তৈমুরকে নিয়ে বিএনপির ক্ষোভ নাকি কৌশল?

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হয়েছেন বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার। গত ২ জানুয়ারি তাকে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পদ থেকে প্রত্যাহার করেছে দল। এর আগে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক পদ থেকেও সরিয়ে নেয়া হয়। স্থানীয় বিএনপি নেতারা দাবি করছেন, দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেয়ায় তৈমুর আলমের ওপর ক্ষুব্ধ বিএনপির হাইকমান্ড। তাই বিএনপির দুটি পদ থেকেই অব্যাহতি দেয়া হয়েছে তাকে। বিএনপি যে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না তা পরিষ্কার করতেই দলের এই পদক্ষেপ। তবে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ নেতারা তা মানতে নারাজ। তারা বলছেন, এটি বিএনপির কৌশল। তারা মাছ খাবে না কিন্তু ঝোল খাবে। গত একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর থেকে দলীয়ভাবে বিএনপি কোন নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। তাদের অভিযোগ, সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ব্যাপক কারচুপির মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় এসেছে। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের ওপরও বিএনপির কোন আস্থা নেই। বিগত স্থানীয় সরকারের কোন নির্বাচনেই বিএনপি কোন প্রার্থী দেয়নি। তবে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন বিএনপির পাঁচ নেতা। তাদের তিনজন মনোনয়নপত্র জমা দেননি। একজনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়। মনোনয়নপত্র জমা না দেয়া বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন ও মহানগর বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, নির্বাচনে অংশ নেয়ার ব্যাপারে দলীয় নিষেধ রয়েছে। তাই তারা নির্বাচনে অংশ নেননি। তবে স্বতন্ত্র হিসেবে সিটি নির্বাচনে থেকে যান তৈমুর আলম খন্দকার।

স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেও শুরু থেকেই তৈমুর আলমের দাবি ছিল, দল তার সঙ্গে আছে। মনোনয়নপত্র ক্রয় থেকে শুরু করে প্রতীক বরাদ্দের দিন পর্যন্ত তৈমুর আলমের সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় বিএনপি নেতাদের একটি অংশ। তৈমুর আলম খন্দকার নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতারাও। গত ২৪ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জের দেওভোগে বিজয় সমাবেশে কেন্দ্রীয় নেতারা বলেন, নির্বাচন বয়কটের কথা বলেও বিএনপি স্বতন্ত্রের ঘোমটা পড়ে নির্বাচনে এসেছে।

এদিকে দৃশ্যপট পাল্টায় ২৬ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় বিএনপির এক সিদ্ধান্তে। তৈমুর আলমের জেলা বিএনপির আহ্বায়ক পদ স্থগিত করে দল। তার পরিবর্তে ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়কের দায়িত্ব পান প্রথম যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম রবি। পরে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী গণমাধ্যমে বলেন, বিএনপি কোন নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন তৈমুর আলম। তার নির্বাচনী প্রচারণায় বিএনপি কিংবা সহযোগী সংগঠনের কেউ অংশ নিলে তাদের বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। গত ৩১ ডিসেম্বর মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির পাঁচ নেতাকে নিয়ে বৈঠক করে কেন্দ্রীয় যুবদল। ওইদিনই মহানগরের অধীন ৩ থানা ও ২৭টি ওয়ার্ড কমিটি বিলুপ্ত করা হয়। নেতাকর্মীকে তৈমুর আলমের পক্ষে কাজ না করারও নির্দেশনা দেয়া হয়। ২ জানুয়ারি বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পদ থেকেও প্রত্যাহার করে নেয় দল।

এ বিষয়ে দলটির দাবি, বিএনপি নির্বাচনে নেই, বিষয়টি স্পষ্ট করার জন্য এবং সরকার যাতে ফায়দা নেয়ার চেষ্টা না করে, সে কারণে তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে সরকারি দল আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন ভিন্ন কথা। তারা মনে করছেন, কৌশলে বিএনপি নির্বাচনে থেকেই যাচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির শীর্ষস্থানীয় এক নেতা বলেন, ‘বিএনপির সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়েই যদি তৈমুর আলম নির্বাচনে অংশ নিত তাহলে তাকে বহিষ্কারই করত দল। সিলেট-৩ আসনের উপনির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় শফি আহমেদকে বহিষ্কার করেছিল বিএনপি। এখানে তা কিন্তু করেনি। পদ না থাকলেও তৈমুর আলম এখনও বিএনপির একজন নেতা। বিএনপি মাছ খাবে না কিন্তু ঝোল খাবে।’

গত সোমবার নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে নির্বাচনী সভায় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, বিএনপি তাদের প্রার্থীকে সব পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে। এতে আত্মতৃপ্তি পাওয়ার কিছু নেই। কেননা সাপকে বিশ্বাস করা যায় বিএনপিকে নয়। ক্ষমতাসীন দলের মেয়র প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভীও গতকাল প্রচারণার সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, এটা তাদের (বিএনপি) দলীয় কৌশল।

তৈমুরের অনুসারীরাও প্রচার করছেন, দলীয় পদ থেকে সরিয়ে দেয়ায় বরং লাভই হয়েছে তৈমুর আলমের। তারা বলছেন, আওয়ামী লীগের একটি অংশ দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। তৈমুর আলমকে অব্যাহতি দেয়াতে তাদের ভোটও পড়বে তৈমুরের পক্ষে। তৈমুর আলমও পদ হারিয়ে ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি আল্লাহর কাছে আলহামদুলিল্লাহ বলে শুকরিয়া আদায় করেছি, আবারও করছি। আমি মনে করি আমার নির্বাচনের রাস্তাটাকে আমার দল প্রশস্ত করে দিয়েছে। বিএনপির লোকেরা নৌকায় ভোট দিবে না বরং নৌকার লোকদের এখন সুযোগ হয়েছে আমাকে ভোট দেয়ার। কারণ আমার দল আমাকে নিরপেক্ষ বানিয়ে দিয়েছে, জনগণের বানিয়ে দিয়েছে। সে জন্য তাদের শুকরিয়া কামনা করি।’

এদিকে দল অব্যাহতি দিলেও অনুসারী বিএনপি নেতারা এখনও তৈমুর আলমের সঙ্গে আছেন। গতকাল নগরীর ৪ নম্বর ওয়ার্ডে প্রচারণার সময়ও স্থানীয় বিএনপির নেতারা তার সঙ্গে ছিলেন। তবে বিএনপির একটি বড় অংশ নেই তৈমুর আলমের সঙ্গে।

২০১১ সালেও প্রথম নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে দলের সমর্থনে প্রার্থী হয়েছিলেন তৈমুর আলম। ভোটগ্রহণের কয়েক ঘণ্টা আগে দলের নির্দেশে নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দেন তিনি। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দুই প্রার্থী শামীম ওসমান ও সেলিনা হায়াৎ আইভীর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়। লক্ষাধিক ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হন আইভী। পরবর্তীতে তৈমুর আলম বলেছিলেন, তাকে গোসল ছাড়া কোরবানি দেয়া হয়েছিল ওই নির্বাচনে। এরপর ২০১৬ সালে আর নির্বাচনে অংশ নেননি তৈমুর।

আরও খবর
যাত্রীবাহী লঞ্চে সিসি ক্যামেরা ও জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জাম রাখার সুপারিশ
ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন, বর্ণাঢ্য কর্মসূচি
প্রধানমন্ত্রীর অধীনেই নির্বাচনের প্রস্তাব সাম্যবাদী দলের
ছাত্রলীগের দীর্ঘ র‌্যালি, যানজট দুর্ভোগ চরমে
শিল্পকলা একাডেমিতে জাতীয় পিঠা উৎসব শুরু হচ্ছে আজ
কোটি টাকারও বেশি জালনোট উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৩
অবৈধ সম্পদ, পুলিশ কর্মকর্তা শাহজাহানের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
তিন মালিককে নৌ-আদালতে হাজিরের নির্দেশ
বস্তিঘরে আগুন, নিভে গেল তিন ভাইবোনের জীবন প্রদীপ
একটি ব্যতিক্রমী প্রতিবাদ
লামায় পাহাড়ি যুবককে গুলি করে হত্যা
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে মতবিনিময় করবে বিএনপি

বুধবার, ০৫ জানুয়ারী ২০২২ , ২১ পৌষ ১৪২৮ ১ জমাদিউস সানি ১৪৪৩

নাসিক নির্বাচন সামনে

তৈমুরকে নিয়ে বিএনপির ক্ষোভ নাকি কৌশল?

সৌরভ হোসেন সিয়াম, নারায়ণগঞ্জ

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হয়েছেন বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার। গত ২ জানুয়ারি তাকে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পদ থেকে প্রত্যাহার করেছে দল। এর আগে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক পদ থেকেও সরিয়ে নেয়া হয়। স্থানীয় বিএনপি নেতারা দাবি করছেন, দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেয়ায় তৈমুর আলমের ওপর ক্ষুব্ধ বিএনপির হাইকমান্ড। তাই বিএনপির দুটি পদ থেকেই অব্যাহতি দেয়া হয়েছে তাকে। বিএনপি যে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না তা পরিষ্কার করতেই দলের এই পদক্ষেপ। তবে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ নেতারা তা মানতে নারাজ। তারা বলছেন, এটি বিএনপির কৌশল। তারা মাছ খাবে না কিন্তু ঝোল খাবে। গত একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর থেকে দলীয়ভাবে বিএনপি কোন নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। তাদের অভিযোগ, সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ব্যাপক কারচুপির মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় এসেছে। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের ওপরও বিএনপির কোন আস্থা নেই। বিগত স্থানীয় সরকারের কোন নির্বাচনেই বিএনপি কোন প্রার্থী দেয়নি। তবে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন বিএনপির পাঁচ নেতা। তাদের তিনজন মনোনয়নপত্র জমা দেননি। একজনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়। মনোনয়নপত্র জমা না দেয়া বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন ও মহানগর বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, নির্বাচনে অংশ নেয়ার ব্যাপারে দলীয় নিষেধ রয়েছে। তাই তারা নির্বাচনে অংশ নেননি। তবে স্বতন্ত্র হিসেবে সিটি নির্বাচনে থেকে যান তৈমুর আলম খন্দকার।

স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেও শুরু থেকেই তৈমুর আলমের দাবি ছিল, দল তার সঙ্গে আছে। মনোনয়নপত্র ক্রয় থেকে শুরু করে প্রতীক বরাদ্দের দিন পর্যন্ত তৈমুর আলমের সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় বিএনপি নেতাদের একটি অংশ। তৈমুর আলম খন্দকার নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতারাও। গত ২৪ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জের দেওভোগে বিজয় সমাবেশে কেন্দ্রীয় নেতারা বলেন, নির্বাচন বয়কটের কথা বলেও বিএনপি স্বতন্ত্রের ঘোমটা পড়ে নির্বাচনে এসেছে।

এদিকে দৃশ্যপট পাল্টায় ২৬ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় বিএনপির এক সিদ্ধান্তে। তৈমুর আলমের জেলা বিএনপির আহ্বায়ক পদ স্থগিত করে দল। তার পরিবর্তে ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়কের দায়িত্ব পান প্রথম যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম রবি। পরে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী গণমাধ্যমে বলেন, বিএনপি কোন নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন তৈমুর আলম। তার নির্বাচনী প্রচারণায় বিএনপি কিংবা সহযোগী সংগঠনের কেউ অংশ নিলে তাদের বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। গত ৩১ ডিসেম্বর মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির পাঁচ নেতাকে নিয়ে বৈঠক করে কেন্দ্রীয় যুবদল। ওইদিনই মহানগরের অধীন ৩ থানা ও ২৭টি ওয়ার্ড কমিটি বিলুপ্ত করা হয়। নেতাকর্মীকে তৈমুর আলমের পক্ষে কাজ না করারও নির্দেশনা দেয়া হয়। ২ জানুয়ারি বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পদ থেকেও প্রত্যাহার করে নেয় দল।

এ বিষয়ে দলটির দাবি, বিএনপি নির্বাচনে নেই, বিষয়টি স্পষ্ট করার জন্য এবং সরকার যাতে ফায়দা নেয়ার চেষ্টা না করে, সে কারণে তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে সরকারি দল আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন ভিন্ন কথা। তারা মনে করছেন, কৌশলে বিএনপি নির্বাচনে থেকেই যাচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির শীর্ষস্থানীয় এক নেতা বলেন, ‘বিএনপির সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়েই যদি তৈমুর আলম নির্বাচনে অংশ নিত তাহলে তাকে বহিষ্কারই করত দল। সিলেট-৩ আসনের উপনির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় শফি আহমেদকে বহিষ্কার করেছিল বিএনপি। এখানে তা কিন্তু করেনি। পদ না থাকলেও তৈমুর আলম এখনও বিএনপির একজন নেতা। বিএনপি মাছ খাবে না কিন্তু ঝোল খাবে।’

গত সোমবার নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে নির্বাচনী সভায় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, বিএনপি তাদের প্রার্থীকে সব পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে। এতে আত্মতৃপ্তি পাওয়ার কিছু নেই। কেননা সাপকে বিশ্বাস করা যায় বিএনপিকে নয়। ক্ষমতাসীন দলের মেয়র প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভীও গতকাল প্রচারণার সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, এটা তাদের (বিএনপি) দলীয় কৌশল।

তৈমুরের অনুসারীরাও প্রচার করছেন, দলীয় পদ থেকে সরিয়ে দেয়ায় বরং লাভই হয়েছে তৈমুর আলমের। তারা বলছেন, আওয়ামী লীগের একটি অংশ দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। তৈমুর আলমকে অব্যাহতি দেয়াতে তাদের ভোটও পড়বে তৈমুরের পক্ষে। তৈমুর আলমও পদ হারিয়ে ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি আল্লাহর কাছে আলহামদুলিল্লাহ বলে শুকরিয়া আদায় করেছি, আবারও করছি। আমি মনে করি আমার নির্বাচনের রাস্তাটাকে আমার দল প্রশস্ত করে দিয়েছে। বিএনপির লোকেরা নৌকায় ভোট দিবে না বরং নৌকার লোকদের এখন সুযোগ হয়েছে আমাকে ভোট দেয়ার। কারণ আমার দল আমাকে নিরপেক্ষ বানিয়ে দিয়েছে, জনগণের বানিয়ে দিয়েছে। সে জন্য তাদের শুকরিয়া কামনা করি।’

এদিকে দল অব্যাহতি দিলেও অনুসারী বিএনপি নেতারা এখনও তৈমুর আলমের সঙ্গে আছেন। গতকাল নগরীর ৪ নম্বর ওয়ার্ডে প্রচারণার সময়ও স্থানীয় বিএনপির নেতারা তার সঙ্গে ছিলেন। তবে বিএনপির একটি বড় অংশ নেই তৈমুর আলমের সঙ্গে।

২০১১ সালেও প্রথম নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে দলের সমর্থনে প্রার্থী হয়েছিলেন তৈমুর আলম। ভোটগ্রহণের কয়েক ঘণ্টা আগে দলের নির্দেশে নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দেন তিনি। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দুই প্রার্থী শামীম ওসমান ও সেলিনা হায়াৎ আইভীর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়। লক্ষাধিক ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হন আইভী। পরবর্তীতে তৈমুর আলম বলেছিলেন, তাকে গোসল ছাড়া কোরবানি দেয়া হয়েছিল ওই নির্বাচনে। এরপর ২০১৬ সালে আর নির্বাচনে অংশ নেননি তৈমুর।