প্রেমের ফাঁদে ফেলে গোপনে অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে ফাঁস করার ভয় দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে রংপুর পুলিশ পরিদর্শক হবিবর রহমানের স্ত্রী কানিজ ফাতেমা ওরফে ফাতেমা কানিজকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নগরীর সেনপাড়া এলাকায় একটি অভিজাত ফ্ল্যাট থেকে তাকে গতকাল বিকেলে গ্রেপ্তার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোতয়ালি থানার ওসি আবদুর রশিদ। তবে পুরো বিষয়টি কঠোর গোপনীয়তার মাধ্যমে পুলিশ হ্যান্ডেল করছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত রাত পৌনে ৯টা পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী কানিজ ফাতেমাকে নিয়ে তার অন্য সহযোগীদের গ্রেপ্তার করার জন্য অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।

পুলিশের একটি দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, বিত্তশালী ব্যক্তিদের টার্গেট করে প্রথমে বন্ধুত্ব এরপর প্রেমের অভিনয় করে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে বাসায় নিয়ে এসে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শাহারুখ করিম অনিক ও তার স্ত্রী আসমানী আক্তারকে রোববার রাতে নগরীর সেনপাড়া এলাকায় একটি অভিজাত ফ্ল্যাট থেকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।

এ ঘটনার পর গত সোমবার গ্রেপ্তার হওয়া অনিক ও তার স্ত্রী আসমানী আক্তারকে কোতয়ালি থানায় সোপর্দ করে র‌্যাব। রাতেই দুজনই রংপুরের মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। জবানবন্দিতে তারা পুলিশ কর্মকর্তা হবিবর রহমানের স্ত্রী কানিজ ফাতেমার নাম বলেছে। এ ছাড়া জবানবন্দিতে তার কর্মকা-ে কানিজ ফাতেমার সম্পৃৃক্ততার কথাসহ নানা কুকর্মের কথা বলে। অনিক ও তার স্ত্রীর আদালতে দেয়ার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির ওপর ভিত্তি করে গতকাল পুলিশ নগরীর সেনপাড়া এলাকায় একটি অভিজাত ফ্ল্যাট থেকে কানিজ ফাতেমাকে গ্রেপ্তার করে।

পুলিশ জানায়, কানিজ ফাতেমা ও আরও কয়েকজন মিলে সুন্দরীদের বিত্তশালীদের মনোরঞ্জনে ব্যবহার করতো। আর র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া আসমানী আক্তার ও পুলিশ কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমা নিজেরাও খদ্দেরদের মনোরঞ্জন করার নামে প্রেমের ফাঁদ পেতে প্রতারণার মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, আসমানী আক্তার ও কানিজ ফাতেমা শক্তিশালী নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে। কানিজ ফাতেমা একটি স্কুটিতে চলাচল করতো। তাদের আয়েশি চালচলন ও চলাফেরা এলাকাবাসীর মাঝে সন্দেহের সৃষ্টি হলেও পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী বলে কেউ মুখ খোলার সাহস পায়নি।

এদিকে পুলিশ পরিদর্শক হবিবর রহমানের স্ত্রী কানিজ ফাতেমা গ্রেপ্তার হওয়ার ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর রংপুরে পুলিশ বিভাগে তোলপাড় শুরু হয়েছে। এ ব্যাপারে পুলিশ পরিদর্শক হবিবর রহমারেনর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কানিজ ফাতেমার সঙ্গে তার এখন সম্পর্ক নেই বলে দাবি করেছেন। তবে পুলিশ বলছে, ওই পুলিশ কর্মকর্তার কানিজ ফাতেমার সঙ্গে একই ফ্ল্যাটে থাকে। এসব ঘটনায় তারও সায় রয়েছে বলে জানা গেছে।

সার্বিক বিষয়ে জানতে কোতয়ালি থানার ওসি আবদুর রশিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কানিজ ফাতেমাকে আটক করার কথা স্বীকার করলেও আর কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।