সিল রাষ্ট্রপতির কাছে প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগের জন্য নাম প্রস্তাব করবেন।
এরপর সন্ধ্যায় বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের চেয়ারম্যান মাওলানা আতাউল্লাহ হাফেজি এবং মহাসচিব মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজীর নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল আলোচনায় অংশ নেন। সংলাপে তারা একটি নিরপেক্ষ, সক্ষম, শক্তিশালী, দক্ষ ও যোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনের গঠনের জন্য একটি স্থায়ী আইন প্রণয়নসহ ছয় দফা প্রস্তাবনা পেশ করেন রাষ্ট্রপতির কাছে।
খেলাফত আন্দোলনের প্রতিনিধিরা বলেন, ধর্মবিদ্বেষী, চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ, কালো টাকার মালিক, অবৈধ সম্পদের অধিকারী, সন্ত্রাসী, সাজাপ্রাপ্ত অপরাধী ও ঋণ খেলাপির সঙ্গে জড়িত ও তাদের পরিবারকে নির্বাচন কমিশনে অযোগ্য ঘোষণা করতে হবে। এছাড়া ধর্মভিত্তিক দলটি নির্বাচন কমিশন কর্তৃক রাজনৈতিক দলগুলোর ৩৩ শতাংশ নারী নেতৃত্ব রাখার বাধ্যবাধকতাকে ঐচ্ছিক করার প্রস্তাব দেয়।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন কমিশন যাতে গঠন করা যায় সেজন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সুচিন্তিত মতামত খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তাই সব রাজনৈতিক ব্যক্তি ও দলকে জনকল্যাণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে। রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিবরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।’
গত ২০ ডিসেম্বর প্রথম দিনে সংসদে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সঙ্গে সংলাপে বসে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। এখন পর্যন্ত মোট ১১টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে কাউন্সিল গঠনের এ প্রস্তাব ছাড়াও এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির সংলাপে অংশ নেয়া কয়েকটি দল সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছে। জাতীয় পার্টি, বিকল্প ধারা, তরিকত ফেডারেশনসহ কয়েকটি দল সার্চ কমিটির জন্য নামও প্রস্তাব করে এসেছে রাষ্ট্রপতির কাছে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা ছয়টায় বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল ও সন্ধ্যা সাতটায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, ৫ জানুয়ারি সন্ধ্যা ছয়টায় জাতীয় পার্টি (জেপি), সন্ধ্যা সাতটায় জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, ৬ জানুয়ারি সন্ধ্যা ছয়টায় গণফ্রন্ট, সন্ধ্যা সাতটায় লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সংলাপে অংশ নেয়ার কথা রয়েছে।
এদিকে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সঙ্গে আলোচনা হবে ৯ জানুয়ারি সন্ধ্যা ছয়টায় এবং বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল) এর সঙ্গে ওই দিন সন্ধ্যা সাতটায়। ১০ জানুয়ারি রোজ সোমবার সংলাপ হবে জাতীয় পার্টি (জেপি)-এর সঙ্গে সন্ধ্যা ছয়টায় এবং জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) সঙ্গে সন্ধ্যা সাতটায়।
অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার তারিখ এখনও নির্ধারিত হয়নি। বর্তমান ইসির পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি। এ সময়ের মধ্যেই রাষ্ট্রপতি নতুন কমিশন গঠন করবেন, যাদের অধীনে অনুষ্ঠিত হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন।